থমাস আলভা এডিসন:
আজ ১১ই ফেব্রুয়ারী। আজ টমাস আলভা এডিসন এর জন্মদিন।
যখনই ইলেকট্রিক বাল্ব জ্বালি, টেলিফোন এ কথা বলি, সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখি, তখন কি ভেবে দেখি এগুলো কার আবিষ্কার। এগুলো সবই এডিসনের আবিষ্কার।
গত শতাব্দীতে যে যান্ত্রিক সভ্যতার সূচনা হয়েছিলো এডিসনকে সেই সভ্যতার জনক বলা যায়।
জন্মদিন: ১১ই ফেব্রুয়ারী,১৮৪৭ সাল।
জম্মস্থান: কানাডার মিলানে
জন্মপরিচয়: তার পিতা ছিলেন ওলন্দাজ বংশোদ্ভূত। তাদের পূর্বপুরুষ হল্যান্ড (বর্তমান নেদারল্যান্ড) ছেড়ে আমেরিকায় এসে বসবাস শুরু করে।কিছুদিন পর তারা আমেরিকা ছেড়ে কানাডায় এসে বসবাস শুরু করে।
এডিসনের পিতার আর্থিক সচ্ছলতা ছিলো। তাই দিনগুলো বেশ ভালোই কাটছিলো। তার সাত বছর সময়ে এডিসনের পিতা মিশিগানের পোর্ট হারান নামে একটি শহরে বসবাস করেন।
বাল্যকাল :
শিশুকাল থেকেই এডিসন অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তবে স্কুলের বাধ্যগত পাঠ্যসূচী তার কাছে ক্লান্তিকর মনে হতো। ক্লাসে বসে তিনি বাইরের মুক্ত প্রকৃতির দিকে চেয়ে থাকতেন।শিক্ষকরা অভিযোগ করেন যে, এ ছাত্রের পড়ালেখায় কোন মনযোগ নেই।শিক্ষকদের কথা শুনে তার মা ক্ষুদ্ধ হতেন। ছোট ছেলের প্রতি তার বেশ দুর্বলতা ছিলো। স্কুল থেকে ছাড়িয়ে আনলেন। মায়ের কাছেই তিনি পড়ালেখা শুরু করেন।
ছেলেবেলার ঘটনা:
পারিপার্শ্বিক জগতে যা কিছু ঘটছে, তার প্রতি তার বেশ আগ্রহ ছিলো। তিনি ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা বার করতে পারেন কিনা দেখবার জন্য ঘরের এক কোণে ডিম সাজিয়ে বসে পড়লেন।কয়েক বছর পর কিশোর এডিসন পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য একটি ছোট ল্যাবরেটরী তৈরী করে ফেললেন।ল্যাবরেটরীর যন্ত্রপাতি বলতে ছিলো কিছু ভাঙা বাক্স, কিছু বোতল, ফেলে দেয়া কিছু লোহার তার, আর এখান ওখান থেকে কুড়িয়ে আনা যন্ত্রপাতির টুকরা। এপর বাবার আর্থিক অবস্থা খারাপ হতে লাগলো। হাতে কলমে পরীক্ষার জন্য তিনি অর্থ সংগ্রহ করার চেষ্টা করলেন। মাত্র তেরো বছরের ছেলে চাকরি করার সিদ্ধান্ত নিলেন।বাবা মা তো দুজনেই অবাক। কিন্তু তিনি ছিলেন বেশ জেদী।তাই অগত্যা মত দিলেন এডিসনের মাতাপিতা।
কাজের সন্ধান :
এরপর অনেক খোজাখুজির পর খবরের কাগজ ফেরি করার কাজ পেলেন।ট্রেনে পোর্ট হুরান স্টেশন থেকে ডেট্রয়েট স্টেশনের মধ্যে যাত্রীদের কাছে খবরের কাগজ বিক্রি করতে হবে। বিক্রির উপর কমিশন। আরো কিছু আয় করার জন্য খবরের কাগজের সাথে চকলেট বাদামও রাখতেন।কয়েক মাসের মধ্যে বেশ কিছু অর্থ সংগ্রহ করে ফেললেন।
