আশা করি সবাই খুব ভালো আছেন। আজ আমি Android ফোনের একটি বহুল আলোচিত বিষয় ROM নিয়ে লিখব।
এই টিউনটি একটি প্রাথমিক টিউন তাদের জন্য, যারা Android ফোনে কাস্টম ROM ইন্সটল করতে চান।
এখানে ROM ও Custom ROM সম্পর্কে Basic ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি, যা আপনাকে Custom ROM ইন্সটল দেওয়ার আগে অবশ্যই জানতে হবে।
পরবর্তী টিউন এ Custom ROM ইন্সটল দেওয়া নিয়ে বিস্তারিত লিখার ইচ্ছা আছে।
Android নিয়ে আমার আগের টিউন গুলো দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
তো চলুন শুরু করা যাক। আগে আমাদের জানতে হবে ROM ও Custom ROM কি?
সাধারনত শব্দগত ভাবে আমরা জানি ROM = Read Only Memory। অর্থাৎ আপনার ফোনের Internal memory যেখানে আপনার ফোনের firmware/apps গুলো জমা হয়।
এন্ড্রয়েডে রম হলো অপারেটিং সিস্টেম। আপনার মোবাইলের সবকিছুই একটা সিস্টেমে চলে এই সিস্টেম তাই হলো রম।
আমরা যারা Android ফোন ইউজ করি আমাদের ফোনে তিন ধরনের রম থাকে ঃ
১.স্টক রম
২.কাস্টম রম
৩.সাইনোজেন মোড
আসলে সাইনোজেন মোড কাস্টম রমের মধ্যই পড়ে। তাই বলা যায় দুই ধরনের রম থাকে :
1. স্টক রম: আপনার ফোন কেনার সময় যে রম অফিসিয়ালি দেওয়া থাকে তাই স্টক রম।
2. কাস্টম রম: অফিশিয়াল রমকে কাস্টমাইজ করে যে রম বানানো হয় তাই কাস্টম রম।
[যেমন : Galaxy s ফোনে অফিসিয়ালি রম আপনি সর্বোচ্চ Gingerbread (জিঞ্জারব্রেড) পর্যন্ত আপডেট দিতে পারবেন কিন্তু রম কাস্টমাইজ করলে জেলিবিন ইউজ করতে পারবেন। অর্থাৎ কাস্টম রমের কারণেই আপনি জেলিবিনের স্বাদ নিতে পারছেন।]
আরও নানা ধরনের ভাল ভাল ফিচার কাস্টম রমে থাকে যা স্টক রমে থাকে না।
এবার আসি এই সম্পর্কে বিস্তর আলোচনায়
আশা করি কাস্টম রম সম্পর্কে এবার সবার ধারণা একটু ক্লিয়ার হয়েছে। প্রায় সব ফোনের কাস্টম রম পাওয়া যায় তবে ব্রান্ড এর ফোনের কাস্টম রম বেশী পাওয়া যায়।
আর symphony বা Walton এর কাস্টম রম আগে পাওয়া যেত না কিন্তু এখন পাওয়া যায়। কাস্টম রম সম্পর্কে অনেকের মতামত অনেক রকম তাই আমি নিচে কাস্টম রমের সুবিধা অসুবিধা গুলো তুলে ধরলাম।
কাস্টম রমের সুবিধা ঃ
ইন্টানেটে আপনার ফোনের জন্য অনেক ধরনের কাস্টম রম পাবেন। বিভিন্ন কাস্টম রমের সুবিধা বিভিন্ন। তবে পার্থক্য তেমন থাকে না।
আপনি স্টক রমে যে Android version ইউজ করতে পারবেন না কাস্টম রমে তা ইউজ করতে পারবেন। আমি আগেই একবার বলেছি, ধরুণ আপনি আপনার ফোন অফিসিয়ালি জিঞ্জারব্রেড পর্যন্ত আপডেট দিতে পারবেন এর উপরে আর পারবেন না কিন্তু কাস্টম রমের মাধ্যমে আপনি আইচক্রিম স্যান্ডুইচ বা জেলিবিন রমের মজা নিতে পারবেন যা কাস্টম রমের সবচেয়ে বড় সুবিধা।
কাস্টম রমে আরও কিছু ভাল ভাল ফিচার থাকে।
বিভিন্ন ফোনের ভাল ভাল কিছু ফিচার কাস্টম রমে বিল্ট ইন ভাবে দেওয়া থাকে। এক কথায় কাস্টম রম চরম।
অসুবিধা ঃ
কাস্টম রমের অসুবিধা অনেকে বলেছে কাস্টম রমে নাকি প্রচুর bug থাকে। এটা ঠিক আবার ঠিক না। কারণ আপনি ভাল ডেভেলপার এর ভাল একটা কাস্টম রম আপনার ফোনে আপডেট দিলে কোন প্রব্লেম হবে না। অর্থাৎ bug এর প্রব্লেম থাকবে না। আর যদি ভাল কাস্টম রম না দেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে বাগের প্রব্লেমে পড়তে হবে।
