বর্তমান সময়ে আমাদের ব্যক্তিগত সকল গোপনীয় ডেটাই ইন্টারনেটে থাকে। ফলে আমরা যেখানে ইচ্ছা নিজেদের প্রয়োজনমতো চাইলেই সেই ডেটা এক্সেস করতে পারি। এটি যেমন আমাদের জন্য একটি বিশাল বড় সুবিধা ঠিক তেমনি এর রয়েছে কিছু অনেক বড় অসুবিধা। ভেবে দেখুন আপনার সকল ডেটা যদি কখনো হ্যাক হয়ে অন্য কারো হাতে চলে যায় তাহলে তখন আপনার অবস্থা কেমন হবে? আর সে কথাই মাথায় রেখে আজকে আমি আমার এই টিউনটি নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে অনলাইনে নিরাপদ থাকার সেরা ৭ টি উপায় নিয়ে হাজির হয়েছি।
আপনি যদি আমার শেয়ার করা অনলাইনে নিরাপদ থাকার সেরা ৭ টি উপায় ফলো করে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাহলে আমি পায় ৯৯% গ্যারান্টি দিতে পারি যে আপনি এবং আপনার গোপনীয় ডেটা ইন্টারনেটে নিরাপদ থাকবে। টিউন শুরুর আগেই আপনাকে জানিয়ে দিতে চাই যে আজকে আমি আপনার সাথে যে অনলাইনে নিরাপদ থাকার সেরা ৭ টি উপায় শেয়ার করব সেটি আমার ব্যক্তিগত অনলাইন জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে নেওয়া। আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে এই ৭ টি উপায় মেনে ইন্টারনেট ব্যবহার করি আর আমার ১২ বছর ইন্টারনেট ব্যবহার করা লাইফে কোনদিনও হ্যাকিং জনিত বা ডেটা চুরি জনিত কোন সমস্যা হয়নি। তাই আশাকরি এগুলো আপনাদের অনেক কাজে লাগবে। তো অনেক কথা বলে ফেলেছি চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক যে অনলাইনে নিরাপদ থাকার সেরা সাতটি উপায় কী কী তা।
অনলাইনে হ্যাকিং এর শিকার হওয়ার প্রথম ধাপই হয় পাসওয়ার্ড স্ট্রং ব্যবহার না করা। আপনার অনলাইন যতগুলো অ্যাকাউন্ট রয়েছে সবগুলো একাউন্টের পাসওয়ার্ড অবশ্যই স্ট্রং ব্যবহার করবেন। স্ট্রং পাসওয়ার্ড বলতে এমন পাসওয়ার্ড যে পাসওয়ার্ড গুলো কেউ আন্দাজ করতে পারে না। যে পাসওয়ার্ডে বড় হাতের অক্ষর, ছোট হাতের অক্ষর, কিছু সিম্বলিক চিহ্ন ও কিছু নাম্বার এলোমেলো করে যুক্ত করা থাকে এবং সর্বনিম্ন ১০ থেকে ১৫ টি অক্ষরের পাসওয়ার্ড হয়। এই পাসওয়ার্ড গুলো ব্যবহার করলে হ্যাকার কখনোই আপনার পাসওয়ার্ড আন্দাজ করে লগইন করতে পারবেনা।
আর কখনোই ভুলেও সহজ কোনো পাসওয়ার্ড যেগুলো আন্দাজ করা যায় বা কমন পাসওয়ার্ড যেগুলো সকলেই ব্যবহার করে এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। সহজ এবং কমন পাসওয়ার্ড বলতে এমন কিছু পাসওয়ার্ড যেগুলো সকলেই ব্যবহার করে যেমন: আপনার ফোন নম্বর, আপনার নাম, ১ থেকে ৮ পর্যন্ত সংখ্যা ইত্যাদি এই ধরনের হয়ে থাকে। এই ধরনের পাসওয়ার্ড হলে হ্যাকার সহজে আপনার একাউন্ট হ্যাক করতে পারে তাই এগুলো পাসওয়ার্ড এড়িয়ে চলুন এবং আপনার সকল অনলাইন একাউন্টে স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড এর উদাহরণ হল: (AjsjhJsh2827#$#)
শুরুতেই জেনে নেই যে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন কী? টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন হল এমন একটি সিকিউরিটি যেখানে হ্যাকার যদি আপনার একাউন্টের পাসওয়ার্ড জেনেও যায় এবং আপনার একাউন্টে আপনার পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে তারপরেও সে আপনার একাউন্টে লগইন করতে পারবে না। টু ফেক্টর অথেনটিকেশন চালু করা থাকলে যখন আপনার একাউন্টে কেউ সেটি যদি আপনিও হন আপনার বেলায়ও যখন আপনি বা অন্য কেউ আপনার একাউন্টে একাউন্টের সঠিক পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে যাবে তখন আপনার সেট করা মোবাইল নাম্বার বা ইমেইলে আরো একটি সিকিউরিটি কোড যাবে। আর সেই সিকিউরিটি কোডটি দিতে পারলেই আপনার একাউন্টে লগইন করা সম্ভব হবে। তাই অনলাইনে নিজেকে আরও নিরাপদ রাখতে অবশ্যই আপনার অনলাইন একাউন্টগুলোতে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করে নিন। আমাদের ব্যবহৃত মেইন অ্যাকাউন্ট যেমন: ফেসবুক, ইমেল এই অ্যাকাউন্টগুলোতে টু ফ্যাক্টর অথেন্টটিকেশন সিস্টেমটি রয়েছে তাই নিশ্চিন্তে এটি চালু করে নিন।
