অনেকেই আছে বাজারে গেলে জানেনা খাবারের ভাল-খারাপ দিক, সেজন্য ধোঁকা খান বারবার। কোন শাক-সবজি কিংবা মাছ, ফলমুল বা হোটেলের খাবার, ভাল হবে কি না তা অনেকসময়েই বুঝে উঠা যায় না। ফলে তা কিনে নিয়ে ঠকতে হয়। বাড়িতে গিয়ে বকা শুনতে হয়! ভেজাল পণ্যের ভিড়ে সাহস হারিয়ে অনেকেই বাজার করতে ভয় পায়।
আধুনিক যুগে কি এভাবে ধোঁকা খেতে থাকার কোন সমাধান হতে পারে না? এমন পরিস্থিতিতে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় এসব ঝামেলা থেকে পরিত্রাণ পেতে ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খুঁজে পেতে ভিন্ন রকম কিছু আবিষ্কৃত হয়েছে, যা আপনাকে অবাক করে তুলবে!
জার্মানির ড্রেসডেনে ফ্রাউনহফার এস্টাবলিশমেন্ট একটি অ্যাপ্লিকেশন বা মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছে যা খাদ্যের গুণাগুণ চেনা সহজতর করে তোলে।
স্পেকট্রোমিটার অ্যাপটি দিয়ে ক্যামেরা খাদ্যের উপর ধরলে তা বলে দেয় খাবার ভালো নাকি খারাপ! এমনকি এর স্বাদটি কেমন? টক নাকি মিষ্টি! খবার, শাক-সবজি কিংবা ফলমূল ভালো আছে নাকি নষ্ট হয়ে গেছে ইত্যাদি সব জানা যায় শুধু স্পেকট্রোমিটারের এই অ্যাপটির ক্যামেরা খাবারের উপর চালু করলেই!
যদি জানতে ইচ্ছে হয় কোনো বিশেষ খাবারে কি পরিমাণ পানি, কতটুকু লবণ বা কতটা চর্বি আছে কিংবা ঔষধে কোনো কেমিক্যাল কতটুকু পরিমাণে আছে, কোন খাবারের উপাদানগুলো কি কি ও তা স্বাস্থ্যকর কতটুকু, তা অ্যাপটির মাধ্যমে সহজেই জানা যাবে।
ড. গ্রুগার বলেন, ‘‘এবার একটা ক্রিম নেয়া যাক, ধরুন ক্রিমটা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এরপরেও স্পেক্ট্রোমিটার অ্যাপের মাধ্যমে তোলা ছবিতে হয়ত দেখা যাবে যে, এটা আরো কিছুদিন ব্যবহার করা যাবে। ''
কেননা অনেক ঔষধ ও পণ্য রয়েছে, যেগুলো নির্দিষ্ট মেয়াদ উত্তীর্ণের পরও কিছুদিন ভালো থাকে। কোন কোন ঔষধ তো মেয়াদোত্তীর্ণের কয়েকবছর পরও ভালো থাকে, কোন পরিবর্তন হয়না।
আরেকটি অ্যাপ, নাম “ফুডোকেট”। বাইরের কোন খাবার খেতে গেলে প্যাকেটের গায়ে থাকা বারকোড অ্যাপটির মাধ্যমে স্ক্যান করে জেনে নেওয়া যাবে খাবারের উপাদানগুলো। এর মাধ্যমে শুধু খাবারের তথ্যই নয়, বরং অ্যাপটি হেল্থ ফিটনেসের সমস্ত তথ্য জানাবে। ফলে অ্যাপ ব্যবহারকারীর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে যথেষ্ট সহায়তা করবে।
অ্যাপটিতে আপনার উচ্চতা, লিঙ্গ, জন্মতারিখ ইত্যাদি তথ্য শুরুতেই দিয়ে রাখলে অ্যাপটি আপনাকে একটি ফুড চার্ট ঠিক করে দেবে। এটা আপনার দৈনন্দিন খাদ্যাভাস ঠিক রাখার মাধ্যমে ওজন বাড়াতে বা কমাতে সাহায্য করবে।
ফুডোকেট অ্যাপে প্রায় আড়াই লাখ খাবারের তথ্য রয়েছে, তাই খাবারের প্যাকেটে থাকা বারকোর্ড স্ক্যান করলেই খাবারের উপাদান সম্পর্কে জানা যাবে। সুতরাং খাবারটির ক্ষতিকর দিক ও ভাল দিকের তথ্য সাথে সাথেই পেয়ে যাবেন।
চীনা-জাপানিরা কোন খাবার হাত দিয়ে না খেয়ে চিকন দুটি কাঠি দিয়ে খেতেই ভালবাসে। সেটা তাদের সংস্কৃতিই বটে। একে ইংরেজীতে চপস্টিক ও চীনা ভাষায় “কোয়াইসো” বলা হয়। কোয়াইসো এর অর্থ চটপটে বন্ধু।
চীনের সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট এমন স্মার্ট চপস্টিক আবিষ্কার করে দেখিয়েছে, যা শুধু দ্রুত খাবারের সঙ্গীই নয়, বরং স্বাস্থ্যও ঠিক রাখতে কাজ করবে! এই স্মার্ট চপস্টিক খাবারের সঙ্গে থাকা অস্বাস্থ্যকর তেলের মাত্রা পরিমাপ করতে পারে। তেলের সজীবতা পরীক্ষা ছাড়াও এই চপস্টিক দিয়ে পিএইচ স্তর, তাপমাত্রা এবং ক্যালরির তথ্য জানা সম্ভব। চীনা সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট বাইদুর তৈরি এই স্মার্ট চপস্টিক খাবারের ভেজাল পরীক্ষা করতে পারে।
ইতিমধ্যেই শিশুদের স্মার্ট চপস্টিক বাজারে এসেছে। কিনে এনে বাড়িতে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
এখন নির্ভয়ে বাজারে গিয়ে সবচেয়ে তাজা ও ভালো জিনিসটি কিনে আনুন। ভালো খান, সুস্থ থাকুন।
আমি মুফতি রাকিবুল ইসলাম হোযায়ফী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 7 টি টিউন ও 2 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
প্রযুক্তি যেন আপনাকে আল্লাহকে ভুলিয়ে না দেয়।