ওয়াইফাই কি, কিভাবে কাজ করে, কেন এটা ইউজ করা হয় এসব নিয়ে আমি এখানে সময় দিচ্ছি না, এসব গুগলে সার্চ করলে অহরহ পাবেন। আমি সরাসরি মূল বিষয়ে চলে যাচ্ছি... 🙂
আপনি বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ২ ধরনের ওয়াইফাই ডিভাইস পাবেন, যার একটি ওয়াইফাই এডাপ্টার, আর একটি পাবেন ওয়াইফাই রাউটার। আমি এক্ষেত্রে TP-LINK ব্র্যান্ডটা suggest করব। ওয়াইফাই এডাপ্টারের দাম দেখবেন ৮০০ টাকাতে পেয়ে যাবেন (TP-LINK TL-WN727N), কিন্তু ওয়াইফাই রাউটার যেটা, দাম মোটামুটি ১৩০০ টাকা (TL-WR720N) থেকে শুরু। এডাপ্টার যেটা, সেটা মূলত পিসিতে/যেই ল্যাপটাপের ওয়াইফাই রিসিভিং এবং সেন্ডিঙ্গে সমস্যা আছে, সেই সব ডিভাসে ওয়াইফাই সিগনাল সেন্ড এন্ড রিসিভের জন্য ব্যবহার করা হয়। আর, অন্য দিকে ওয়াইফাই রাউটার যেটা, সেটা শুধু ওয়াইফাই সিগনাল সেন্ড করার কাজে ব্যাবহৃত হয়। এখন, স্বাভাবিক ভাবেই আপনার ওয়াইফাই এডাপ্টারের প্রতি আগ্রহ বাড়তে পারে, কারন এটা সিগনাল রিসিভ এবং সেন্ড ২টাই করবে। আপনি ওয়াইফাই এডাপ্টার দিয়েও ওয়াইফাই জোন বানাতে পারবেন, এক্ষেত্রে আপনাকে ওয়াইফাই এডাপ্টার কানেক্টেড (ক্যাবল দিয়ে) ডিভাইসটি অন রাখতে হবে, যতক্ষন আপিনি ওয়াইফাই সিস্টেম চালু রাখতে চান। মানে, আপনি ২৪ঘন্টা ওয়াইফাই সিস্টেম চালু রাখতে চাইলে ২৪ ঘন্টাই ওয়াইফাই এডাপ্টার কানেক্টেড (ক্যাবল দিয়ে) ডিভাইসটি অন রাখতে হবে। কারন কি? ঠিক আছে, চলুন একটু স্বল্প গভীরে যাই... 🙂
আপনি যদি ওয়াইফাই এডাপ্টার পিসির সাথে USB cable সিয়ে কানেক্টেড করে, ইন্টারনেট কানেকশন অন করেন, তখন ওয়াইফাই এডাপ্টারটি ইন্টারনেট কানেকশনের সোর্স পাবে একটা, যেটা ওয়াইফাই এডাপ্টারটি শেয়ার করতে পারবে। এখন যদি আপনি পিসিই অন না রাখেন, তাহলে ওয়াইফাই এডাপ্টারটি ইন্টারনেট কানেকশন কোথায় পাবে, আর সেটা শেয়ারও বা কিভাবে করবে? এটাই হচ্ছে কারন, যে জন্য ওয়াইফাই এডাপ্টার কানেক্টেড ডিভাসটি অন রাখতে হবে। 🙂
অন্য দিকে, রাউটার কিনলে আপনাকে সারাদিন পিসি অন রাখতে হবে না। এখন কথা থাকতে পারে, “ভাই, রাউটারে যদি ব্রডব্যান্ডের লাইন লাগিয়ে ওয়াইফাই জোন বানাই, তাহলে তো পিসিতে ইন্টারনেট ইউজের জন্য বারবার ব্রডব্যান্ড কানেকশন খুলতে হবে বা আর একটা এডাপ্টার কিনতে হবে... :(” ...ঘটনা আসলে তা না J। আপনি রাউটার কেনার সময় বা পরে রাউটারের প্যাকেটে দেখবেন একটা আলাদা দ্বিমুখী ইথারনেট ক্যাবল দিয়ে দেয়, যেটা দিয়ে আপনি পিসিকে রাউটারের সাথে কানেক্টেড রাখতে পারবেন। এখানে, এটা ভাবিয়েন না যে, পিসি কানেক্টেড রাখতে হবে মানে পিসি অন রাখতে হবে। আসলে এটা দেয়া হয়েছে যাতে পিসিতে ইন্টারনেট ইউজের জন্য বার বার আপনাকে ব্রডব্যান্ড লাইন খুলে পিসিতে লাগাতে না হয় :)।
যাহোক... ওয়াইফাই জোন বানাতে কি কি ওয়াইফাই ডিভাইস লাগে তা তো জানলেন, এবার যেটা আপনার সুবিধা লাগে কিনতে পারেন। তবে...রাউটারটা কেনা ভাল হবে, যদি আপনি ওয়াইফাই জোন বানাতে চান, আর ওয়াইফাই এডাপ্টার কেনা ভালো হবে যদি আপনি ওয়াইফাই সার্ভিস প্রোভাইডার থেকে ইন্টারনেট সেবা নিতে আগ্রহী হন :)।
