স্মার্টফোন হারিয়ে যাওয়া বা বিশেষ করে চুরি হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি আমাদের দেশে খুবই সাধারন। বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষই লাইফে একবার হলেও স্মার্টফোন চুরি হওয়ার শিকার হয়েছেন। আমি নিজেও এক বছর আগেও হয়েছি। সত্যি কথা বলতে, স্মার্টফোন বা যেকোনো ফোন চুরি হয়ে গেলে ঠিক তেমন কিছু করার থাকেনা যার ফলে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন যে আপনার ফোনটি আপনি ফেরত পাবেন। তবে আপনি ফোনটি একেবারেই ফেরত পাবেন না তাও নিশ্চিতভাবে বলা যায়না, যদি আপনি ফোন চুরি হওয়ার ঠিক পরের মুহূর্তে কিছু স্টেপ নিতে পারেন।
এই স্টেপগুলো নিলেই যে আপনি স্মার্টফোন পেয়েই যাবেন তার কোন নিশ্চয়তা নেই, তবে ফিরে পাওয়ার অনেকটা সম্ভাবনা থেকে যেতে পারে। আজকে মূলত স্মার্টফোন চুরি হয়ে গেলে বা হারিয়ে গেলে ঠিক এর পরমুহূর্তেই আপনি কি কি স্টেপ নিতে পারেন সেগুলো নিয়েই আলোচনা করবো। এছাড়া এটা নিয়েও আলোচনা করবো যে কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে আপনাকে, যদি আপনি আপনার ফোনটি চুরির হাত থেকে বাঁচাতে চান।
এই সাবধানতাটি আপনাকে আপনার ফোন চুরি হওয়ার আগেই নিতে হবে। কারন, আপনার ফোনটি যদি কখনো চুরি হয়ে যায়, তারপরে এসব ইনফরমেশন আপনার দরকার হবে। যদি আগে থেকে নোট করে না রাখেন, তাহলে এর পরে সহজে এগুলো খুঁজে পাবেন না। যেমন- আপনার ফোনের IMEI নাম্বার। আমি এমন অনেককে চিনি, যাদের স্মার্টফোন চুরি হওয়ার পরে আমার কাছে জিজ্ঞেস করেছে যে তারা কি করতে পারে এখন। তখন IMEI নাম্বার সম্পর্কিত কিছু জিজ্ঞেস করলেই বলেছে যে সেসর কিছুই তারা জানেনা, যেহেতু সেগুলো আগে থেকে নোট করে রাখেনি।
আপনার হারিয়ে যাওয়া স্মার্টফোন খুঁজে বের করার জন্য IMEI নাম্বার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ফোনের ডায়ালপ্যাডে গিয়ে *#06# টাইপ করলেই একটি পপআপ উইন্ডোতে আপনার ফোনের IMEI নাম্বার পেয়ে যাবেন। এখনই একটি কাগজ এবং কলম নিয়ে বসে সেখানে যা যা নাম্বার পাবেন, সবকিছু লিখে রাখুন যাতে আপনার ফোন কখনো চুরি হয়ে গেলেও আপনি IMEI নাম্বার মনে রাখতে পারেন।
গুগল ডিভাইস ম্যানেজার ব্যবহার করে লোকেশন ট্র্যাক করুন!
আপনার স্মার্টফোনটি যে চুরি হয়েছে সেটা বোঝামাত্রই সবথেকে ভালো সিদ্ধান্ত হতে পারে সেটির লোকেশন ট্র্যাক করা। তবে হ্যা, লোকেশন শুধুমাত্র তখনই ট্রাক করা সম্ভব হবে যখন আপনার ফোনটিতে অ্যাক্টিভ ডেটা কানেকশন থাকবে এবং আপনার ফোনটি পাওয়ার অফ না করা হবে। এখন, এর পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার ভাগ্যের ওপরে এবং যে আপনার ফোনটি চুরি করেছে সে কতটা অভিজ্ঞ চোর তার ওপরে। অনভিজ্ঞ চোর হলে সে এটা বুঝবে না যে ফোন চুরি করার পরে ফোনটি পাওয়ার অফ করতে হয় অথবা ডেটা কানেকশন অফ করতে হয়।
তখন আপনি জাস্ট গুগল ডিভাইস ম্যানেজারে আপনার ফোনে যে গুগল অ্যাকাউন্ট লগিন করা ছিল সেই একই অ্যাকাউন্ট দিয়ে অন্য কোন ডিভাইস থেকে লগিন করে দেখতে পারেন যে আপনার ফোনটি ঠিক কোথায় আছে। তবে আপনার ফোনটি চুরি হয়ে থাকলে খুব কম আশাই রাখতে পারেন যে এটি কাজ করবে। আপনি যদি সেই ধরনের মানুষ হন যিনি সবসময় ফোনের ডেটা কানেকশন অন রাখেন, তাহলে আপনার ফোনটি যদি কোথাও হারিয়ে যায়, তখন এই মেথডটি কাজ করবে।
