নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাডপ্রেশার নিয়ে অনেক মানুষই চিন্তিত থাকেন। কিন্তু নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে অযথা বা অতিরিক্ত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, নিম্ন রক্তচাপ উচ্চ রক্তচাপের চেয়ে কম ক্ষতিকর ও স্বল্পমেয়াদি সমস্যা। শুধু স্বাস্থ্যহীন হলেই যে লো প্রেশার হবে, তা-ই নয়, মোটা মানুষেরও তা থাকতে পারে। সাধারণত সিস্টোলিক রক্তচাপ ১০০ মিলিমিটার পারদ ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৬০ মিলিমিটার পারদের নিচে হলে তাকে নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়।
বিভিন্ন কারণে লো প্রেশার হতে পারে।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.WikiReZon.PressureMaparNiyom
যেমন-
* হরমোন ও থাইরয়েডের সমস্যা, শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
* গর্ভকালীন, খাবার ঠিকমতো বা সময়মতো না খেলে
* ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মানসিক অস্থিরতা ও দুশ্চিন্তা, কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণে হতে পারে
* বাত, হার্ট অ্যাটাক, লিভারের অসুখ, হজমে দুর্বলতা
* কোনো কারণে পানিশূন্যতা, ডায়রিয়া বা অত্যধিক বমি হওয়া
* অতিরিক্ত রক্তপাত, রক্তশূন্যতা ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ
* শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় কম বা বেশি হলে।
নিম্ন রক্তচাপ সমস্যার প্রধান লক্ষণ সমূহ::
১) নিম্ন রক্তচাপ অর্থাৎ হাইপোটেনশনের প্রথম ও প্রধান লক্ষণ হচ্ছে মাথা ঘোরানো ও চোখে ঘোলা দেখা।
২) রক্তচাপ অনেক কম হলে মস্তিষ্কে রক্ত এবং অক্সিজেনের অভাবে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেবে।
৩) প্রচণ্ড বুকে ব্যথা থাকবে। হঠাৎ জ্ঞান হারানো
৪) স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেবেন।
৫) হার্টবিট রেট উঠানামা করবে অর্থাৎ অনিয়মিত হার্টবিট রেট হবে।
৬) প্রায়ই জ্বর থাকবে। খুব বেশি নয় ১০১ ডিগ্রী ফারেনহাইটের মতো জ্বর উঠে।
৭) নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই প্রচণ্ড মাথা ব্যাথা হবে। অস্বাভাবিক দ্রুত হূৎস্পন্দন ও নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণ হতে পারে
৮) দীর্ঘদিন যাবত ডায়রিয়ার সমস্যায় ভুগতে দেখা যাবে।
৯) প্রচণ্ড দুর্বলতা কাজ করবে এবং অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠার সমস্যা দেখা দেবে।হঠাৎ বসা বা শোয়া থেকে হঠাৎ উঠে দাঁড়ালে ভারসাম্যহীনতা
১০) রক্তের সিস্টোলিক চাপ ৯০ মি.মি.পারদ এর নিচে এবং ডায়াস্টলিক চাপ ৬০ মি.মি. এর নিচে থাকবে বেশ কিছুদিন ধরে।
চিকিৎসা::
নিম্ন রক্তচাপের কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। যদি শরীরে পানিশূন্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে নিম্ন রক্তচাপ হয়, তাহলে শুধু খাবার স্যালাইন মুখে খেলেই প্রেশার বেড়ে যায়। তবে যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি নিম্ন রক্তচাপ আছে, তাঁদের অবশ্যই কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এ ধরনের অবস্থায় চিকিৎসক নিম্ন রক্তচাপের কারণ শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। তবে খাবার স্যালাইন সবচেয়ে উপযোগী এবং তাৎক্ষণিক ফলদায়ক।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.WikiReZon.PressureMaparNiyom
নিম্ন রক্তচাপ হলে করণীয়::
* লবণযুক্ত খাবার খান।
* বাড়িতে তৈরি তরল খাবার যেমন চিকেন স্যুপ, ফলের রস বেশি করে খাবেন।
* অল্প অল্প করে বারবার খাবার খাবেন।
* আলু, ডিম, মাছ, মাংস, ছানা ও বাদাম খান। দুধে মধু মিশিয়ে খান। দুধের ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম দ্রুত নিম্নচাপ কমাতে সহায়তা করে।
* কফি, অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন আছে এ রকম ওষুধ সেবন থেকে দূরে থাকুন।
