সাইবার অপরাধের শিকার? হতাশ হবেন না, জেনে নিন কী করবেন!

Level 3
শিক্ষার্থী, শের এ বাংলা সরকারি মহাবিদ্যালয়, রানীনগর, নওগাঁ, রাজশাহী

আপনি কি সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছেন? বা আপনি কি চিন্তিত যে ভবিষ্যতে যদি আপনি সাইবার অপরাধের শিকার হন তাহলে কী করবেন? বা আপনি কী জানতে চান যে ভবিষ্যতে সাইবার অপরাধের শিকার হলে কীভাবে নিজেকে রক্ষা করবেন? তাহলে আজকের এই টিউনটি আপনার জন্যই। আজকের এই টিউনে আমি আপনাকে জানাবো যে সাইবার অপরাধ কী? কীভাবে বুঝবেন যে আপনি সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছেন কী না? সাইবার অপরাধের শিকার হলে আপনার করণীয় কী? এবং আপনি কীভাবে এ থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন? সেই সম্পর্কে।

আজকের এই টিউনটি শুরু করার আগেই আমি আপনাকে জানিয়ে দিতে চাই যে আজকের এই পুরো টিউনে আমি যেই তথ্যগুলো আপনার সাথে শেয়ার করেছি সেগুলো আমি অনলাইনে অনেক রিসার্চ করার পর জেনেছি। অনলাইনে রিসার্চ করার সময় আমি কিছু আইনের লোকেদের দেওয়া সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কে পরামর্শ সম্পর্কিত ভিডিও এবং এর পাশাপাশি যারা সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছে তারা কীভাবে এ থেকে রক্ষার পেয়েছিলো সে সম্পর্কে তাদের বলা বক্তব্যগুলো শুনেছি এর পাশাপাশি অনেক আর্টিকেল পড়েছি এ বিষয়ে এবং তারপরেই আমি আপনার সাথে এ বিষয়ে শেয়ার করতে এসেছি।

তো চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে এবার চলে যাওয়া যাক মূল টিউনে এবং জেনে নেওয়া যাক যে সাইবার অপরাধ কী? কীভাবে বুঝবেন যে আপনি সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছেন কী না? এবং সাইবার অপরাধের শিকার হলে আপনি নিজেকে কীভাবে রক্ষা করবেন সে সম্পর্কে।

সাইবার অপরাধ কী?

সাইবার অপরাধ হলো এমন ধরনের অপরাধ যে অপরাধগুলো ইন্টারনেট, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা কোন ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে করা হয়। ‌ এই অপরাধের শিকার যেকোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এমনকি সরকারও হতে পারে। কয়েকটি সাইবার অপরাধের উদাহরণ হল: হ্যাকিং, অনলাইনে কাউকে হুমকি দেওয়া, শিশুদের পর্ন ভিডিও আপলোড করা বা সার্চ করা ইত্যাদি।

কীভাবে বুঝবেন যে আপনি সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছেন কী না?

আপনার কি অনলাইনে কোন অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে? আপনি কি অনলাইনে কোনোরকম হুমকির শিকার হয়েছেন? আপনার কি অনলাইনে কোনোরকম মানহানি হয়েছে? আপনার কি অনলাইনে কোন তথ্য চুরি হয়েছে? এর মধ্যে থেকে আপনার যদি একটি প্রশ্নের উত্তর ও হ্যাঁ হয় তাহলে আপনি সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছেন। যেমনটি আগেই বলেছিলাম যে সাইবার অপরাধ হলো ইন্টারনেট, কম্পিউটার সংযোগ বা কোন ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধ। আপনি যদি এরকম কোন অপরাধের শিকার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিশ্চিত হয়ে জানবে আপনি সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছেন। তো চলুন এবার জানবো যে আপনি যদি সাইবার অপরাধের শিকার হোন তাহলে কী করবেন?

সাইবার অপরাধের শিকার হলে কী করবেন?

