আশাকরি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন । ভালো থাকাটাই সব সময়ের জন্য প্রত্যাশা । ইতিপূর্বে কম্পিউটার ট্রাবলশুটিং বিষয়ে কয়েকটি টিপস নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ তারই ধারাবাহিকতায় কম্পিউটার হাডর্ওয়্যার ট্রাবলশ্যুটিং ও মেইনটেনেন্স বিষয়ে সমস্যা-সমাধান ও পর্যালোচনা নিয়ে আলোচনা করবো ।
চলুন যথারীতি শুরু করা যাক ।
অনেকেই চেষ্টা করছেন উইন্ডোজ এক্স পি থেকে উইন্ডোজ সেভেন কিংবা উইন্ডোজ এইট কিংবা উইন্ডোজ টেন এ আপগ্রেড করতে । কিন্তু শুধু এটা ভাবলেই হবেনা পিসির কনফিগারেশনও পরিবর্তন করতে হবে । সরকারী অনেক অফিসে এখনো পেন্টিয়াম থ্রী কিংবা ফোর দিয়ে কাজ চলছে । আর অপারেটিং সিস্টেম এখনো উইন্ডোজ এক্সপি এবং উইন্ডোজ ৯৮ দিয়ে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এর কাজ চলছে খুড়িয়ে খুড়িয়ে ।
ডিজিটাল বাংলাদেশে এটা যদিও দুখজনক তবুও আমরা আশা করছি পর্যায়ক্রমে সবই পরিবর্তন হবে ।
এ পর্যায়ে কম্পিউটারে অপারেটিং সিস্টেম সেটআপ দেয়ার পূর্বে যে বিষয় গুলো মনে রাখবেন। সেটা জেনে নিন.
১) আপনার গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো সরিয়ে রাখুন অন্য ড্রাইভ, পেন ড্রাইভ কিংবা পোর্টেবল কোন হার্ড ডিস্কে
২) বায়োস সেটআপে ফাস্ট বুট ডিভাইস সিডি/ডিভিডি সিলেক্ট করে দিন ।
৩) ডেস্কটপে কোন ফাইল রেখে থাকলে সেটি কপি করে অন্য ড্রাইভে রাখুন ।
৪) নিশ্চিত হয়ে নিন আপনার সিডি / ডিভিডি সমস্যামুক্ত ।
এ পর্যায়ে অপারেটিং সিস্টেম সেটআপ দিয়ে যে কাজগুলো করবেন সেটি জেনে নিন.
১) আপনার কম্পিউটারের ডেস্কটপে ওয়ালপেপার না রাখলে ভালো এটি আপনার কম্পিউটারকে দ্রুত করবে ।
২) স্ক্রীন সেভার থাকলে সেটিও রিমুভ করে দিতে পারেন ।
৩) ভার্চুয়াল মেমরী বাড়িয়ে দিন ।
৪) গ্রাফিক্স অপশন ডিসেবল করে রাখুন ।
৫) থীম সিলেক্ট করে রাখুন উইন্ডোজ ক্লাসিক ।
৬) উইন্ডোজ এর সিকিউরিটি নোটিফিকেশন অফ করে দিন এটি আপনাকে ভয় দেখাবে
৭) ফায়ারওয়াল অফ করে রাখুন ।
8) উইন্ডোজ আপডেট অফ করে দিন ।
৯) কম্পিউটার এর কনফিগারেশন দুর্বল হলে এন্টিভাইরাস এর লাইসেন্স কপি দিতে যাবেননা ।
১০) দুর্বল কনফিগারেশন এর জন্য ফ্রী একটি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করতে পারেন ।
১১) একাধিক এন্টিভাইরাস দিতে যাবেন না ।
উপরের কাজগুলো কারো অপছন্দ হলেও এটি করার ফলে আপনার কম্পিউটার অধিকতর দ্রুত হবে । আপনি নিজেই এখন চেষ্টা করে দেখুন । আর সকল কাজ দ্রুততার সাথে সম্পাদন করতে পারবেন ।
#দীর্ঘদিন অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারের পর এক পর্যায়ে কম্পিউটার স্লো মনে হয়, তখন যা যা করতে পারেন.
১) কম্পিউটারের ভিতর খুলে পুরোটা একবার ব্লুয়ার দিয়ে পরিষ্কার করুন । এতে কম্পিউটারের স্থায়ীত্ব বাড়বে ।
২) এন্টিভাইরাস আপডেট দিয়ে স্ক্যান করে ভাইরাস ক্লীন করুন ।
৩) ভাইরাসের পরিমাণ বেশী হলে সকল ফাইল বাইরে কোথাও কপি করে হার্ডডিস্ক পার্টিশন ডিলীট করুন ।
৪) নতুন করে হার্ডডিস্ক পার্টিশন করে তারপর ফরমেট করে উইন্ডোজ দিন ।
৫) স্টার্টআপের আইকনগুলো ডিসেবল করে দিন ।
৬) অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম ইনস্টল করা থাকলে সেটি রিমুভ করে দিন ।
অপারেটিং সিস্টেম হালনাগাদ করতে চাইলে কম্পিউটারকেও হালনাগাদ করুন ।
অতিরিক্ত ফাইলগুলো মুছে ফেলুন ।
#এখন আসুন কিভাবে আপনার কম্পিউটারের কোন সার্ভিস অফ হয়ে গেলে সেটি চালু করবেন জেনে নিন ।
মনে করুন প্রিন্টার স্ফুলার সার্ভিস অফ হয়ে গেছে যে কারণে প্রিন্ট হচ্ছে না ।
এজন্য আপনাকে কন্ট্রোল প্যানেল এর এডমিনিস্ট্রেটিভ টুলসে যেতে হবে.তারপর সেটি ওপেন করে সার্ভিসেস ওপেন করতে হবে ।
এখানে দেখুন অনেক সার্ভিস চালু কিংবা স্টপ অবস্থায় আছে, সেখানে থেকে প্রিন্টার স্পুলার চালু করে দিতে পারবেন । একইভাবে যেকোন সার্ভিস চালু কিংবা বন্ধ করতে পারবেন ।
#এবার আসুন কিভাবে আপনার কম্পিউটারের কনফিগারেশন দেখবেন এক নজরে.