* সবুজ শাক খান। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ফলেট, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। সবুজ শাক রক্তচাপের সঠিক মাত্রা ধরে রাখতে
সাহায্য করে।
* সূর্যমুখীর বিচি ম্যাগনেসিয়াম ও সোডিয়ামের খুব ভালো উৎস। এনার্জি (শক্তি) উৎপাদনে সহায়তা করে। এ ছাড়া শিমের বিচিতে লো প্রেশার দূর করার উৎকৃষ্ট উপাদান রয়েছে। এতে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার ও পটাসিয়াম আছে। সালাদ ও স্যুপে শিমের বিচি ব্যবহার করুন। এতে খাবারের পুষ্টিগুণ বেড়ে যাবে।
* সকালের নাশতায় কলা, স্ট্রবেরি, আমন্ড ও চিজ রাখুন। বিভিন্ন ফল দিয়ে ফ্রুটস সালাদ বানিয়ে খেতে পারেন। এ ছাড়া আপেল কেটে তার ওপর হালকা লবণ ছড়িয়ে খেতে পারেন।
* লো প্রেশারকে সঠিক মাত্রায় নিয়ে আসতে চকোলেটের জুড়ি নেই। লো প্রেশার হলে ডার্ক চকোলেট খান। তবে চকোলেট কেনার সময় লক্ষ রাখবেন, যেন তা ৭০ শতাংশ কোকো পাউডারযুক্ত হয়।
* লাল চালের ভাত, ওট্স, পাস্তা প্রেশার ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
কফি :– স্ট্রং কফি, হট চকলেট, কোলাসহ যেকোনো ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানীয় দ্রুত ব্লাড প্রেসার বাড়ায়। হঠাৎ করে লো প্রেসার দেখা দিলে এক কাপ কফি খেতে পারেন। যারা অনেকদিন ধরে এ সমস্যায় ভুগছেন তারা সকালে ভারি নাশতার পর এক কাপ স্ট্রং কফি খেতে পারেন। তবে সবসময় লো প্রেসার হলে কোলা না খাওয়াই ভালো। কারণ এর অন্যান্য ক্ষতিকারক দিকও রয়েছে।
* লবণ পানি :- লবণে রয়েছে সোডিয়াম যা রক্তচাপ বাড়ায়। তবে পানিতে বেশি লবণ না দেওয়াই ভালো। সবচেয়ে ভালো হয়, এক গ্লাস পানিতে দুই চা চামচ চিনি ও এক-দুই চা চামচ লবণ মিশিয়ে খেলে। তবে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে চিনি বর্জন করতে হবে।
* কিসমিস :- হাইপোটেনশনের ওষুধ হিসেবে অতি প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে কিছমিস। এক-দুই কাপ কিছমিছ সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে খালিপেটে সেগুলো খান। সঙ্গে কিছমিছ ভেজানো পানিও খেয়ে নিন। এছাড়াও পাঁচটি কাঠবাদাম ও ১৫ থেকে ২০টি চীনাবাদাম খেতে পারেন।
* পুদিনা :- ভিটামিন সি, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও প্যান্টোথেনিক উপাদান যা দ্রুত ব্লাড প্রেসার বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মানসিক অবসাদও দূর করে। পুদিনা পাতা বেঁটে তাতে মধু মিশিয়ে পান করুন।
* যষ্টিমধু :- যষ্টিমধু আদিকাল থেকেই নানা রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এক কাপ পানিতে এক টেবিল চামচ যষ্টিমধু দিয়ে পান করুন। এছাড়াও দুধে মধু দিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
* বিটের রস :- বিটের রস হাই প্রসার ও লো প্রেসার উভয়ের জন্যই সমান উপকারী। এটি রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। হাইপোটেনশনের রোগীরা দিনে দুই কাপ বিটের রস খেতে পারেন। এভাবে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাবেন।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.WikiReZon.PressureMaparNiyom
নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পরামর্শ
১. অনেকক্ষণ একই স্থানে বসে বা শুয়ে থাকার পর ওঠার সময় সাবধানে ও ধীরে উঠুন।
২. ঘন ঘন হালকা খাবার খান। বেশি সময় খালি পেটে থাকলে রক্তচাপ আরও কমে যেতে পারে।
৩. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
৪. পাতে এক চিমটি করে লবণও খেতে পারেন।
৫. দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় গ্লুকোজ ও স্যালাইন রাখুন।
উচ্চ রক্তচাপ প্রায় একটি স্থায়ী রোগ হিসেবে বিবেচিত। এর জন্য চিকিৎসা ও প্রতিরোধ দুটোই জরুরি। তা না হলে বিভিন্ন জটিলতা, এমনকি হঠাৎ করে মৃত্যুরও ঝুঁকি থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ কি আসলেই কোনো জটিল ব্যাধি?