সাইবার অপরাধ একটি মারাত্মক পর্যায়ের অপরাধ এবং এই অপরাধের শিকার হলে আমাদের অনেক কিছুই করণীয় থাকে। তাই আপনার বোঝার সুবিধার্থে চলুন সেগুলোকে স্টেপ বাই স্টেপ এবং ধীরে ধীরে বোঝা যাক। নিচে আপনি যদি সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে থাকেন তাহলে আপনার এ থেকে বাঁচতে যা যা করণীয় সেগুলো উল্লেখ করা হলো:

১. শান্ত থাকুন এবং প্রমাণ সংগ্রহ করুন

সাইবার অপরাধের শিকার হলে সর্বপ্রথম নিজেকে শান্ত রাখুন আমি জানি যে এটি করা সে অবস্থায় অনেক কঠিন হয়ে যায়। তবে, এমন অবস্থায় আপনি যদি নিজেকে শান্ত রাখতে না পারেন তাহলে আপনার অনেক বড় ভুল করে বসার সম্ভাবনা থেকে যায় এবং আপনি শান্ত না থাকলে অস্থির মেজাজে সঠিক সিদ্ধান্ত ও নিতে পারবেন না। তাই সাইবার অপরাধের শিকার হলে সর্বপ্রথম শান্ত থাকুন। এমন অবস্থায় নিজেকে শান্ত রাখতে না পারলে আপনার বড় কোন সচেতন এবং শিক্ষিত অভিভাবককে এ বিষয়ে জানান এবং তার কাছ থেকে সাপোর্ট চান। এবং আপনার সাথে যে অপরাধটি ঘটেছে সেটির প্রমাণ সংগ্রহ করুন।

আপনাকে যদি কেউ অনলাইনে কোন রকম হুমকি দিয়ে থাকে বা আপনার কোন মানহানি করে যেমন: আপনার ছবিকে খারাপ ভাবে এডিট করে আপনাকে ভয় দেখানো বা আপনার গোপন কোন জিনিস তার কাছে আছে বলে সে সেটি ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে এমন হয়ে থাকে বা আপনার যদি কোন অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গিয়ে থাকে বা যেকোনো সাইবার অপরাধ তাহলে সবার আগে সেটির প্রমাণ সংগ্রহ করুন। প্রমাণ সংগ্রহ করার জন্য সেটির স্ক্রিনশর্ট রাখুন। বা আপনার যদি কোন অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গিয়ে থাকে সেটির নোটিফিকেশন ই-মেইল বা এসএমএস সেটি সংগ্রহ করে রাখুন। সবচেয়ে ভালো হয় পুরো ঘটনাটি আপনি আপনার ফোনে স্ক্রিন রেকর্ডিং করে সেভ করে রেখে দিন।

২. শীঘ্রই কীর্তি পক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করুন

প্রমাণ সংগ্রহ করার পর সেই প্রমাণ নিয়ে শীঘ্রই কীর্তি পক্ষের কাছে সেই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করুন। অবশ্যই অভিযোগ দায়ের করার সময় সেই অভিযোগের প্রমাণ, কখন সেই ঘটনাটি ঘটেছে, কীভাবে সেই ঘটনাটি আপনি টের পেয়েছেন এক কথায় পুরো ঘটনাটি আপনি সেই অভিযোগ দায়ের করার সময় সেখানে উল্লেখ করুন। আপনি সাইবার অপরাধের অভিযোগ আপনার নিকটস্থ থানা অথবা জরুরি পরিস্থিতিতে ৯৯৯ এ কল করেও অভিযোগ করতে পারেন। আর আপনি যদি জটিল কোন পরিস্থিতিতে পড়ে যান এবং বুঝতে না পারেন যে কীভাবে কোথায় কী করবেন তাহলে আপনি এ বিষয়ে অভিজ্ঞ কোন উকিলের পরামর্শ নিন এবং সে অনুযায়ী কাজ করুন।

