আপনি কি আপনার অনলাইন গোপনীয়তা নিয়ে চিন্তিত? আপনার কি সব সময় চিন্তা হয় যে অনলাইনে আপনার গোপনীয় কোন তথ্য হ্যাক হয়ে যায় কিনা? বা আপনি কি জানতে চান যে অনলাইনে কীভাবে নিরাপদ থাকতে হয়? তাহলে আজকের এই টিউনটি আপনার জন্যই। আজকের এই টিউনে আমি আপনাকে জানাবো অনলাইনে আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করার সেরা ৫ টি উপায় সম্পর্কে। যেই ৫ টি উপায় মেনে আপনি অনলাইনে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে আপনি আপনার গোপনীয়তা ফাঁস হওয়া থেকে রক্ষা পাবেন।
তো এই টিউনটি শুরুর আগেই আমি আপনাকে জানিয়ে দিতে চাই যে আজকের এই টিউনে আমি যেইসব অনলাইনে গোপনীয়তা রক্ষা করার সেরা ৫টি টিপস সম্পর্কে আপনাকে জানাবো তা আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন থেকে তুলে ধরেছি। আমি আমার ব্যক্তিগত ইন্টারনেট ব্যবহারে আমার নিজের গোপনীয়তা রক্ষার্থে আমি যেই ৫ টি নিয়ম সর্বদা ব্যবহার করে থাকি সেগুলোই আজকে আমি আপনার সাথে এই টিউনে শেয়ার করব।
এবং আপনি জেনে অবাক হবেন যে আমি এই ৫ টি নিয়ম ব্যবহার করে ইন্টারনেট ব্যবহার করায় আজ আমার ৭ বছরের ইন্টারনেট ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় আজ পর্যন্ত আমার কোন ব্যক্তিগত তথ্য চুরি বা হ্যাক হওয়া সংক্রান্ত সমস্যায় পড়তে হয়নি। তো এবার হয়ত আপনি বুঝেই গেছেন যে আমার এই ৫ টি টিপস আপনার জন্য কেমন কার্যকর হতে পারে। তো চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে এবার চলে যাওয়া যাক মেইন টিউনে এবং জেনে নেওয়া যাক আপনার অনলাইন গোপনীয়তা রক্ষা করার সেরা ৫ টি উপায় সম্পর্কে।
আপনি আপনার অনলাইন অ্যাকাউন্টগুলোর জন্য স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। স্ট্রং পাসওয়ার্ড বলতে এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন যেই পাসওয়ার্ড গুলো কেউ আন্দাজ করতে পারবেনা। এমন পাসওয়ার্ড কখনোই ব্যবহার করবেন না যেই পাসওয়ার্ডগুলো খুবই কমন পাসওয়ার্ড অর্থাৎ যেগুলো সবাই ব্যবহার করে থাকে এবং যে কেউ সে পাসওয়ার্ড গুলো আন্দাজ করে ফেলতে পারে। কমন পাসওয়ার্ড বলতে এমন পাসওয়ার্ড যেগুলো সহজেই সবাই আন্দাজ করতে পারে যেমন: আপনার নাম, আপনার মোবাইল নাম্বার, ১ থেকে ৮ পর্যন্ত নাম্বার ইত্যাদি এমন ধরনের সহজ পাসওয়ার্ড। তো এই ধরনের পাসওয়ার্ড আপনার অ্যাকাউন্টগুলোতে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
আপনার অ্যাকাউন্ট গুলোতে স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন অর্থাৎ, এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন যে পাসওয়ার্ড কেউ আন্দাজ করে মিলাতে পারবে না। স্ট্রং পাসওয়ার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং পাসওয়ার্ড এর মধ্যে ইংরেজি বড় হাতের ছোট হাতের অক্ষর, সিম্বলিক চিহ্ন নাম্বার এগুলো মিক্স করে পাসওয়ার্ডে ব্যবহার করুন। একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড এর উদাহরণ হল: (Sjjss2872$-$-sjshJshs) তো আপনার অ্যাকাউন্টগুলোতে স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন এবং নিয়মিত সেই অ্যাকাউন্টগুলোর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন একই পাসওয়ার্ড দীর্ঘ সময় ধরে রেখে দিবেন না। অন্তত ২ মাসে একবার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা ভালো।
