আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন টেকটিউনস কমিউনিটি, আশা করছি ভাল আছেন সুস্থ আছেন৷ বরাবরের মতই আপনাদের সামনে হাজির হলাম নতুন টিউন নিয়ে। আজকে আলোচনা করব ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে। কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।
আপনার অর্গানিক ফেসবুক মার্কেটিং মেট্রিক্স গুলো কি নিচে দিকে নেমে গেছে? আগের মত রিচ হচ্ছে না? নন-পেইড মার্কেটিং এর নতুন এবং কার্যকরী মেথড খুঁজছেন? তাহলে এই টিউনটি বিশেষ করে আপনারই জন্য। আমরা এই টিউনে দেখতে চলেছি সেরা নয়টি অর্গানিক মার্কেটিং টেকনিক যেগুলো আপনার ফেসবুক পেইজ তথা বিজনেসকে গ্রু করতে সাহায্য করবে।
ফেসবুকে পেইড মার্কেটিং এর ব্যবস্থা থাকায় বেশির ভাগ মার্কেটাররা এখন পেইড মার্কেটিং এ মনোযোগ দিচ্ছে। যাই হোক ফেসবুককে এখনি আপনি পুরোপুরি পেইড মার্কেটিং প্লাটফর্ম ভাবতে পারেন না। এখনো ফেসবুকে অর্গানিক মার্কেটিং এর অনেক সম্ভাবনা রয়েছে কারণ বিশাল একটা অডিয়েন্স আছে এই ফেসবুকে যারা তাদের রেগুলার কাজের মধ্যে ফেসবুকিংকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
এখন পর্যন্ত ফেসবুক বিশ্বের সর্ববৃহৎ সোশ্যাল মিডিয়া নেটওয়ার্ক, যা ১৫ বছর ধরে মার্কেটে রয়েছে এবং এর রয়েছে ২ বিলিয়নেরও বেশি একটিভ ইউজার।
অডিয়েন্স যারাই হোক বিশাল একটা সুযোগ রয়েছে তারা প্রতিনিয়ত ফেসবুক ব্যবহার করে, তার মানে হচ্ছে যখন অর্গানিক সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কথা আসবে আপনি কখনো ফেসবুককে এড়িয়ে যেতে পারবেন না।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটা প্লাটফর্ম হচ্ছে ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রাম। উভয়ই কিন্তু ভিজ্যুয়াল প্ল্যাটফর্ম। বর্তমান সময়ে ইউজাররাই কেবল ভিজ্যুয়াল Post এ আকৃষ্ট হয় এমনটি নয় ফেসবুক এলগোরিদমও ভিজ্যুয়াল Post গুলোকে বেশি প্রমোট করে। এখানে ভিজ্যুয়াল Post বলতে ফটো এবং ভিডিও পোস্টকে বুঝাতে চাচ্ছি। আপনি খেয়াল করে দেখবেন শুধু লেখা পাবলিশ করার চেয়ে ছবি অথবা ভিডিও দিয়ে Post করলে সেটার বেশি রিয়েক্ট এবং টিউমেন্ট আসে।
আপনি যদি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করা পছন্দ না করেন এবং চান এই বিষয়টি পরিবর্তন হোক তাহলে আপনাকে বলতে হবে এর সম্ভাবনা খুবই কম। সোশ্যাল মিডিয়া গুলো ইউজারদের পছন্দ অনুযায়ী পরিচালিত হয়। যেহেতু ইউজাররা ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট দেখতে পছন্দ করে এবং ভিজ্যুয়াল ইনফরমেশন বেশি ফলো করে সেহেতু ফেসবুক এটি সব সময় গুরুত্ব দেবে। আর ভিজ্যুয়াল কন্টেন্টের মধ্যে সেরা ফরমেট হল ভিডিও ফরমেট।