তার জীবনের অন্য মোড়:
স্টেশনে ঘোরাঘুরি করতে করতে অনেক রেল কর্মচারীর সাথে আলাপ পরিচয় হয়। সমস্ত বিষয়েই ছিলো তার অদম্য কৌতুহল। একদিন এডিসন মাউন্ট ক্লিসেন্স স্টেশনে দাড়িয়ে আছেন, এমন সময় চোখে পড়লো একটি ছেলে লাইনের উপর খেলা করছে। দূরে একটি ওয়াগন এগিয়ে আসছে। আসন্ন বিপদ দেখে ছেলেটিকে রক্ষা করলেন।ছেলেটি ছিলো স্টেশন মাস্টারের পুত্র। যখন স্টেশন মাস্টার তাকে পুরষ্কার দেয়ার কথা বললেন, তখন এডিসন টেলিগ্রাফ শেখার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন।কয়েক মাসের মধ্যে তিনি টেলিগ্রাফি শিখে ফেলেন, সেই সাথে সাংকেতিক চিহ্ন ও তার অর্থ বুঝে নিতে সক্ষম হলেন।
এরপর ট্রেনের মাল রাখবার গাড়ীতে একটি ছোট ল্যাবরেটরী গড়ে তুলেন। একদিন চলন্ত ট্রেনে তার হাত থেকে আগুন পড়ে আগুন লেগে গেল কম্পার্টমেন্টে। বহু কষ্টে আগুন নিভানো হলো।কিন্তু কন্ডাকটর ক্ষেপে গেলেন। ল্যাবরেটরীর সব জিনিসপত্র ছুড়ে দিয়ে এডিসনের কানের উপর এক ঘুষি মারলেন। এই থেকে এডিসন সমস্ত জীবনে কানে কম শুনতেন।
শুরু হলো নতুন জীবন:
এরপর তিনি ট্রেনের সিগনাল দেয়ার কাজ পেলেন। রাত জেগে কাজ করতে হতো আর দিনের বেলায় সামান্য ঘুমিয়ে নিজে তৈরী করলেন যেটি আপনা থেকেই নির্দিষ্ট সময়ে সিগনাল দিত।
এরপর বোস্টনে টেলিগ্রাফ অফিসে অপারেটরের কাজ নিলেন। এখান থেকেই নতুন কিছু উদ্ভাবন করার চিন্তা করতে থাকেন।
যেখানে কাজ করতেন সেখানে ইদুরের উত্পাত ঠেকাতে ইদুর ধ্বংস করার জন্য যন্ত্র তৈরী করলেন।
এছাড়াও টেলিগ্রাফ ব্যবস্থার জন্য আরো কিছু নতুন যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন করেন। কিন্তু কেউ আকর্ষিত হলো না।
১৮৬৯ সালে তিনি বোস্টনে থাকাকালীন একটি যন্ত্র আবিষ্কার করলেন যা দিয়ে ভোল্ট গণনা করা যায়।
এই যন্ত্রের পেটেন্ট পাওয়ার জন্য আবেদন করলে তিনি পেটেন্ট পান।
এটি তার জন্য এক দারুণ সুযোগ নিয়ে এসেছিলো।
চলে এলেন নিউইয়র্কে:
কোন জায়গাতেই তিনি বেশীদিন থাকতে পারতেন না। এরপর তিনি এলেন নিউইয়র্কে।
আগামী দিন আশা করি পরের পর্ব লিখবো।
আমি শাহাদাত হুসাইন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 17 টি টিউন ও 214 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
I am shahadat from RUET. I am so simple.
হুম………..আশায় রইলাম……….. থ্যাংকস………..