বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে পৃথিবীতে প্রাণীর আবির্ভাব বা জীবদের থেকে প্রাণীর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে মোটামুটি ৬০০ মিলিয়ন বছর পূর্বে। আমরা উদ্ভিদ ও প্রাণীর পার্থক্য জানি। প্রাণীরা অক্সিজেনের উপর নির্ভরশীল। আর তাই স্বভাবতই হঠাৎ করে এরকম অক্সিজেন নির্ভরশীল জীবের আবির্ভাব হবার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছিল সেসময় অক্সিজেন এর যথেষ্ট প্রাচুর্য থাকাকে। অর্থাৎ সেসময় প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের প্রাচুর্যকেই প্রাণীর আবির্ভাবের একটি বড় কারণ বলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি গবেষণা আমাদের এই ধারণাটিকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিল। এটা বলছে প্রাণীর টিকে থাকার জন্য যেটুকু অক্সিজেন দরকার সেটুকু অক্সিজেন ১.৪ বিলিয়ন বছর পূর্বেই পৃথিবীতে চলে এসেছিল! অবাক ব্যাপার! তাহলে পৃথিবীতে প্রাণীদের আবির্ভাব এর জন্য এত দেরি হল কেন?
২.৩ বিলিয়ন বছরের পূর্বে পৃথিবীতে অক্সিজেনের পরিমাণ ছিল আজকের দিনে পৃথিবীতে থাকা অক্সিজেনের ০.০০১ শতাংশ বা এক হাজার ভাগের ভাগ। আর সেই অক্সিজেনই আজ থেকে ৫৫০ মিলিয়ন বছর পূর্বে বর্তমান অক্সিজেনের পরিমাণের ২০ শতাংশের বেশি বা ৫ ভাগের এক ভাগের বেশি হয়ে গিয়েছিল। বড় বড় প্রাণীদের জন্য এই অক্সিজেনের পরিমাণ যথেষ্ট। কিন্তু এই ২.৩ বিলিয়ন থেকে ৫৫০ মিলিয়ন সময়ের মধ্যে কি হয়েছিল তা এখনও কিছুটা রহস্যে ঘেরা। তবে গবেষণা বলছে সামুদ্রিক স্পঞ্জের মত প্রাথমিক প্রাণীদের টিকে থাকার জন্য বর্তমান পৃথিবীর অক্সিজেনের ১ শতাংশ বা তার চেয়ে কম পরিমাণ অক্সিজেনই যথেষ্ট।
কিছু গবেষক মনে করতেন নিওপ্রোটারোজইক যুগে (১ বিলিয়ন থেকে ৫৪২ মিলিয়ন বছর পূর্বের মধ্যে) অক্সিজেনের মাত্রা পৃথিবীতে যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। আর তাই এই সময়েই প্রাণীর আবির্ভাব ঘটে।
যাই হোক, বিষয়টি অনুসন্ধান করার জন্য চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশন এর Shuichang Zhang এবং ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ডেনমার্কের Donald Canfield এর নেতৃত্বে একটি দল উত্তর চীনের জিয়ামালিং ফরমেশন থেকে নেয়া ১.৪ বিলিয়ন বছর পূর্বের পলিমাটিতে থাকা ধাতুর রাসায়নিক বিশ্লেষণ করেন। এই নমুনাটা সর্বনিম্ন অক্সিজেন এর এলাকা বা Oxygen minimum zone-এ চাপা পড়ে ছিলো। এরপর তারা সেখানে অক্সিজেন চক্র চালু করেন।
এই গবেষণাটির ফলে বিজ্ঞানীগণ যা পেলেন তা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল। দেখা গেল ১.৪ বিলিয়ন বছর পূর্বে অক্সিজেনের পরিমাণ ১ শতাংশ নয়, বরং ৩.৮ শতাংশ অব্দি উঠে গিয়েছিল! অর্থাৎ ৬০০ মিলিয়ন বছর বছর পূর্বে যেরকম টিকে থাকা প্রাণীদের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ অক্সিজেনই ১.৪ বিলিয়ন বছর পূর্বে পৃথিবীতে উপস্থিত ছিল! গবেষণাটি Proceedings of the National Academy of Sciences জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তাহলে এত অক্সিজেন এর মজুদ সত্ত্বেও পৃথিবীতে প্রাণীর আবির্ভাব এত দেরিতে কেন? গবেষণাটির যুগ্ম-লেখক Emma Hammarlund উত্তরে বললেন, “জীবদের থেকে প্রাণীদের এভাবে হঠাৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া সম্ভবত শুধু অক্সিজেন নয়, বরং আরও কিছু উপাদানের ফলাফল। আর সম্ভবত আমরা আগে যেমনটা ভেবেছিলাম প্রাণীর উদ্ভবের সাথে অক্সিজেনের বৃদ্ধি তেমনভাবে জড়িত নয়। ”
