অ্যান্ড্রয়েড চেনে না এমন মানুষ এখন কমই আছে। আর ব্যাবহারকারিও বাড়ছে দিন দিন। iOS কিংবা অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমের তুলনায় গুগলের অ্যান্ড্রয়েড খুবই দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এমন এক সময় হয়ত আসবে যখন অ্যান্ড্রয়েড সব জায়গায় বিরাজ করবে।
Sundar Pichai গুগলের একজন ইন্ডিয়ান কর্মকর্তা যিনি বর্তমানে গুগলের Senior Vice President হিসেবে নিয়োজিত আছেন। তার দায়িত্বের অধিনে রয়েছে গুগল ক্রোম, অ্যান্ড্রয়েড এবং গুগল অ্যাপস।
Sundar Pichai ঘোষণা করেছেন যে বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েডের অ্যাক্টিভ ইউজার সংখ্যা ১ বিলিয়ন। ৩০ দিনের এক নজরদারিতায় জানা গেছে এই তথ্য। ২০১৩ সালে ৯০০ মিলিয়ন নতুন অ্যান্ড্রয়েড ইউজার যোগ হয়েছে যা ২০১২ সালে ছিল মাত্র ৪০০ মিলিয়ন। ২০১৪ সালেতো আরো অনেক ইউজার যোগ হয়েছে, তাই বলা যায় যে অ্যান্ড্রয়েড বর্তমানে মোবাইল অপারেটিং সিস্টেমের চ্যাম্পিয়ন।
আসুন অ্যান্ড্রয়েড সম্পর্কে কিছু তথ্য জানি যা আপনি হয়ত আগে জানতেন না। আগেই বলে রাখি সবাই সবকিছু জানে না আবার অনেকের অনেক কিছুই জানা। তাই আপনি যেটা জানেন সেটা অন্যদের জানার জন্য ছেড়ে দিন আর যা না জানেন তা জেনে নিন। সব গুলো তথ্যই পুরনো কিন্তু সবার দৃষ্টিগোচর হয়নি বলেই লিখছি।
অনেকেই হয়ত জানেন অ্যান্ড্রয়েডের নির্মাতা গুগল নয়। Android Inc. ২০০৩ সালে অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপ করেন এবং ডেভেলপারের নামানুযায়ি অ্যান্ড্রয়েডের নামকরন করা হয়। অ্যান্ড্রয়েড হচ্ছে ফাউন্ডারের নিকনেইম, রোবটের সাথে বেশি জড়িয়ে থাকার ফলে সবাই তাকে অ্যান্ড্রয়েড বলে ডাকতো।
২০০৫ সালে Android Inc. কে গুগল কিনে নেয়। গত ডিসেম্বার পর্যন্ত ১৭৪ টা কম্পানিকে কিনে নেয় গুগল। অ্যান্ড্রয়েড কে কিনেছে 50,000,000 ডলার দিয়ে। আমার মনে হয় এটায় ছিল গুগলের সেরা সিদ্ধান্ত।
অনেকেই হয়ত জানেন না যে অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপ করা হয়েছিলো ডিজিটাল ক্যামেরা জন্য। কিন্তু গুগল যখন কিনে নেয় তখন তারা বুঝতে পারে যে ডিজিটাল ক্যামেরার চাইতে মোবাইলের চাহিদা বেশি তাই তারা মোবাইলের জন্য অ্যান্ড্রয়েড শুরু করে।
HTC Dream হচ্ছে সেই মোবাইল যেটায় প্রথম পাবলিক ভাবে অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যাবহার করা হয়েছে। ২২ অক্টোবর ২০০৮ সালে প্রথম এই মোবাইলটি বাণিজ্যিক ভাবে রিলিজ করা হয়। তার মানে আমাদের মত জনসাধারনের হাতের নাগালে অ্যান্ড্রয়েড এসেছে ২০০৮ সালের শেষের দিকে।
৩০ দিনের পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে অ্যান্ড্রয়েড ইউজাররা দিনে ২০ বিলিয়ন মেসেজ পাঠায়, ৯৩ মিলিয়ন সেলফি তুলে এবং ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১০০ বিলিয়ন বার তাদের মোবাইল চেক করে। সবাইকে ট্র্যাক করা সম্ভব না হয়ত গুগল অনেকে ইউজারদের কথা জানেই না, তাদের বাদ দিয়ে হিসেব করলেও যা দেখা যায় তাতে বুঝাই যাচ্ছে অ্যান্ড্রয়েডের বর্তমান অবস্থানটা কোথায়!