আপনার অনলাইন একাউন্টগুলোতে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করুন। টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন অর্থাৎ, এটি একটি সিকিউরিটি সিস্টেম যা পাসওয়ার্ড জানা থাকা সত্ত্বেও হ্যাকারকে আপনার অ্যাকাউন্টের অ্যাক্সেস নিতে দেয় না। টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনে যখন কেউ আপনার অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতে যায় তখন যদি সে সঠিক পাসওয়ার্ডটি ও দেয় তারপরে সেখানে সিস্টেম থেকে আপনার নাম্বারে একটি কোড যায় কেবল সেই কোডটি সঠিক সেখানে দিতে পারলেই সিস্টেম তখন তাকে সেই একাউন্টটিতে প্রবেশ করতে দেয়। আর যদি সে কোডটি দিতে না পারে তাহলে সে সঠিক পাসওয়ার্ড দিলেও সিস্টেম তাকে সেই অ্যাকাউন্টটি তে প্রবেশ করতে দেয় না। আপনি যখন কোন একাউন্টটিতে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করতে যাবেন তখন আপনাকে সেখানে আপনি কোন নাম্বারে কোড ভেরিফিকেশন চান সেই নম্বরটি সেট করতে হয়।
তো সেখানে নাম্বার সেট করার সময় আপনি আপনার নিজের নাম্বার ব্যবহার করুন যেটি সবসময় আপনার কাছে থাকে অন্যের কাছে নয়। টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন একটি অনেক বড় সিকিউরিটি সিস্টেম হলেও এটির অসুবিধা হলো যে এটি সব অ্যাকাউন্টে অ্যাভেইলেবল থাকেনা। তাই আপনার ব্যবহার করা ওয়েবসাইট বা অ্যাপ গুলো চেক করুন যে সেখানে এই সিকিউরিটি অপশনটি রয়েছে কিনা যদি থাকে তাহলে অবশ্যই এক্ষুনি সেটি এনাবল করে নিন। জনপ্রিয় কিছু অ্যাকাউন্ট যেমন: গুগল, ফেসবুক এ দুটিতেই এই সিকিউরিটি অপশন রয়েছে তাই এখনই এই দুটি অ্যাকাউন্টে এই সিকিউরিটি অপশনটি এক্ষুনি চালু করুন।
আপনি যেই সাইট এবং অ্যাপগুলো ব্যবহার করেন সেগুলোর গোপনীয়তা সেটিং এবং গোপনীয়তা নীতি ভালো করে পরীক্ষা করুন। আপনার ব্যবহার করা সাইট বা অ্যাপগুলোর গোপনীয়তা সেটিং চেক করুন এবং সেখানে যেগুলো আপনার গোপনীয়তা লঙ্ঘন করে যেমন: হতে পারে কোন অ্যাপ আপনার লোকেশন নিয়ে রেখেছে যেটির তার প্রয়োজন নেই তো এ ধরনের গোপনীয়তা সেটিংস গুলো অফ করে দিন।
আবার আপনি যখনই কোন সাইট বা অ্যাপে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে যাবেন তো তখন অ্যাকাউন্ট খোলার আগে সেই সাইট বা অ্যাপের গোপনীয়তা নীতিগুলো ভালো করে পড়ুন এবং তারপরেই যদি সবকিছু ঠিকঠাক লাগে তাহলে সেখানে টিক চিহ্ন দিয়ে সেই সাইট বা অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলুন।
আর যদি দেখেন যে কোন সাইট বা অ্যাপের গোপনীয়তা নীতি এবং গোপনীয়তা সেটিংস আপনার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বা সেগুলোর কারণে আপনার গোপনীয়তা লঙ্ঘন হতে পারে তাহলে সেই ধরনের সাইট বা অ্যাপ ব্যবহার না করাই ভালো।
সাবধানে আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট যেমন: ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি ব্যবহার করুন। আপনার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টগুলোতে কোন তথ্য বা টিউন শেয়ার করার আগে তা ভেবেচিন্তে শেয়ার করুন যে আপনি কী শেয়ার করছেন সেখানে আপনার কোন ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য নেই তো? আবার, আপনার শেয়ার করা পোস্টটি কে কে দেখতে পাবে সেই সেটিংস গুলো ভালোভাবে বিবেচনা করে নিন।
সোশ্যাল মিডিয়াতে বর্তমানে নানা ধরনের স্প্যাম লিংক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে তাই সোশ্যাল মিডিয়াতে থাকা সন্দেহজনক লিংক এ ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা এ ধরনের লিংকে আপনার গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা বা আপনার ডাটা চুরি করার সিস্টেম সেট করা থাকে।