এবার আসা যাক, কিভাবে এইসব যন্ত্রপাতি দিয়ে মিস্ত্রিগিরি করবেন... :P। ওয়াইফাই রাউটার বা ওয়াইফাই এডাপ্টার যেটাই কিনুন না কেন, দেখবেন প্যাকেটা একটা সিডি দিয়ে দিবে, ছোট সাইজের, মিনি-সিডি। এই সিডিতে আপনার ক্রয় করা ওয়াইফাই ডিভাইসটি পিসিতে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার দেয়া থাকে। আপনি Windows XP ইউজার হলে সিডিগুলো দরকারি খুব, আর Windows 7 ইউজার হলে খুব দরকারী না, কারন Windows 7’এ ড্রাইভার গুলো আপনার ওয়াইফাই ডিভাইস পিসিতে কানেক্ট করার সাথে সাথেই auto-install হয়ে যাবে। সিডি হারিয়ে গেলেও ভয়ের কিছু নেয়, এসব আপনি সব পাবেন এখানে http://www.tp-link.us/support/download/।
স্টেপ বায় স্টেপ বললে ভালো হয়...না? 🙂 ঠিক আছে... 🙂
ওয়াইফাই এডাপ্টার দিয়ে কিভাবে ওয়াইফাই জোন বানাবেন প্রথমে এটাই শুরু করি... 🙂
স্টেপ ১: প্রথমে ওয়াইফাই এডাপ্টারের প্যাকেটের সিডিটি দিয়ে পিসিতে প্রয়োজনী সব সফটওয়্যার ইনস্টল করুন।
স্টেপ ২: Install করার সময় দেখবেন আপনার ওয়াইফাই ডিভাইসটি পিসিতে কানেক্ট করার (with USB cable, provided by TP-LINK) প্রয়োজন পরবে, মানে সফটওয়ইয়ার ইনস্টলের জন্য আরকি। এবার সিডির কাজ শেষে কানেক্টিফাই নামে আরও একটি সফটয়্যার লাগবে আপনার, যেটা দিয়ে আপনি পিসির ইন্টারনেট শেয়ার করে ওয়াইফাই জোন বানাবেন আরকি। সফটয়্যারটির প্রো ভার্সন ডাউনলোড করে নিন এখান থেকেঃ http://onhax.net/connectify-7-pro-crack-is-ere/।
স্টেপ ৩: কানেক্টিফাই সফটয়্যারটি ডাউনলোড করা হয়ে গেলে সেটা ঠিকঠাক ভাবে পিসিতে ইনস্টল করে ফেলুন। এখন যদি আপনার ওয়াইফাই ডিয়াইসটি পিসিতে কানেক্টেড থাকে তাহলে থাক, না থাকলে কানেক্টেড করে নিন। ইনস্টল শেষে Hotspot Name এ আপনার পছন্দমত একটা নাম দিন, যেটা আপনি আপনার স্মার্টফোন বা ওয়াইফাই উইজ্যাবল অন্য ডিভাইস দিয়ে ওয়াইফাই অন করে স্ক্যান করলে দেখাবে। এরপর নিচেই দেখবেন Password লেখা আছে, এখানে আপনার ওয়াইফাই হটস্পটের এর সিকিউরিটির জন্য আপনার ইচ্ছামত password দিবেন। তারপর, Internet to Share> Automatic select করবেন, Advanced Settings’এ Share Over> Wi-Fi, Sharing Mode> Wi-Fi Access Point, Encrypted (WPA2) select করবেন। নিচে Firewall’এ ২টা অপশন দেখবেন, ২টাতেই টিক মার্ক দিন, Start Hotspot’এ ক্লিক করুন। সব ঠিকঠাক থাকলে হয়ে গেলো আপনার ওয়াইফাই জোন। 🙂
এবার চলুন যাওয়া যাক ওয়াইফাই রাউটারের ব্যাপারে... 🙂
স্টেপ ১: প্রথমে ওয়াইফাই রাউটারের পিছনের দিকে দেখুন ৪/৫টা ইথারনেট পোর্ট আছে। দেখবেন, একটার নিচে লেখা WAN, বাকি গুলোর নিচে LAN লেখা। যেই পোর্টের নিচে WAN লেখা সেটায় ব্রডব্যান্ড কানেকশনটি কানেক্ট করুন। আর যেগুলোর নিচে LAN লেখা, সেগুলোর যেকোনো একটায় Ethernet cable (provided by TP-LINK)’এর এক প্রান্ত কানেক্ট করুন, অন্য প্রান্ত পিসিতে কানেক্ট করুন। প্যাকেটের সিডিটি দিয়ে পিসিতে প্রয়োজনী সব সফটওয়্যার ইনস্টল করুন।
স্টেপ ২: এবার আর কি... 😛 ...ওয়াইফাই জোন বানানো শেষ...ইচ্ছামত Wi-Fi use করুন।
:::টেকটিউনসে এটাই আমার প্রথম টিউন। পুরো লেখাটা পড়ার পরে কোনো অংশে বুঝতে বিন্দু মাত্র সমস্যা হলে টিউমেন্ট করতে পারেন, বা মেইল ([email protected]) করতে পারেন... 🙂 :::
আমি zaskhan। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 12 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
A human being... :)
চমৎকার একটা টিউন করার জন্য ধন্যবাদ। ওয়াইফাই এডাপ্টার আর ওয়াইফাই রাউটারের ছবি সহ টিউন করলে আরও ভাল লাগতো। তাবে সে যাই হোক … অনেক ভালভাবে বুঝিয়ে লিখেছেন এইজন্য অভিনন্দন 🙂 আশাকরি অনেকের কাজে লাগবে।