এই রোগ ভয়ংকর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের কোনো প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায় না। এটাই উচ্চ রক্তচাপের সবচেয়ে ভীতিকর দিক। যদিও অনেক সময় রোগীর বেলায় কোনো লক্ষণ থাকে না, তবুও নীরবে উচ্চ রক্তচাপ শরীরের বিভিন্ন অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এ জন্যই এ রোগকে ‘নীরব ঘাতক’ বলা যেতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত ও চিকিৎসাবিহীন উচ্চ রক্তচাপ থেকে মারাত্মক শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
কী কী জটিলতা হতে পারে?
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ চারটি অঙ্গে মারাত্মক ধরনের জটিলতা হতে পারে। যেমন—হৃৎপিণ্ড, কিডনি, মস্তিষ্ক ও চোখ। অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ থেকে হৃদ্যন্ত্রের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। দুর্বল হৃদ্যন্ত্র রক্ত পাম্প করতে পারে না এবং এই অবস্থাকে বলা হয় হার্ট ফেইলিওর। রক্তনালির গাত্র সংকুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাক বা ইনফ্রাকশন হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, মস্তিষ্কে স্ট্রোক হতে পারে, যা থেকে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। এ ছাড়া চোখের রেটিনাতে রক্তক্ষরণ হয়ে অন্ধত্ব বরণ করতে হতে পারে।
কী কী কারণে উচ্চ রক্তচাপ হয়?
৯০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না, একে প্রাইমারি বা অ্যাসেনশিয়াল রক্তচাপ বলে। সাধারণত বয়স্ক মানুষের উচ্চ রক্তচাপ বেশি হয়ে থাকে। কিছু কিছু বিষয় উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা বাড়ায়, যা নিম্নরূপ:
উচ্চ রক্তচাপের বংশগত ধারাবাহিকতা আছে, যদি বাবা-মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকে, তবে সন্তানেরও এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমনকি নিকটাত্মীয়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকলেও অন্যদের এর ঝুঁকি থাকে।
ধূমপান: ধূমপায়ী ব্যক্তির শরীরে তামাকের নানা রকম বিষাক্ত পদার্থের প্রতিক্রিয়ায় উচ্চ রক্তচাপসহ ধমনি, শিরার নানা রকম রোগ ও হৃদ্রোগ দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ: খাবার লবণে সোডিয়াম থাকে, যা রক্তের জলীয় অংশ বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তের আয়তন ও চাপ বেড়ে যায়।
অধিক ওজন ও অলস জীবনযাত্রা: যথেষ্ট পরিমাণে ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম না করলে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে। এতে হৃদ্যন্ত্রে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। অধিক ওজনসম্পন্ন লোকদের উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে।
অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার, যেমন—মাংস, মাখন ও ডুবো তেলে ভাজা খাবার খেলে ওজন বাড়ে। ডিমের হলুদ অংশ এবং কলিজা, গুর্দা, মগজ এসব খেলে রক্তে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল হলে রক্তনালির দেয়াল মোটা ও শক্ত হয়ে যায়। ফলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে।
ডায়াবেটিস: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিসের রোগীদের উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়। এ ছাড়া তাঁদের অন্ধত্ব ও কিডনির নানা রকম রোগ হতে পারে।
অতিরিক্ত উৎকণ্ঠা: অতিরিক্ত রাগ, উত্তেজনা, ভীতি এবং মানসিক চাপের কারণেও রক্তচাপ সাময়িকভাবে বেড়ে যেতে পারে। যদি এই মানসিক চাপ অব্যাহত থাকে এবং রোগী ক্রমবর্ধমান মানসিক চাপের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পারেন, তবে এই উচ্চ রক্তচাপ স্থায়ী রূপ নিতে পারে।
কিছু কিছু রোগের কারণে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া গেলে একে বলা হয় সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন। এ কারণগুলোর মধ্যে কয়েকটি হলো:
কিডনির রোগ।
অ্যাড্রেনাল গ্রন্থি ও পিটুইটারি গ্রন্থির টিউমার।
ধমনির বংশগত রোগ।
গর্ভধারণ অবস্থায় একলাম্পসিয়া ও প্রি অ্যাকলাম্পসিয়া হলে।
অনেক দিন ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ির ব্যবহার, স্টেরয়েড জাতীয় হরমোন গ্রহণ এবং ব্যথা নিরামক কিছু কিছু ওষুধ খেলে।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.WikiReZon.PressureMaparNiyom
উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে কী করা উচিত?
