কম্পিউটার ভাইরাস এবং এর শ্রেণিবিভাগ

আমার প্রথম টিউনে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

আজকে আমি আপনাদের সাথে কম্পিউটার ভাইরাস নিয়ে আলোচনা করব।কম্পিউটার ভাইরাস কী?এটা মূলত একধরনের কোড বা কোড করা প্রোগ্রাম যা  কম্পিউটারের ক্ষতি সাধন করে।ভাইরাস সম্পর্কে তো আমরা কম বেশি সবাই জানি,অনেকে ক্ষতির সম্মুখিনও হয়েছি,কিন্তু ভাইরাসের ক্যাটাগরি বা শ্রেণিবিভাগ সম্পর্কে সঠিকভাবে কয়জনই বা বলতে পারি?আমি আজকে আমার টিউনে এই সম্পর্কে বলব।

Boot Sector Viruses :

যখন আমরা আমাদের কম্পিউটার স্টার্ট দেই তখন কম্পিউটারের বুট ডিস্কের একটি কোড লোড হয়।এই কোডই অপারেটিং সিস্টেম লোড করে এবং যখন এই লোডিং প্রসেস শেষ হয় তখনই আমরা কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারি।এই কোডকে বলা হয় বুট সেক্টর।যেসব ভাইরাস এই বুট সেক্টর কে আক্রমণ করে তাদের বলে boot sector virus.এই ভাইরাস গুলো যখনই কম্পিউটার স্টার্ট করা হয় তখনই লোড হয় এবং অপারেটিং সিস্টেম চালু হতে দেয় না।এখনকার দিনে এসব ভাইরাস খুব কম দেখা যায়,কারন তাদের ক্ষমতা কম এবং এই যুগের প্রযুক্তির সাথে পাল্লা দিয়ে উঠতে পারে না।তবুও এটি ভাইরাস ইতিহাসের অংশ।

Program/File Infector :

এটি একধরনের প্রোগ্রাম বা ফাইল যা কম্পিউটারের .com, .exe, .bat, .pif, .sys এরকম এক্সটেনশনের প্রোগাম কে আক্রমণ করে।ভাইরাস বহন কারী প্রোগ্রাম চলার সাথে সাথে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে।যাহোক,নানা ধরনের এন্টিভাইরাসের কারনে এখন এই ভাইরাস আর তেমন বিশাল পরিসরে ছড়িয়ে পড়তে পারে না।

The horse of Troy:

এটি ট্রোজান হর্স নামে পরিচিত।ট্রয় নগরী ও গ্রিকদের মধ্যে তখন যুদ্ধ চলছিল।ট্রয় নগরী ছিল একটি শক্তিশালী দুর্গের মতো যার কারণে গ্রিকরা প্রবেশ এবং দখলের পন্থা খুজে পাচ্ছিল না।তারা তখন একটি কৌশল বের করল।তারা আত্মসমর্পনের ভান করল এবং একটি বড়সড় কাঠের ঘোড়া রেখে গেল।তখন ট্রয় বাসীরা (যাদের ট্রোজান বলে) সেই ঘোড়াটিকে তাদের নগরের ভিতরে আনল। ওই দিন রাতে গ্রিকরা সেই কাঠের ঘোড়া থেকে বেরিয়ে এলো এবং ট্রয় নগরী দখল করে নিলো।

ট্রোজান ভাইরাস এই কৌশল টা ব্যবহার করে।ট্রোজান ভাইরাস অন্য ভাইরাস থেকে আলাদা কারণ এটি সংক্রমিত হয় না।কোনো একটি প্রোগ্রাম (যেটার মধ্যে ট্রোজান ভাইরাস আছে)চালালে ট্রোজান ভাইরাস কম্পিউটারে ঢুকে পড়ে।তখন ট্রোজান প্রোগ্রামার তার ট্রোজান প্রোগামটি ব্যবহার করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি যেমন ক্রেডিট কার্ড নম্বর,পাসওয়ার্ড ইত্যাদি চুরি করতে থাকে,এবং প্রয়োজন হলে নষ্টও করে ফেলে।

ট্রোজানের এই কার্যপদ্ধতি ছাড়াও আরো কিছু ধরণের ট্রোজান আছে,যেমন- Backdoor Trojan –এটি ইনস্টল হওয়ার পর হ্যাকারদের জন্য একটি পিছনের রাস্তা খুলে দেয়,যার মাধ্যমে হ্যাকাররা কম্পিউটার কে দূর থেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে।
Adware and spyware – এই ট্রোজান গুলো ব্যবহার কারীদের নানা রকম যন্ত্রণা সৃষ্টি করে।ব্রাউজারে ডিফল্ট হোমপেজ পাল্টে দেয়,প্রচুর পপ আপ দেখায়,অপ্রত্যাশিত সার্চ দেয় ইত্যাদি।এই গুলো তখনই কম্পিউটারে ঢুকে যখন ব্যবহারকারী অসচেতন ভাবে বিভিন্ন লাইসেন্স বিহীন,অপ্রত্যাশিত সাইটে প্রবেশ করেন।

Worm :

এই ভাইরাসের সব থেকে দ্রুত ও কার্যকারি ভাবে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রয়েছে।সিম্পল ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার কৌশল এবং ট্রোজানের নিরবে ক্ষতি করার কৌশলের সমন্বয়ে এটি তৈরি। এই ক্ষমতা এই ভাইরাস গুলোকে বিশাল অস্ত্রে পরিণত করেছে।দুটি ওর্মের উদাহরন হলো-“মেলিসা” ও “লাভ লেটার” যেগুলো নানা ধরনের সার্ভারের ক্ষতি করেছিল এবং ইন্টারনেট লাইন বন্ধ করে দিয়েছিল।মিলিয়ন মিলিয়ন কম্পিউটার কে জম্বি কম্পিউটারে পরিণত করেছিল।

অনেকে মনে করবেন আমি ম্যালওয়ারের কথা লিখলাম না কেন;ম্যালওয়ার আর ভাইরাস এক জিনিস না। এটি নানা ধরণের ভাইরাসের মিলিত এক রূপ যা কম্পিউটারের ক্ষতি সাধন করে। যাহোক,আজ এই পর্যন্তই।

সবাই ভালো থাকবেন, ধন্যবাদ। 🙂  🙂

Level 0

আমি সন্দীপন সরকার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 3 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

কেমন লাগল তা টিউমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন,খারাপ হলে ভদ্র ভাষায় সমালোচনা গ্রহণযোগ্য

মাত্র দুইটা ভাইরাস ।

Level 0

Ransomware এর কথা কিছু বল্লেন না

    Ransomware, backdoor Trojan এর মধ্যে পড়ে।এই ট্রোজান ransom বা মুক্তিপণ চায় বলে এর নাম ransomware.