আপনার ডিভাইস এবং সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট রাখুন। অনলাইনে আপনার গোপনীয়তা লঙ্ঘন করতে অর্থাৎ, আপনার ডাটা চুরি করার জন্য অসৎ লোকেরা নানা ধরনের অসৎ চক্রান্ত করে থাকেন। তারা মূলত নানা ধরনের ফুল দিয়ে তৈরি করেন এবং আপনাকে টোপ দেখিয়ে আপনার ডাটা চুরি করার চেষ্টা করে। এরই একটি ছোট্ট উদাহরণ হল: হ্যাকারেরা আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক করতে একটি ফিশিং লিংক তৈরি করেন এবং যখনই আপনি সেই লিংকে প্রবেশ করেন তখনই আপনি ফেসবুক ভেবে সেখানে লগইন করেন আর আপনার ফেসবুক আইডির তথ্য আইডি পাসওয়ার্ড চলে যায় হ্যাকারের কাছে।
কিন্তু আপনি যদি আপনার ফোনের ব্রাউজার আপডেট রাখেন তাহলে আপডেটেড ব্রাউজারে কিছু সেফটি সিস্টেম এড করা থাকে যেগুলো এই লিংকে ডিটেক্ট করে এবং আপনার ব্রাউজারে সেই লিংক খোলা থেকে বাধা গ্রস্থ করে।
এছাড়াও অনেক সফটওয়্যার আছে যেগুলোতে ম্যালওয়্যার ইন্সটল করা থাকে যেগুলো আপনার ফোনের ডাটা চুরি করে তো এমন ক্ষেত্রে যদি আপনার ফোন আপডেট করা থাকে তাহলে আপনার ফোনে সেই ম্যালওয়্যার ডিটেক্ট করার এবং সেটিকে আটকানোর ক্ষমতা থাকে ফলে আপনার গোপনীয় তথ্য বা ডেটা চুরি হওয়া থেকে আপনি বেঁচে যান।
মূলত ডিভাইস কোম্পানি এবং সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো নতুন সময়ের ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার থেকে ইউজারকে বাঁচাতে তারাও তাদের ডিভাইস ও সফটওয়্যারে অ্যান্টিভাইরাস ও এন্টি ম্যালওয়্যার ইন্সটল করে দেয়। তাই, অনলাইনে আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করতে সবসময় আপনার ফোনের সফটওয়্যার এবং আপনার ফোন আপডেট রাখুন।
বর্তমান যুগে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হলো আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য যেটির প্রায় পরিমাপ করা সম্ভব নই। আর তাই সেটি চুরি করার জন্য অসাধ্য চক্ররা করছেন নানা রকম চেষ্টা। আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য তাদের কাছে ফাঁস হয়ে গেলে যেমন তাদের রয়েছে অনেক লাভ ঠিক অপর দিকে আমাদের রয়েছে সমপরিমাণ ক্ষতি।
তাই আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখা আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকের এই টিউনে আমি আপনার গোপনীয়তা রক্ষা করতে ৫ টি সেরা টিপস দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আপনারা এগুলো আপনাদের ব্যক্তিগত অনলাইন ইন্টারনেট ব্যবহার করার মেনে চলুন। তাহলে আশাকরি আপনারা আপনাদের অনলাইন গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারবেন। তো এই ছিল আজকের টিউন। আশাকরি টিউনটি আপনাদের অনেক কাজে লাগবে। দেখা হবে আমারও পরবর্তী নতুন কোনো টিউনে। ততক্ষণ ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
আমি মো মিনহাজ। শিক্ষার্থী, শের এ বাংলা সরকারি মহাবিদ্যালয়, রানীনগর, নওগাঁ, রাজশাহী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 23 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
"Welcome to TechTunes! I'm Md Minhaj, your guide to the dynamic world of technology. As an avid tech enthusiast, I'm dedicated to uncovering the latest trends, innovations, and insights in the tech realm. Through my words on TechTuness, I aim to decode intricate tech jargon, provide thoughtful analysis, and offer...