এছাড়া কাস্টম রমের আর কোন অসুবিধা দেখি না।
আমার নিজের কিছু অভিজ্ঞতা ঃ
আমি আমার ফোনে বিভিন্ন ধরনের কাস্টম রম ইউজ করেছি।
বর্তমানে আমি আমার “Walton Primo X2 mini” তে “Samsung GALAXY S4” এর ROM ব্যবহার করছি।
আমি কাস্টম রমের মধ্য যে সুবিধা পেয়েছি, স্টক রমের মধ্যে তার কিছুই পাই নি। আমার কাছে কাস্টম রম অনেক ভাল লাগে। আমি এখনও কাস্টম রম ইউজ করছি যা সত্যিই আমাকে Android এর প্রকৃত মজা দিতে পেরেছে। তাই আমার মতে কাস্টম রম বেস্ট আর নির্ভরযোগ্য।
বেশীরভাগ সময়েই কাস্টম রমগুলো ভালো পারফরম্যান্স দেয় কিন্তু কম মেমরি ব্যবহার করে। কারণ ডেভেলাপাররা স্টক রমের বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় আবর্জনা যেমন ক্যারিয়ার কতৃক প্রিলোডেড অ্যাপস ইত্যাদি বাদ দিয়ে দেয়। ডেভেলাপররা কারনেলকেও অনেক সময় আরও নিখুত করে তোলেন।
যেমন,একটি আন্ডারভোল্ট কারনেল স্টক কারনেলের তুলনায় কম চার্জ খরচ করে।
কাস্টম রম কোথায় পাবেন ঃ
বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে আপনি আপনার ফোনের উপযোগী কাস্টম রম পেতে পারেন। তবে সবচেয়ে ভাল জায়গা হল xda-developers।
ওয়েবসাইট এ যেতে এখানে ক্লিক করুন।
তবে এই এড্রেসে গেলেই কাস্টম রম পাবেন না। এই এড্রেস গিয়ে আপনার ফোনের মডেল বের করে তা সিলেক্ট করতে হবে তারপর আপনার ফোনের জন্য Available কাস্টম রম পাবেন।
আর সবচেয়ে সহজ হয় আপনি আপনার ফোনের মডেল লিখে গুগলে সার্চ দেন (যেমন ধরুণ আপনার galaxy y এর জন্য আইচক্রিম স্যান্ডুইচ কাস্টম রম দরকার তাহলে আপনি এইভাবে সার্চ দিবেন custom Rom for galaxy y 4.0.4 তাহলে সহজে পেয়ে যাবেন)
আর একটা কথা, আপনি যে রম আপডেট দিবেন আগে এই রমে কি কি ফিচার আছে তা দেখে নিবেন এবং এই রম সম্পর্কে ইউজার রিভিউটাও একবার দেখে নিবেন। তারপর আপডেট দিবেন।
কাস্টম রম দিতে যা যা লাগবে ঃ
কাস্টম রম আপনার ফোনে আপডেট দিতে অবশ্যই আপনার ফোন রুটেড হতে হবে।
আর কিভাবে আপডেট দিবেন তা যে ওয়েবসাইট থেকে রমটা ডাউনলোড দিবেন ওই জায়গায় দেওয়া থাকবে।
সতর্কতা ঃ
1. আপনি কাস্টম রম দেওয়ার আগে ফোন ভাল করে চার্জ করে নিবেন।
2. আপনার ফোনের রমের একটা ব্যাকআপ করে রাখবেন যাতে পরে প্রব্লেম হলে আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারেন রিস্টোর দিয়ে।
3. আপনি যদি Android এর নিউ ইউজার হন বা এত ভাল ধারণা না রাখেন তাহলে নিজে নিজে কাস্টম রম দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে আপনার ফোন ব্রিক হওয়ার সম্ভবনা থেকে যায়।
আমার পরবর্তী টিউনে আমি আপনাদের দেখাবো কিভাবে Android ফোন এ ROM ব্যাকআপ এবং Restore করতে হয়। ততদিন পর্যন্ত ভালো থাকবেন। 😉
বি:দ্র ঃ
এই টিউন টি আপনার কোন কাজে লাগলে আপনার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলুন নিচের টিউমেন্ট বিভাগে। আর আমি তো ফেসবুক এ আছিই।
এ ছাড়া বিভিন্ন প্রয়োজনীয় software download ও review দেখার জন্য Visit করতে পারেন আমাদের ব্লগ। ধন্যবাদ।
আমি wasik। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 92 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
valo laglo, waiting for ur nex tune!