السلام عليكم আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি সাইটের সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা। আজকের যে টিউনটি করতে যাচ্ছি তা অনেকটা টেক ফিকশন ধরনের। তার মানেটা হল আগামীতে বিশ্ব প্রযুক্তি সম্পর্কে আমার আপনার ধারনা কতটুকু! কি রকম বিশ্লেষনতা রয়েছে এবং তাতে কি ধরনের প্রযুক্তি আপডেট হতে পারে। যাইহোক আজকের টেক রিভিউটা হচ্ছে ওয়েব অপারেটিং সম্পর্কে যাহা টিউনের শিরোনামে উল্লেখ করেছি। এবার মূল আলোচনাতে যাওয়া যাক-
বর্তমানে আমরা প্রযুক্তির কল্যানে বিশেষত কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট কাজের দিক হইতে বিভিন্ন রকম অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করছি তথারুপ উইন্ডোজ, লিনাক্স, উবুন্টু, ম্যাক, ইউনিক্স অপারেটিং ইত্যাদি। বিশেষত এই সিস্টেমগুলো আপনার কম্পিউটারের হার্ডড্রাইভ কিংবা অন্য কোন মেমোরি কার্ডে সংরক্ষিত থাকে। যেখান হইতে অপারেটিং চালু হয় এবং যাবতীয় কাজ গুলো করতে পারি। এবং যা কিছু সেইভ করি তাহা হার্ডড্রাইভেই সংরক্ষণ হয়। কিন্তু হার্ড ড্রাইভ থেকে যদি কোন অপারেটিং সিস্টেম গায়েব কিংবা ক্রাশ হয়ে যায় তাহলে কিন্তু পিসি আর সচল হয় না। যাইহোক ওয়েব অপারেটিং টাও একই রকম হবে কাজের দিক দিয়ে কিন্তু সংরক্ষনের দিক হইতে আলাদা।
- অনেকেই হয়ত ভাবছেন ওরে বাপরে! এটা আবার কি ধরনের বিষয়রে!! যাইহোক এই সম্পর্কে আমি আপানাদেরকে এই বিষয় নিয়ে ধারনা দিব।
ওয়েব অপারেটিং সিস্টেমের দুনিয়াটা কেমন হবে?
সেদিন খুব বেশী দুরে নেই। যেদিন এই অপারেটিং সিস্টেম আসবে। অদ্য যেমন পরস্পর সম্পর্কহনি হাজার হাজার ওয়েব সাইটের সমন্বয়ে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব, তখন আর তেমন থাকবেনা। তখন ওয়েব অনেকটা কাজ করবে অপারেটিং সিস্টেমের মত। আর সেই ওয়েব অপারেটিং সিস্টেম এর বদৌলতে শত শত ওয়েব এপ্লিকেশন একটি আরেকটির সাথে যোগাযোগ এবং তথ্য আদান প্রদান করবে। আপনাকে তখন ওয়েবের বিভিন্ন সেবা ও এপ্লিকেশন ব্যবহারের জন্য বিন্ধন বা সাইন-আপ করতে হবে এবং এক সাইট হতে আরেক সাইটে নিজের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ডাটাকে খুব সহজেই ব্যাকআপ করতে পারবেন। এর মধ্য কিন্তু অসংখ্যক কম্পিউটার ব্যবহারকারী ওয়েব অপারেটিং সিস্টেম ভূবনে প্রবেশ করেছেন। তবে এখনও পুরোমাত্রায় ওয়েব ভিত্তিক এপ্লিকেশন এর উপর নির্ভরশীল হতে পারেননি তারা।
তারপরও ব্রাউজারে নিজের পচ্ছন্দমত (কাষ্টমাইজইড) একাধিক ট্যাব ব্যবহার করা OAuth এবং OpenID এর মত উদীয়মান স্টান্ডার্ড ব্যবহার করার মাধ্যমে ওয়েব ওএস ব্যবহারের দিকে যাত্রা শুরু করেছেন এসব অগ্রসর ইউজার।ওয়েব ওএস এর ধারনাটা যে একবারেই নতুন তা নয়। ২০০৬ সালে YouOS প্রথম ওয়েব এপ্লিকেশনের জন্য একটি প্লাটফর্ম প্রদান করে, কিন্তু তখন সফটওয়্যার ডেভেলপাররা এটার জন্য ভাল কোন এপ্লিকেশন তৈরি করে উঠতে পারেননি।বর্তমানে OAuth এবং OpenID, OpenSocial এর মত উদ্যোগ এদিকে প্রয়োজনীয় মনোযোগ দিচ্ছে। ফলে ওয়েব অপারেটিং সিস্টেমের সফলতা সম্পর্কেও নতুন আশা জাগছে। এসব উদ্যোগের মূল কথাই হচ্ছে অনলাইনে কম্পিউটার ব্যবহারকে আরো গতিময়, সহজ করে তোলা। গুগল এর লিনাক্স ভিত্তিক ক্রোম অপারেটিং সিস্টেমকেও নেটবুক এবং ডেস্কটপ উভয় ক্ষেত্রেই সমানভাবে কার্যকর করে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বর্তমানে “যুত ওয়েব” ওএস এর উদ্যোগ
