আশুন কিছু অজানা কথা জেনে নেই আমাদের প্রিয় নয়নের মণি হুমায়ূন আহমেদ এর জীবনী পরে}}

সবাইকে আমার ছালাম।

হুমায়ূন আহমেদ

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
জন্ম : ১৯৪৮, ১৩ নভেম্বর৷ নেত্রকোণা জেলার কুতুবপুর গ্রামে৷
বাবা : ফয়জুর রহমান আহমেদ৷
মা : আয়েশা ফয়েজ৷
স্ত্রী : মেহের আফরোজ শাওন৷
শিক্ষা : মাধ্যমিক, বগুড়া জিলা স্কুল, ১৯৬৫৷ উচ্চ মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ, ১৯৬৭৷ স্নাতক (সম্মান) রসায়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৭০৷ স্নাতকোত্তর (রসায়ন) ১৯৭২৷ পি এইচ ডি, নর্থ ডাকোটা ইউনিভার্সিটি, ১৯৮২৷
পেশা : অধ্যাপনা, রসায়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় অবসর, বর্তমানে লেখালেখি ও চলচ্চিত্র নির্মাণ৷
উল্লেখযোগ্য উপন্যাস : নন্দিত নরকে, লীলাবতী, কবি, শঙ্খনীল কারাগার, মন্দ্রসপ্তক, দূরে কোথায়, সৌরভ, নী, ফেরা, কৃষ্ণপক্ষ, সাজঘর, বাসর, গৌরিপুর জংশন, নৃপতি, অমানুষ, বহুব্রীহি, এইসব দিনরাত্রি, দারুচীনি দ্বীপ, শুভ্র, নক্ষত্রের রাত, কোথাও কেউ নেই, আগুনের পরশমনি, শ্রাবণ মেঘের দিন, বৃষ্টি ও মেঘমালা, মেঘ বলেছে যাবো যাবো, জোছনা ও জননীর গল্প প্রভৃতি৷
উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র : আগুনের পরশমনি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবন মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, নয় নম্বর বিপদ সংকেত৷
পুরস্কার : একুশে পদক (১৯৯৪), বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কাদিও স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), মাইকেল মধুসূধন দত্ত পুরস্কার (১৯৮৭), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪), বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮)৷ দেশের বাইরেও হয়েছেন মূল্যায়িত৷ জাপান টেলিভিশন NHK তাঁকে নিয়ে একটি পনের মিনিটের ডকুমেন্টারি প্রচার করেছে

পেশাগত জীবনে হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক৷ শিক্ষক হিসেবে ছাত্রদের মাঝে তিনি ছিলেন তুমুল জনপ্রিয়৷ আর ঔপন্যাসিক হিসেবে তিনি এতটাই জনপ্রিয় যে শরত্‍চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পর বাংলা কথাসাহিত্যে এত জনপ্রিয়তা আর কারও মাঝে দেখা যায়নি৷ তিনি যেন গল্পের সেই পরশ পাথর- যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই ফলেছে সোনা৷ কেবল অধ্যাপনা আর কথাসাহিত্যই নয়, তিনি যখন অধ্যাপনা ছেড়ে দিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে হাত দিলেন সেখানেও সাফল্যদেবী তাঁর মুঠোয় ধরা দিয়েছে৷ তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র 'আগুনের পরশমনি' ৷ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই চলচ্চিত্রটি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের ঢল নেমেছিল৷ মাসের পর মাস ধরে এই চলচ্চিত্রটি বক্স অফিস দখল করে রেখেছিল৷ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে আটটি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নিয়েছিল এই ছবিটি৷ তাঁর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আরেকটি চলচ্চিত্র 'শ্যামল ছায়া' বিদেশী ভাষার ছবি ক্যাটাগরিতে অস্কার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল৷ তাঁর অন্য কীর্তি শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা প্রভৃতি চলচ্চিত্রগুলি কেবল সুধীজনের প্রশংসাই পায়নি, মধ্যবিত্ত দর্শকদেরও হলমুখী করেছে বহুদিন পর৷ টিভি নাট্যকার হিসেবেও তিনি সমান জনপ্রিয়৷ তাঁর প্রথম টিভি নাটক 'এইসব দিনরাত্রি' মধ্য আশির দশকে তাঁকে এনে দিয়েছিল তুমুল জনপ্রিয়তা৷ তাঁর হাসির নাটক 'বহুব্রীহি' এবং ঐতিহাসিক নাটক 'অয়োময়ো' বাংলা টিভি নাটকের ইতিহাসে একটি অনন্য সংযোজন৷ নাগরিক ধারাবাহিক 'কোথাও কেউ নেই'-এর চরিত্র বাকের ভাই বাস্তব হয়ে ধরা দিয়েছিল টিভি দর্শকদের কাছে৷ নাটকের শেষে বাকের ভাইয়ের ফাঁসির রায় হলে ঢাকার রাজপথে বাকের ভাইয়ের মুক্তির দাবীতে মিছিল হয়েছিলো৷ বাংলা নাটকের ইতিহাসে এমনটি আর হয়নি কখনো৷ এছাড়াও অসংখ্য বিটিভি ও প্যাকেজ নাটকের নির্মাতা তিনি৷ নাট্যকার- নির্দেশক দুই ভূমিকায়ই সমান সফল৷ সফল শিল্পের আরেকটি শাখা চিত্রকলাতেও৷ তাঁর চিত্রশিল্পের স্বাক্ষর নিজ বাড়ির দেয়ালে টাঙানো রয়েছে৷

হুমায়ূন আহমেদের জন্ম পীরবংশে৷ নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া থানার বিখ্যাত পীর জাঙ্গির মুনশি'র ছেলে মৌলানা আজিমুদ্দিন হুমায়ূন আহমেদের দাদা৷ তিনি ছিলেন একজন উঁচুদরের আলেম এবং মৌলানা৷ হুমায়ূন আহমেদের বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ অফিসার আর মা ছিলেন গৃহিনী৷ তিন ভাই দুই বোনের মাঝে তিনি সবার বড়৷ তাঁর ছোটভাই জাফর ইকবাল একজন প্রখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী৷ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান৷ তিনিও একজন কথাসাহিত্যিক৷ সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট এবং রম্য লেখক৷ দেশের একমাত্র কার্টুন পত্রিকা উন্মাদ'র কার্যনির্বাহী সম্পাদক৷ হুমায়ূন আহমেদ ১৯৭৩ সালে গুলতেকিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন৷ হুমায়ূন এবং গুলতেকিন দম্পতির চার ছেলে-মেয়ে৷ দীর্ঘ ৩২ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটিয়ে ২০০৫ সালে ডিভোর্সের মাধ্যমে তাঁরা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যান৷ এরপর তিনি অভিনেত্রী ও পরিচালক মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেন৷ শাওন ১৯৯০ সাল থেকে টিভিতে অভিনয় শুরু করেন৷ পরবর্তীতে চলচ্চিত্রের সঙ্গেও যুক্ত হন৷ হুমায়ূন শাওন দম্পতির এক পুত্র সন্তান৷

শৈশবের বালক হুমায়ূন আহমেদ যেমন ভালোবাসতেন গাছপালা শোভিত সবুজ অরণ্যানীর ভেতর ঘুরে বেড়াতে, বিটোভেনের সুরের মতন টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ শুনতে, তেমনি এই ষাট বছরেও তাঁর সবুজের ভেতর হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে, ইচ্ছে করে আজও বৃষ্টির শব্দের ভেতর নিজেকে লুকিয়ে ফেলতে৷ ইট কাঠের খাঁচায় বন্দী এই রাজধানী ঢাকা তাঁর দম বন্ধ করে আনে৷ আর তাই তিনি গাজীপুরের শালবনের ভেতর তৈরি করেছেন এক বিশাল নন্দন কানন নুহাশ পল্লী৷ তাঁর বেশির ভাগ সময়ই কাটে নুহাশ পল্লীর শাল গজারির সাথে কথা বলে , বৃষ্টির শব্দের সাথে মিতালি করে৷

সিলেটের মীরা বাজার৷ ১৯৫০-৫৫ সালের দিকের শহর৷ গাছপালা শোভিত, প্রাচীন আমলের ঘর দোর, ভাঙা রাস্তা কোথাও কোথাও কাঁচা বাড়ি৷ আবার মাঝে মাঝে খুব সুন্দর করে সাজানো গোছানো বনেদি বাড়ি৷ স্কুল ছুটির পর এমনি এক রাস্তা ধরে হেঁটে চলছে এক বালক৷ দুরন্ত ঘাস ফড়িঙের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে তাঁর চলা৷ নির্দিষ্ট কোন লক্ষ্য নেই, যেন কোন একদিকে গেলেই হল৷ ইচ্ছে হল আর হুট করে ঢুকে পড়ল কোন বাড়িতে৷ কোন কোন বাড়ি থেকে অনাহুত ভেবে বের করে দেয় আবার কোন কোন বাড়িতে একটা ছোট্ট দেব শিশু ভেবে আদর আপ্যায়নও করে৷ এমনিভাবে হাঁটতে হাঁটতে সামনে পড়ে গাছগাছালিতে ছাওয়া এক বিশাল ঘেরা জায়গা, সেখানে ধবধবে সাদা রঙের বাংলো প্যাটার্নের একটা বাড়ি৷ সিলেট এম. সি. কলেজের রসায়ন শাস্ত্রের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান এস কে রায় চৌধুরী সাহেবের বাড়ি৷ বালকের কাছে অধ্যাপকের পরিচয় হচ্ছে প্রফেসর সাব, অতি জ্ঞানী লোক- যাঁকে দূর থেকে দেখলেই পূণ্য হয়৷ তো সেদিন দুপুরে সেই প্রফেসর সাবের বাড়ির গেট খোলা পেয়ে হুট করে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়ে বালক৷ গাছপালার কী শান্ত শান্ত ভাব৷ মনে হচ্ছে সে যেন ভুল করে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি কোন বাড়ির বাগানে ঢুকে পড়েছে৷ একা একা অনেকক্ষণ সে হাঁটল৷ হঠাত্‍ দেখতে পেল কোনার দিকের একটি গাছের নিচে পাটি পেতে ষোল সতের বছরের একটি মেয়ে উপুর হয়ে শুয়ে আছে৷ তার হাতে একটা বই৷ সে বই পড়ছে না- তাকিয়ে আছে তাঁর দিকে৷ বালকের মনে হল এত সুন্দর মেয়ে সে আর দেখেনি৷ মনে হচ্ছে মেয়েটির শরীর সাদা মোমের তৈরি৷ মেয়েটি হাত ইশারায় তাঁকে ডাকল৷ কাছে যেতেই মেয়েটি জিজ্ঞেস করল, কী নাম তোমার খোকা? কাজল, বালকের উত্তর৷
এই সেই কাজল যিনি বড় হয়ে বাংলা কথাসাহিত্যে এক স্বপ্নলোকের রচনা করেছিলেন৷ আর এই স্বপ্নলোকের চাবি তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন প্রফেসর সাহেবের এই মেয়ে শুক্লা৷ সেই চাবিটির নাম অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‌‌'ক্ষীরের পুতুল'৷

কাজল৷ সিলেট থানার ওসি ফয়জুর রহমান সাহেবের বড় ছেলে৷ থানার দারোগা পুলিশ সাধারণত যেমন হয়, এই একটু খিটিমিটি স্বভাব, একটু আধটু ঘুষ, জনতা দেখে অযথাই ধমক দেওয়া তেমন নন এই ওসি সাহেব৷ বিপরীতে কবিতার প্রতি ঝোঁক, গানের প্রতি দরদ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা আর কিছুটা বিচিত্র খেয়াল নিয়ে এই ওসি সাহেবের জীবন৷ ইনি পূর্ণিমার রাতে শিশুদের আকাশ দেখাতে ভালোবাসেন৷ রাত দুপুরে স্ত্রীর বায়না মেটাতে দু'জনে মিলে নেমে যান পুকুরে৷ মাসিক বেতন নব্বুই টাকা যার একটা অংশ পাঠিয়ে দেন গ্রামের বাড়িতে, এক অংশ দিয়ে প্রতি মাসে বই কেনেন, আর বাকী যা থাকে তা তুলে দেন স্ত্রীর হাতে, আর তিনি থাকেন সারা মাস নিশ্চিন্ত৷ একবার এক মাসের প্রথম তারিখে খুব হাসিমুখে বাড়ি ফিরলেন ফয়জুর রহমান৷ বিশ্বজয় করা এক হাসি দিয়ে স্ত্রীকে বললেন, আয়েশা একটা বেহালা কিনে ফেললাম৷ স্ত্রী বিস্মিত হয়ে বললেন, কী কিনে ফেললে? বেহালা৷ বেহালা কী জন্য? বেহালা বাজানো শিখব৷ কত দাম পড়ল? দাম সস্তা, সত্তর টাকা৷ সেকেন্ড হ্যান্ড বলে এই দামে পাওয়া গেল৷ ফয়জুর রহমান সংসার চালাবার জন্য স্ত্রীর হাতে দশটি টাকা তুলে দিলেন৷ স্ত্রী হাসবেন না কাঁদবেন ভেবে পেলেন না৷ এই বিচিত্র খেয়ালি মানুষটি শেষাবধি অবশ্য বেহালা বাজানো শিখতে পারেননি৷ একদিন তাঁর সাধের বেহালা তাঁর শিশু সন্তানদের অধিকারে চলে গেল৷ তারা বেহালার বাক্স দিয়ে পুতুলের ঘর বানাল৷ এই খেয়ালি মানুষটিই একদিন পাহাড়ের মতো কঠিন আর অটল হয়ে গিয়েছিলেন৷ তখন ১৯৭১ সাল৷ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বছর৷ তিনি তখন পিরোজপুর থানার ওসি৷ পাকিস্তানি হায়েনারা তাঁর সামনে এলে তিনি পাহাড়ের মতো অটল ও স্থির থেকে হাসিমুখে মেনে নিয়েছিলেন মৃত্যুকে৷ মাতৃভূমির মর্যাদা রক্ষায় ধনুকের ছিলার মতো বুক টান টান করে দাঁড়িয়েছিলেন হানাদারদের বেয়নেটের সামনে৷ মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করার অপরাধে পাকিস্তানি সেনারা তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয় ধলেশ্বরী নদীর পানিতে৷ স্থানীয় লোকজন তাঁর মৃত শরীর পানি থেকে তুলে নদীতীরেই দাফন করেন৷ পরবর্তীতে যুদ্ধশেষে তাঁর সন্তানেরা তাঁর দেহাবশেষ সেখান থেকে তুলে আবার কবর দেন৷ এই শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদ সাহেবের বড় ছেলে কাজল আমাদের আজকের বাংলা কথাসাহিত্যের নতুন স্রোতের নকীব হুমায়ূন আহমেদ৷

পাকিস্তান জন্মের পরের বছর জন্ম নেন হুমায়ূন আহমেদ৷ সাল ১৯৪৮৷ তারিখ ১৩ নভেম্বর৷ এক শীতের রাতে৷ জন্ম মাতুলালয়ে, নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জের কুতুবপুর গ্রামে৷ বাবা ফয়জুর রহমান ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি৷ ফলে অত্যধিক বাড়াবাড়ি রকমের আদরের মধ্য দিয়ে তাঁর শৈশবের দিনগুলি রাতগুলি পার হতে থাকে৷ বাবার ধারণা ছিল তাঁর প্রথম সন্তান হবে মেয়ে৷ তিনি মেয়ের নামও ঠিক করে রেখেছেন৷ তাঁর অনাগত কন্যা সন্তানটির জন্য তিনি একগাদা মেয়েদের ফ্রক বানিয়ে রেখেছেন৷ বানিয়ে রেখেছেন রূপার মল৷ তাঁর মেয়ে মল পায়ে দিয়ে ঝুম ঝুম করে হাঁটবে- তিনি মুগ্ধ হয়ে দেখবেন৷ কিন্তু ছেলে হওয়াতে তাঁর সব পরিকল্পনা মাঠে মারা গেল৷ তবে তিনি হাল ছাড়েন নি৷ তাঁর এই পুত্র সন্তানটিকে তিনি দীর্ঘদিন মেয়েদের সাজে সাজিয়ে রেখেছেন৷ এমন কি তাঁর মাথার চুলও ছিল মেয়েদের মতো লম্বা৷ লম্বা চুলে মা বেণি করে দিতেন৷ বেণি করা চুলে রংবেরংয়ের ফিতা পরে হুমায়ূন আহমেদের শৈশবের শুরু৷ তাঁর শৈশবের প্রথম অধ্যায়টি যতটা স্নেহ ও মমতায় কেটেছে দ্বিতীয় অধ্যায়টি কেটেছে ততটাই বঞ্চনার ভেতর দিয়ে৷ শৈশবে তাঁর মা টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হন৷ জ্বর থেকে সুস্থ হওয়ার পর তাঁর স্মৃতিবিভ্রম দেখা দেয়৷ তিনি কাউকেই চিনতে পারছেন না, এমন কি তাঁর ছেলেকেও না৷ ফলে হুমায়ূন আহমেদকে পাঠিয়ে দেয়া হয় নানার বাড়ি মোহনগঞ্জে৷ সেখানে দু'বছর তিনি নানা-নানির আদরে বেড়ে উঠেন৷ দু'বছর পর মা সুস্থ হয়ে ওঠে৷ এরপর দশ বছর বয়স পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদের মোহনীয় শৈশব কেটেছে৷ বাবার চাকুরী সূত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়, বিচিত্রসব দৃশ্যাবলীর ভেতর দিয়ে তিনি ঘুরে ঘুরে তাঁর শৈশব অতিবাহিত করেছেন৷ সিলেট থেকে বাবা বদলী হন দিনাজপুরের জগদ্দলে৷ সেখানে জঙ্গলের ভেতর এক জমিদার বাড়িতে তাঁরা থাকতেন৷ জগদ্দলের দিনগুলি তাঁর কাছে ছিল হিরন্ময়৷ বাবার সাথে জঙ্গলে ভ্রমণ করতেন৷ গুলিভর্তি রাইফেল হাতে বাবা তাঁর ছেলেমেয়েদের নিয়ে জঙ্গলে ঢুকতেন৷ ঘন পাতার ফাঁক দিয়ে অল্প অল্প আলো আসত৷ থমথমে জঙ্গল৷ বিচিত্র সব পাখি ডাকত৷ বুনো ফুলের গন্ধ৷ পরিষ্কার বনে চলার পথ৷ বিচিত্র বন্য ফল৷ জঙ্গল পেরোলেই নদী৷ চকচকে বালির উপর দিয়ে স্বচ্চ পানি বয়ে যেত৷ দুপুরে সেই নদীতে গোসল করতেন৷ একবারেই আলাদা এক জীবন৷ জগদ্দল থেকে আবার বদলী৷ পঞ্চগড়ে৷ সেখানে ভোরবেলা বাসার সামনে দাঁড়ালে কাঞ্চনজঙ্ঘার তুষার শুভ্র চূড়া চোখের সামনে ঝলমল করে উঠত৷ পঞ্চগড় থেকে এবার রাঙামাটি৷ পাহাড়ি উপত্যকায় আবার সেই উদ্দাম ঘুরে বেড়ানোর দিন৷ কী লোভনীয় শৈশব কেটেছে তাঁর! হুমায়ূন আহমেদের শৈশব কেটেছে এমনি স্বপ্নময়তার ভেতর দিয়ে৷