আপনি যদি অর্গানিক মার্কেটিং এর মাধ্যমে ফেসবুকে রিচ করতে চান তাহলে সকল ধরনের কন্টেন্টের উপর নজর দিন। ফেসবুকে যে ধরনের কন্টেন্ট প্রকাশ করা যায় সব গুলোর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতের মধ্যমে একটি ভাল মার্কেটিং করা সম্ভব। চমৎকার এবং সুচিন্তিত একটি কন্টেন্ট স্ট্রেটেজির মাধ্যমে সকল কন্টেন্টের জন্য উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। এটি সত্যি যে ফেসবুক নতুন ফিচার গুলোকে বেশি প্রমোট করে, তাই বলে দীর্ঘদিন ধরে থাকা ফিচার গুলো বা কন্টেন্ট টাইপ গুলোকে আপনি ইগনোর করতে পারেন না।
এবার আমরা নয় ধরনের Post টাইপ নিয়ে কথা বলব যেগুলো আপনার অর্গানিক রিচ বাড়াতে সাহায্য করবে এবং কথা বলব কিভাবে কার্যকর ভাবে কন্টেন্ট গুলো নিয়ে কাজ করবেন।
ফেসবুকের সবচেয়ে জনপ্রিয় Post ফরমেট হচ্ছে ইমেজ Post ৷ অতীত থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ফিচার ফেসবুকে আসলেও এই টাইপের কন্টেন্ট এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
আপনি আপনার কন্টেন্টকে ইমেজ আকারে প্রকাশ করতে পারেন। গ্রাফিক এবং টেক্সট এর মিশ্রণে দারুণ একটি ইমেজ আপনার অডিয়েন্সদের নজর কাড়তে পারে। খেয়াল করে দেখবেন, ইমেজ Post এর ক্ষেত্রে টেক্সট এর চেয়ে ইমেজ নিউজফিডের বেশি জায়গা জুড়ে অবস্থান করে। টেক্সট গুলো See More দিয়ে হাইট করে দেয়া হয়।
বেশির মার্কেটাররা ইমেজ Post শেয়ারের ক্ষেত্রে বড় ধরনের একটি ভুল করে, তারা ইমেজের সাথে Call To Action (CTA) অথবা লিংক দিতে ভুলে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লিংক যুক্ত করে প্রথম টিউমেন্টে। এখানে সমস্যটা যেখানে হয়, কেউ যদি ফেসবুকে সেই Post শেয়ার করে তাহলে কিন্তু লিংকটা সাথে থাকে না, ওটা আসল Post এর টিউমেন্টেই থেকে যায়। এবং এতে করে কনভারসন কম হয়।
সুতরাং আপনি যদি Post এর মধ্যে লিংক শেয়ার করতে চান তাহলে অবশ্যই এমন ভাবে করুন যেটা ইউজারদের কাছে সহজে এক্সেস যোগ্য হবে। আরেকটা বিষয় আপনার মাথায় রাখতে হবে সোশ্যাল মিডিয়া ইউজাররা কিন্তু বড় কোন লেখা পড়তে চায় না। তারা সব সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় মজার কিছু খুঁজে। সুতরাং আপনাকে ইমেজটা এমন ভাবে তৈরি করতে যেন ইউজারের চোখে পড়ে এবং খুব কথায় বুঝতে পারে কি বুঝাতে চাচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়া ইউজাররা কখনো নির্দিষ্ট Post এ বেশি সময় ব্যয় করতে চায় না, তাই আপনাকে মাথায় রাখতে হবে কম সময়ে কিভাবে ইউজারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়।
ইউজারের চোখে যেহেতু প্রথমেই ইমেজটি পড়ে সেহেতু ইমেজ তৈরিতে আপনাকে বেশি মনোযোগী হতে হবে। সঠিক কালার গ্রেডিং এ ইমেজ গ্রাফিক তৈরি করুন এবং উপযুক্ত একটি হেডলাইন দিন তারপর ক্যাপশন নির্ধারণ করুন। ইমেজে যা দেয়া সম্ভব হয় নি সেটা ক্যাপশনে লিখে নিতে পারেন।
স্টোরি ফিচারটি বর্তমানে এতটাই জনপ্রিয় যে প্রায় প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়া এটিকে সহজ ভাবে গ্রহণ করে নিয়েছে। কেউ কেউ এই ফিচারটি পরীক্ষা মূলক ভাবে রেখেছে কেউ মিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করছে এর পেছনে।