বর্তমানে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান এবং ওপেন সোর্স প্রকল্পের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ ওয়েব অপারেটিং সিস্টেম গড়ে তোলার জন্য যেখানে কোটি কোটি ব্যবহারকারী তাদের উপাত্তকে সংরক্ষণ করে রাখতে এবং তাদের প্রিয় ওয়েব সাইটে অ্যাকসেস নিতে পারবে। এই গুলোর মধ্য নিচের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হিসাবে রিভিউ করা হলঃ
এটিতে আছে অনেকগুলো বিল্টইন অ্যাপ্লিকেশনস যেগুলো আমরা ম্রাক ওএসএক্স বা উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম পাই, যেমন ক্যালকুলেটর, মিডিয়া প্লেয়ার, ক্যালেন্ডার এবং এমএস অফিসের মাত বেসিক প্রডাক্টিভিটি স্যুইট। আপনি এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক সেটিং পরিবর্তন করতে, গেম খেলতে এবং থার্ড পার্টি ইউটিলিটি একসেস করতে পারবেন। EyeOS ওয়েব সার্ভারে ইনস্টল করা যায়, আবার চাইলে পাবলিক সার্ভারে র মাধ্যমে ও ইটকে একসেস করা যাবে।
ডেস্কটপ ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমকে ওয়েবে স্থানান্তর করার কয়েুকটি মডেলের মধ্য এটি একটি। এই অপারেটিং সিস্টেমে আছে অনেকগুলো উইগেট এর একটি সাইড বার, একটি বিল্ট ইন ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং ক্লায়েন্ট এবং একটি কমান্ড লাইন প্রম্পট।একটি বেসিক প্রোডাক্টিভিটি স্যুইট, ক্লাউডভিত্তিক ফাইল স্টোরেজ এবং উইন্ডোজ এক্সপি ধরনের ইন্টারফেস সমৃদ্ধ আই ক্লাউড ওয়েব ওএস হিসাবে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে।
এই ওয়েব ওএস এর মুল টার্গেট হচ্ছে সোস্যাল নেটওয়াকিং এর চাহিদা মেটানো। বিল্ট ইন টু্ইটার ফিড, সাম্প্রতিক সব ব্লগ ট্যাকিং করার জন্য আরএসএস এবং অন্যান্য ওয়েব অপারেটিং সিস্টেমের সাথে মিউজিক ও ডকুমেন্ট শেয়ারিং সামর্থ্য এই অপারেটিং সিস্টেমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
স্লাকো ওয়েব ওএস এর মুল টার্গেট হচ্ছে সোস্যাল নেটওয়াকিং সহ মাল্টিমিডিয়ার চাহিদা মেটানো। যেখানে ওয়াইফাই হিসাবে ওস এস সহ বিল্টইন ডিশ লাইন কাজ করবে ফলে পৃথিবীর সকল দেশের টিভি চ্যানেল দেখা যাবে। এখানে বিল্ট ইন টু্ইটার ফিড, সাম্প্রতিক সব ব্লগ ট্যাকিং করার জন্য আরএসএস এবং অন্যান্য ওয়েব অপারেটিং সিস্টেমের সাথে মিউজিক ও ডকুমেন্ট শেয়ারিং সামর্থ্য এই অপারেটিং সিস্টেমের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। অবশ্য এই সিস্টেমটি ট্রায়ালভাবে কাজ চলছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ান ভিত্তিক প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞগণ আপগ্রেটেড করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন।
- উপরোক্ত ওয়েব অপারেটিং ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ট্রায়ালভাবে কাজ করছে সেইগুলো হলঃ Unix Web OS, Glide OS, Palm Web OS, Solaris OS ইত্যাদি।
ওয়েব অপারেটিং সিস্টেমগুলো কিভাবে পরিচালিত হবে?