তো আসল কারণ বা কারণগুলো যাই হোক না কেন, একটা প্রশ্ন যখন উঠেছে তখন এর উত্তর খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত গবেষকদের চোখে ঘুম যে থাকবে না তা আমরা হলফ করে বলতে পারি। আর আমরাও অপেক্ষা করতে থাকি নতুন ব্যাখ্যাটি শোনার জন্য।
চতুর্দশ শতাব্দীতে ঘষা কাঁচের লেন্স উদ্ভাবিত হবার পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর অত্যাধুনিক ত্রিমাত্রিক ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র পর্যন্ত প্রায় ৬০০ বছর ধরে পর্যায়ক্রমে উন্নত হতে হতে আবিষ্কৃত হয়েছে অণুবীক্ষণ যন্ত্র। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের কার্যপরিধি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে আছে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিজ্ঞান ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের নানা শাখায়। বিংশ শতাব্দীতে শুধু আধুনিক অণুবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কারকে ঘিরেই চারজন বিজ্ঞানী নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন পদার্থ ও রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগে।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের আবির্ভাব চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা ঘটায়। সপ্তদশ শতাব্দীতে সাধারণ আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র (Simple Optical Microscope) আবিষ্কারের পর চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের চোখে একের পর এক ধরা পড়তে থাকে তৎকালীন মহামারীর জন্য দায়ী দুষ্ট জীবাণুর দল। মানুষ জানতে পারে মহামারীর কারণ কোন কর্মফল, অভিসম্পাত বা দৈব শক্তির রুষ্ট হবার ফল নয়; বরং অতি ক্ষুদ্র কিছু পরজীবীর সংক্রমণ।
Anton van Leeuwenhoek এর উদ্ভাবিত অণুবীক্ষণ যন্ত্রে সর্বনিম্ন ১ মাইক্রোমিটার (১ মাইক্রো মিটার = ১০–৬ মিটার = এক মিলিমিটারের এক হাজার ভাগের এক ভাগ) পর্যন্ত বস্তু পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হতো। তাই তখন পর্যন্ত আণুবীক্ষণিক পরজীবী হিসেবে শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়াকেই শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার আকার ১-৫ মাইক্রোমিটার হয়ে থাকে। ভাইরাস তখনো আবিষ্কৃত হয়নি। কারণ আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের বিবর্ধন ক্ষমতায় ন্যানোমিটার ক্ষুদ্রতায় দেখা সম্ভব নয়। ব্যাকটেরিয়ার তুলনায় ভাইরাস এতটাই ছোট যে একটা ব্যাকটেরিয়াও তার পিঠে বয়ে বেড়াতে পারে এক পাল ভাইরাস। এমনকি কখনো কখনো কিছু ব্যাকটেরিয়াও ভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়।