যেহেতু চারপাশে অনেক কন্টেন্ট সেহেতু আপনাকে প্রায় সকল প্লাটফর্মেই জন্য কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে Cross Posting কাজে আসতে পারে। Cross Posting মানে হল এক প্ল্যাটফর্মে Post করলে সেটা অন্য প্ল্যাটফর্মেও Post হয়ে যাওয়া। ইন্সটাগ্রাম ও ফেসবুকের ক্ষেত্রে এই উদাহরণটি দেয়া যেতে পারে।
আপনি চাইলে Instagram Creator ব্যবহার করে দারুণ দারুণ সব স্টোরি ক্রিয়েট করতে পারেন রয়েছে স্টিকার, ইমুজি এবং বিভিন্ন ইফেক্টের ব্যবস্থা। স্টোরি ক্রিয়েট করার সব সেটা ফেসবুকেও শেয়ার করে ফেলতে পারেন Cross Posting এর মাধ্যমে।
তাছাড়া ফেসবুকেও রয়েছে ভার্টিক্যাল স্টোরি ফিচার যেখানে একই সাথে অডিয়েন্সদের জন্য ইমেজ এবং কয়েক সেকেন্ডের ভিডিও শেয়ার করা যায়।
স্টোরি শেয়ারের ক্ষেত্রে একটি ভাল স্ট্রেটেজি হল যেখানেই স্টোরি শেয়ার করুন না কেন, এক সাথে একটা থেকে তিনটা স্টোরি দিন। তিনটা স্টোরি দিলে ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে অন্তত একটি স্টোরি একটিভ থাকবে বলে আশা করতে পারেন। এর সুবিধা হল অডিয়েন্সরা আপনার স্টোরি দেখবে ব্র্যান্ড সম্পর্কে জানবে এবং আগ্রহী হবে। আপনার ব্র্যান্ড, ইউজারদের মনেও টপে থাকবে এবং নিউজফিডেও টপে থাকবে।
স্টোরি ক্রিয়েট করা খুবই সহজ আপনি চাইলে ফেসবুক অ্যাপ ডেক্সটপ উভয় ভার্সনে স্টোরি ক্রিয়েট করতে পারেন এমনকি Business Suite এর মাধ্যমে সেগুলো শিডিউলও করতে পারেন। তাছাড়া আপনি ইন্সটাগ্রাম স্টোরি বিল্ডার দিয়েও স্টোরি ক্রিয়েট করতে পারেন তারপর সেগুলো Cross Post এর মাধ্যমে ফেসবুকে শেয়ার করার ব্যবস্থা তো রয়েছেই।
যদিও এখনো পেইজে স্টোরি Highlight আকারে রাখা যায় না, যেমনটি প্রোফাইলের ক্ষেত্রে হয়, তবে আশা করা যায় ভবিষ্যতে বিজনেস পেজের ক্ষেত্রেও ফেসবুক এই সুবিধাটি দেবে।
স্টোরির ক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন পারসোনালিটি কন্টেন্ট শেয়ার করতে পারেন অথবা Behind-the-scenes কন্টেন্ট শেয়ার করতে পারেন এতে করে আপনার সাথে অডিয়েন্সের দারুণ একটি সম্পর্ক তৈরি হবে।
এখন আমরা আলোচনা করব লিংক Post নিয়ে। লিংক Post কি? লিংক Post হচ্ছে এমন কোন Post, হোক সেটা গ্রাফিক্যাল অথবা টেক্সট যেখানে কোন লিংক যুক্ত থাকবে। এবং লিংক যুক্ত করার উদ্দেশ্য হচ্ছে অডিয়েন্সকে নির্দিষ্ট কোন লোকেশনে নিয়ে যাওয়া, হতে পারে সেটা ফেসবুক বা অন্য কোন ওয়েবসাইটে। মার্কেটারদের কাছে লিংক Post খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর মাধ্যমেই নির্দিষ্ট ট্রাফিক কোন অফার ট্রাই করবে। সুতরাং বিজনেস পরিচালনায় এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
তবে সব সময় এটা আপনাকে সঠিক ফলাফল নাও দিতে পারে। কারণ আমরা জানি ফেসবুক সব সময় তার ইউজারকে তার প্লাটফর্মেই রাখতে চায় এবং সেজন্য লিংক আছে এমন কন্টেন্টকে কম প্রমোট করে ফলাফল হিসাবে দেখা যায় লিংক Post এ ইম্প্রেশন কম আসে। আর এজন্যই অনেক মার্কেটার এর প্রতি নিরুৎসাহিত হয়।