অ্যান্ড্রয়েডের বেশীরভাগ ভার্সনের নাম করন করা হয়েছে মিষ্টি খাবারের নামের সাথে মিলিয়ে। আমি বেশীরভাগ বলেছি বলে আপনারা মনে করতে পারেন যে সব গুলোইতো খাবারের নাম! আসলে অ্যান্ড্রয়েডের প্রথম ২ টা ভার্সনের নাম কোন খাবারের নামে ছিল না। আসুন দেখি অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনের হিস্টরি।
Android 1.0 এর নাম ছিল Android Alpha তারপরে Android 1.1 এর নাম দেওয়া হয় Android Beta এগুলোর আলাদা কোন লোগো ছিল না। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে নাম গুলো ইংরেজি বর্ণমালার প্রথম থেকে শুরু হয়েছে। প্রথমে A=Alpha পরে B=Beta তারপর থেকে সকল ভার্সন সিরিয়াল অনুসারেই এসেছে। A, B, C, D, E, F, G, H, I, J, K, L !!!!!
উপরের ছবিতে C-K পর্যন্ত দেওয়া আছে। প্রথমে AB এবং শেষে L=Lollypop যোগ হবে।
অ্যান্ড্রয়েডের পরে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম হল iOS । অ্যাপল তাদের অপারেটিং শুধু নিজেদের মোবাইলে ব্যবহার করার ফলে হয়তো অ্যান্ড্রয়েডের ধাঁরে কাছেও আসতে পারবে না। এর আরেকটি বিশেষ কারন হল iPhone এর আকাশ ছোঁয়া দাম যা আমাদের মত গরীবরা স্বপ্নেও কিনতে চাই না! 😛
অ্যান্ড্রয়েড এবং iOS এর গোল্লাছুট খেলায় এগিয়ে আছে অ্যান্ড্রয়েডই। ২০১৩ সালের এক পরিসংখ্যায় দেখা গেছে যে স্মার্টফোন বাজারে অ্যান্ড্রয়েড পরায় ৭৯ ভাগ জায়গা দখল করে রেখেছে যেখানে iOS দখল করেছে মাত্র সাড়ে ১৫ ভাগ। ট্যাবলেট কম্পিউটারের বেলায়ও অ্যান্ড্রয়েড এগিয়ে, ২০১২ সালে অ্যান্ড্রয়েড ট্যাবলেটের পরিমান ছিল ৩৯%, ২০১৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬% এবং বর্তমানে সেটা ৬২% -এ এসে ঠেকেছে। আর অ্যাপলের iOS ট্যাবলেট ৩৬% মার্কেট দখলে রেখেছে।
অবশেষে দেখা গেলো যে অ্যান্ড্রয়েডই হচ্ছে রাজা। উপরের বেশিরভাগ তথ্য এক বছর পুরনো নতুন করে পরিসংখ্যান হয়নি। হলেও অ্যান্ড্রয়েডই উপরে থাকবে কারন অ্যান্ড্রয়েডের জনপ্রিয়তা কমে নি বরং বেড়েছে।
অনেক কথা বললাম, আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। সব টুকু পোস্ট পড়লে আশা করি আপনার না জানা কিছু তথ্য বের হয়ে আসবে। ভালো লাগলে অবশ্যই সাথে থাকবেন দুয়া করবেন আমার জন্য। আর ভালো না লাগলে আমারে খালি "কুইট্টালবাইন" 😛 😀 (পাইলে তো!! 😛 )
আমি সোহাগ মিয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 82 টি টিউন ও 694 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 32 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমার নাম সোহাগ। টেকনোলজির প্রতি চরম আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও পড়েছি বিজনেস নিয়ে। একটু একটু গাইতেও পারি, মাঝে মাঝে গীটার বাজাই। এক কথায়, টেকনোলজির সাথে প্রেম করি আর গানকে বিয়ে করেছি :D । আমার ইউটিউব চ্যানেল। আমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন আমার ব্লগে। আমার গাওয়া গানগুলো শুনতে ভিসিট করুন: গানের ইউটিউব...
খুবই ভালো হয়েছে। আশা করি সামনে আরো ভালো Post করবেন।।।।।।।।।।।