উইন্ডোজ ৭ যারা ব্যবহার করেন কিংবা ব্যবহার করে এসেছেন তারা দেখবেন যে উইন্ডোজ ৭ ইন্সটল দেবার পর এটি আপনাকে একটি এন্টিভাইরাস প্রোগ্রাম সেটআপ করার জন্য রেকোমেন্ড বার্তা দিতে থাকবে। কিন্তু উইন্ডোজ ৮ এবং ১০য়ে কিন্তু আপনি এ রকম বার্তা পাবেন না কারণ ৮ এবং ১০ সংস্করণে উইন্ডোজের একটি বিল্ট ইন এন্টিভাইরাস Windows Defender দেওয়া থাকে। যেটা উইন্ডোজ ৭য়ে আপনি আলাদাভাবে Microsoft Security Essentials নামে ইন্সটল করে নিতে পারতেন। তবে এই বিল্ট-ইন এন্টিভাইরাসটি কি ভরসাযোগ্য? এটি নিয়েই আলোচনা করতে আমি টিউনার গেমওয়ালা আজ চলে এসেছি টেকটিউনসে।
পিসি এক্সপার্টরা অনেক সময় এন্টিভাইরাস ব্যবহার করে থাকেন না! যেমন টা আমি! (লোল) কারণ পিসিতে এন্টিভাইরাস প্রবেশের পথ আমার সকল কিছু জানা রয়েছে আর পিসিতে ভাইরাস ঢুকলে আমি এমনিতেই বুঝতে পারি যে something is wrong with my pc! তবে এটা ঠিক নয়, কারণ শুধু ভাইরাস রোধের জন্য এন্টিভাইরাস ব্যবহৃত হয় না, পিসিতে আপনি স্মার্ট থাকুন আর যাই থাকুন, এন্টিভাইরাস বিহীন পিসি ইউজ করা উচিৎ নয় যদি আপনি নিয়মিত ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে থাকেন।
আর নিয়মিত ইন্টারনেট ব্রাউজিং করলে আপনার পিসিতে একটি ভালো এন্টিভাইরাস এবং একটি ভালো এন্টি-ম্যালওয়্যার প্রোগ্রাম অবশ্যই এবং অবশ্যই ইন্সটল করে রাখতে হবে। মনে রাখবেন AntiVirus এবং Anti-malware দুটি আলাদা জিনিস এবং এই দুটি প্রোগ্রাম একত্রে ব্যবহার করে আজকালকার আধুনিক ইন্টারনেটের যুগে আপনার পিসি নিয়ে আপনি ৯৯% সুরক্ষিত থাকতে পারবেন। এই দুটি জিনিস একত্রে ব্যবহার করে আপনি আজকালকার যুগের যাবতীয় virus, spyware, ransomware এমনকি PUP (pententially unwanted programs) থেকেও সুরক্ষিত থাকতে পারবেন।
আপনার কম্পিউটার যখন অন্য রকম আচরণ করতে থাকে তখন স্বাভাবিক ভাবেই আপনি ভাববেন যে আপনার সখের পিসিটি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এখন ভাইরাস তো অনেক রকমের আছে, যদি আপনি ভাইরাসের প্রকারভেদ জানতে পারেন তাহলে এদের থেকে বেঁচে থাকতে পারবেন এবং আরো দ্রুত পিসিকে সাড়িয়ে তুলতে পারবেন।
আজকের টিউনটি শুরু করছি এন্টিভাইরাস দিয়ে। তো চলুন আর ভুমিকা না বাড়িয়ে সরাসরি টিউনের বিষয়বস্তুতে চলে যাই।
আপনার পিসিতে যখন আপনি উইন্ডোজ ১০ ইন্সটল দিবেন তখন এটার সাথে আপনি অটোমেটিক্যালি বিল্ট-ইন এন্টিভাইরাস Windows Defender পেয়ে যাবেন। যেটি শুরু থেকেই আপনার পিসির সকল প্রোগ্রামগুলোকে নির্দিষ্ট সময়ে স্ক্যান করবে, উইন্ডোজ আপডেট থেকে তার আপগ্রেডের কাজ করে নেবে। আর এছাড়া এর নিজস্ব উইন্ডো থেকে আপনি in-deep স্ক্যানিংও করে নিতে পারবেন। আর সবথেকে ভালো কথা হচ্ছে এই বিল্ট-ইন এন্টিভাইরাসটি আপনার পিসিতে স্লো করে দেবে না আর এটি প্রায় সবসময়ই ব্যাকগ্রাউন্ডে থেকে কাজ করবে তাই আপনি কিছুই টের পাবেন না।
আর মাইক্রোসফটের প্রোডাক্ট বলে কথা, ভালো তো হবেই। তার উপর আপনার উইন্ডোজে আলাদা করে কোনো এক্সট্রা এন্টিভাইরাস ব্যবহার করার ঝামেলা থাকছে না।
সো, আমি বলতে পারি যে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য উইন্ডোজ ডিফেন্ডার আপনার জন্য যথেষ্ট! আপনাকে শুধু এই প্রোগ্রামটিকে নিয়মিত আপগ্রেড করে নিতে হবে এই যা। তবে আপনি যদি কর্পোরেট ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটি পেইড প্রিমিয়াম এন্টিভাইরাস ব্যবহার করা উচিৎ। আর প্রিমিয়ার এন্টিভাইরাস সেটাই ব্যবহার করা উচিৎ যেটার বাজারে কোনো ফ্রি সংস্করণ নেই। যেমন ক্যাস্পারেস্কি এন্টিভাইরাসের বাজারে কোনো ফ্রি সংস্করণ নেই আপনি এটা ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু অন্যদিকে এভাস্ট এন্টিভাইরাসের ফ্রি সংস্করণ বাজারে আসে তাই এটার টাকা দিয়ে প্রিমিয়াম না কেনাই উত্তম, এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত!