শৈশবে হুমায়ূন আহমেদ যত জায়গায় গিয়েছেন তার মাঝে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ছিলো দিনাজপুরের জগদ্দল৷ তার প্রধান কারণ ছিল তাঁরা যেখানে থাকতেন তার আশেপাশে কোন স্কুল ছিল না৷ স্কুলের কথা মনে হলেই হুমায়ূন আহমেদের মুখ এমন তেতো হয়ে যেত যে, মনে হত যেন তাঁর মুখে জোর করে কেউ ঢেলে দিয়েছে নিশিন্দা পাতার রস৷ বাবা মা তাঁকে স্কুলে পাঠাতেন বটে তবে স্কুলে সময় কাটাতেন কেবল দুষ্টুমি করে৷ টেনে টুনে পাশ করতেন৷ প্রাইমারি স্কুল পাশের পর এই হুমায়ূন বদলে যান৷ ষষ্ট শ্রেণিতে উঠার পর থেকে স্কুলের প্রতি তাঁর আগ্রহ বাড়তে থাকে৷ আগ্রহটা এমনি ছিল যে এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট হওয়ার পর দেখা গেল তিনি সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছেন৷ ১৯৬৫ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে তিনি এসএসসি পাস করেন ৷ ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬৭ সালে তিনি এইচএসসি পাস করেন৷ এইচএসসি পরীক্ষাতেও তিনি মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন৷ ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে৷ ১৯৭২ সালে রসায়ন বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সাথে স্নাতকোত্তর পাশ করে তিনি একই বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন৷ পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে প্রফেসর যোসেফ এডওয়ার্ড গ্লাসের তত্ত্বাবধানে পলিমার কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি ডিগ্রি নেন৷ ড. হুমায়ূন আহমেদ লেখালেখিতে অধিক সময় এবং চলচ্চিত্রে নিয়মিত সময় দেবার জন্য পরবর্তীতে অধ্যাপনা পেশা ছেড়ে দেন ৷

বাংলাদেশের লেখালেখির ভুবনে প্রবাদ পুরুষ হুমায়ূন আহমেদ৷ গত ত্রিশ বছর ধরেই তাঁর তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা৷ ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় 'নন্দিত নরকে' উপন্যাস দিয়ে সাহিত্যাঙ্গনে তাঁর আত্মপ্রকাশ৷ 'নন্দিত নরকে' যখন প্রকাশ হয় তখনই বোঝা গিয়েছিলো কথা সাহিত্যের কঠিন ভুবনে তিনি হারিয়ে যেতে আসেন নি, থাকতেই এসেছেন৷ ফলে এদেশের সাহিত্যাকাশে তিনি ধ্রুবতারার মতো জ্বলজ্বল করছেন৷ তাঁর মধ্যে এই অমিত সম্ভাবনা তখনই টের পেয়ে প্রখ্যাত লেখক সমালোচক আহমদ শরীফ এক গদ্যের মাধ্যমে তাঁকে অভিনন্দিত করেছিলেন৷ আহমদ শরীফের প্রশংসা যে অপাত্রে ছিল না তা তো আজ সর্বজন বিদিত৷ মধ্যবিত্ত জীবনের কথকতা সহজ সরল গদ্যে তুলে ধরে পাঠককে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন আজ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে৷ শুধু মধ্যবিত্ত জীবনের কথকতা বয়ানেই সীমিত নয় তাঁর কৃতিত্ব, বেশ কিছু সার্থক সায়েন্স ফিকশন-এর লেখকও তিনি৷ জনপ্রিয় চরিত্র মিসির আলী ও হিমুর স্রষ্টা তিনি- যে দু'টি চরিত্র যথাক্রমে লজিক এবং এন্টি লজিক নিয়ে কাজ করে৷

হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্যের ভিতটা গড়ে ওঠে পারিবারিক বলয় থেকেই৷ বাবা ছিলেন সাহিত্যের অনুরাগী৷ বাসায় নিয়মিত সাহিত্য আসর বসাতেন, সেই আসরের নাম ছিলো সাহিত্য বাসর৷ গল্প লিখার অভ্যেসও ছিল তাঁর৷ যদিও সেসব গল্প কোথাও ছাপা হয় নি৷ তবে গ্রন্থাকারে তা প্রকাশিত হয়েছিলো৷ গ্রন্থের নাম 'রিক্তশ্রী পৃথিবী'৷ তাঁর বাবা, সন্তানদের মধ্যে যেন সাহিত্য বোধ জেগে ওঠে সে চেষ্টা করেছেন সবসময়৷ মাঝে মাঝে দেখা যেত তিনি নির্দিষ্ট একটা টপিক দিয়ে ছেলেমেয়েদের কবিতা লিখতে বলতেন, ঘোষণা করতেন যার কবিতা সবচেয়ে ভাল হবে তাকে দেওয়া হবে পুরস্কার৷ হুমায়ূন আহমেদের বড় মামা শেখ ফজলুল করিম যিনি তাঁদের সাথেই থাকতেন এবং যিনি ছিলেন তাঁদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী, তিনি কবিতা লিখতেন, লিখতেন নাটক এবং সেই নাটক তিনি তাঁর ভাগ্নে-ভাগ্নিদের দিয়ে বাসায় গোপনে গোপনে মঞ্চস্থও করাতেন৷ আর হুমায়ূন আহমেদের নিজের ছিল গল্প উপন্যাসের প্রতি অসাধারণ টান৷ তাঁর এই টান তৈরি করে দিয়েছিলেন মীরা বাজারের প্রফেসর রায় চৌধুরী সাহেবের মেয়ে শুক্লা৷ যিনি তাঁকে 'ক্ষীরের পুতুল' নামের বইটি উপহার দিয়ে সাহিত্যের প্রতি এই অসাধারণ টানের সৃষ্টি করেছিলেন৷ প্রথম যেদিন তিনি ওই বাড়িতে ( যে বাড়ির বর্ণনা লেখার শুরুতে দিয়েছি) যান শুক্লা তখন তাঁকে মিষ্টি খেতে দিয়েছিলেন৷ মিষ্টির লোভে দ্বিতীয় দিন আবার সেই বাড়িতে গেলে শুক্লা আবার তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন৷ তৃতীয় দিন তিনি তাঁর ছোট বোন শেফালিকে নিয়ে যান৷ শুক্লাদের বাড়িতে তখন মিষ্টি ছিল না৷ শুক্লা তখন মিষ্টির পরিবর্তে তাঁদের হাতে তুলে দেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ক্ষীরের পুতুল' বইটি৷

