গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ছাড়া লাইফ কল্পনা করা অসম্ভব। জীবনের প্রয়োজনে আমরা আমাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদেরকেও মোবাইল, কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দিচ্ছি। কিন্তু সেই ব্যবহার নিরাপদ তো?
ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে পুরো পৃথিবীটাকে আমরা হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে পারছি। কিন্তু মনে রাখতে হবে, এই পৃথিবীর ভিতরে ভাল-মন্দ দুটোই আছে। সুতরাং পুরো পৃথিবীটাকে হাতের মুঠোয় আনতে গিয়ে আপনার সন্তান খারাপ বিষয়গুলোকে হাতের মুঠোয় নিয়ে আসছে না তো? মোবাইল, কম্পিউটার, স্মার্টফোন কিংবা ইন্টারনেটের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার সন্তান ভুল পথে চলছে না তো? হতেও পারে! আবার নাও হতে পারে।
তাহলে কি আপনার সন্তানকে সঠিক পথে রাখতে মোবাইল, কম্পিউটার, স্মার্টফোন কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দিবেন না? গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে এটা একেবারেই অসম্ভব। লেখা-পড়ার প্রয়োজনেই হোক, কিংবা বাহ্যিক জ্ঞান অর্জনের জন্য। কম্পিউটার, স্মার্টফোন কিংবা ইন্টারনেট আপনাকে ব্যবহার করতে দিতেই হবে। নয়তো সময়ের সাথে, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আপনার সন্তান চলতে পারবে না। অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়বেই।
তাহলে খারাপ পথে ধাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে কিভাবে এইসব প্রযুক্তি আপনার সন্তানকে ব্যবহার করতে দিবেন? প্রশ্নটা জটিল, তার উত্তর আরও জটিল। মানুষকে অনেক নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ভাল পথে আনতে হয়, কিন্তু খারাপ পথে মানুষ আপনা থেকেই চলে যায়। কারণ শয়তান সবসময় মানুষকে খারাপ পথে নিয়ে যাওয়ার কার্যক্রম ননষ্টপ চালিয়ে যায়।
তাহলে কিভাবে আপনার সন্তানকে কম্পিউটার, স্মার্টফোন কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে দিবেন, যাতে সে ভুল পথে পা না বাড়ায়? কিছু উত্তর খুঁজে নিই-
১) যখন আপনার সন্তান কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার করছে তখন, যতক্ষণ প্রয়োজন আপনার সামনেই তাকে সেটি ব্যবহার করতে বলুন। এমনকি তার কম্পিউটার বা ল্যাপটপের স্ক্রীন আপনি যেন দেখতে পান, এমনভাবে বসতে দিন।
২) সন্তানের কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার শেষে, কম্পিউটারের ও ইন্টারনেট ব্রাউজারের হিষ্টরি চেক করুন। হিষ্টরি যেন মুছে না ফেলে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
৩) স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়মিত স্মার্টফোনের ইন্টারনেট ব্রাউজারের হিষ্টরি চেক করুন। যদি সে হিষ্টরি মুছে ফেলে তবে তার জন্য তাকে সতর্ক করুন। হিষ্টরি মুছে ফেলার মধ্যে নিশ্চয়ই কোন কিন্তু থাকবে।
৪) আ্যডাল্ট ওয়েবসাইট ও কন্টেন্ট যেন দেখতে না পারে, সেজন্য আ্যডাল্ট ওয়েবসাইট ও কন্টেন্ট ব্লক করার অ্যাপস ব্যবহার করতে পারেন।
৫) মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়মিত মোবাইলের মেমোরীকার্ড চেক করুন। সন্তানের ক্ষতি হতে পারে, এমন কোন কিছু যেন মোবাইলে থাকতে না পারে সেটি নিশ্চিত করুন।
৬) হেডফোন ব্যবহার খুবই সীমিত করুন। হেডফোন কানের ও মস্তিস্কের যথেষ্ট ক্ষতিসাধন করে, সেই সাথে অমনোযোগী করে তোলে। নিয়ন্ত্রন না থাকার কারনে অনেক অল্প বয়সী সন্তানরা রাস্তাঘাটে হেডফোন ব্যবহার করতে থাকে। এতে আপনার সন্তান যেকোন সময় দুঘটনার শিকার হতে পারে।
৭) অপ্রয়োজনে ল্যাপটপ, নোটবুক, নেটবুক কিংবা ট্যাবলেট কম্পিউটার বা ট্যাব ব্যাগে নিয়ে ঘুরতে দিবে না।
৮) সন্তান তার বন্ধুদের সাথে মোবাইলে কথপোকথন বা ইন্টারনেটে চ্যাটিংয়ের সময় কোন সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার করে কিনা তা খেয়াল করুন। এমন কিছু টের পেলে তার উত্তর জানার চেষ্টা করুন।
৯) অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান কখনো সাইবার ক্যাফেতে যায় কিনা তা তদারকি করুন। সাইবার ক্যাফে গুলোতে অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
১০) সম্ভাব্য সকল ইন্টারনেট নেটওয়ার্কে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অপশন অ্যাক্টিভেট করে রাখাতে চেষ্টা করুন, বিশেষ করে সেই সমস্ত নেটওয়ার্কে যেখানে আপনার শিশু সন্তান নিয়মিত ভিজিট করে।
১১) নৈতিকতার অবক্ষয় হতে পারে এমন সব ধরনের টিভি প্রোগ্রামও সন্তানদের সামনে দেখা বন্ধ করুন। নৃশংস, বিভৎস, ভৌতিক ও আডাল্ট ফটো, ভিডিও কিংবা টিভি প্রোগ্রামও সন্তানদের সামনে দেখা বন্ধ করুন।
১২) নিজেদের মোবাইল, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, নোটবুক, নেটবুক ট্যাবলেট কিংবা ট্যাব এই সকল ডিভাইস গুলো, যেগুলো আপনার সন্তানের হাতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলোতেও নৃশংস, বিভৎস, ভৌতিক ও আডাল্ট ফটো, ভিডিও যেন না থাকে নিশ্চিত করুন।
সর্বোপরি কথা একটাই, বাবা-মা অর্থাৎ অভিভাবক'রা সচেতন হলে সন্তানের ভুল পথে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। সুতরাং সবার আগে বাবা-মা'কে সচেতন হতে হবে। তারা সচেতন হলে সন্তানদেরকেও সচেতন করে গড়ে তোলা সম্ভব।
লেখক
মোঃ আবুল ওয়াদুদ
আপনাদের প্রয়োজনে আমার অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়া প্রোফাইলগুলোকে ফলো করতে পারেন। কোন আপডেট থাকলে এগুলো থেকেই পেয়ে যাবেনঃ
Facebook | Youtube Channel | Twitter | LinkedIn | Google Plus
আমার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটঃ wadudofficial.com
লেখাটি প্রথম প্রকাশঃ টেকপ্যাঁচাল ডট কম ব্লগে
আমি আব্দুল ওয়াদুদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 27 টি টিউন ও 79 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Hi, My name is Wadud. Full Name: Md. Abdul Wadud (In Bengali: মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ), I was born on October 12th, 1982 in Khulna, Bangladesh. I have earned B. Sc in Computer Science and Engineering. I’m Mostly a Freelancer, Freelancing Instructor and a Vlogger (Video Blogger). I’m writing blogs and...
ধন্যবাদ ভাই 🙂