জীবনযাত্রার পরিবর্তন এনে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। বংশগতভাবে উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তা কমানো সম্ভব নয়। তবে এ রকম ক্ষেত্রে যেসব উপাদান নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেগুলোর ব্যাপারে বেশি মনোযোগী হওয়া উচিত।
অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে: খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ ও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। একবার লক্ষ্য অনুযায়ী ওজনে পৌঁছালে সীমিত আহার করা উচিত এবং ব্যায়াম অব্যাহত রাখতে হবে। ওষুধ খেয়ে ওজন কমানো বিপজ্জনক। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওজন কমানোর ওষুধ না খাওয়াই ভালো।
খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্কতা: কম চর্বি ও কম কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন—খাসি বা গরুর মাংস, কলিজা, মগজ, গিলা, ডিম কম খেতে হবে। কম তেলে রান্না করা খাবার এবং ননী তোলা দুধ, অসম্পৃক্ত চর্বি যেমন—সয়াবিন, ক্যানোলা, ভুট্টার তেল অথবা সূর্যমুখীর তেল খাওয়া যাবে। বেশি আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করা ভালো। আটার রুটি এবং সুজি-জাতীয় খাবার পরিমাণমতো খাওয়া ভালো।
লবণ নিয়ন্ত্রণ: তরকারিতে অতিরিক্ত লবণ পরিহার করতে হবে।
মদ্যপান: মদ্যপান পরিহার করতে হবে।
নিয়মিত ব্যায়াম: সকাল-সন্ধ্যা হাঁটাচলা, সম্ভব হলে দৌড়ানো, হালকা ব্যায়াম, লিফটে না চড়ে সিঁড়ি ব্যবহার ইত্যাদি।
ধূমপান বর্জন: ধূমপান অবশ্যই বর্জনীয়। ধূমপায়ীর সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকুন। তামাক পাতা, জর্দা, গুল লাগানো ইত্যাদি পরিহার করতে হবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
মানসিক ও শারীরিক চাপ সামলাতে হবে। নিয়মিত বিশ্রাম, সময়মতো ঘুমানো, শরীরকে অতিরিক্ত ক্লান্তি থেকে বিশ্রাম দিতে হবে। নিজের শখের কাজ করা ইত্যাদির মাধ্যমে মানসিক শান্তি বেশি হবে।
রক্তচাপ নিয়মিত পরীক্ষা: নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে গিয়ে রক্তচাপ পরীক্ষা করানো উচিত। যত আগে উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়ে, তত আগে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং জটিল রোগ বা প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
উচ্চ রক্তচাপ হলে কি চিকিৎসা করাতেই হবে?