তবে হতাশ হবার কিছু নাই দক্ষ মার্কেটাররা সব সময় এমন একটি স্ট্রেটেজিক ক্যাম্পেইন বিল্ড করবে যেখানে প্লাটফর্মের সকল তথ্য রয়েছে এবং এর সমাধানও রয়েছে। সুতরাং লিংক Post এ ইম্প্রেশন কম আসলেও এটি বাড়ানোর পথ রয়েছে। চলুন দেখা যাক কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে লিংক Post এর মধ্যেও ভাল ইম্প্রেশন পাওয়া সম্ভব।
আপনার Post এ যদি কোন নিউজ থাকে এবং কোন রিসোর্সের লিংক থাকে তাহলে এটা নিয়ে আপনার চিন্তা করতে হবে না৷ ইউজাররা নিজে থেকেই লিংকে ক্লিক করতে আগ্রহী হবে। আর লিংককে ক্লিক করলে এনগেজমেন্ট বাড়বে এবং Post বেশি বেশি প্রমোট হবে।
তবে যদি আপনার Post টি নিউজ বা রিসোর্সের না হয় তাহলে কি করবেন? সেক্ষেত্রে আপনাকে Post এর ক্যাপশনটি এমন ভাবে লিখতে হবে যেন অডিয়েন্স See More এ ক্লিক করতে বাধ্য হয়। যখনি তারা See More ক্লিক করবে তখনি Post এ এনগেজমেন্ট চলে আসবে। সুতরাং বড় ক্যাপশন দিয়ে নিচে লিংকটি যুক্ত করে দিতে পারেন।
তবে আপনি যদি কোন প্রোডাক্টের ঘোষণা দিতে চান অথবা কোন লঞ্চ ইভেন্ট সম্পর্কে বলতে চান তাহলে নির্দিষ্ট লিংক Above The fold এর উপরেই দিন। তবে খেয়াল রাখুন ক্যাপশন যেন বড় থাকে। এতে করে ইউজার লিংকেও ক্লিক করবে এবং এনগেজমেন্টও বাড়বে।
আমরা জানি ফেসবুকে কোন লিংক শেয়ার করা হলে লিংকটি কিছুক্ষণ লোড হয়ে ওয়েবসাইট প্রিভিউ আকারে প্রকাশিত হয়। মানে ইমেজের জায়গায় সরাসরি ওয়েবসাইটের প্রিভিউ দেখা যায়। এমনটি হলেই কিন্তু ফেসবুক এলগোরিদম বুঝে যায় এটা একটা লিংক Post এবং ইম্প্রেশন কমে যেতে থাকে। এক্ষেত্রে যা করা যেতে পারে, আপনি যদি প্রথমে ইমেজ দেবেন এবং তারপর লিংক দেবেন তাহলে পোস্টটি ইমেজ Post হিসেবেই পাবলিশ হবে তখন আর লিংক Patch হবে না এবং ফেসবুকও এটিকে ইমেজ Post হিসেবে ধরে নেবে। ফলাফল এলগরিদম গত কোন সমস্যা হবে না।
আরেকটা বিষয় মাথায় রাখুন প্রতিটি Post এ লিংক দেবেন না এবং প্রতিদিন লিংক Post শেয়ার করবেন না এতে আপনার পেজের রিচ কমে যেতে পারে। অডিয়েন্সরা বিরক্ত হতে পারে। তাই স্বাভাবিক Post এর ফাকে ফাকে লিংক Post দিন।
আমরা সবাই জানি ফেসবুকে টেক্সট বেসড Post দুইভাবে করা যায়, প্লেইন টেক্সট দিয়ে Post লিখা অথবা ব্যাকগ্রাউন্ড কালার দিয়ে Post তৈরি করা। ব্যাকগ্রাউন্ড কালারের পাশাপাশি বিভিন্ন ইমেজও দিতে পারবেন। আপনি চাইলে আপনার জেনারেট করা Avatar কেও ব্যাকগ্রাউন্ড হিসেবে সেট করতে পারেন। কিছু কিছু কালার আপনি নাও ব্যবহার করতে পারেন তবে দ্রুত দারুণ একটা Post শেয়ার করার জন্য ভাল পদ্ধতি হতে পারে এটা।
ইউজারদের বিভিন্ন ফর্মফিলাপ, True/False এর মত কাজে এনগেজড করতে এই ধরনের কন্টেন্ট ধরুন উপযোগী হতে পারে। আর যদি রিচ এর কথা বলি তাহলে বলতে হবে সাধারণ টেক্সট বেসড Post থেকে বেশি রিচ পায় এই ধরনের Post। কখনো কখনো ইমেজ Post থেকেও বেশি ইম্প্রেশন আসতে পারে এই Post গুলোতে।