৩. আপনার আর্থিক লেনদেন বন্ধ করে দিন

আপনার যদি কোন আর্থিক অ্যাকাউন্ট অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে থাকে তাহলে সবার আগে আপনার সেই অ্যাকাউন্টের অফিসে কল করে আপনার অ্যাকাউন্টের সকল প্রকার লেনদেন বন্ধ করে নিন। আর্থিক অ্যাকাউন্ট বলতে: মোবাইল ব্যাংকিং যেমন: বিকাশ, নগদ, রকেট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কোন অনলাইন আর্থিক অ্যাকাউন্ট যেখানে আপনার অর্থ রয়েছে ইত্যাদি অ্যাকাউন্ট কে বুঝাননো হয়ে থাকে। তো আপনার যদি কোন আর্থিক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে থাকে তাহলে সবার আগে সেই অ্যাকাউন্টের অফিসিয়াল সাপোর্ট বা অফিসে যোগাযোগ করে আপনার সেই অ্যাকাউন্টের আর্থিক লেনদেন বন্ধ করে দিন। এতে করে হ্যাকার আপনার অ্যাকাউন্ট পেয়ে গেলেও আপনার অর্থ সে চুরি করে নিতে পারবে না।

৪. পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন

আপনি যদি কোন অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং জনিত সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে থাকেন তাহলে সর্বপ্রথম আপনার সেই অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন। তবে যদি সেই অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা সম্ভব না হয় তাহলে সেই অ্যাকাউন্টটি ফরগেট করার চেষ্টা করুন। ফরগেট করার চেষ্টাও বিফলে গেলে সেই অ্যাকাউন্টটি রিকভার করার চেষ্টা করুন। একজন অভিজ্ঞ হ্যাকার আপনার কোন অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে থাকলে সে এমন ভাবে আপনার অ্যাকাউন্টে হ্যাক করে থাকে তখন আর এই অপশনগুলো তারা আপনার অ্যাকাউন্ট ফেরত আনার কোন অপশনই থাকে না। তারপরেও আপনার কোন অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেলে সেটি নিজে থেকে ফেরত আনার সর্বপ্রথম এই চেষ্টাগুলো আপনার করা উচিত তাই আপনি হ্যাকিং জনিত কোন সাইবার অপরাধের শিকার হলে সর্বপ্রথম নিজে থেকে এ চেষ্টাগুলো করুন।

৫. ভয় পাবেন না এবং বিশ্বস্তদের কাছ থেকে সাপোর্ট নিন

আপনি সাইবার অপরাধের শিকার হলে ভয় পাবেন না। যেকোনো ব্যক্তি সাইবার অপরাধের শিকার হলে অনেক ভয় পেয়ে যায় কারণ, সেখানে তার অনেক ব্যক্তিগত তথ্য এবং অনেক কিছু লোস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এটিরই সুযোগ নিয়ে থাকেন সাইবার অপরাধকারীরা। তারা আপনাকে বারবার ভয় দেখানোর চেষ্টা করবে তাই আপনি সাইবার অপরাধের শিকার হলে ভয় পাবেন না। আপনার ভয় এড়াতে আপনার সচেতন ও বিশ্বস্তদের থেকে সাপোর্ট নিন তাদের সাথে পুরো ঘটনাটি শেয়ার করুন এবং তাদের কাছ থেকে সমর্থন চান।

শেষ কথা

আপনি সাইবার অপরাধের শিকার হলে ভয় পাবেন না মনে রাখবেন আপনি একা নন প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে থাকেন এবং তারা এই অপরাধের শিকার থেকে বেরিয়েও আসতে সক্ষম হন। বাংলাদেশ সাইবার নিরাপত্তার টিম সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছেন এবং তারা অবশ্যই আপনাকে সাহায্য করবেন। তাই আপনি সাইবার অপরাধের শিকার হলে ভয় পাবেন না এবং অবশ্যই চুপ না থেকে আপনার সাথে হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন।

Level 3

আমি মো মিনহাজ। শিক্ষার্থী, শের এ বাংলা সরকারি মহাবিদ্যালয়, রানীনগর, নওগাঁ, রাজশাহী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 23 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।

"Welcome to TechTunes! I'm Md Minhaj, your guide to the dynamic world of technology. As an avid tech enthusiast, I'm dedicated to uncovering the latest trends, innovations, and insights in the tech realm. Through my words on TechTuness, I aim to decode intricate tech jargon, provide thoughtful analysis, and offer...


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস