এক হগা ইলেক্ট্রিক্যাল ইন্জ্ঞিনিয়ার: অলিভার হেভীসাইড

(অনেক দিন পর টেকটিউনসে ঢুকলাম। অনেক বদলে গেছে। এখন মনে হয় এটা আসলেই একটা টেকি সাইট। এমন না যে আমি খুব জানি, আমার জ্ঞান খুব নগন্য, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ধর্তব্যের বাইরে। তবু লিখতে চেস্টা করি, এমন না যে আমি যা জানি অন্যে তা জানে না। লিখি এজন্য যে যাতে নিজে না ভুলে যাই একসময় আমি কি পড়ে কি বুঝেদিলাম। ভুল হতেই পারে কারন মানুষ মাত্রই ভুল। আমার এ লেখাটা সামহোয়ার ইন ব্লগে 'উদাসী স্বপ্ন' নিকে দিয়েছি আগেই। চেস্টা করবো আগামীতে সব টেকিপোস্ট (?) এখানে আগে দেবার! ভুল হলে মাফ করবেন সবাই!)

আপনেরা যারা ল্যাপ্লাস ট্রান্সফরমেশন নিয়া পরিচিত (মূলত; যাহারা সিগন্যালস এন্ড সিস্টেমস পড়তে গিয়ে এইসব ল্যাপ্লাস, জেড ট্রান্সফরমেশন নিয়া গালাগালি পারেন আর কি) তারা দেখবেন ডিফারেন্সিয়াল ইকুয়েশনগুলান সলভ করতে কত মজা। তো, এইসব টেকনিকের আবিস্কার কার হইছিলো ১৭৭৯ সালে যখন আমার বয়স আছিল মাইনাসের ঘরে। ঐ সময় ফ্রান্সের এক আতেল এস্ট্রোনমার প্লাস গণিতবিদ ল্যাপ্লাস বাবাজী একখান পেপার পাবলিশ করে যেইখানে উণি উনার মাথায় কি খিচুড়ি পাকাইছেন সেইটা উল্লেখ করছেন। সমস্যা হইছিলো উনি যেমনে ঐ টেকনিকখান দেখাইছিলো উহা পরবর্তী এক শতাব্দিতে কারো মাথায় ঢুকে নাই ভালো কইরা।

মাগার এই টেকনিক খান আবারও আবিস্কার করা হয় একজন বৃটিশ ইলেক্ট্রিক্যাল ইন্জ্ঞিনিয়ারের মাথা থিকা তবে একটু অপ্রচলিত টেকনিকে, যেনার নাম ছিলো অলিভার হেভীসাইড (১৮৫০-১৯২৫)।

ইলেক্ট্রিক্যাল ইন্জ্ঞিনিয়ারগো ইতিহাসের পাতিহাসে উনারে ধরা হয় সবচাইতে দুর্ভাগ্যবান লোক।

সে ইলেক্ট্রিক্যাল ইন্জ্ঞিনিয়ারিং প্রচুর অবদান রাখছেন মাগার তার এই সব অবদান গুলার বেশীরভাগ তার জীবদ্দশায় সমালোচনার দৃস্টিতে দেখা হইছে যার পয়লা প্রমান দুয়েকটা জায়গা ছাড়া বেশীরভাগ বইতেই তার নাম তেমন লেখা হয় নাই।যত সময় গেছে এই ব্যাটা হারায়া গেছে কিন্তু তার কামগুলান এই প্রকৌশল শাখায় বহুদূর পর্যন্ত প্রভাবান্বিত করছে, যেইটা বলার অপেক্ষ রাখে না। অন্তত বলন যায় এই লোকের ক্যাবল লোডিং আবিস্কারের কারনে ট্রান্স আটলান্টিকে টেলিযোগাযো ব্যাবস্হা সম্ভব করন গেছে, কিন্তু টেলিফোনিতে তার কোনো নামই নাই এরকম একখান তুঘলকি আবিস্কারের করার পরও।

তার সাজেশন ছিলো ইন্ডাক্টিভ ক্যাবল লোডিং অথবা ট্রান্সমিশন লাইনের রেজিস্ট্যান্স আর ডাই ইলেক্ট্রিক ম্যাটেরিয়ালের কন্ডাক্টিভিট যদি নেগলিজিবলের পর্যায়ে নেয়া যায় আর লাইনের ইম্পিডেন্স যদি ইন্ডাক্টিভ করা হয় তাইলে ডিসটরশনলেস ট্রান্সমিশন পাওন যাই।কিন্তু এই আবিস্কারের পিছনে সকল ক্রেডিট গেছে জনৈক এম. পুপিনের পকেটে যিনি মূলত প্রথম তৈরী করছিলো কয়েল লোডিং।

তার আরো আবিস্কার:

১) তিনি প্রথম দেখাইছিলেন কিভাবে ডিসটরশনলেস মানে কোনো প্রকার ডিসটরশন ছাড়াই ট্রান্সমিশন লাইন কাম করবো স্কীন এফেক্টের উপর ব্যাফক পড়ালেখা কইরা।
২) লো পাস ফিল্টার সেই স্বপ্নে পাইছে
৩) ম্যাক্সওয়েলের ইকুয়েশন গুলান উনি সর্বপ্রথম আধুনিক ফর্মে লেখছে মানে ধরতে পারেন ফিজিক্সের প্যাটা্নে ইলেক্ট্রিক্যাল এনালজি আরকি আর যার কারনে ইলেক্ট্রিক্যালের পুলাপান যখন ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড পড়ে তখন আমার মতো পুলাপান দিশা হারায় ফেলায়।
৪) ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ডের দ্বারা হিট ট্রান্সফার রেটের সহ-আবিস্কারক।
৫) আধুনিক কমন ফ্যাজর এনালাইসিস এর বস
৬) ভেক্টর এনালাইসিসের উন্নয়নের একজন গুরুত্বপূর্ন লোক। ধরতে গেলে গিবসের বিষয়টারে স্বাধীনভাবে উনিই তৈয়ারী করছেন। ২০ টা ইকুয়েশনের ২০ টা ভেরিয়েবেল কাটাই ছাটাই কইরা চার ভেরিয়েবলের চারটা ইকুয়েশনে আনেন কার্ল আর ডাইভারজেন্স ব্যাব হার কইরা!
৭) অপারেশনাল ম্যাথমেটিক্সের ব্যাবহারের উপস্হাপক যেটা দিয়ে লিনিয়ার ইন্টিগ্রো ডিফারেন্সিয়াল ইকোয়েশন সলভ করা যায় যার ফলে ল্যাপ্লাস ট্রানসফরমেশন ইগনোর করার পদ্ধতিও আবিস্কৃত হয়।
৮) হার্ভার্ডের কেনেলির সাথে প্রথম একখান থিওরী দেয়: বায়ুমন্ডলের কন্ডাক্টিং লেয়ার (যাহাকে কেনেলি-হেভিসাইড লেয়ারও বলে) রেডিও তরঙ্গকে পৃথিবির কার্ভেচার বরাবর ঘুরায় যেইটার আসলে সোজা মহাশূন্যে সরলরেখা বরাবর চইলা যাওনের কথা আছিলো।
৯) সর্বপ্রথম বয়ান দেয় যে একটা ইলেক্ট্রিক চার্জের ভর বাড়তে থাকে তার গতি বাড়নের সাথে সাথে: এইটা পইরা আইনস্টাইনের স্পেসাল থিওরী অব রিলেটিভিটির কথা মনে পইড়া গেলো। এইটারে আরো দলাই মলাই কইরা সে সুপার কন্ডাক্টিভিটির পূর্বাভাস দেয়।

এই হেভীসাইড লোকটা মোটে এলিমেন্টারি স্কুলের পড়ালেখা শেষ করছিলো তারপর বাকি পড়ালেখা সে নিজে থিকাই করছে।১৬ বছর বয়সের পরই সে নিজে নিজে বাড়িতে ফুলটাইম লেখা পড়া শুরু করে।অবশ্য তার এই পড়া লেখায় তার চাচার খুব আগ্রহ আছিলো। সে তার ক্যারিয়ার শুরু করছিলো একজন টেলিগ্রাফার হিসাবে কিন্তু তার বন্ধাত্ব বাড়তে থাকায় ২৪ বছর বয়সেই অবসরে যাইতে হয়। সে তখন নিজের জান কুরবান কইরা দেয় ইলেক্ট্রিসিটির উপর পড়ালেখা করতে গিয়া। তবে সৃজনশীল কামগুলান বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বাতিল হইয়া যাইতো তখনকার জ্ঞানী সুশীল বিজ্ঞানীদের দ্বারা কারন একটাই তার কোনো ফর্মাল শিক্ষা বা ডিগ্রী নাই আর তার অপ্রচলিত পদ্ধতি।

তার কপালডা এই জন্য একটু বেশী খারাপ আছিলো যে তার কাজগুলে ম্যাথমেটিশিয়ানরা যেমন সমালচনা করছে উপযুক্ত গভীর জ্ঞানের অভাবে এবং যারা আসলেই প্রাকটিক্যাল কাজে হাত রাখতো তাদের দ্বারাও যারা খালি কইতো,'এতো অংক কেন?' ঐসময় ডিসটরশনলেস ট্রান্সমিশন লাইন সল্যুশন করতে গিয়া প্রায় হগ্গলেই ব্যার্থ হইছে কারন তখনও তারা ম্যাথমেটিক্সের আধুনিক ধাপ গুলো অনুসরন করেন নাই। কিন্তু হেভীসাইড পারছিলো কারন সে তাত্বিক দিক দিয়া না ভাইবা প্রাকটিক্যালি ভাবছে আর অনেকটা অনুমান ক্ষমতা কাজে লাগাইছে। আপনেরা যারা ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন পড়ছেন বা পড়বেন বা পড়তাছেন তখন দেখবেন ঐখানে বেশী ত্যাড়াব্যারা টার্ম আইলে সোজা বইলা দেয় এইটার মান কম বইলা আমরা নেগলেক্ট করবার পারি। পরে দেখবেন ক্যালকুলেশন কেমনে পানির মতো পাতলা হইয়া যায়। হেভীসাইড চাচায় এই সব ক্ষেত্রে সবার আগে ভঙ্গুর ম্যাথমেটিক্যাল টেকনিক বাদ দিয়া ঐখানে জুইট মতো আগাইতো যার একটা বড় উদাহরন হইলো স্হানিকভাবে পরিবর্তনশীল কন্ডাকটিভিটির বডিতে হিট ফ্লোর সল্যুশন।

১৮৯৫ সালে হেভিসাইড এই পদ্ধতিটা তার মেধা খরচা কামে লাগায়া নিরপেক্ষ কুলিং এর মাধ্যমে অতিরক্ত তাপের প্রবাহ বাইর করে যেইটার মাধ্যমে লর্ড কেলভিন হিসাব কইরা বাইর করছিলো দুনিয়ার জিওলজিক্যাল বয়স। সেই এই সেম প্রবাহের তাপ তত্বটা কাজে লাগায় তার ক্যাবল এনালাইসিসে। কিন্তু যেই সমস্যার সমাধান কেউ করতে পারে নাই, সেইটা করনের পরও রয়েল সোসাইটির কে্সটুবিস্টুরা তার উপর এতটুকু সহানূভূতিশিল আছিলো না। অনেক পন্ডিত আবার তার সমাধান গুলো প্রকৌশল দিক থেকে পরীক্ষা কইরা কইছে ব্যাটার পদ্ধতি পুরা পাগলা কিসিমের আবার কেউ কইছিলো জানা জিনিসের ঘুরাইয়া খাওন আর কি!
স্যার উিলিয়াম প্রিস যিনি ব্রিটিশ পোস্ট অফিসের তখনকার চীফ ইন্জ্ঞিনিয়ার হেভীসাইডরে তূলাধুনা কইরা কয়,'ব্যাটার থিওরী সব ভূয়া।' তার উপ সংহারেও অনেক ভুল কমেন্ট করে বসেন। ব্রিটিশ পোস্ট অফিস তার সকল সমাধান ডিসমিস করে দেয় এবং এসব কাজ গোপনীয় থাকাই উচিত মনে করে লর্ড্ কেলভিন সব জেনেও চুপ করে থাকেন তার প্রশংসা কররার বদলে।