তবে হ্যা, আপনি চাইলে এখান থেকে আপনার ফোনটি লক করে দিতে পারবেন যাতে চোর আপনার ফোনটি পাওয়ার অন করলে বা ডেটা কানেকশন অন করলেই আপনার ফোনটি লক হয়ে যায় এবং আপনি ফোনের লাস্ট লোকেশন হিস্টরি দেখে চোরকে ট্র্যাকও করতে পারেন।
এটা খুবই সাধারন একটি ব্যাপার। তবে, স্মার্টফোন চুরি হলে অনেকেই ভেবে থাকেন যে এখানে পুলিশের কোন কাজ নেই এবং পুলিশ তেমন কিছু করতে পারবে না। এটা অনেকক্ষেত্রে সত্যি হলেও সম্পূর্ণ নিশ্চিত হওয়ার জন্য পুলিশের কাছে ফোন চুরি হওয়ার একটি ডায়েরি করে রাখা অবশ্যই ভালো সিদ্ধান্ত। আপনার ফোন চুরি হলে অবশ্যই আপনি আপনার কাছের পুলিশ স্টেশনে গিয়ে আপনার ফোনের IMEI নাম্বার, ফোনের মডেল নাম্বার, ফোনের বিস্তারিত বিবরন, ইনসার্ট করা সিমকার্ডগুলোর নাম্বার ইত্যাদি সবধরনের ইনফরমেশন দিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করবেন। এমন অনেকক্ষেত্রেই পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পরে পুলিশ অনেকেরই ফোন ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। তবে বুঝতেই পারছেন, যদি ডায়েরি একেবারেই না করেন, তাহলে তার কোন সম্ভাবনাই নেই।
আপনার স্মার্টফোনটি যদি শাওমি রেডমি নোট ৪, ওয়ানপ্লাস ৬ কিংবা অনার ১০ হয়ে থাকে তাহলে আপনার ব্র্যান্ডই এর সমাধান দিতে প্রস্তুত। বিস্তারিত জানার জন্য অ্যান্ড্রয়েডহোম অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
আরেকটা স্টেপ যা আপনি নিতে পারেন, তা হচ্ছে আপনার ফোনটির ম্যানুফ্যাকচারার অথবা আপনি যে অফিশিয়াল রিসেলার অথবা শো-রুম থেকে স্মার্টফোনটি কিনেছেন সেখানেও জানিয়ে রাখা যে আপনার স্মার্টফোনটি চুরি হয়ে গিয়েছে। কারন, হতেও পারে যে তারা আপনাকে এই বিষয়ে কোনরকম সাহায্য করতে পারে। আপনার ফোনটি যদি স্যামসাং অথবা বাংলাদেশে অফিশিয়ালি সেল করা হয় এমন কোন ব্র্যান্ডের হয়ে থাকে এবং আপনি অফিশিয়ালি কিনে থাকেন, তাহলে ব্র্যান্ডটির হেল্পলাইনে অথবা কাস্টোমার সার্ভিসে জানিয়ে রাখা অবশ্যই একটি ভালো ডিসিশন।
যদিও এখনকার সব মডার্ন স্মার্টফোনে আগে থেকেই কিছু বিল্ট ইন ফিচারস থাকে যেগুলো আপনার ফোনকে চুরির হাত থেকে বাঁচানোর কিছুটা প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। তবে সেগুলো অ্যাক্টিভ রাখার পাশাপাশি পরিপূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কিছু এক্সট্রা থার্ড পার্টি অ্যান্টি থেফট অ্যাপস এবং সার্ভিস ব্যবহার করা জরুরি। প্লে স্টোরে এমন অনেক অ্যান্টি থেফট অ্যাপস পাবেন তবে তার মধ্যে অধিকাংশ অ্যাপস নিজেই সেফ নয় বা ব্যবহার করা উচিত নয়। একটি রিলায়েবল অ্যান্টি থেফট অ্যাপ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন।
তবে খোঁজাখুঁজির পরে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমি যে অ্যাপটি প্রিফার করি, সেটির নাম হচ্ছে Thamao (থামাও)। হ্যা, ঠিক ধরেছেন, এই অ্যাপটি আমাদের বাংলাদেশেই তৈরি। এই অ্যাপটিতে এমন কিছু ফিচার আছে যেগুলো আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যথেষ্ট উপযোগী এবং অনেক বেশি স্মার্ট। এই অ্যাপটিতে এমন কি কি ফিচার আছে যা আপনার ফোনটিকে চুরি হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে পারে, সেগুলো নিচে দেখুন। তাহলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে কেন আমি এই অ্যাপটিকে বাংলাদেশের জন্য উপযোগী বলেছি-