ব্যাকগ্রাউন্ডের টেক্সট Post করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন আপনার Post এ ওয়ার্ডের পরিমাণ যেন খুব বেশি না হয় যায়। বেশি ওয়ার্ড হলে See More চলে আসতে পারে যা দেখতে ভাল দেখায় না।
বর্তমান সময়ে অনেকে লক্ষ্য করছে ফেসবুকে ইন্সটাগ্রামের Reel শো করে। নিউজফিডে স্ক্রুল করার সময় অনেকে Carousel Block এ অল্প করে Reels দেখতে পাচ্ছে। তবে আস্তে আস্তে ফেসবুকে নিজের প্ল্যাটফর্মের এই ফিচার নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।
ফেসবুকে Reels ফিচার না থাকলেও আপনি ইন্সটাগ্রামে গিয়ে নিজস্ব বিল্ডার দিয়ে Reels তৈরি করতে পারবেন। মিউজিক সহ বিভিন্ন এলিমেন্ট দিয়ে আপনি চমৎকার ভিডিও কন্টেন্ট বানিয়ে ফেলতে পারবেন।
আপনি যদি Instagram Reels এর প্রতি আগ্রহী হোন তাহলে অবশ্যই ট্রেন্ডিং বিষয়ে ভিডিও করবেন কিন্তু এটা জরুরি নয় যে আপনাকে নাচানাচি করতে হবে বা বিশেষ অঙ্গভঙ্গি দেখাতে হবে। আপনি ট্রেন্ডিং বিষয় নিয়ে নিজের ব্র্যান্ডকে রিপ্রেজেন্ট করে এমন বিষয়েও ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
চারদিকে Tiktok এর মত প্ল্যাটফর্ম গুলো নিয়ে যে পরিমাণে আলোচনা তৈরি হয়েছে সেই দিন হয়তো দূরে নয় ফেসবুক নিজেদের প্ল্যাটফর্মে এমন ফিচার নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়ে বসবে।
এবার আমরা কথা বলব ভিডিও কন্টেন্ট নিয়ে। ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করতে আপনাকে সব সময় লাইভে যেতে হবে এমনটি নয়। আপনি প্রি-রেকর্ড ভিডিও অথবা চাইলে বাইরের সফটওয়্যার দিয়ে এডিট করেও সেই ভিডিও ফেসবুকে আপলোড দিতে পারেন।
মজার ব্যাপার হল, ফেসবুকে ছোট ভিডিও এর বড় ভিডিও ভাল পারফর্ম করে। নেটিভলি আপলোড করা ভিডিওগুলির ক্ষেত্রে, ৫ মিনিট বা তার বেশি সময়ের ভিডিওগুলি সেরা পারফর্ম করে বলে মনে করা হয়।
ভিডিও কন্টেন্ট শেয়ারের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভাল ক্যাপশন দিন এবং সঠিক ভাবে CTA যোগ করুন৷ কারণ ভিডিও শেয়ার হলে সাথে ক্যাপশন ও লিংকও সাথে সাথে শেয়ার হবে।
ফেসবুকে লাইভ ভিডিও স্ট্রিম করা যায় এবং লাইভ শেষ হলে আপনি ভিডিও টি চাইলে ডিলিট করে দিতে অথবা নেটিভ ভিডিও হিসেবেও সেভ করে রাখতে পারেন। লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং এর ক্ষেত্রে চাইলে আপনি ফেসবুকের বিল্ড-ইন ফিচার ও ব্যবহার করতে পারেন অথবা থার্ডপার্টি সফটওয়্যার ব্যবহার করেও এটি করতে পারেন।
থার্ড পার্টি সফটওয়্যার দিয়ে লাইভ স্ট্রিম করলে অতিরিক্ত কিছু সুবিধা পাওয়া যায় যেমন আপনি চাইলে লাইভ স্ট্রিমেই অডিয়েন্সদের টিউমেন্ট শো করাতে পারবেন। এর মাধ্যমে অডিয়েন্সদের এনগেজমেন্ট বৃদ্ধি পায়। লাইভে অডিয়েন্স টিউমেন্ট বা মতামতের মাধ্যমে বিষয়টিকে দারুণ উপভোগ্য করে তুলা যায়।
লাইভ স্ট্রিমিং বিষয়টিতে অনেক কিছুই এড করা যায়, নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে, ব্রেকিং নিউজ হতে পারে অথবা কোন কিছুর লঞ্চ ইভেন্টও হতে পারে।
