নতুন জেনারেশনের ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক মানেই বেশি সুবিধা ও বেশি গতির ইন্টারনেট। ওয়ান জি প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা পেয়েছিলাম মোবাইলে কথা বলার সুযোগ। টু জি আমাদের দিয়েছিল মোবাইল থেকে মেসেজ বা বার্তা পাঠানোর সুবিধা। আর থ্রি জি আসার পর আমরা মোবাইল দিয়ে প্রথমবারের মতো স্বতস্ফূর্তভাবে ইন্টারনেট চালাতে পারলাম।
আর কিছুদিন আগে ফোরজি আসার পর মোবাইলে ভিডিও কল এ কথা বলা কিংবা ইন্টারনেট এ গেইম খেলা এখন হাতের মোয়ায় পরিণত হয়েছে। যদিও গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষজন এখনো ফোরজির সুফল পুরোপুরি ভোগ করতে পারছেন না। আমাদের দেশে ফোরজি নতুন এলেও উন্নত বিশ্ব এখন উপভোগ করছে ফাইভ জি সুবিধা, যার ডাটা ট্রান্সফার স্পীড ফোরজির চেয়ে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ গুণ বেশি। আজকের ভিডিওতে আমরা কথা বলবো ফাইভ জি জিনিস টা আসলে কি, এটি কিভাবে কাজ করে, এবং ফাইভজির আবির্ভাব কিভাবে হলো তা নিয়ে।
এ কথা প্রায় সবারই জানা যে, প্রয়োজনের তগিদেই নতুন নতুন উদ্ভাবন ঘটে। প্রতিদিনই বাড়ছে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী, আর সেই সাথে বাড়ছে ইন্টারনেট ব্যবহারের চাহিদা। ইন্টারনেট অফ থিংস আবির্ভাবের ফলে এখন স্মার্টফোন ছাড়াও টিভি, রেফ্রিজারেটর, ঘড়ি, বাল্ব, হোম অ্যাসিস্ট্যান্ট ইত্যাদি পণ্য ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হচ্ছে। ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারের চাহিদা দিন দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্রমবর্ধমান এই চাহিদা মেটাতে গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরেই চাচ্ছিলেন ডাটা বা তথ্য আদান প্রদানের জন্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য।
আর এ লক্ষ্যেই বিশ্বের বহু গবেষকের দীর্ঘদিনের গবেষণার ফলে উদ্ভাবিত হয় পঞ্চম প্রজন্মের টেলিকমিউনিকেশন প্রযুক্তি যা ফাইভ জি নামে পরিচিত। বলে রাখা ভালো ফাইভ জি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে, চীন, কোরিয়া, আমেরিকা, কানাডা, ফিনল্যান্ড ও জার্মানিতে ফাইভ জি সেবা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে।
ফাইভ জি হলো এক যুগান্তকারী প্রযুক্তি যার ছোঁয়ায় আমাদের জীবনধারায় আমূল পরিবর্তন আসবে। এটি ফোর জির চেয়ে এক হাজার গুণেরও বেশি ডাটা ট্রান্সফার করতে সক্ষম হবে। আর এর ডাটা ট্রান্সফার স্পীড হবে ফোর জির চেয়ে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০ গুণ বেশি। ভাবুন তো কেমন লাগবে যখন আপনি এক সেকেন্ডেই একটি এইচডি মুভি ডাউনলোড করে ফেলতে পারবেন। ফাইভ জির ফলে সম্ভব হবে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি, চালকবিহীন গাড়ি, ইন্টারনেট অফ থিংস ও আরও অনেক অভিনব প্রযুক্তি যা কিনা আমরা এখন কল্পনাও করতে পারি না। আপনি হয়তো এতক্ষনে ক্ষেপে গিয়ে বলছেন, আচ্ছা ফাইভ জির এত গুণগান করছেন, কিন্তু ফাইভ জি জিনিসটা আসলে কি সেটাই তো বললেন না এখনও!
