আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন টেকটিউনস কমিউনিটি? আশা করছি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি। আজকে আবার হাজির হলাম আপনাদের জন্য নতুন টিউন নিয়ে। আজকে আলোচনা করব VPN নিয়ে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার, এমন কোন সার্ভিস যা ইন্টারনেটের সাথে কানেক্ট হয়ে রান হয় সেটা চলতে কিছু অতিরিক্ত ডাটার প্রয়োজন হবেই। VPN ও এর ব্যতিক্রম নয়। তো আপনার মনেও যদি প্রশ্ন থাকে VPN কি পরিমাণ ডাটা কনসিউম করে তাহলে এই টিউনটি আপনার জন্য। আমরা আজকে জানব VPN কেন এবং কীভাবে ডাটা ইউজ করে, একই সাথে আলোচনা করব কীভাবে এই ইউজেস কমানো যায়।
অবশ্যই VPN ইউজ করলে ডাটা খরচ হবে, যেহেতু এটা ইন্টারনেটে কানেক্ট থাকে। তবে আপনার VPN কতটা ডাটা ইউজ করবে এটা নির্ভর করবে VPN টি কোন এনক্রিপশন প্রোটোকল ব্যবহার করবে। সাধারণত এনক্রিপশনের জন্য ৫-১৫% এর বেশি অতিরিক্ত ডাটা ব্যবহৃত হয় না। আপনার ডাটাকে এনক্রিপ্ট করতে এবং নিরাপদে ডাটা প্রেরণ করতে এই অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহৃত হয়।
এটা হয়তো বলতে হবে না, সেলুলার ডাটা দিয়েও VPN চলে। সেলুলার ডাটা দিয়ে VPN চালাতে, VPN প্রোটোকলের উপর ভিত্তি করে আপনার অতিরিক্ত ৪% থেকে ২০% ডাটা অতিরিক্ত খরচ হবে। সুতরাং বলা যায় VPN বেশি ডাটা খরচ করে।
VPN কী পরিমাণ ডাটা ব্যবহার করবে এটা নির্ভর করবে এর কাজের উপর। আগেই বলেছি এটা মোট ইউজের ৫ থেকে ১৫ % অতিরিক্ত ইউজ বাড়াতে পারে। তবে স্বাভাবিক কাজ কর্মে এটা খুব বেশি না বা আপনার মাসিক ডাটা ইউজেস লিমিটকেও খুব বেশি প্রভাবিত করবে না।
একটা উদাহরণ দেয়া যাক, যদি আপনি প্রতি সপ্তাহে 4k ভিডিও দেখে ৩০ গিগাবাইট ডাটা খরচ করেন তাহলে VPN একটিভ করে দেখলে আপনার খরচ হবে ৩৪.৫ গিগাবাইটের মত। এটা একটা ধারণা মাত্র, কখনো আরও বেশি বা কমও ব্যবহৃত হতে পারে কারণ এটা নির্ভর করবে ব্যবহৃত প্রোটোকলের উপর৷
ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় VPN ব্যবহার করার কিছু সুবিধা আছে যেমন এটা কখনো কখনো Data Throttling রোধ করতে পারে। আপনি VPN রান করলে ISP চাইলেও আপনার অনলাইন এক্টিভিটি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না এবং Data Throttling প্রয়োগ করতে পারবে না।
ISP ভারী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ইন্টারনেটের গতি কমানোর জন্য ডেটা থ্রটলিং অবলম্বন করে। বিশেষ করে যারা ভিডিও ডাউনলোড বা অনলাইন গেম খেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যবহার করে তাদের টার্গেট করে। তো যখন ইন্টারনেট ঠিক মত কাজ করে না তখন তাদের আরও দামি প্যাক নিতে উৎসাহিত করা হয়৷
আপনি যখন VPN কানেক্ট করলে ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় VPN ব্যবহার করবেন তখন ISP আপনার আইপি এড্রেস ডিটেক্ট করতে পারবে না এবং কোন ধরনের লিমিটেশনও দিতে পারবে না।
আপনি যখন ইন্টারনেটে ব্রাউজ করেন, তখন আপনার Privacy এবং Security রক্ষার জন্য VPN ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কিছু VPN Protocols আছে যা আপনার Data Usage কমিয়ে আনে। VPN কতটা ডাটা ইউজ করবে এটা নির্ভর করবে এটি কোন ধরনের প্রোটোকল ব্যবহার করছে তার উপর। যে প্রটোকল গুলো লাইটওয়েট এনক্রিপশন ব্যবহার করে সেগুলো তুলনামূলক কম ডাটা ইউজ করে। আসুন, আমরা এমন কিছু VPN Protocols সম্পর্কে জানি যা কম Data ব্যবহার করে, এবং আপনাকে নিরাপদ রাখে।