অণুবীক্ষণ যন্ত্রের লেন্সের নিচে জীবাণুর যে সুবৃহৎ জগতের খোঁজ পাওয়া গেল, যে অতিক্ষুদ্র পরজীবীকুলের কাছে এতদিন ধরাশায়ী ছিল মানুষ, যে পরজীবীদের সংক্রমণে রাজ্যবিস্তৃত মহামারী লেগে যেত; তাদের খোঁজ পাবার পর শুরু হল তাদের দমনের জন্য গবেষণা। সে গবেষণার ফলস্বরূপ এই ক্ষুদ্র সত্ত্বার আক্রমণ থেকে মানবদেহকে সুরক্ষা দিতে আবিষ্কৃত হল দুই স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। জীবাণুর আক্রমণ প্রতিহত করতে দুর্ভেদ্য দুর্গ যাকে আমরা ভ্যাকসিন বা টিকা বলে জানি, আর শক্তিশালী জীবাণু যদি দুর্গ ভেদ করে প্রবেশ করেও থাকে তাহলে তাকে পরাস্ত করার জন্য সৈন্যবাহিনী যাকে আমরা বলি অ্যান্টিবায়োটিক। ভ্যাকসিন বা টিকা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সাথে একীভূত হয়ে জীবাণুর সংক্রমণে বাধা দেয়। দেহে জীবাণু প্রবেশ করার সাথে সাথে সেটিকে ঘিরে ধরে ও ধ্বংস করে, ফলে দেহে রোগের আবির্ভাব ঘটতে পারে না।
অন্যদিকে যখন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জীবাণুর সংক্রমণকে আটকাতে ব্যর্থ হয়ে, যখন শক্তিশালী জীবাণু দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে হারিয়ে সদম্ভে টিকে থাকে শরীরে তখনই রোগ দেখা দেয় মানুষের শরীরে। তখন সেই জীবাণুকে ধ্বংস করে সুস্থ হবার জন্য প্রয়োগ করা হয় অ্যান্টিবায়োটিক; যেটি দেহাভ্যন্তরে প্রবেশ করে দুষ্ট জীবাণুদের খুঁজে বের করে আক্রমণ করে ও তাদের ধ্বংস করে রোগীকে ফিরিয়ে দেয় সুস্থ জীবনধারায়।
অ্যান্টিবায়োটিক সর্বদা ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হয়। ভাইরাস সংক্রমিত রোগের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক প্রযোজ্য নয়। সেসবের জন্য রয়েছে অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ। তবে অ্যান্টিবায়োটিক যেমন বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকরী অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ গুলো তেমন নয়। নির্দিষ্ট ভাইরাসের বিস্তার রোধে নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ ব্যবহৃত হয়। আর ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার চেয়ে দ্রুত বিবর্তিত হয়ে ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখে ফলে অ্যান্টিভাইরাল ঔষধগুলোও নিয়মিত উন্নত ও উপযোগী করার প্রয়োজন হয়।
এবার তাহলে দেখা যাক এককালের দুরারোগ্য ও মহামারী আকারে ঘটে থাকা পরজীবীঘটিত মরণব্যাধির ‘চিকিৎসাবিজ্ঞানের কাছে বধ’ হবার ইতিহাস; ভ্যাকসিন ও অ্যান্টিবায়োটিকের সফলতার বিবরণ।
একটা সময় ছিল যখন কলেরায় গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যেত। কলেরা কে ‘ওলা ওঠা’ বলা হত। কলেরাকে ‘ওলা’ নামক অশুভ আত্মার ক্রোধান্বিত আচরণ হিসেবে বিবেচনা করা হত। গ্রামের এক প্রান্তে কলেরা হলে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সবাই আতঙ্কিত হয়ে উঠত।
কিন্তু আজ আমরা জানি কোনো অশুভ আত্মার ক্রোধ নয় বরং Vibrio cholerae ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে কলেরা হয়ে থাকে। বর্তমানে মহামারী তো দূরে থাক, কলেরা প্রাণঘাতী কোনো রোগই নয় বলতে গেলে। যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের মাধ্যমেই কলেরা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বর্তমানে শুধু অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের মাধ্যমে কলেরার চিকিৎসাকেই উৎসাহিত করা হয়। তবে মারাত্মকভাবে সংক্রমিত হয়ে পরা এলাকার জন্য পূর্ব প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসবে তিন ধরনের সেবনযোগ্য টীকা রয়েছে। দুই সপ্তাহ ব্যবধানে এর দুই ডোজ মোটামুটি তিন বছরের জন্য কলেরা থেকে সুরক্ষা দেয়। এক ডোজ টীকা (Vaccine) স্বল্প সময়ের জন্য (প্রায় ছয় মাস) প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। কলেরাকে প্রাণঘাতী ব্যাধি বলার সুযোগ এখন আর একেবারেই নেই।
গুটি বসন্ত একটা সময় প্রাণঘাতী মারাত্মক রোগ ছিল যা মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ত গ্রামান্তরে। কারো গুটি বসন্ত হয়েছে শুনলে আশেপাশে কয়েক গ্রাম পর্যন্ত মানুষ তটস্থ থাকত। গুটি বসন্তকেও অশুভ আত্মা, কখনো পাপের ফল হিসেবে বিবেচনা করা হত। গুটি বসন্তের হাত থেকে কেউ প্রাণে বেঁচে গেলেও অঙ্গহানি ছিল প্রায় নিশ্চিত।
কিন্তু কোনো পাপের ফল নয় বরং Variola virus এর সংক্রমণে গুটি বসন্ত হয়। বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে পৃথিবী গুটিবসন্ত মুক্ত। ১৯৮০ সালের ৮ মে World Health Organization (WHO) এর ৩৩ তম অধিবেশনে পৃথিবীকে Variola virus তথা গুটিবসন্ত মুক্ত ঘোষণা করা হয়। পৃথিবীর উন্মুক্ত পরিবেশে এখন আর গুটি বসন্তের জীবাণু বিচরণ করে না, তারা এখন মাত্র দুটো কারাগারে বন্দী। যুক্তরাষ্ট্রের Centers for Disease Control and Prevention (CDC) এর ল্যাবরেটরি এবং রাশিয়ার Research Center of Virology and Biotechnology (VECTOR Institute) এর ল্যাবরেটরিতে WHO এর তত্ত্বাবধায়নে কিছু সংখ্যক Variola virus সংরক্ষিত আছে গবেষণার কাজে।
দেহঘড়ি সন্ধান করে মেডিসিনে এবার নোবেল পেলেন তিনজন মার্কিন বিজ্ঞানী। সত্যিই আমাদের শরীরে ঘড়ির মত কাজ করে এমন মেকানিজম আছে। অর্থাৎ সকাল হলে নিয়ম মেনে ঘুম ভাঙবে আবার রাত হলে আপনার দুচোখ জুড়ে রাজ্যের ঘুম নামবে।
এই দেহঘড়ির কথা আমাদের বাউল সাধক আলাউদ্দনি বয়াতী সাহেব ঠিক কবে শুনিয়েছেন জানি না। তবে ১৯৮৪ সালে প্রথম বারের মত এই দেহঘড়ি নিয়ে কাজ শুরু করলেন তিন জন মার্কিন বিজ্ঞানী– ড.জেফরি হল, ড. মাইকেল রসব্যাস এবং ড. মাইকেল ইয়াং। তারা ফ্রুট ফ্লাই (ফল কাটলে যে ছোট মাছি ভন ভন করে চলে আসে) গবেষণা করে একটি জিনের সন্ধান পেলেন যার নাম দিয়েছেন “পিরিয়ড” অর্থাৎ “সময়কাল”, যেটা রাতের বেলায় একধরনের প্রোটিন তৈরি করে যার নাম দিয়েছেন উনারা “PER”। আবার দিনের বেলায় আলো কমে আসার সাথে সাথে এই প্রোটিন ধীরে ধীরে ডিগ্রেইড বা ধবংস হয়ে যায়। যার ফলেই আমরা দিনের বেলায় জেগে থাকি আর আলো কমে আঁধার এলে ঘুমিয়ে পড়ি। শুধু তাই নয়- এই “PER” প্রোটিন দিনের বেলায় আমাদের রক্তচাপ, স্পন্দন, আচরণ, শরীরের তাপমাত্রা, হরমোন নিঃসরণ, হজম প্রক্রিয়া ইত্যাদি অন্যান্য সংশ্লিস্ট প্রোটিনকে সাথে নিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে। আবার রাত নামলেই ভেঙ্গে গিয়ে সেই রেগুলেশন যার যার হাতে ছেড়ে দেয়। পুরো প্রক্রিয়াটা ঘটে পৃথিবীর আবর্তনের সাথে সাথে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় আলোর উপস্থিতি-অনুপস্থিতির সাথে তাল রেখে। তাই এর নাম — সার্কাডিয়ান রিদমিক ক্লক”। শুধু মানুষ নয়, এটা যে কোনো প্রাণী এবং গাছেদের বেলাতেও সত্যি। তাই চারপাশের পরিবেশের সাথে মিলিয়ে আমরা সতর্ক/সচেতন থাকি কিংবা ঘুমাই।
