আশাকরি মহান প্রতিপালকের অশেষ মেহেরবানিতে সবাই নিজ নিজ স্থানে ভালো ও সুস্থ আছেন।
বন্ধুরা বরাবরের মতো আজকেও নতুন একটি টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।
বন্ধুরা আজকে আপনাদের সাথে কথা বলব পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর একটি দ্বীপ নিয়ে। বন্ধুরা তাহলে চলুন আর দেরি না করে মূল টপিকে চলে যাই।
সকাল বেলা আপনি ঘুম থেকে ওঠার পর আপনি দেখলেন নর্থ সেন্টিনেল আইল্যান্ডে পৌছে গেলেন। তারপর আপনার এই দ্বীপটিতে কি হবে আশাকরি। রাতের বেলা ভালো ঘুম নেওয়ার পর যখন আপনার সকালে চোখ খুলে তো চারিদিকে দূর দূর বিস্ত্রিত নীল সমুদ্র দেখতে পান। এবং আপনার পেছনে একটি সবুজ ঘন জঙ্গল। এই দৃশ্য আপনাকে রোমাঞ্চিত করে দেয়। কিন্তু যেই সময় পার হয়ে যায় আপনার গলা ধিরে ধিরে শুকিয়ে যায়, এবং পানির খিদা অনেক বেড়ে যায়। যখন আপনার পানির খিদা বন্ধ করার জন্য সমুদ্রের পানি পান করেন, তখন লবনাক্ত পানি খেয়ে আপনার পানির খিদা আরও বৃদ্ধি পায়। আর কয়েক ঘন্টা পার হয় আপনার পেটের খিদে আরও বেড়ে যায়। ঠিক তখনি আপনি খাবারের খুঁজে আপনি পুরো জঙ্গল খুঁজে বেড়ান। এখানে এমন কোন গাছ নেই যেখানে আপনার পরিচিত ফল ধরে রয়েছে বা সমুদ্রের পাশে কোন নারকেল গাছে ডাব ও নেই, হতাশ হয়ে আপনি আবার সমুদ্রের ধারে ফিরে আসেন মাছ ধরার জন্য, কিন্তু এটা এত সহজ নয়। তাও অনেক প্রচেস্টার পর আপনি কিছু মাছ ধরে ফেলেন। এখন এই মাছগুলো কাচা খাওয়া আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। আর তাই আপনি মাছ পুড়িয়ে খাওয়ার জন্য শুকনো কাঠ জোগাড় করেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আগুন জালানোর জন্য আপনার কাছে কিচ্ছু নেই। এটা হচ্ছে এমনি জায়গা যেখানে আগুনের নাম ও চিহ্ন নেই। আদিম মানুষের মতো আগুন জালানোর জন্য কাঠকে ঘষে ধষে আগুন জালাতে গিয়ে আপনি হার মানলেন। আস্তে আস্তে রাত্রি হয় এবং ঠান্ডা ধিরে ধিরে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এখানে না রয়েছে রাতের ঠান্ডা আটকানোর কোন বিছানা না রয়েছে ঢাকা। তারপরও আপনি যেভাবেই হোক শুকনো বালিতে শুয়ে যান, মাঝরাতে হওয়া বৃষ্টির জন্য আপনার ঘুম ও ভালো মতো হয় না। এটা কিন্তু আপনার প্রথম রাত।
না এখানে আপনাকে কেউ বাচাতে আসবে আর না আপনি সাতার কেটে বা অন্য কোন পদ্ধতিতে এখান থেকে বেরিয়ে আসবেন। কেননা এখানে সমুদ্রের ঢেউ গুলো হচ্ছে অনেক শক্তিশালী আপনি যতই চেষ্টা করেন না কেন সমুদ্রের ঢেউ গুলো আপনাকে বার বার ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। বন্ধুরা এই অবস্থাতে আপনার ভবিষ্যতে হবে দুটি রাস্তা।
১. প্রতিদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে হার মেনে আপনি আত্নহত্যা করার চেষ্টা করবেন।
২. আর না হয় এই সংঘর্ষে আপনি এতই শক্তিশালী আর কোশল হয়ে যাবেন যে এই পুরো দিনটিতে আপনার রাজত্ব হবে।