PPTP হল এমন এক VPN Protocol যা অধিকাংশ Operating Systems এ সহজেই কাজ করে। এটি Low Overhead এবং দ্রুত Connection Speeds এর জন্য পরিচিত। আপনি যখন PPTP ব্যবহার করবেন, তখন আপনার Data Usage খুব কম হবে। কিন্তু একটা সমস্যা আছে - PPTP এর Encryption দুর্বল। এটি সাধারণ ব্রাউজিং এর জন্য ভালো হলেও, Sensitive Data আদান-প্রদানের জন্য উপযুক্ত নয়। যেমন Bank Transactions এর জন্য আরেকটু নিরাপদ কিছু প্রয়োজন হয়।
L2TP/IPSec হচ্ছে দুটি প্রোটোকলের কম্বিনেশন যা শক্তিশালী এনক্রিপশন ব্যবহার করে এবং এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত হয়। এটি PPTP, এর তুলনায় তুলনামূলক বেশি ডাটা ব্যবহার করলেও ভাল সিকিউরিটি এবং প্রাইভেসি প্রোটেকশন দেয়৷
WireGuard একটি মডার্ন VPN প্রোটোকল যা মডার্ন এবং হাই পারফরম্যান্স ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে যা বেশ এফিসিয়েন্ট এবং সিকিউর। এটি অন্যান্য প্রোটোকল এর চেয়ে ভাল পারফরম্যান্স দেয়।
আপনারা যখন ইন্টারনেটে নিরাপদ থাকতে চান, তখন আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক VPN protocol নির্বাচন করুন। এতে করে আপনি পাবেন একদিকে নিরাপত্তা, আরেকদিকে কম Data Usage এর সুবিধা। নিরাপদে থাকুন।
আপনি যখন কোন VPN সার্ভিস সিলেক্ট করবেন তখন সেখানে কোন প্রোটোকল ব্যবহার হবে সেটা আগে থেকে জেনে নেয়া উচিৎ। সেক্ষেত্রে এর সিকিউরিটি, স্পিড, এবং ডাটা ইউজ জেনে নিতে হবে। কোন VPN নিজেদের সুপার ফাস্ট দাবী করে বিজ্ঞাপণ দিলেই সেটা নেয়া যাবে না, কারণ সেখানে দুর্বল এনক্রিপশন ব্যবহার করা হতে পারে যা আপনার ডাটাকে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে।
এনক্রিপশন প্রোটোকল কতটা শক্তিশালী তা পরিমাপ করা হয় বিট নাম্বার দিয়ে। বিট নাম্বার যত বেশি হবে এনক্রিপশন তত শক্তিশালী হবে।
128-bit PPTP প্রোটোকল কম ডাটা ব্যবহার করে কিন্তু এর সিকিউরিটি লেভেল লো। এক্সপার্টরা এটি এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়। 256-bit এনক্রিপশন প্রোটোকল ডাটা একটু বেশি ইউজ করলেও শক্তিশালী সিকিউরিটি দিতে পারে। অনেক VPN ই এই ধরনের প্রোটোকল অফার করে যেমন PureVPN, এর OpenVPN, IKEv2, WireGuard, সব গুলো 256 bit এনক্রিপশন ব্যবহার করে।
আপনি চাইলে কিছু পন্থা অবলম্বন করে VPN এর ইউজ কমাতে পারেন যেমন,
আপনি যদি অনলাইন প্রাইভেসি নিয়ে যথেষ্ট সচেতন থাকেন তাহলে সব সময় VPN অন রাখতে পারেন তবে ডাটা ইউজ নিয়ে ভাবনা থাকলে, কখন কখন VPN ব্যবহার করবেন সেটা নির্ধারণ করতে পারেন।
আপনি বাসায় ফেসবুক স্ক্রুল করলে VPN ব্যবহার করা খুব বেশি জরুরী না তবে পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সময় অবশ্যই আপনাকে VPN ব্যবহার করতে হবে।
আপনি কখন কখন VPN ব্যবহার করবেন কখন করবেন না এটা আপনিই ঠিক করবেন। যদি প্রাইভেসি জরুরি হয় তাহলে ডাটা ইউজের দিকে খুব বেশি নজর দেয়া উচিৎ হবে না। আর ব্রডব্যান্ড যারা ব্যবহার করেন তাদের তো কোন সমস্যাই নাই।
তো আজকে এই পর্যন্তই, কেমন হল আজকের টিউন তা অবশ্যই টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। পরবর্তী টিউন পর্যন্ত ভাল থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
আমি সোহানুর রহমান। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 627 টি টিউন ও 200 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 118 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
কখনো কখনো প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর মত ঘটনা পুরো পৃথিবী বদলে দিতে পারে।