'ক্ষীরের পুতুল' হলো হুমায়ূন আহমেদের পড়া প্রথম সাহিত্য৷ যদিও তার বাবার বিশাল লাইব্রেরি ছিলো৷ কিন্তু সমস্ত বই তিনি তালাবদ্ধ করে রাখতেন৷ তিনি হয়ত ভেবেছিলেন তাঁর বাচ্চাদের এসব বই পড়ার সময় এখনো হয়নি৷ কিন্তু 'ক্ষীরের পুতুল' পড়ার পর তিনি তাঁর বাবার বইয়ের আলমিরা থেকে বই চুরি করে লুকিয়ে পড়তে শুরু করলেন এবং একদিন বাবার হাতে ধরা খেলেন৷ বাবা তাঁকে নিয়ে গেলেন সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে৷ বইয়ের এক বিশাল সংগ্রহ সেখানে৷ যেদিকে চোখ যায় শুধু বই আর বই৷ বাবা তাঁকে লাইব্রেরির মেম্বার করে দিলেন৷ সম্ভবত তিনিই ছিলেন এই লাইব্রেরির সর্ব কনিষ্ঠ সদস্য৷ এইভাবে হুমায়ূন আহমদের সাহিত্যের প্রতি জন্ম নেয় গভীর ভালোবাসা৷
যদিও তাঁর প্রথম রচনা 'নন্দিত নরকে' তবে তারও বহু পূর্বে তিনি একটি সাহিত্য রচনা করেছিলেন৷ দিনাজপুরের জগদ্দলে থাকা অবস্থায়৷ জগদ্দলের যে জমিদার বাড়িতে তাঁরা থাকতেন৷ সেখানে জমিদারের পরিত্যাক্ত সম্পত্তির তালিকায় ছিল একটি কুকুর৷ জমিদারের অনেকগুলি কুকুর ছিল৷ তিনি সবকটি কুকুরকে নিয়ে যেতে চাইলেও এই কুকুরটি যায়নি৷ রয়ে গিয়েছিল বাড়ির মায়ায় আটকা পড়ে৷ কুকুরটির নাম ছিলো বেঙ্গল টাইগার৷ তাঁরা যেখানেই যেতেন কুকুরটি সাথে সাথে যেত৷ কুকুরটির সাথে তাঁদের একরকম বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল৷ একদিন ভোরবেলা হুমায়ূন আহমেদ জমিদার বাড়ির মন্দিরের চাতালে বসে আছেন তাঁর সাথে আছে ছোট বোন শেফালি ও ছোট ভাই জাফর ইকবাল৷ কিছুক্ষণ পর তাঁর মা তাঁদের সবার ছোট ভাই আহসান হাবীবকে বসিয়ে রেখে গেলেন, আর তাঁদের উপর দায়িত্ব দিয়ে গেলেন তাঁকে দেখে রাখার জন্য৷ মা চলে যাওয়ার পর দেখতে পেলেন একটা প্রকাণ্ড কেউটে দরজার ফাঁক থেকে বের হয়ে এসেছে৷ ফণা তুলে হিস হিস শব্দে সে আহসান হাবীবের দিকে এগিয়ে আসছে৷ ঠিক তখুনি বেঙ্গল টাইগার ঝাঁপিয়ে পড়ে সাপটির ফলা কামড়ে ছিঁড়ে ফেলে৷ সাপও তার মরণ ছোবল বসিয়ে দিয়ে যায় কুকুরের গায়ে৷ দু'দিন পর যখন বিষক্রিয়ায় কুকুরের শরীর পচে গলে যেতে থাকে তখন তাঁদের বাবা মৃত্যুযন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবার জন্য কুকুরটিকে গুলি করে মেরে ফেলেন৷ এই ঘটনা হুমায়ূন আহমেদের মনে গভীর দাগ কাটে৷ এই কুকুরকে নিয়েই তিনি প্রথম কিছু লিখেছিলেন, নাম দিয়েছিলেন বেঙ্গল টাইগার (অথবা আমাদের বেঙ্গল টাইগার)৷ তারপর ১৯৭২ সালে 'নন্দিত নরকে' রচনা করেন৷ তারপর তো সবই ইতিহাস৷ একে একে শঙ্খনীল কারাগার, রজনী, গৌরিপুর জংশন, অয়োময়ো, দূরে কোথাও, ফেরা, কোথাও কেউ নেই, আমার আছে জল, অচিনপুর, এইসব দিনরাত্রিসহ দুইশতাধিক উপন্যাসের জনক হূমায়ূন আহমেদ৷

Level 0

আমি হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 5 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

আপনার Tune-টি যথেষ্ট পরিমাণে তথ্য সমৃদ্ধ, ভালো লেগেছে পড়ে…
তবে ঘটনাগুলো একটু Title দিয়ে উল্লেখ করলে ভালো হতো, Special ঘটনাগুলো তাড়াতাড়ি পাঠকের নিকট Highlighted হতো…

জীবনী বিভাগে Tune হয়েছে অনেক কম (মাত্র ২১টি)…
এই বিভাগে নিয়মিত Tune হওয়া দরকার…

~ !

Level New

ধন্যবাদ ভাই শেয়ার করার জন্য আমরাও অকেক কিছু জানতে পারলাম আমাদের এই জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সম্বন্ধে।

Level New

ধন্যবাদ ভাই শেয়ার করার জন্য আমরাও অনেক কিছু জানতে পারলাম আমাদের এই জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সম্বন্ধে।

Already thaks………………i like u vv ….>that is not w it is dubble “v”

Thanks ……………………..