অবশ্যই আপনার ডিভাইসের যেই সফটওয়্যার গুলো রয়েছে সেগুলোর আপডেট নিয়মিত চেক করুন এবং নিয়মিত সেগুলোর সফটওয়্যার আপডেট রাখুন। কারণ, সময়ের সাথে সাথে নতুন যেই ভাইরাসগুলো এবং হ্যাকিং টেকনিকগুলো তৈরি হয় সেগুলোর বিরুদ্ধে লড়ার জন্য কোম্পানি থেকে সফটওয়্যারগুলো কেও সেভাবেই আপডেট করে প্রস্তুত করা হয়। তাই অনলাইনে নিরাপদ থাকার জন্য ডিভাইসের সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই অবশ্যই আপনার ডিভাইসের সকল সফটওয়্যার এবং আপডেট নিয়মিত আপডেট রাখুন।
বর্তমান সময়ে খুব সহজ একটি হ্যাকিং মাধ্যম হলো ফিশিং অ্যাটাক। এই আ্যটাকে হ্যাকার একটি হুবহু একাউন্ট লগইন পেজ তৈরি করে আর সেটি ভিকটিমকে সেন্ট করে। আর ভিকটিম তখন সেটিকে অরিজিনাল লগইন পেজ ভেবে তার একাউন্টের তথ্য দিয়ে লগইন করে আর লগইন করার সাথে সাথে হ্যাকার এর কাছে ভিকটিমের একাউন্টের সকল তথ্য চলে যায়। আর তারপর হ্যাকার সেই একাউন্টের লগইন ইনফরমেশন দিয়ে ভিকটিমের একাউন্টে লগইন করে এবং ভিকটিমের একাউন্টের অ্যাক্সেস পেয়ে যায়। তাই অবশ্যই কোন একাউন্টে লগইন করার সময় সাবধানে ও নিশ্চিত হয়েই অরিজিনাল লগিন পেজে লগইন করুন।
বর্তমানে আপনার ডিভাইসের তথ্য চুরি করার জন্য হ্যাকাররা বিভিন্ন রকমের ভাইরাসও ম্যালওয়্যার তৈরি করে কোন না কোন ভাবে আপনার ডিভাইসে সেটি ঢুকানোর চেষ্টা করে। তাই অবশ্যই সেগুলো থেকে রক্ষা পেতে আপনার ডিভাইসের জন্য ভালো মানের আ্যন্টিভাইরাস ও আ্যন্টি-ম্যালওয়ার সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। এবং ভেরিফাইড কোন জায়গা ছাড়া অন্য কোন জায়গা থেকে আপনার ডিভাইসে কোন সফটওয়্যার ইন্সটল দিবেন না। এর পাশাপাশি কোন রকমের ক্র্যাকিং সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন না। তাহলে আশা করা যায় আপনি হ্যাকারের এই অ্যাটাক থেকে রক্ষা পাবেন।
যদিও এটি হ্যাকিং ও ডাটা চুরি থেকে বাঁচার উপায় নয় তবে এটিও আপনাদেরকে জানিয়ে রাখা উচিত বলে এখানে আমি তা শেয়ার করলাম। আপনার মূল্যবান ডাটা যদি হ্যাকারের হাতে চলে যায় তাহলে সেটি আর ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাই অবশ্যই আপনার গুরুত্বপূর্ণ ডাটা কোন নিরাপদ জায়গায় ব্যাকআপ করে রাখুন। যেন আপনার ডাটা চুরি হয়ে গেলেও আপনি সেগুলো আপনার প্রয়োজনে নিজের হাতের নাগালে পেতে পারেন। অনলাইনের বাহিরে আপনার ডাটা ব্যাকআপ রাখতে ভালো মানের মেমোরি কার্ড ব্যবহার করতে পারেন।
দিন দিন প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে আর এরই সাথে নতুন নতুন হ্যাকিং ওর ডেটা চুরির টেকনিকও তৈরি হচ্ছে। তাই পুরনো কোন টিপস এন্ড ট্রিকস সব সময় এপ্লাই করে থাকবেন না। অনলাইনে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে খোঁজ রাখুন এবং জানুন যে নতুন কোন ধরনের হ্যাকিং ও ডাটা চুরির টেকনিক তৈরি হচ্ছে এবং তা থেকে বাঁচার উপায় কি। সেগুলো জানুন এবং সে অনুযায়ী আপনার অ্যাকাউন্টটিকে নিরাপদ রাখুন।
উপরে শেয়ার করা সবগুলো টিপস মেনে চললে আমি আশাবাদী যে আপনারা অনলাইনে ৯৯% নিশ্চয়তার সাথে আপনাদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন। তারপরেও বর্তমানে প্রযুক্তি খুব উন্নত হয়েছে তাই সেই টিপসগুলো মানার পাশাপাশি নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে নতুন কিছু জানার চেষ্টা করুন। অনলাইন নিরাপত্তা সম্পর্কে বুঝুন ও খোঁজ রাখুন নিয়মিত নিজেকে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে আপডেট রাখুন তাহলে আশা করা যায় যে আপনার অনলাইন একাউন্টগুলো নিরাপদ থাকবে। তো এই ছিল আজকের টিউনে। দেখা হবে আবারো পরবর্তী কোন টিউনে ততক্ষণ ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
আমি মো মিনহাজ। শিক্ষার্থী, শের এ বাংলা সরকারি মহাবিদ্যালয়, রানীনগর, নওগাঁ, রাজশাহী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 23 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
"Welcome to TechTunes! I'm Md Minhaj, your guide to the dynamic world of technology. As an avid tech enthusiast, I'm dedicated to uncovering the latest trends, innovations, and insights in the tech realm. Through my words on TechTuness, I aim to decode intricate tech jargon, provide thoughtful analysis, and offer...
সবগুলো টিপস মেনে চললে যে কোন ব্যক্তির অনলাইনে নিরাপদ থাকবে বলে আমি মনে করি।