একটা সময় ছিল যখন মোবাইল ফোন শুধু যোগাযোগের কাজে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এটি দিয়ে অনেক কাজেই করা যায়। যেমন আগে ফটো এডিটিং করার জন্য কম্পিউটার এর প্রয়োজন হতো, কিন্তু বর্তমানে এই কাজটি স্মার্টফোন ব্যবহার করে খুব সহজেই করা যায়।
তো ফটো এডিটিংয়ের জন্য প্রয়োজন একটি ভালো ফটো এডিটিং অ্যাপ। বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে নানা ধরনের ফিচার সমৃদ্ধ ফটো এডিটর রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো কোনটি সেরা এবং কোনটিতে সবচেয়ে ভালো ফিচার রয়েছে? তাই প্লে স্টোর হতে বাছাইকৃত সেরা ৭টি অ্যান্ড্রয়েড ফটো এডিটিং অ্যাপ নিয়ে আলোচনা করা হলো।
ফটোশপ এক্সপ্রেস অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ফটো এডিটিং অ্যাপ। সেরা ফটো এডিটিং অ্যাপসগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এই ফটোশপ এক্সপ্রেস। এই অ্যাপটি তৈরি করেছে জনপ্রিয় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাডোবি। অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর থেকে এই পর্যন্ত ১০০ মিলিয়নেরও বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে।
অ্যাডোবি ফটোশপ এক্সপ্রেস অ্যাপটির রয়েছে খুবই সহজ এবং সুন্দর ইউজার ইন্টারফেস। ফটো এডিটিং এর জন্য প্রয়োজনীয় সকল ফিচারই এতে প্যাক করা হয়েছে। যেমন: ফটো ক্রপিং, ফটো ফ্লিপং, ফটো রোটেটিং ইত্যাদি। এছাড়াও ফটোশোপ এক্সপ্রেসে রয়েছে ওয়ান টাচ ফিল্টারিং, বিভিন্ন ধরনের ইফেক্ট, অটো ফিক্সিং, ফটো রেন্ডারিং ইঞ্জিন সহ বেশ কিছু আকর্ষণীয় ফিচার।
ফটোশপ এক্সপ্রেস অ্যাপটি আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে পারবেন এবং অ্যাপটির সম্পূর্ণ এড ফ্রী ইউজার ইন্টারফেস থাকাই আপনাকে বিরক্তিকর এড এর মুখোমুখি হতে হবে না।
বিশেষ ফিচার:
আরেকটি সেরা ফটো এডিটর অ্যাপ হলো পিক্সার্ট স্টুডিও। প্লে স্টোর থেকে এই পর্যন্ত অ্যাপটি ১০০ মিলিয়নেরও বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে। একটি ছবিকে সুন্দর ভাবে কাস্টমাইজ করতে যে সকল টুলস ও ফিচার থাকা প্রয়োজন তার সকল কিছুই এতে রয়েছে।
পিক্সার্ট স্টুডিওতে রয়েছে তিন হাজারেরও বেশি টুলস। অ্যাপটিতে রয়েছে বিল্ট-ইন ক্যামেরা এবং ডিরেক্ট সোশ্যাল শেয়ারিং ফিচার। অন্যান্য ফিচার হিসেবে রয়েছে ওয়ান টাচ ইফেক্ট, অটো ফিক্সিং, ক্রপ, কোলাজ, ড্র, ফ্রেম, স্টিকার ইত্যাদি।
অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর হতে বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে পারবেন। তবে এতে ফটোশপ এক্সপ্রেসের মতো এড ফ্রি ইউজার ইন্টারফেস নেই। তবুুও এটি সেরা ফটো এডিটিং অ্যাপস গুলোর মধ্যে একটি।
বিশেষ ফিচার:
আজকের লিস্টের তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে স্ন্যাপসিড। এটি গুগলের তৈরি একটি অসাধারণ ফটো এডিটর অ্যাপ। অ্যাপটির সাহায্য অত্যন্ত সুন্দরভাবে ফটো এডিট করা সম্ভব। প্লে স্টোরে অ্যাপটির ৫০ মিলিয়ন প্লাস ডাউনলোড রয়েছে। স্ন্যাপসিডে রয়েছে ২৯ টি শক্তিশালী টুলস যার সাহায্যে আপনি ছবিকে করে তুলতে পারেন প্রাণবন্ত। এই অ্যাপটির রয়েছে খুবই সুন্দর একটি ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস। ফটো ক্রপিং, ফটো ফ্লিপং, ফটো রোটেটিং, ফটো হিলিং সহ প্রয়োজনীয় সকল ফিচার এতে রয়েছে। গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপটি আপনি বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে পারবেন এবং এই অ্যাপটি রয়েছে এড ফ্রী ইউজার ইন্টারফেস।