ধন্যবাদ ভাই…. শেয়ার করার জন্য 🙂

হুমায়ুন আহমেদের নাটক, মুভি পছন্দ করি। কিন্তু ব্যক্তি হুমায়ুন আহমেদের প্রতি কোন আকর্ষন নেই, যখন তার মেয়ের বয়সী কাউকে সে বিয়ে করে।

    হুম।ব্যাক্তি হুমায়ুন আমারও অপছন্দ।

    পীযুষ ভাই, হূমায়ুন সাহেব তো শুধু নিজে নিজে বিয়ে করেননি। শাওন নিজেও তো হূমায়ুন কে বিয়ে করেছে। তো শাওনের ব্যপারে কিছু বলেননা কেন? সবাই কেন যেন হূমায়ুন আহমেদ কে একক দো্যী ভাবে। শাওন নিশ্চই তার ভিতরে এমন কিছু দেখেছে যে, তার প্রতি আক্রিস্ট হয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। অর্থাত শুধু বইয়ের ক্ষেত্রেই নয়, বাস্তব জীবনেও হূমায়ুন আহমেদের একটা ম্যাজিক্যাল ব্যক্তিত্ত রয়েছে। যাকে শ্রদ্ধা করা উচিত।

হুমায়ুন আহমেদের কি মাএ ১টি স্ত্রী…………?

Level 0

একজন পীর বংশের ছেলে এরকম নাসক

তার বিয়ের বিষয়টাকে সামাজিক ভাবে চিন্তা করলে কেমন লাগে?

১৯৪৮এ জন্ম। ১৯৭৩এ বিয়ে। গণিতের হিসাব মতে ২৫ বছরে বিয়ে,ভালো,
৩২ বছর একসাথে থাকার পর ২০০৫এ বিচ্ছিন্ন,ভালো খুব ভালো,
তখন পীর সাহেব বয়স কত? এ্যলজেবরার সুত্র ভুল না হলে ৫৭।
সেই সময় আবার কেউ বিয়ের চিন্তা করতে পারে ? ১৫ কোটি মানুষের ভিতর তার বয়সী কেউ কি ছিলনা? পোষ্ট টি পড়ে জানতে পারলাম আবার ১টি ছেলেও নাকি হয়েছে। এই ব্যাক্তির লেখা যতই ভালো হোক,
যখন এইসব মনে ভেসে ওঠে তখন কি আর পড়তে ইচ্ছাহয়????????

    ভাই……কারো ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এভাবে কথা বলা শোভনীয় না!!!!

Loading…

    Level 0

    এ ধরনের লোকদের বলা হয় ভাদাইম্ম্যা। যখন যা খুশি কর, মুক্ত স্বাধীন- কোন পিছুটান নেই। এদের Success হয় ঠিকই, যখন যেটা করছেন মন দিয়েই করছেন, কিন্তু কোনটাতেই বেশীদিন থাকা হয় না। এজন্য কোন কিছুর গভীরে এনাদের বিচরন খুবই কম। এজন্য হুমায়ূন আহমেদ লেখায় হিমু চরিত্রে ভাদাইম্ম্যার লক্ষনটি বেশ পরিস্কার। আবার বিভিন্ন নাটকেও তিনি দেখিয়েছেন কেউ কেউ উদ্ভট আচরন, কান্ড জ্ঞানহীন কাজ করছেন। এসব সবই হলো তার লেখার ভেতর দিয়ে নিজেস্ব চিন্তা চেতনার প্রতিফলন। কে কি ভাবছে Dam-care. নিজে যা ভাল বুঝি তাই আসল। এমন খামখেয়ালী পূর্ন আচরন বিবেকের কাছেও পরাভব মানে না। তাইতো ৩২ বছর একসাথে থাকার পর ২০০৫ এলো বিচ্ছেদ, ৫৭ বছরে নতুন বিয়ে । কেউ চিন্তা করতে পারে ? এমন ভাদাইম্ম্যা সমাজে প্রচুর.. কতজনকে আমরা চিনি? এরা মুহূর্তে গড়তে পারে স্বর্গ আবার আবার অনায়াসে চলে যেতে পারে মর্তে। কার কি আসে যায়?

হাসান ভাই……এই পুরো টিউনটি কি তথ্য সংগ্রহ করে আপনি নিজে লিখেছেন??? নাকি পুরোটাই সংগ্রহিত???? যদি নিজে লিখে থাকেন তাহলে তো বলতে হয় যে আপনার লেখার হাত খুবই ভালো!!!! লেখালিখি কে সিরিয়াসলি নিয়ে নিন…… 🙂

Level 0

wow, awesome , hasan vai, apnake ontor r ontosthol theke shuvechha ei tune ti kora r jonno, ekjon oshadharon protibhadhor bekti r jiboni amader kache golper moto tule dhorar jonno, ami tune ta copy kore amar kache rekhe dilam, Humayun Ahmed ke nie aro likha chai