ফাইভ জি হলো স্বল্পদৈর্ঘ্য তরঙ্গের মাধ্যমে তারবিহীন ডাটা আদান প্রদানের সর্বশেষ প্রযুক্তি যা পাঁচটি সম্পূর্ণ নতুন ও যুগান্তকারী প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত। এ প্রযুক্তিগুলো হলো,
১. মিলিমিটার ওয়েইভ বা মিলিমিটার তরঙ্গ
২. স্মল সেল বা কাছাকাছি থাকা ক্ষুদ্রাকৃতির টাওয়ার
৩. ম্যাসিভ মাইমো বা বৃহৎ পরিধির ইনপুট-আউটপুট
৪. বীমফর্মিং বা নির্দিষ্ট দিকে তরঙ্গ নিক্ষেপণ
৫. ফুল ডুপ্লেক্স বা ব্যালেন্সড সিগনালিং সিস্টেম।
১. মিলিমিটার ওয়েইভ বা মিলিমিটার তরঙ্গ
আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, কোনকিছু একস্থান থেকে অন্যস্থানে পাঠানোর জন্য একটি মাধ্যম প্রয়োজন। যেমন আপনি যদি আপনাকে মানে আপনার শরীরকে ঘর থেকে বাজারে বা স্কুলে নিয়ে যেতে চান তাহলে আপনাকে কোন পথ বা রাস্তা ব্যবহার করতে হবে। তো এই রাস্তা হলো একটি মাধ্যম। আপনি যদি বাস দিয়ে স্কুলে যেতে চান তাহলে বাস হলো একটি মাধ্যম যা অপর আরেকটি মাধ্যম রাস্তা ব্যবহার করে আপনাকে পৌঁছে দিচ্ছে আপনার গন্তব্যস্থলে। একইভাবে আপনি যখন মোবাইল দিয়ে কাউকে কল দিতে চান কিংবা মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান তখন আপনার মোবাইল ও একটি মাধ্যম ব্যবহার করে। এই মাধ্যমের নাম তরঙ্গ মাধ্যম।
সহজ কথায় তরঙ্গ ব্যবহার করে আপনি মোবাইলের সাহায্যে কল করা কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন। আপনার মোবাইল সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সির তরঙ্গ ব্যবহার করে, সাধারণত এর ফ্রিকোয়েন্সি থাকে ছয় গিগাহার্টজের নিচে এবং এই তরঙ্গের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য আকারে অনেকটাই বড়ো ও এর পরিমাণ নির্দিষ্ট। তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সীমাবদ্ধতার কারণে মোবাইল অপারেটর কোম্পানীগুলো এই ফ্রিকোয়েন্সির তরঙ্গের সাহায্যে কেবল নির্দিষ্ট পরিমাণ ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে।
তাই যখন কোন নির্দিষ্ট স্থানে অধিক পরিমাণ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী থাকে তখন নেটওয়ার্ক সিগনাল প্রায়শই ড্রপ করে বা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং স্পীড ও কমে যায়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য গবেষকরা ভাবলো তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সীমানা বৃদ্ধি করার কথা। তাই তাঁরা পরীক্ষামূলকভাবে মিলিমিটার তরঙ্গ বা ৩০-৩০০ গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সির তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তরঙ্গ নিক্ষেপণ নিয়ে কাজ করা শুরু করলো। এই ফ্রিকোয়েন্সির তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তরঙ্গ আগে কখনো ব্যবহার করা হয়নি মোবাইল ফোনের জন্য।
তাই এটি চালু করা মানে সবার জন্য অনেক অনেক বেশি ব্যান্ডউইথ নিশ্চিত করা। কিন্তু এই ফ্রিকোয়েন্সির তরঙ্গদৈর্ঘ্যের তরঙ্গের একটি সমস্যা আছে। মিলিমিটার তরঙ্গ ভবন, গাছ, মানুষ কিংবা কোন ভারি বস্তু ভেদ করে অতিক্রম করতে পারে না। এমনকি বৃষ্টি কিংবা ঘন কুয়াশাতেও এর চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গবেষকরা উদ্ভাবন করলো দ্বিতীয় প্রযুক্তি, স্মল সেল নেটওয়ার্ক।
২. স্মল সেল নেটওয়ার্ক
বর্তমানে ব্যবহৃত তারবিহীন ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত হয়
