সময়ের সাথে সাথে আমারদের কম্পিউটার ধির গতি সম্পূর্ণ হয়ে পড়ে। আমরা যখন একটা নতুন কম্পিউটার কিনি তখন তা যে রকম দ্রুত গতিতে কাজ করে কিন্তু কিছু দিন পর থেকে গতি কমতে থাকে।
এর কারন কি?
আমারদের কম্পিউটার কি বুড়া হয়ে যাচ্ছে না অন্য কিছু। বুড়া তো হয় কিন্তু আমারদের অযত্ন এবং সঠিক ভাবে ব্যবহার পদ্ধতি না জানার কারণে যুবক কম্পিউটারও বুড়া কম্পিউটার এর মত কাজ করে এবং এই ভাবে চলতে থাকলে খুব তারাতারি মারাও যেতে পারে। তাই কম্পিউটার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি আমাদের জানতে হবে।
আজকে আমি আলোচনা করবো আমাদের কম্পিউটার স্লো (ধির গতি) হওয়ার সাধারণকিছু কারণ নিয়ে।
আপনার কম্পিউটারের ঠান্ডা করণ প্রক্রিয়া যদি সঠিক ভাবে কাজ না করে তবে কম্পিউটার স্লো হতে পারে। আমাদের কম্পিউটারে কুলিং ফ্যান লাগানো থাকে কম্পিউটাকে ঠাণ্ডা করার জন্য। অমরা অনেকে একটা ভুল করে থাকি, আমি নিজেও এই কাজটা করেছি একসময় (প্রথম যখন কম্পিউটার কিনি) সি.পি.ইউ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখি, ঢেকে রাখলে আপনার সি.পি.ইউ এর ওপর ধুলা পরবে না কিন্তু তার মাঝে বাতাসও প্রবেশ করবে না। ভলো ভাবে খেয়াল করে দেখবেন সি.পি.ইউ এ বাতাস চলাচলের জন্য ছোট ছোট ছিদ্র করা আছে, কম্পিউটার অন থাকা অবস্থায় কখনও সি.পি.ইউ ঢেকে রাখবেন না।
আর চিপা-চাপার মাঝে সি.পি.ইউ রাখবেন না, সি.পি.ইউ এর সামনে, পিছনে এবং দুই পাশে কিছু জায়গা ফাঁকা রাখবেন।
ধুলা-বালি যেকোনো ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের বড় শত্রু। অতিরিক্ত ধুলা জমলে কুলিং ফ্যান গুলো ঠিক মত কাজ করবে না, ফলে আপনের কম্পিউটারের কাজ করাও ক্ষমতা কমে যাবে এবং স্লো কাজ করবে। প্রতি ৬মাসে কমপক্ষে একবার কম্পিউটার পরিষ্কার করা উচিৎ।
(বিঃদ্রঃ পরিষ্কার করার জন্য অবশ্যই ব্লোয়ার/ ভাকুয়ম ক্লিনার ব্যবহার করবেন। )
আপনি যদি ব্রাউজারে অনেক গুলা ট্যাব ওপেন করে রাখেন তবে প্রতিটি ট্যাব র্যাম ব্যবহার করবে, অনেক বেশি ট্যাব ওপেন থাকলে আপনের র্যামের পুরটায় ব্রাউজার ব্যবহার করবেন এবং কম্পিটার স্লো হবে। আমি অনেক কে দেখেছি ৩০-৫০ টা পর্যন্ত ট্যাব ওপেন রাখে, যে ট্যাব ওপেন করে ঐটা আর বন্ধ করে না, ফলে ট্যাব জমা হতে হতে ৩০টা, ৪০টা, ৫০টা +. পর্যন্ত হয়ে যায়, যার ফল স্বরূপ কম্পিউটার স্লো হয়ে যায়। আপনারও যদি এমন অভ্যাস থাকে তবে টা পরিহার করুন অথবা র্যাম পরিমান বাড়ানো লাগবে.
আর ব্রাউজারে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি এড -অন ইন্সটল করবেন না। এতে আপনার কম্পিউটার স্লো কাজ করবে।
আমারা অনেকে এই কাজটা করে থাকি প্রয়োজন ছাড়া অনেক সফটওয়্যার ইন্সটল করি। আমার যখন কোন সফটওয়্যার ইন্সটল করি তখন তা আমাদের প্রায়মারি (সি)ড্রাইভে কিছুটা স্পেস (জায়গা) দখল করে, এখন আপনি যদি প্রচুর সফটওয়্যার ইন্সটল করেন তবে প্রায়মারি ড্রাইভের জায়গা খুব তারাতারি শেষ হয়ে যাবে। আর তখন নতুন কিছু ইন্সটল করতে পারবেন না এবং আপনের কম্পিউটারও স্লো হয়ে যাবে।
আর সব চেয়ে খারাপ হয় তো তখন, যখন কোন প্রোগ্রাম startup এ চালু হয় অর্থাৎ আমরা কম্পিউটার চালু হওয়ার সাথে সাথে যখন প্রোগ্রাম চালু হয়। আপনাকে কোন সফটওয়্যার ইন্সটল করার সময় খেয়াল রাখতে হবে sratup এ চালু হওয়ার অনুমতি চাচ্ছে কিনা এবং কোন সফটওয়্যার startup এ চালু হলে সেটা বন্ধ করতে হবে।
ভরসাযোগ্য অথবা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ছাড়া সফটওয়্যার ডাউনলোড করবেন না। আপনি যখন ভরসাযোগ্য অথবা অফিসিয়াল ছাড়া অন্যান্য ওয়েবসাইট থেকে সফটওয়্যার ডাউনলোড করে ইন্সটল করবেন তখন ওই সফটওয়্যার সাথে সাথে আরো অনেক রকম সফটওয়্যার, টুলবার ইত্যাদি ইন্সটল হয়। ফলে আপনের কম্পিউটার তো স্লো হবেই সাথে সাথে আপনের বিভিন্ন তথ্য চুরিও করতে পারে। তাই এই বিষয়ে সাবধান থাকবেন।
সময়ের সাথে সাথে আমাদের হার্ডডিস্ক (HDD) স্লো হয়ে যায়। হার্ডডিস্ক স্লও হলে আমদের কম্পিউটারও স্লো হবে এটাই স্বাভাবিক। এই সমস্যা একটা চমৎকার সমাধান হল হার্ডডিস্ক এর পাশাপাশি একটা SSD(Solid-state drive) ব্যবহার করা। আপনি ২৩০০-২৫০০ টাকার মাঝে ১২০গিগা-বাইট SSD পেয়ে যাবেন। SSD ব্যবহার করলে আপনের পুরনো ল্যাপটপও আগের থেকে দ্রুত কাজ করবে।
এছারাও আরও অনেক কারণে কম্পিউটার স্লো হতে পারে। সেই কারণ গুলো নিয়ে অন্য একদিন আলোচনা করবো।
আমি তৌফিক হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 3 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।