উচ্চ রক্তচাপ সারে না, একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর জন্য নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে। অনেক রোগী কিছুদিন ওষুধ খাওয়ার পর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এলে ওষুধ বন্ধ করে দেন। মনে করেন রক্তচাপ ভালো হয়ে গেছে, কাজেই ওষুধ খাওয়ার দরকার কী? এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। কোনোক্রমেই চিকিৎসকের নির্দেশ ছাড়া ওষুধ সেবন বন্ধ করা যাবে না। অনেকেই আবার উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত জানার পরেও ওষুধ খেতে অনীহা প্রকাশ করেন বা খেতে চান না। কারও কারও ধারণা, একবার ওষুধ খেলে তা আর বন্ধ করা যাবে না। আবার কেউ কেউ এমনও ভাবেন যে উচ্চ রক্তচাপ তাঁর দৈনন্দিন জীবনপ্রবাহে কোনো সমস্যা করছে না বা রোগের কোনো লক্ষণ নেই, তাই উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খেতে চান না বা প্রয়োজন মনে করেন না। মনে করেন ভালোই তো আছি, ওষুধের কী দরকার? এ ধারণাটাও সম্পূর্ণ ভুল। এ ধরনের রোগীরাই হঠাৎ করে হৃদ্রোগ বা স্ট্রোকে আক্রান্ত হন, এমনকি মৃত্যুও হয়ে থাকে। তাঁদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, নিয়মিত ওষুধ সেবন ও চেক করাতে হবে।
শোয়া বা বসা থেকে উঠার সময় হঠাৎ মাথা ঘুরে গেল। বয়সকালে এভাবে মাথা ঘুরে যাওয়াটা একটি সাধারণ ঘটনা। তবে অন্য কোন অঙ্গ হলে এক কথা ছিল। কিন্তু এ যে মাথার ব্যাপার! মাথা ঘুরালে যে দুনিয়াটাই ঘুরতে থাকে। তাই খুব অল্প সময়ের জন্য মাথা ঘুরালেও দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না।
মাথা ঘুরালে পরে মাথায় ঢুকে আরেক টেনশন। নাম তার রক্তচাপ। অবশ্য রক্তচাপ শব্দটির চেয়ে ‘প্রেশার’ শব্দটিই আমাদের কাছে ব্যাপক পরিচিত। হ্যাঁ, এ বয়সে কারো মাথা ঘুরালে প্রেশার বা রক্তচাপের কথাই প্রথমে মনে আসে। অবশ্য প্রেশার আজকাল আর বয়সের ফ্রেমে আবদ্ধ নয়।
যাই হোক, এখন আপনার যদি এই সমস্যাকে গুরুতর মনে হয় তাহলে হয়তো খুঁজে দেখবেন যে হাতের কাছেই কোন ডাক্তার বা কম্পাউন্ডার আছে কিনা রক্তচাপ মাপার জন্য।
কিন্তু এই রক্তচাপ মাপা নিয়ে আরেক সমস্যার শুরু হয়। রক্তচাপ মাপার যন্ত্র বেশ সস্তা আর মাপার কৌশল খুব একটা জটিল নয় বলে নিজের তাগিদে রক্তচাপ মাপতে অনেকেই এগিয়ে আসেন। মাপতে হয়তো অনেকেই পারেন। কিন্তু নির্ভুলভাবে মাপার কৌশল জানা লোকের সংখ্যা বেশ কম।
নির্ভুলভাবে প্রেশার মাপা অতি আবশ্যক। কারণ প্রেশার মাপায় ভুল হলে একজন রোগী যে হয়তো প্রেশারের ওষুধ খাচ্ছে, সে হয়তো প্রেশার কম মনে করে ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দিতে পারে। হাতের কাছে রক্তচাপ মাপার বিশেষজ্ঞ না থাকলে তাই বিশাল সমস্যা।
সমস্যা আরও আছে। আপনি হয়তো কোন ওষুধের দোকানে প্রেশার মাপতে গেলেন। সেখানে গিয়ে প্রেশার মাপলেন ১৩০ আর ৮০। আবার আরেক দোকানে মেপে বলল প্রেশার ১১৫ আর ৭৫। এই যে মাপার পার্থক্য এটা মাপার ভুলের কারণেই হয়ে থাকে। এ ধরণের ভুল আপনার প্রেশার সমস্যাকে ক্ষেত্রবিশেষে আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে।
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.WikiReZon.PressureMaparNiyom
একজন দক্ষ কম্পাউন্ডারও একবার রক্তচাপ মেপেই নিশ্চিত হতে পারেন না। একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারও অস্বাভাবিক রক্তচাপ খেয়াল করলে একাধিকবার মেপেই নিশ্চিত হন। অর্থাৎ, রক্তচাপ মাপা মোটামুটি সহজ হলেও নির্ভুলভাবে এটা মাপার জন্য বিশেষ কৌশল ও সতর্কতা অবলম্বন করা বাধ্যতামূলক।