প্রতিটি টাওয়ারের মধ্যবর্তী দূরত্ব কম থাকায় একটি টাওয়ার থেকে সিগনাল পেতে সমস্যা হলে নিকটবর্তী আরেকটি টাওয়ার থেকে সিগনাল চলে আসবে। তাই ব্যবহারকারী সবসময় পাবে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ। এই প্রযুক্তির ফলে শহরাঞ্চলের বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করবেন। কারণ শহরে দালানকোঠা বেশি আর অল্প জায়গায় বেশি মানুষ বসবাস করে। তাই বেশি বেশি টাওয়ার থাকার ফলে যখন একজন শহুরে একস্থান থেকে অন্য স্থানে যাবেন, কিংবা চলন্ত অবস্থায় থাকবেন, তখন একটি টাওয়ার অতিক্রম করার সাথে সাথেই আরেকটি টাওয়ার সিগনাল পাঠাতে শুরু করবে, ফলে শহরবাসী পাবেন সার্বক্ষনিক দ্রুতগতির নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ।
৩. ম্যাসিভ মাইমো
মাইমোর পূর্ণ রূপ হলো মাল্টিপল ইনপুট, মাল্টিপল আউটপুট। বর্তমানে ব্যবহৃত ফোরজি বেইজ স্টেশনগুলোতে অ্যান্টেনার জন্য ডজনখানেক পোর্ট থাকে, সব ধরনের ট্রাফিক সামলানোর জন্য। কিন্তু ম্যাসিভ মাইমো বেইজ স্টেশনগুলো সমর্থন করবে প্রায় শখানেক পোর্ট। এতে করে বর্তমানে ব্যবহৃত নেটওয়ার্কের চাইতে নতুন নেটওয়ার্কের ক্যপাসিটি বাড়বে ২২ গুণ বা তারও বেশি।
এ কথা অস্বীকার করা যাবে না যে ম্যাসিভ মাইমোর ও সীমাবদ্ধতা থাকবে, কিন্তু তবুও এটি পূর্বের সকল সীমাবদ্ধতাকে ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমানে ব্যবহৃত অ্যান্টেনাগুলো একই সময়ে সবদিকে সমানভাবে সিগনাল নিক্ষেপ করে, আর এতে করে একাধিক সিগনাল একটি আরেকটিকে ক্রস করার ফলে ব্যতিচার ঘটে, ফলে সংযোগে বিঘ্ন ঘটে। এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গবেষকগণ আরেকটি প্রযুক্তির সাহায্য নেবেন, বীমফর্মিং।
৪. বীমফর্মিং
বীমফর্মিং হলো অনেকটা সেলুলার সিগনালের ট্রাফিক সিগনালিং সিস্টেমের মতো। বীমফর্মিং এর সাহায্যে সবদিকে সিগনাল নিক্ষেপ করার বদলে অ্যান্টেনাগুলো কেবল যেখানে ব্যবহারকারী থাকবে সেখানেই সিগনাল পাঠাবে, অন্য কোথাও নয়। সহজ কথায় বীমফর্মিং হলো ব্যবহারকারীর কাছে সর্বোচ্চ স্পীডে ডাটা পাঠানোর সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। বীমফর্মিং এর সাহায্যে একটি নির্দিষ্ট অ্যান্টেনা কেবল সেই অ্যান্টেনার কাভারেজ এর ভেতরে থাকা ব্যবহারকারীদের কাছেই সিগনাল পাঠাবে।
যদি কোন নির্দিষ্ট ব্যবহারকারী চলন্ত অবস্থায় থাকে, তাহলে অ্যান্টেনা সেই ব্যবহারকারীকে অনুসরণ করে সিগনালের স্থান পরিবর্তন করতে থাকবে। এভাবে নির্দিষ্ট দিকে সিগনাল পাঠানোর ফলে সংযোগ বিঘ্ন ঘটা কিংবা বিচ্ছিন্ন হবার সম্ভাবনা থাকবে না। ফলে একই সময়ে একটি অ্যান্টেনা অনেক বেশি ইনপুট ও আউটপুট সিগনাল সামলাতে পারবে। ধরুন আপনি কতগুলো ভবনের মাঝে দাড়িয়ে আছেন আর আপনি একটি ফোন কল করতে চাচ্ছেন। প্রচলিত নেটওয়ার্ক ব্যবহার করলে আপনার কাভারেজের ভেতরে থাকা অ্যান্টেনাটি সবদিকে ক্রমাগত সিগনাল পাঠাতে থাকবে। ফলে সিগনালগুলো একটি আরেকটিকে ক্রস করবে, সংযোগে বিঘ্ন ঘটাবে, কেবল কিছু সিগনাল আপনার মোবাইলে পৌছুঁবে। ফলে ডাটা ট্রান্সফার ধীরগতির হবে।
কিন্তু যদি ম্যাসিভ মাইমো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তাহলে আপনার কাভারেজের ভেতরে থাকা অ্যান্টেনাসমূহ আপনার অবস্থান নির্ধারণ করে কেবল আপনার মোবাইলের দিকেই সিগনাল পাঠাবে। ফলে আপনি পাবেন নিরবচ্ছিন্ন দ্রুতগামী সংযোগ। ম্যাসিভ মাইমো বেইজ স্টেশনের অ্যান্টেনাগুলো যখন কোন ইনপুট সিগনাল গ্রহণ করে, তখন এটি সিগনাল পাঠানোর দিক ও সময় মনে রাখে। তারপর এটি সিগনাল প্রসেসিং অ্যালগরিদমের সাহায্যে চিহ্নিত করে ঠিক কোথা থেকে সিগনাল টি এসেছে, আর কিভাবেই বা সবচেয়ে দ্রুত সময়ে ব্যবহারকারীর মোবাইলে আউটপুট সিগনাল পাঠানো যায়।