এবং এই ধরনের আরও অনেক অ্যান্টি থেফট ফিচারস আছে এই Thamao অ্যাপটিতে। আর হ্যা, অবশ্যই আপনি নিজের ইচ্ছামত এইসব সেটিংস কাস্টোমাইজ করতে পারবেন। আর নিশ্চই বুঝেছেন এতক্ষনে যে কেন আমি এই অ্যাপটিকে স্মার্টফোন চুরি ঠেকানোর জন্য বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবথেকে উপযোগী এবং স্মার্ট অ্যাপ বলেছি।
আমি দেলোয়ার হোসেন দিহান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 1 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রিয় দেলোয়ার হোসেন দিহান,
টেকটিউনসে অরিজিনাল ও ইউনিক টিউন করে আপনি টেকটিউনস থেকে ‘ট্রাসটেড টিউনার’ ব্যাজ পেতে পারেন। আপনি মৌলিক, অরিজিনাল ও ইউনিক টিউন ১০ টি প্রকাশ করে টেকটিউনস থেকে ‘ট্রাসটেড টিউজার ব্যাজ’ অর্জন করতে পারবেন।
ট্রাসটেড টিউনার হতে ও ট্রাসটেড টিউনারশীপ বজায় রাখতে আপনার পরবর্তি টিউন গুলো নিচের বৈশিষ্ঠ্য সম্পন্ন হতে হবে:
আপনার কোন একটি টিউন টেকটিউনস টিউন গাইডলাইন ভঙ্গ করে নেগেটিভ র্যাংক পেলে আপনার ট্রাসটেড টিউনারশীপ বাতিল হয়ে যাবে।
টেকটিউনসের ‘ট্রাসটেড টিউনার’ হলে আপনি টেকটিউনস থেকে যে সুবিধা গুলো পাবেন:
টেকটিউনস থেকে আর্ন করতে হলে আপনাকে ট্রাসটেড টিউনারদের মত মৌলিক, অরিজিনাল, কপিপেস্টমুক্ত, দারুন ইমেইজ ও ছবি সমৃদ্ধ, টেকটিউনসের সঠিক ও সুন্দর স্ট্যান্ডার্ড টিউন ফরমেটিং গাইডলাইন মোতাবেক ফরমেটিং করে, কোন ধরনের অ্যাফিলিয়েট, রেফারাল লিংক মুক্ত ইউনিক টিউন করতে হবে। টেকটিউনসে কি ধরনের কোয়ালিটি টিউন কিভাবে করে নিজের ফলোয়ার বাড়াবেন ও আর্ন করবেন তা প্র্যাকটিক্যালি শিখতে টেকটিউনস এর ‘ট্রাস্টেড টিউনারদের’ সকল টিউন গুলো দেখুন ও শিখুন এবং তাঁদের মত করে টিউন করুন। টেকটিউনস ট্রাস্টেড টিউনার ১, টেকটিউনস ট্রাস্টেড টিউনার ২, টেকটিউনস ট্রাস্টেড টিউনার ৩
আপনি ট্রাসটেড টিউনারদের মত মৌলিক, অরিজিনাল, কপিপেস্টমুক্ত, দারুন ইমেইজ ও ছবি সমৃদ্ধ, ভিজিটর এনগেজিং কন্টেন্ট ও শিরোনাম যুক্ত, টেকটিউনসের সঠিক ও সুন্দর স্ট্যান্ডার্ড টিউন ফরমেটিং গাইডলাইন মোতাবেক ফরমেটিং করে, কোন ধরনের অ্যাফিলিয়েট, রেফারাল লিংক মুক্ত ইউনিক ১০ টি টিউন প্রকাশ করলে টেকটিউনস থেকে আপনাকে ‘ট্রাসটেড টিউনার ব্যাজ’ দেওয়া হবে এবং আপনার একাউন্টে টেকটিউনস মনিটাইজেশন চালু করে দেওয়া হবে। টেকটিউনস মনিটাইজেশন চালু হলে আপনি স্ট্যান্ডার্ড টিউন (টিউন), ভিডিও টিউন (ভিউন), অডিও টিউন (ওউন), ফটো টিউন (ফিউন) তৈরি করে টেকটিউনস থেকে আর্ন করতে পারবেন এবং আপনার একাউন্ট প্রোফাইল থেকে প্রতি মাসের শেষ শনিবার টাকা উত্তলোন করতে পারবেন।
টেকটিউনস সৌশল নেটওয়ার্ক কীভাবে কাজ করে তা জানতে এই টিউনটি পড়ুন এবং টেকটিউনসে টিউন করতে কি কি বিষয় মেনে টিউন করতে হয়, কোন কোন বিষয় মেনে টিউন করলে আপনার টিউন র্যাংক করবে বেশি ফলোয়ার পাওয়া যাবে তা জানতে এই টিউনটি পড়ুন।