শুনে হতে পারে এই গল্পটি আপনার জন্য আশাবাদী। কিন্তু সত্যি হচ্ছে এটাই যে এখানে আপনাকে এই অবস্থায় বেচে থাকার সময় অনেক কম। বর্তমান সময়ে এখানে সংসাধনের অভাব, আপনাকে বেচে থাকার জন্য অনুপযোগী মানায় না। বরং এখানে থাকতে থাকা কিছু মানুষ যারা এত অভাবেও এখানে থাকতে শিখে গেছে শুধু তাদের জন্যই, এখানে অন্য কোন মানুষের জন্য হচ্ছে অনেক ঝুকিপূর্ণ। যারা এখানে কোনরকম ভাবে পৌছেছে তাদের মধ্যে অনেক মানুষ মারা যায়। অতিতে প্রায় অনেক সময় ধরে মানুষ এখানে আসার চেষ্টা করেছে। কেউ এখানে থাকা মানুষের ডকুমেন্ট লেখার চেষ্টা করে আবার কোন জেল থেকে পালিয়ে যাওয়া মানুষ এখানে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে।
বন্ধুরা এই মানুষ এখানে থাকা সকল মানুষের সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু দুঃখ জনক হলো এই মানুষটি এখানে আসার সাথে সাথেই মারা যায়। এই ব্যক্তির মতো আরও অনেক মানুষ এখানে আসার চেষ্টা করে, তাদের মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ মারা গেছে। আবার অনেকেই খারপ ভাবে ক্ষত বিক্ষত হয়ে জায়গাটি ছেড়ে পালিয়েছে। এখানকার উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া হেলিকপ্টার এর উপর ও তীর ও পাথরের বৃষ্টি হয়। আর এজন্যই তাদেরকেও এই জায়গাটি ছেড়ে চলে যেতে হয়। এখানে থাকা মানুষ গুলুর সম্পর্কে আমরা কিছুই জানিনা। এই জায়গাটিতে কোন সাধারণ মানুষের যাওয়া ভারত সরকার দ্বারা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বন্ধুরা আপনি কি বিশ্বাস করবেন এই মানুষ গুলো প্রায় ৬০ হাজার বছর ধরে এখানে বসবাস করছে। এই মানুষ গুলো এত দিন থেকে এখানে কিভাবে বসবাস করছে। এই প্রশ্নটির উত্তর এখানেই লুকিয়ে রয়েছে এই মানুষ গুলো এখানে কিভাবে এসেছে। এই ঘটনাটি জানার জন্য আমাদের ইতিহাসে প্রায় এক লক্ষ্য বিশ হাজার বছর আগে যেতে হবে। এখান থেকে অনেক দূরে দক্ষিণ আফ্রিকায়। এটা ঐ সময় ছিলো যখন মানুষ আগুনের উপর নিয়ন্ত্রণ করা শিখে যায়। কিন্তু এই আগুন গুলি আকাশের বজ্রপাত এবং গজাসে ঘাসে ঘসা লেগে যে আগুন জলত সেগুলো ছিলো। মানুষ মাত্রই প্রকৃতি থকে পাওয়া আগুন গুলি যত্নে রাখত। সেগুলি নিভে যেতে দিত না, যদি সেই আগুন গুলি নিভে যেত তাহলে সেগুলিকে জালানোর জন্য তারা কোন প্রকারের পদ্ধতি জানত না। না কোন চাষবাস না কোন থাকার ব্যাপারে তাদের জ্ঞান ছিলো। কাচা মাংস, কাচা মাছ, ও বিভিন্ন গাছের শেকড়ের উপর তারা নির্ভরশীল ছিলো। এই সময় মানুষের জীবন জীবজন্তুদের থেকে ও এতটাই আলাদা ছিলো যে মানুষেরা এতদিনে ভাষার জোগাড় করে নিয়েছিলো। যার ফলে শিকার করার জন্য তালমিল ভালো হয়। না কোন সমাজ ছিল না কোন গ্রাম না কোন থাকার জন্য ঘর ছিলো। জীবনে শুধু একটি উদ্দেশ্য ছিলো চলতে থেকো। যদি সুর্য অস্ত্র নিয়ে নেয় তাহলে কোন গোহাতে আশ্রয় নিয়ে নাও। সকাল হতেই আবার খাবার এবং পানির সন্ধানে নতুন কোন জায়গা খুঁজে নাও। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে অনেক মানুষের কস্টি পেরিয়ে যায়। সেখান থেকে নতুন নতুন সম্ভাবনার খোঁজে। এ যাত্রাটি সম্পুর্ন হতে অনেক বছর লেগে যায়। তবে নতুন জায়গার লালশায় মানুষকে থামতে দেয়নি। এই মানুষগুলো এমন জায়গার খোঁজ করছিলো যেখানে সংঘর্ষ ছাড়া আরামে বসবাস করতে পারে এবং খাবার সহজেই পাওয়া যায়। হাজার হাজার বছরের যাত্রার ফলে শুধু মাত্র সময় নষ্ট হয় নি। কিন্তু তারা যার যার যায়গায় এখনো থেকে যায়। প্রতিটি মহা দ্বিপের আকৃতি ছিলো অনেক বড়। তাই বিভিন্ন যায়গায় থাকতে থাকা মানুষ গুলো বিভিন্ন প্রজাতিতে বিভক্ত হয়ে যায়। তাদের বিকাশ ও হয় অনেক দ্রুত গতিতে। তারা না শুধু আগুন জালাতে থাকে তারা পশুকে পোষ মানানো থেকে চাষ সহ সব করতে থাকে। এই ঘটনা গুলি মানুষকে একটি নতুন সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সারা দুনিয়ায় মিলেমিশে থাকার জন্য বিভিন্ন উন্নত সভ্যতা নির্মাণ হয়। এই সময়ে যে মানুষ গুলি সেন্টিন্যাল আইল্যান্ডে ভেসে থেকে যায় তাদের বিকাশ সম্পুর্ণ থেমে যায়। সেই মানুষকে সেন্টিন্যাল আইল্যান্ডে পাঠাতে প্রায় ৬০ হাজার বছর কেটে গেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই মানুষ গুলো না আগুন জালাতে শিখেছে না চাষ করতে শিখেছে। পুরো তত্ত্বের বিদ্ধি অনুযায়ী এই মানুষ গুলোর সংখ্যা আগে অনেক বেশি ছিলো। কিন্তু অন্য সব সভ্যতার সাথে এদের কোন মেলামেশা ছিলো না। এই মানুষ গুলি কাচা মাংস ও গাছের জড় নড় খেয়ে বেছে ছিলো তাই এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেড়ে যায়। আর সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যদি কেউ তাদের এখান থেকে বেরিয়ে আসতে চায় তাহলে থাকে মেরে ফেলা হয়। তাদের আক্রমনের জন্য এখানকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর জায়গা বলা হয়। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৪ মাইল দূরে অন্য সব মানুষের চলাফেরা।
শেষ কথা
বন্ধুরা এই ছিলো আজকের মতো। বন্ধুরা আশাকরি সবার ভালো লেগেছে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে আবার নতুুুন কোন টিউন নিয়ে, নতুন কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো ও সুস্থ থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।
আমি মাহবুব আলম তারেক। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, সিলেট। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 95 টি টিউন ও 129 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 7 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।
I am a Graphics Designer, and have worked on a few other Web Sites.
প্রিয় ট্রাসটেড টিউনার,
আপনার টিউনটি ‘টেকটিউনস ক্যাশ’ এর জন্য প্রসেস হতে পারছে না।
কারণ:
টিউনে ইউটিউব ভিডিও থেকে স্ক্রিনসট নিয়ে টিউনে যোগ করা হয়েছে।
করণীয়:
‘টেকটিউনস কপিরাইট ম্যাটেরিয়াল গাইডলাইন’ অনুযায়ী টিউনে হাই-রেজুলেশনের ইমেইজ যোগ করুন। সেই সাথে হাই-কোয়ালিটি, টিউনের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক, Copyright Free ও Royalty-Free ইমেইজ Full Size এ যোগ করুন।
উপরের নির্দেশিত সংশোধন করে এই টিউমেন্টের রিপ্লাই দিন।
খেয়াল করুন, এই টিউমেন্টের রিপ্লাই বাটনে ক্লিক করে রিপ্লাই না করে টিউনে টিউমেন্ট করলে তার নোটিফিশেন ‘টেকটিউনস কন্টেন্ট অপস’ টিম পাবে না। তাই অবশ্যই এই টিউমেন্টের রিপ্লাই বাটনে ক্লিক করে রিপ্লাই করুন।