বিশেষ ফিচার:
সেরা ফটো এডিটিং অ্যাপসগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এই ফোটর। অ্যাপটির গুগল প্লে স্টোরে ১০ মিলিয়ন প্লাস ডাউনলোড রয়েছে। এতে রয়েছে চমৎকার সব ফিল্টার ও ফটো ইফেক্ট। অ্যাপটিতে প্রায় ৩০০ টিরও বেশি ইফেক্ট রয়েছে যার সাহায্যে ছবিকে করা যাবে আকর্ষণীয়।
ছবির উজ্জ্বলতা, এক্সপোজার, কালার সহ অন্যান্য দিকগুলো টুইকিং করার জন্য আপনি ১০ টিরও বেশি কাস্টমাইজযোগ্য 'এডিট' ফাংশন ব্যবহার করতে পারবেন। অ্যাপটি সম্পূর্ণ ফ্রী। তবে এতে এড ফ্রী ইউজার ইন্টারফেস নেই।
বিশেষ ফিচার:
ফটো ডিরেক্টর হলো একটি Multi-Purpose ফটো এডিটর। প্লে স্টোর হতে অ্যাপটি এই পর্যন্ত ৫০ মিলিয়নেরও বেশি বার ডাউনলোড করা হয়েছে। অ্যাপটির রয়েছে স্টাইলিশ এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস। ফটো ডিরেক্টর শক্তিশালী টুলস সমৃদ্ধ একটি ফটো এডিটিং অ্যাপস।
ফটো রিটাচ, ফটো এফএক্স সহ বেশ কয়েকটি শক্তিশালী টুলস এতে প্যাক করা হয়েছে। অ্যাপটিতে রয়েছে বিল্ট-ইন ক্যামেরা এবং ডিরেক্ট সোশ্যাল শেয়ারিং ফিচার। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি ফটো এডিটিং অ্যাপস। তবে এতে এড ফ্রী ইউজার ইন্টারফেস নেই।
বিশেষ ফিচার:
আরেকটি বেস্ট ফটো এডিটর হলো এয়ার ব্রাশ। এই অ্যাপটি ব্যবহার করা খুবই সহজ। ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেসের সাথে অ্যাপটির রয়েছে অনেকগুলো ইউজফুল টুলস এবং ফিল্টার। এতে ব্লেমিশ রিমুভার, পিম্পল রিমুভার, হোয়াইটেন টিথ, বোডি স্লিমার, আর্টিস্টিক রিটাচের মতো টুলগুলো রয়েছে।
প্লে স্টোরে অ্যাপটির ভালো রেটিং সহ ১০ মিলিয়ন প্লাস ডাউনলোড রয়েছে। এতে একটি বিল্ট-ইন ক্যামেরা রয়েছে এবং ডিরেক্ট সোশ্যাল শেয়ারিং সমর্থিত। অর্থাৎ ফটো এডিটিং করার পর তা সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা যাবে। গুগল প্লে স্টোর হতে অ্যাপটি বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যাবে।
বিশেষ ফিচার:
অটোডেস্কের তৈরি পিক্সলার একটি চমৎকার ফ্রি ফটো এডিটর অ্যাপ। অ্যাপটিতে রয়েছে প্রায় ৩ মিলিয়নেরও বেশি ইফেক্ট, ওভারলে এবং ফিল্টার। এতে “পিকসলেট” নামক একটি টুলস রয়েছে যার সাহায্যে খুব সহজেই ছবির যে কোন অংশ হতে ব্লার আউট করা যাবে।
এছাড়াও পিক্সলার দিয়ে বিভিন্ন লেআউটের সাথে ফটো কোলাজ করা যাবে। এই অ্যাপ দ্বারা একসাথে ২৫ টিরও বেশি ফটো কোলাজ করা সম্ভব। অ্যাপটিতে অটো ফিক্সের মতো সুবিধা থাকায় খুব সহজে এক ক্লিকেই ছবির কালারের সামঞ্জস্য করা যাবে। এগুলো ছাড়াও এতে আরো অনেক ধরনের ফিচার রয়েছে।
বিশেষ ফিচার:
এই ছিলো সেরা ৭ অ্যান্ড্রয়েড ফটো এডিটিং অ্যাপ। উপরের বাছাইকৃত অ্যাপগুলোর মধ্যে আপনার পছন্দ অনুযায়ী যে কোনোটি অথবা একাধিক কিংবা সবগুলোই ডাউনলোড করতে পারেন এবং অ্যাপসের মাধ্যমেই আপনি আপনার পছন্দের ছবিটিকে করে ফেলতে পারবেন আরও আকর্ষণীয়।
আর্টিকেল ক্রডিট: TechThoughtsBD
আমি কাজী মেহেদী। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 5 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 5 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।