উপরোক্ত আলোচনা অনুযায়ী বেশ কয়েকটি ওয়েব ওস সম্পর্কে সম্যক ধারনা পাইলাম। এবার অনেকেই অভিযোগ করবেন তাহলে ওয়েব ওস গুলো কিভাবে পরিচালিত হবে? হ্যা আসলেই বিস্ময়কর! আসলে যতগুলো ওয়েব ওস তৈরি হচ্ছে কিংবা ট্রায়ালভাবে ব্যবহৃত তার অধিকাংশই লিনাক্স কিংবা ইউনিক্স কার্নেল নির্ভর। যাতে বিশ্বের যে কোন প্রান্ত হইতে নিজেরা আধুনিক ডেভেলপটা মডিফাই করতে পারেন। অপরদিকে ওয়েব সার্ভার গুলো অনেকটা হোস্টিং সার্ভারের মত ব্যবহৃত হচ্ছে যেখানে ‘ওএস’ ইনস্টল করা আছে। এবং পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুকের মতই সম্ভাবত সবাই লগইন করতে পারবেন এবং একই ইন্টারফেস দেখতে পারবেন। নিজের পিসিতে ‘ওএস’ এর মতই এই সকল ‘ওএস’ দ্বারা যাবতীয় কাজ করা যাবে। এই সেবাগুলো ট্রায়াল হিসাবে ১ম দিকে ফ্রি হলেও পরবর্তীতে হয়ত মাসিক কিংবা বাৎসরিক প্যাকেজ হিসাবে চার্জ আওতাভূক্ত হতে পারে। তথাপি ভবিষ্য পরিকল্পনা চলছে ওয়েব সার্ভারগুলোকে কোন রকম মহাকাশে স্থাপন করা কিংবা ব্যবহারের সুযোগ হবে কিনা!
সারকথা
আজ আমরা যখন ওয়েব ব্যবহার করি তখন কিন্তু প্রতিটি সাইটে পৃথক পৃথকভাবেই প্রবেশ করি এবং এক সাইট হইতে অন্য সাইটে ডাটা আদান প্রদান করতে গেলে করিই না।কাজেই ওয়েবের কর্ম প্রকৃতি আজ থেকে এক দশক আগে যেমন ছিল এখনও বলতে গেলে তেমনটাই আছে। কিন্তু ওয়েব ওএসর প্রভাবে এ সবই পুরোপুরি বদলে যাবে। তখন আমরা বিভিন্ন অনলাইন এপ্লিকেশন ব্যবহার করবঠিক যেমনভঅবে ডেস্কটপ ভিত্তিক সফটওয়্যারগুলো ব্যবহার করি ঠিক সেভাবে। তখন এক সাইট হইতে অন্য সাইট চলমান বিভিন্ন এপ্লিকেশন এর মধ্য নিরবচ্ছিন্নভাবে উপাত্ত স্থানান্তর এবং বিনিময় করা যাবে। ওয়েবের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন নিয়মকানুনও হবে অনেক শক্তিশালী। প্রযুক্তির উত্তরাত্তোর উন্নতির কারনে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ওয়েব ওএস এর ভূবনে আমরা অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি দেখতে পারব বলে আশা রাখি।
টেক রিভিউ সম্পর্কিত আমার অন্যান্য টিউনগুলো দেখতে পারেন, হয়ত কাজে আসতে পারে:
বিশেষ প্রয়োজনে আমাকে নক করতে পারেন
thx