তবে হেভীসাইডের অপারেশনাল ক্যালকুলাস প্রথাগত ভাবে একুরেট না হলেও তার সল্যুশনের ধারা আধুনিক অপারেশনাল মেথডের প্রবর্তক হিসাবেই ধরা যায়। যদিও তার সমাধানের ধরন ভালোভাবে বুঝা না গেলেও বাস্তবের পরীক্ষার ফলাফলের সাথে আশ্চর্যজনক ভাবে মিলে যায়।যখন হেভীসাইডকে সবাই আক্রমন করছিলো তার কাজের জন্য তখন সে দাম্ভিক ভাবেই বলেছিলো,' আমার কি উচিত খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেওয়া এ কারনে যে আমি পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্রম সম্পর্কে কিছুই জানি না?'

হেভীসাইড চিরকুমার ছিলেন, দ্বীনহীনভাবে বসবাস করছেন এবং প্রচন্ড দারিদ্রতায় অনেকটা ধরতে গেলে সবার অলক্ষ্যেই মারা যান। ব্যাটা নিজের উপর অনেক কনফিডেন্স বা নিজেরে নিয়া একটু অহংকারও করতো কিন্তু সেই হিসাবে দুনিয়াবী প্রতিষ্ঠা জীবনে আসে নাই। তবে অনেক চিন্তা ভাবনা কইরা ১৮৯১ সালে রয়াল সোসাইটি তার ইলেক্টরোম্যাগনেটিজমের উপর কাজগুলোর স্বীকৃতি দেয়। আর তার মরনের কয়েকবছর আগে ফ্যারাডে মেডেল খান দেওন হয়। অবশ্য সেই বছরই ফ্যরাডে মেডেলের প্রবর্তন করা হয়। ১৯০৫ সালে জার্মানীর গটিনজেন ইউনি থিকা তারে সম্মাননা সূচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করা হয়।

যাই হোউক, যেহেতু উনি মইরা গেছেন আর আমাগো জ্বলানোর জন্য দুই পাতা লেইখা গেছেন, সেহেতু তার নাম আমরা ঠেকায় পইড়া স্মরন না করলেও চলবো!

আসলেই ব্যাটা একখান হগা ইন্জ্ঞিনিয়ার!

সোর্স:
২) Nahin P.J. "Oliver Heaviside: Genius and Curmudgeon," IEEE Spectrum vol. 20, pp. 63-69, July 1983

সোর্স:

১) http://en.wikipedia.org/wiki/Oliver_Heaviside

২) Nahin P.J. "Oliver Heaviside: Genius and Curmudgeon," IEEE Spectrum vol. 20, pp. 63-69, July 1983.

Level 0

আমি অশ্রুগুলো রিনকে দেয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 18 টি টিউন ও 104 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

ছেলেটি পথে নেমেছিলো একদিন নীল মায়ার হাতছানিতে। নিঃসঙ্গতায় হেটে যেতে আবিস্কার করে নিঃশব্দ চাদ তার একান্ত সঙ্গী। এখন সে হাতড়ে বেড়ায় পুরোনো সুখস্মৃতি, ঘোলা চোখে খুজে ফেরে একটি হাসি মুখ!


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

ভাল লাগল ধন্যবাদ

এই টিউনটিতো গতকাল দেখি নি ! আজ আসল কোথা থেকে !

শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। [email protected]

অনেক দিন পর আনাকে আবার দেখে ভালোলাগলো।

ধন্যবাদ
ভালো লাগল

ভাল লাগল ধন্যবাদ ……..।