লাইভ রুম ফিচারটি বেশ কয়েকমাস ধরে ফেসবুকে চালু হয়েছে আমরা দেখতে পাচ্ছি। হোমপেজের প্রথমেই ফিচারটি আমাদের চোখে পড়ে। ইতিমধ্যে অনেক ক্রিয়েটর এটা নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
লাইভ অডিও রুমের সুবিধা হচ্ছে কোন ধরনের ক্যামেরা সেট আপ ছাড়াই, রিয়েল ভয়েসে রিয়েল টাইমে অডিয়েন্সদের সাথে যুক্ত হয়ে যেতে পারবেন।
গত কয়েক বছরের বিভিন্ন ঘটনায় বুঝা যায় অডিয়েন্সরা এখন ইমেজ, ভিডিও কন্টেন্ট এর পাশাপাশি মার্কেটারদের সাথে সরাসরি কথা বলতে বেশ আগ্রহী। লাইভ রুম আশা করা যায় তাদের এই সুবিধাটি করে দেবে।
লাইভ অডিও রুমের আরেকটা সুবিধা হল আপনি যখন অডিও লাইভ শুরু করবেন তখন আপনার প্রোফাইলে একটি Post তৈরি হবে এবং আপনার অডিয়েন্সরা নিজেদের নিউজফিডে দেখতে পাবে। চাইলে তারা টিউমেন্ট করতে পারবে, আপনি অডিও রুম থেকে বের হয়ে সেই টিউমেন্ট গুলোও পড়তে পারবেন।
যারা পডকাস্টে আগ্রহী তাদেরও দারুণ সুবিধা করে দিয়েছে ফেসবুক৷ পডকাস্টাররা এখন ফেসবুক পডকাস্টের মাধ্যমে তাদের অডিয়েন্স এর কাছে পৌছাতে পারবেন।
আপনার পডকাস্ট চ্যানেল থাকলে সেটা ফেসবুকের সাথে কানেক্ট করতে পারবেন এবং অডিয়েন্সদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন। পডকাস্টের ক্ষেত্রেও অডিও রুমের মত আপনার টাইম লাইনে একটি Post তৈরি হবে।
ফেসবুকে পডকাস্ট শুনতে আপনার সব সময় অ্যাপ এর ভেতরে থাকতে হবে না, আপনি চাইলে অ্যাপ থেকে বের হয়ে গেলেও পডকাস্ট শুনতে পারবেন। ফেসবুকে পডকাস্ট স্ট্রিম করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, শ্রোতারা চাইলে আপনার পডকাস্ট স্নিপেট সেভ করতে পারবে এবং বাইরেও শেয়ার করতে পারবে।
ফেসবুকে এখনো অর্গানিক মার্কেটিং এর মাধ্যমে পেইড মার্কেটিং থেকেও ভাল ফলাফল পাওয়া সম্ভব। এর প্রমাণ আপনি বিভিন্ন পেইজকে ফলো করলেই পাবেন। কোন ধরনের মার্কেটিং করে না তারপরেও লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার। ফেসবুকে অর্গানিক মার্কেটিং এখনো পাওয়ার ফুল এর বড় কারণ মানুষ রেগুলারলি ফেসবুক ব্যবহার করে। যে বিষয় গুলো মানুষের জীবন যাপনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বা মানানসই সেগুলো মানুষ ফলো করবেই। আর আপনি যদি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে ভাল ভাবে কাজ করতে পারেন তাহলে আপনার রিচ কখনো কখনো পেইড মার্কেটিং থেকেও ভাল হতে পারে।
আশা করছি উপরের নয়টি টিপসের মাধ্যমে আপনি ফেসবুকে অর্গানিক মার্কেটিং করে সফল হতে পারবেন। তো আজকে এ পর্যন্তই পরবর্তী টিউন পর্যন্ত ভাল থাকুন আল্লাহ হাফেজ!
আমি সোহানুর রহমান। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 627 টি টিউন ও 200 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 118 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
কখনো কখনো প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর মত ঘটনা পুরো পৃথিবী বদলে দিতে পারে।