এজন্য স্টার্ট মেনু থেকে রান প্রোগ্রাম চালু করুন, সেখানে লিখুন dxdiag এবং এন্টার দিন । এক নজরে পুরো কনফিগারেশন দিখতে পাবেন । আর অনেক সময় মাদারবোর্ডের মডেল জানা কষ্টকর ব্যাপার হয়ে দাড়ায় সেক্ষেত্রে খুব সহজেই আপনার কম্পিউটারের মাদারবোর্ডের মডেল জেনে নিতে পারবেন ।
আপনার কম্পিউটারের সকল ডিভাইসের জন্য উপযুক্ত কোন ড্রাইভার খুঁজে না পেলে অটো ড্রাইভার প্যাক সল্যুশন রান করে সে সমস্যা অচিরেই সমাধান করতে পারেন । এতে করে নির্দিষ্ট ড্রাইভার খুঁজে পাওয়া না গেলেও ভালো আউটপুট পাওয়া যায় ।
বরাবরের মতই এবার আসুন আপনার কম্পিউটার-এ ঘটতে পারে এমন কিছু অদ্ভুত সমস্যা ও সমাধান নিয়ে আলোচনা ।
১) সমস্যা- অপারেটিং সিস্টেম কোন ভাবেই সেটআপ হচ্ছে না? বারবার বলছে সিডি/ডিভিডি মিসিং অথচ সেটি ঢুকানোই আছে ।
সমাধান- শুধুমাত্র ভালো একটি সিডি/ডিভিডি ঢুকান তাতেই কাজ হবে ।
২) সমস্যা- অপারেটিং সিস্টেম সেটআপের মাঝখানে বারবার রিস্টার্ট হয়ে যাচ্ছে? ধমক দিলেও কথা শুনছে না ।
সমাধান- র্যাম পরিবর্তন করে দিন কাজ হয়ে যাবে ।
৩) সমস্যা- অপারেটিং সিস্টেম সেটআপের মাঝখানে পুরো কম্পিউটার হ্যাং। আর সামনে এগোয় না ।
সমাধান- এ ক্ষেত্রে সকল ডিভাইস চেক করে দেখুন বিশেষ করে হার্ডডিস্ক আর এটি পরিবর্তন করে দেখুন আশা করি একই সমস্যা আর হবে না ।
৪) সমস্যা- কম্পিউটার চালু হওয়ার কিছুক্ষন পরই বন্ধ হয়ে যায় ।
সমাধান- প্রসেসর ওভার হীট হচ্ছে। প্রসেসরের উপর পেস্ট দিন এবং নিশ্চিত হয়ে নিন কুলিং ফ্যান যথাযথভাবে বসেছে ।
৫) সমস্যা- অনেকক্ষন কাজ করার পর ল্যাপটপ প্রচন্ড গরম হচ্ছে ।
সমাধান- এজন্য ল্যাপটপ এর জন্য নির্দিষ্ট কুলার ব্যবহার করতে পারেন । ডেস্কটপের মত ভারী কাজ করতে গেলে ল্যাপটপে কুলার ব্যবহার করা ভালো তাতে ২৪ ঘন্টাই ভালো সার্ভিস পাবেন ।
৬) সমস্যা- হঠাৎ করেই ডেস্কটপের কোন আইকন দেখাচ্ছে না ।
সমাধান- ভাইরাসের উপদ্রব হয়েছে, রিপেয়ার দিলেই সমাধান হয়ে যাবে ।
৭) সমস্যা- কোন ভাবেই কীবোর্ড কাজ করে না। আর করলেও কয়েকটি কী কাজ করে না ।
সমাধান- ল্যাপটপ-এ হলে আলাদা কীবোর্ড ব্যবহার করুন অথবা ডেস্কটপের জন্য মাউজ দিয়ে স্টার্ট মেনুতে গিয়ে রান-এ লিখুন osk অর্থাৎ অন স্ক্রীন কীবোর্ড এরপর এন্টার দিন । ব্যাস আপাতত কাজ সারাতে পারবেন ।
৮) সমস্যা- অনেক সময় ভাইরাস এর কারণে কম্পিউটারে পেন ড্রাইভ লাগালেই সর্টকাট হয়ে যায় ।
সমাধান- ইতিপূর্বে এ থেকে পরিত্রাণ এর উপায় বলেছি । আপাতত সমাধান হচ্ছে টুলস এ গিয়ে ফোল্ডার অপশনে গিয়ে শো হিডেন ফাইলে টিক চিহ্ন দেয়া এবং হাইড এক্সটেনশন চেকবক্স তুলে দেয়া । তাহলে হাজারো সর্টকাটের ভিড়েও প্রয়োজনীয় ফাইল খুঁজে পাবেন এবং দেখতে পাবেন ।
আমি মো ইমরান হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 10 টি টিউন ও 3 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 5 টিউনারকে ফলো করি।