শোয়া বা বসা থেকে উঠার সময় হঠাৎ মাথা হালকা অনুভূত হলো। অথবা হঠাৎ মাথা ঘুরে গেল। বয়সকালে এভাবে মাথা ঘুরে যাওয়াটা একটি সাধারণ ঘটনা। তবে অন্য কোন অঙ্গ হলে এক কথা ছিল। কিন্তু এ যে মাথার ব্যাপার! মাথা ঘুরালে যে দুনিয়াটাই ঘুরতে থাকে। তাই খুব অল্প সময়ের জন্য মাথা ঘুরালেও দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না।
মাথা ঘুরালে পরে মাথায় ঢুকে আরেক টেনশন। নাম তার রক্তচাপ। অবশ্য রক্তচাপ শব্দটির চেয়ে ‘প্রেশার’ শব্দটিই আমাদের কাছে ব্যাপক পরিচিত। হ্যাঁ, এ বয়সে কারো মাথা ঘুরালে প্রেশার বা রক্তচাপের কথাই প্রথমে মনে আসে। মাথায় তখন একটাই চিন্তা- প্রেশার ফল করল কি?
অবশ্য প্রেশার আজকাল আর বয়সের ফ্রেমে আবদ্ধ নয়। বয়সের গন্ডি পেরিয়ে প্রেশার এর সমস্যা আজকাল কিশোর, তরুণ, যুবক, মাঝবয়সী, প্রৌঢ়, বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষের মধ্যেই দেখা যায়।
যাই হোক, এখন আপনার যদি এই সমস্যাকে গুরুতর মনে না হয় তাহলে হয়তো তখনই কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন না। তবে সমস্যা গুরুতর মনে করলে হয়তো খুঁজে দেখবেন যে হাতের কাছেই কোন ডাক্তার বা কম্পাউন্ডার আছে কিনা রক্তচাপ মাপার জন্য।
কিন্তু এই রক্তচাপ মাপা নিয়ে আরেক সমস্যার শুরু হয়। রক্তচাপ মাপার যন্ত্র বেশ সস্তা আর মাপার কৌশল খুব একটা জটিল নয় বলে নিজের তাগিদে রক্তচাপ মাপতে অনেকেই এগিয়ে আসেন। মাপতে হয়তো অনেকেই পারেন। কিন্তু নির্ভুলভাবে মাপার কৌশল জানা লোকের সংখ্যা বেশ কম।
“প্রেশার মাপার নিয়ম” সম্পর্কিত অসাধারণ অ্যাপটি প্লে-স্টোর থেকে আপনার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্টল করতে নিচের লিঙ্কে যানঃ
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.WikiReZon.PressureMaparNiyom
নির্ভুলভাবে প্রেশার মাপা অতি আবশ্যক। কারণ প্রেশার মাপায় ভুল হলে একজন রোগী যে হয়তো প্রেশারের ওষুধ খাচ্ছে, সে হয়তো প্রেশার কম মনে করে ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিতে পারে। হাতের কাছে রক্তচাপ মাপার বিশেষজ্ঞ না থাকলে তাই বিশাল সমস্যা।
সমস্যা আরও আছে। আপনি হয়তো কোন ওষুধের দোকানে প্রেশার মাপতে গেলেন। সেখানে গিয়ে প্রেশার মাপলেন ১৩০ আর ৮০। আবার আরেক দোকানে মেপে বলল প্রেশার ১১৫ আর ৭৫। এই যে মাপার পার্থক্য এটা মাপার ভুলের কারণেই হয়ে থাকে। এ ধরণের ভুল আপনার প্রেশার সমস্যাকে ক্ষেত্রবিশেষে আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে।
একজন দক্ষ কম্পাউন্ডারও একবার রক্তচাপ মেপেই নিশ্চিত হতে পারেন না। একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারও অস্বাভাবিক রক্তচাপ খেয়াল করলে একাধিকবার মেপেই নিশ্চিত হন। অর্থাৎ, রক্তচাপ মাপা মোটামুটি সহজ হলেও নির্ভুলভাবে এটা মাপার জন্য বিশেষ কৌশল ও সতর্কতা অবলম্বন করা বাধ্যতামূলক।
রক্তচাপ বলতে উচ্চ রক্তচাপ ও নিম্ন রক্তচাপ উভয়কেই বোঝায়। উচ্চ রক্তচাপকে সাধারণত হাই ব্লাড প্রেশার বা হাই প্রেসার বলা হয়। অন্যদিকে নিম্ন রক্তচাপকে লো ব্লাড প্রেশার বা লো প্রেসার বলা হয়।
লো প্রেশার কিন্তু শরীরের জন্য তুলনামূলকভাবে বেশি খারাপ। কারণ হঠাৎ করে প্রেশার কমে গেলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন কিডনি, মস্তিষ্ক ইত্যাদি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, এমনকি তাৎক্ষণিক মৃত্যুও হতে পারে।
তবে উচ্চ রক্তচাপও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। একে গোপন অসুখ বলা যায়। কারণ অনেকেই বুঝতে পারেন না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে। আবার সাধারণত যাদের প্রেশার লো, তাদের চেয়ে হাই প্রেশারের লোকেরা শারীরিকভাবে তুলনামূলক ভালো বোধ করেন। সুতরাং, তারাও যথেষ্ট আশংকার মধ্যেই রয়েছেন। শরীরে রক্তচাপ বেড়ে গেলে ব্যথা না হওয়ায় অনেকেই তা জানতে বা বুঝতে পারেন না৷ তবে এমনটা বেশিদিন চললে হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক, কিডনি এবং ধমনীর মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে৷ তাই উচ্চ রক্তচাপও সবসময় নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রাখা উচিৎ।
যাদের প্রেশারের সমস্যা রয়েছে তাদের উচিৎ নিয়মিত প্রেশার মাপা ও প্রেশারের ঔষধ খাওয়া। তবে প্রেশারের ওষুধ খাওয়া কিংবা ছাড়া দু’টোই করতে হবে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। আর প্রেশার মাপার ক্ষেত্রেও হতে হবে সচেতন।
রক্তচাপ অনেকেই হয়তো মাপতে পারে। কিন্তু সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপার জন্য কিছু কৌশল জানতে হয়।
নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাডপ্রেশার নিয়ে অনেক মানুষই চিন্তিত থাকেন। কিন্তু নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে অযথা বা অতিরিক্ত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, নিম্ন রক্তচাপ উচ্চ রক্তচাপের চেয়ে কম ক্ষতিকর ও স্বল্পমেয়াদি সমস্যা। শুধু স্বাস্থ্যহীন হলেই যে লো প্রেশার হবে, তা-ই নয়, মোটা মানুষেরও তা থাকতে পারে। সাধারণত সিস্টোলিক রক্তচাপ ১০০ মিলিমিটার পারদ ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মিলিমিটার পারদের নিচে হলে তাকে নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়।
বিভিন্ন কারণে লো প্রেশার হতে পারে।
যেমন-
* হরমোন ও থাইরয়েডের সমস্যা, শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
* গর্ভকালীন, খাবার ঠিকমতো বা সময়মতো না খেলে
* ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মানসিক অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা, কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণে হতে পারে
* বাত, হার্ট অ্যাটাক, লিভারের অসুখ, হজমে দুর্বলতা
* কোনো কারণে পানিশূন্যতা, ডায়রিয়া বা অত্যধিক বমি হওয়া
* অতিরিক্ত রক্তপাত, রক্তশূন্যতা ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ
* শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কম বা বেশি হলে।
উচ্চ রক্তচাপ প্রায় একটি স্থায়ী রোগ হিসেবে বিবেচিত। এর জন্য চিকিৎসা ও প্রতিরোধ দুটোই জরুরি। তা না হলে বিভিন্ন জটিলতা, এমনকি হঠাৎ করে মৃত্যুরও ঝুঁকি থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ কি আসলেই কোনো জটিল ব্যাধি?
এই রোগ ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের কোনো প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায় না। এটাই উচ্চ রক্তচাপের সবচেয়ে ভীতিকর দিক। যদিও অনেক সময় রোগীর বেলায় কোনো লক্ষণ থাকে না, তবুও নীরবে উচ্চ রক্তচাপ শরীরের বিভিন্ন অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ জন্যই এ রোগকে ‘নীরব ঘাতক’ বলা যেতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত ও চিকিৎসাবিহীন উচ্চ রক্তচাপ থেকে মারাত্মক শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
কী কী জটিলতা হতে পারে?
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ চারটি অঙ্গে মারাত্মক ধরনের জটিলতা হতে পারে। যেমন—হৃৎপিণ্ড, কিডনি, মস্তিষ্ক ও চোখ। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ থেকে হৃদ্যন্ত্রের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। দুর্বল হৃদ্যন্ত্র রক্ত পাম্প করতে পারে না এবং এই অবস্থাকে বলা হয় হার্ট ফেইলিওর। রক্তনালির গাত্র সংকুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাক বা ইনফ্রাকশন হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, মস্তিষ্কে স্ট্রোক হতে পারে, যা থেকে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। এ ছাড়া চোখের রেটিনাতে রক্তক্ষরণ হয়ে অন্ধত্ব বরণ করতে হতে পারে।
প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই আজকাল প্রেশারের সমস্যা দেখা দেয়। হাই প্রেশার ও লো প্রেশার সমস্যার ব্যাপকতার ফলে ব্লাড প্রেশার মাপার সঠিক নিয়ম জানার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে অনেকে। তাই WikiReZon টীম রক্তচাপ মাপার নিয়ম সম্পর্কিত এ অ্যাপটি ডেভেলপ করেছে।
এ অ্যাপ থেকে জানতে পারবেনঃ
- রক্তচাপ বা প্রেসার কী?
- কতদিন পর পর রক্তচাপ মাপবেন?
- রক্তচাপ পরিমাপের জন্য কি ধরনের যন্ত্র (মেশিন) ক্রয় করবেন?
- রক্তচাপ মাপার আগে ও পরে কি করবেন?
- মেশিনের মাধ্যমে রক্তচাপ মাপার নিয়ম
- রক্তচাপ নিয়ে আমাদের কিছু ভুল ধারণা
- উচ্চ রক্তচাপ কি?
- উচ্চ রক্তচাপের প্রকারভেদ
- উচ্চ রক্তচাপের কারণ
- উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া উপায়
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ব্যায়াম
- উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ
- উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন
- নিম্ন রক্তচাপ কি ও কেন হয়?
- নিম্ন রক্তচাপ সমস্যার প্রধান লক্ষণসমূহ
- নিম্ন রক্তচাপের চিকিৎসা
- নিম্ন রক্তচাপ হলে করণীয়
- নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পরামর্শ
“প্রেশার মাপার নিয়ম” সম্পর্কিত অসাধারণ অ্যাপটি প্লে-স্টোর থেকে আপনার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ইনস্টল করতে নিচের লিঙ্কে যানঃ
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.WikiReZon.PressureMaparNiyom
এছাড়াও আমাদের প্লে-স্টোর চ্যানেল (WikiReZon) থেকে প্রয়োজনীয় অন্যান্য অ্যাপস ইন্সটল করুন :
আমি সোহাগ হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 61 টি টিউন ও 10 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 11 টিউনারকে ফলো করি।