এবার আসি malware নিয়ে! কয়েক বছর আগেও শুধু পিসিতে এন্টিভাইরাস দিয়ে নিরাপদ থাকা যেতো। কিন্তু বাজারে ফ্রি এন্টিভাইরাসের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গেছে যে ভাইরাস নির্মাতারা এই সমস্ত ফ্রি এন্টিভাইরাসদের উপর গবেষণা করে এদের দুর্বল পয়েন্টগুলো বের করে নিচ্ছে আর ওদিকে ভাইরাসের শুক্তি বৃদ্ধি করছে এবং ভাইরাস ছড়ানোর বিভিন্ন নিত্যনতুন উপায় বের করে নিচ্ছে। তাই বর্তমান যুগে সর্বোচ্চ সুরক্ষিত থাকতে হলে আপনার পিসিতে এন্টিভাইরাসের সাথে একটি ভালো anti-exploit প্রোগ্রাম থাকা জরুরী। এটি আপনার ওয়েব ব্রাউজার এবং প্লাগ-ইনসগুলোকে আক্রমণের হাত থেকে সুরক্ষিত রাখবে।
এই টিউনে এন্টিম্যালওয়্যার হিসেবে আমি Malwarebytes প্রোগ্রামটিকে ব্যবহার করার জন্য আপনাদেরকে রেকোমেন্ড করছি। বাজারে এটির ফ্রি এবং প্রিমিয়াম সংস্করণ রয়েছে। আপাতত ফ্রি সংস্করণ ব্যবহার করাই ভালো। Malwarebytes প্রোগ্রামটিতে anti-exploit ফিচারটি রয়েছে যেটি প্রোগ্রামসমূহে exploit পয়েন্টগুলো খুঁজে বের করবে এবং ব্লক করে দেবে। আর PUP ফিচার তো রয়েছেই। এছাড়াও এই প্রোগ্রামে anit-ransomware রয়েছে যেটি এক্সটরশন অ্যাটাক যেমন CryptoLocker এর মতো আক্রমণ থেকে আপনার পিসি সুরক্ষিত রাখতে পারবে। তবে একটি কথা খেয়াল রাখবেন যে, একই সাথে এন্টিভাইরাস এবং এই জাতীয় এন্টিম্যালওয়্যার ব্যবহার করা উত্তম। এই দু্টি প্রোগ্রাম একসাথে চালানোর মাধ্যমে এই যুগে আপনি পিসির জন্য বেস্ট সুরক্ষিত পরিবেশে নিশ্চিত করে রাখতে পারবেন।
তো টিউনের শেষে এসে বলবো যে, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য আপনি উইন্ডোজ ডিফেন্ডারের উপর ভরসা রাখতে পারেন। আবার আপনার কাছে উইন্ডোজ ডিফেন্ডার ভালো না লাগলে আপনি এভাস্ট, এভিরা, কিংবা নরটর এন্টিভাইরাসগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। আশা করছি আজকের টিউনটি আপনাদের কাছে ভালে লেগেছে। আগামীতে অন্য কোনো টপিক নিয়ে আমি চলে আসবো আপনাদের প্রিয় বাংলা টেকনোলজি ব্লক টেকটিউনসে!
টিউনটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
আমি ফাহাদ হোসেন। Supreme Top Tuner, Techtunes, Dhaka। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 661 টি টিউন ও 428 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 149 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
যার কেউ নাই তার কম্পিউটার আছে!
খুব সুন্দর লিখেছেন ভাই।
আশা করি নিচের লিংকটাও সবার উপকারে আসবে।
http://twineer.com/A9YP