অনেক সময় এটি কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কিছু ডাটা প্যাকেটের গতিপথ পরিবর্তন করে দেয়, যেন ডাটা প্যাকেটগুলো ভবন, গাছ ও বাধাপ্রদানকারী বস্তুর পাশ দিয়ে চলে যায় কিংবা একটি সিগনাল আরেকটি সিগনালকে ক্রস না করে। ফলশ্রুতিতে আপনি পাচ্ছেন রকেট গতির রিয়েলটাইম ডাটা স্ট্রিমিং, কোন ল্যাটেন্সি বা দেরী ছাড়াই। আসলে ল্যাটেন্সি আছে, কিন্তু এর পরিমাণ এতটাই কম যে নেই বললেই চলে, ১ মিলিসেকেন্ড বা তারচেয়ে কম।
৫. ফুল ডুপ্লেক্স
আপনি যদি কখনো ওয়াকি টকি ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, যোগাযোগ করার জন্য আপনাকে হয় বলতে হবে নতুবা শুনতে হবে, একই সময়ে আপনি বলতে ও শুনতে পারবেন না। আপনি যখন বলবেন, তখন অপরজন শুনবে। আবার তিনি যখন বলবেন, তখন আপনি শুনবেন। এভাবেই ওয়াকি টকি কাজ করে। আর এটা আসলেই বিরক্তিকর। বর্তমানে ব্যবহৃত বেইজ স্টেশনগুলোও ঠিক একইভাবে কাজ করে।
একটি সাধারণ অ্যান্টেনা একটি নির্দিষ্ট সময়ে কেবল একটি কাজ করতে পারে, হয় সিগনাল গ্রহণ করবে, নয়তো সিগনাল পাঠাবে। কিন্তু একই সময়ে সিগনাল গ্রহণ করতে ও পাঠাতে পারে না। এমন টা হয় ব্যতিহার বা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া নীতির ফলে। যা আসলে বেতার তরঙ্গের একই ফ্রিকোয়েন্সিতে সামনে পেছনে চলাচলের একধরণের প্রবণতা।
ধরুন একটি তরঙ্গ হলো একটি ট্রেন যার ভেতরে রয়েছে ডাটা বা তথ্য। আর যে ফ্রিকোয়েন্সিতে এটি চলাচল করবে সেটি হলো রেলপথ। ডাটা নিয়ে এই ট্রেনটি চলার সময়, সামনের দিক থেকে একই রেলপথে আরেকটি ট্রেন আসছে। এবার বলুন তো কি হবে? মুখোমুখি সংঘর্ষ। এতদিন পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান ছিল একটি ট্রেন যাওয়ার পর আরেকটি ট্রেন যাবে অথবা প্রত্যেকটি ট্রেনকে ভিন্ন ভিন্ন পথে বা ভিন্ন ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে পাঠাতে হবে।
কিন্তু এই সমস্যাটিকে ব্যতিহার এর সাহায্যে আরও কার্যকর উপায়ে সমাধান করা যায়। গবেষকগণ সিলিকন ট্রানজিস্টরের সাহায্যে উচ্চগতির সুইচ তৈরী করেছেন যা তরঙ্গ পারাপারের এই সেকেলে ব্যবস্থা থেকে মুক্তি দেবে। এটা অনেকটা সিগনাল ব্যবস্থার মতো যা ক্ষণিকের জন্য ট্রেন মানে তরঙ্গের গতিপথ বা ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন করবে, যাতে করে একাধিক তরঙ্গ কোনরকম সংঘর্ষ ছাড়াই একসাথে চলাচল করতে পারে।
প্রকৃতপক্ষে গবেষকগণ এই পাঁচটি প্রযুক্তি নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছেন ও এগুলোর উন্নয়ন এখনও চলছে, গোটা ফাইভ জি প্রযুক্তি টি এখনও পরীক্ষমান পর্যায়ে রয়েছে। এমনও হতে পারে এতে আরও নতুন নতুন প্রযুক্তি যুক্ত করা হচ্ছে। বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যেমন চায়না, দক্ষিন কোরিয়া, কাতার, জাপান, আমেরিকা, কানাডা ও ইংল্যান্ডের কিছু কিছু স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভ জি চালু করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ২৫ জুলাই হোটেল সোনারগাও য়ে অনুষ্ঠিত হয় Bangladesh 5G Summit 2018, যেখানে খ্যাতনামা চাইনিজ প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভ জি প্রযুক্তি প্রদর্শন করে। উল্লেখ্য যে এখানে সর্বোচ্চ ডাউনলোড স্পীড প্রত্যক্ষ করা হয়েছিল ৪.১৭ গিগাবিট পার সেকেন্ড। সেই দিনটি বোধকরি খুব বেশি দূরে নয় যেদিন উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও চলে আসবে স্বপ্নের ফাইভ জি নেটওয়ার্ক।
আমি তাসনুভা রায়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 9 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 16 টি টিউন ও 92 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।