যাই-হোক, আপনার মনে হতে পারে এটা আবিষ্কারের তাৎপর্য কী? আপনার ঘড়ির সময় এলোমেলো হয়ে গেলে আপনি যেমন বিভ্রান্ত হন, ঠিক সেরকম দেহ-ঘড়ির পরিবর্তনেও শরীর বিভ্রান্তিতে পড়ে। এটা বিশেষ করে যারা টাইম জোন পাড়ি দেন বিদেশে যাওয়ার সময় তাদের ক্ষেত্রে হরহামেশা ঘটে। যেমন আপনি ১০- ১২ ঘণ্টা প্লেনে চড়ে যেই দেশেই যান না কেন, প্রথম ৩-৪ দিন আপনি আপনার ফেলে আসা দেশের সময় অনুযায়ী ঘুমাবেন কিংবা জেগে উঠবেন। কারণ এই সার্কাডিয়ান ক্লক। ১৯৮৪ সালের আগে কেউই এটা বিশ্বাস করতে চাইতেন না। আর এখন ধীরে ধীরে এটাও জানা যাচ্ছে যে এই ঘড়ি এলোমেলো হওয়ার কারণে আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে মারাত্মক সব অসুখ– বিষণ্নতা, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, অনিদ্রা, এমনকি ক্যান্সার! আমাদের শরীরে এই সার্কাডিয়ান ক্লক বা দেহ ঘড়ির অবদান আরো বেড়িয়ে আসছে গবেষণায়।
বিজ্ঞানের সহায়তায় মানুষ অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত সভ্যতার শিখরে পৌছে গেছে। আদিম কালের মানুষ যেমন সভ্যতা ফিরাতে আগুন জ্বালানো শিখেছে, তেমনি সেই আগুন ব্যবহার করে বিজ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে যাবার ব্যবস্থা করেছে। আর পৃথিবী জোড়া বিখ্যাত সব বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার -এ আমরা আজ বিদ্যুত, পরিবহন যান, কথা বলার মাধ্যম ইত্যাদি সব বিখ্যাত আবিষ্কার বা যন্ত্র পেয়েছি। এগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে করেছে আরও সহজ ও সুন্দর। আজ আমরা সেইসব আবিষ্কার ও আবিষ্কারকদের নাম সম্পর্কে আপনাদের জানাব।
তাদের মজার আবিস্কার আমাদেরকে সর্বদাই অবাক করে। তাই এসব আবিস্কারকদের নাম আমাদের জানতে ইচ্ছা করে। কোন জিনিসের আবিষ্কারক বা জনক কে, কত সালে আবিষ্কার হলো, কোন দেশে আবিষ্কার হলো- এ অ্যাপটি দ্বারা আমরা এমন কিছু তথ্য জানানোর চেষ্টা করেছি।
বিসিএস প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য সাধারণ জ্ঞান বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয় জানতে হয়। সেক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞান অর্জনের জন্য ডেভেলপার টীম WikiBdApps এর এই অ্যাপটি বেশ কাজে আসবে।
অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহ
✓ আবিস্কার ও আবিস্কারক
✓ General Knowledge Bangla
✓ বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার ও ঘটনা
✓ Abishkar o jonok
✓ Abiskarer, Abishkarer rohosso
✓ Invention of Science & Technology
আমাদের অ্যাপটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অনুগ্রহপূর্বক রিভিউ, টিউমেন্ট করুন।
আমি সোহাগ হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 61 টি টিউন ও 10 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 11 টিউনারকে ফলো করি।