রক্তচাপ বলতে উচ্চ রক্তচাপ ও নিম্ন রক্তচাপ উভয়কেই বোঝায়। উচ্চ রক্তচাপকে সাধারণত হাই ব্লাড প্রেশার বা হাই প্রেসার বলা হয়। অন্যদিকে নিম্ন রক্তচাপকে লো ব্লাড প্রেশার বা লো প্রেসার বলা হয়।
লো প্রেশার কিন্তু শরীরের জন্য তুলনামূলকভাবে বেশি খারাপ। কারণ হঠাৎ করে প্রেশার কমে গেলে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন কিডনি, মস্তিষ্ক ইত্যাদি নষ্ট হয়ে যেতে পারে, এমনকি তাৎক্ষণিক মৃত্যুও হতে পারে।
তবে উচ্চ রক্তচাপও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। একে গোপন অসুখ বলা যায়। কারণ অনেকেই বুঝতে পারেন না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে। আবার সাধারণত যাদের প্রেশার লো, তাদের চেয়ে হাই প্রেশারের লোকেরা শারীরিকভাবে তুলনামূলক ভালো বোধ করেন। সুতরাং, তারাও যথেষ্ট আশংকার মধ্যেই রয়েছেন। শরীরে রক্তচাপ বেড়ে গেলে ব্যথা না হওয়ায় অনেকেই তা জানতে বা বুঝতে পারেন না৷ তবে এমনটা বেশিদিন চললে হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক, কিডনি এবং ধমনীর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে৷ তাই উচ্চ রক্তচাপও সবসময় নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রাখা উচিৎ।
যাদের প্রেশারের সমস্যা রয়েছে তাদের উচিৎ নিয়মিত প্রেশার মাপা ও প্রেশারের ঔষধ খাওয়া। তবে প্রেশারের ওষুধ খাওয়া কিংবা ছাড়া দু’টোই করতে হবে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী। আর প্রেশার মাপার ক্ষেত্রেও হতে হবে সচেতন।
প্রাপ্ত বয়স্ক হলেই আজকাল প্রেশারের সমস্যা দেখা দেয়। হাই প্রেশার ও লো প্রেশার সমস্যার ব্যাপকতার ফলে ব্লাড প্রেশার মাপার সঠিক নিয়ম জানার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে WikiReZon টীম রক্তচাপ মাপার নিয়ম সম্পর্কিত এ অ্যাপটি ডেভেলপ করেছে।
এ অ্যাপ থেকে জানতে পারবেনঃ
- রক্তচাপ বা প্রেসার কী?
- কতদিন পর পর রক্তচাপ মাপবেন?
- রক্তচাপ পরিমাপের জন্য কি ধরনের যন্ত্র (মেশিন) ক্রয় করবেন?
- রক্তচাপ মাপার আগে ও পরে কি করবেন?
- মেশিনের মাধ্যমে রক্তচাপ মাপার নিয়ম
- রক্তচাপ নিয়ে আমাদের কিছু ভুল ধারণা
- উচ্চ রক্তচাপ কি?
- উচ্চ রক্তচাপের প্রকারভেদ
- উচ্চ রক্তচাপের কারণ
- উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া উপায়
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ব্যায়াম
- উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ
- উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন
- নিম্ন রক্তচাপ কি ও কেন হয়?
- নিম্ন রক্তচাপ সমস্যার প্রধান লক্ষণসমূহ
- নিম্ন রক্তচাপের চিকিৎসা
- নিম্ন রক্তচাপ হলে করণীয়
- নিম্ন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পরামর্শ
এই অ্যাপের তথ্যসমূহ স্বাস্থ্য বিষয়ক বেশ কিছু সাইট থেকে সংকলিত হয়েছে।
অন্তর্ভুক্ত বিষয়সমূহঃ
প্রেসার মাপার নিয়ম, উচ্চরক্তচাপ মাপার নিয়ম, নিম্নরক্তচাপ মাপার নিয়ম, ব্লাড প্রেসার, প্রেশার উঠা, pressure, pressure mapar niyom, High Pressure, presar, High Blood Pressure, Low Blood Pressure, Roktochap, Uccha roktochap, roktochap mapar niyom
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.WikiReZon.PressureMaparNiyom
আমি সোহাগ হাসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 7 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 61 টি টিউন ও 10 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 11 টিউনারকে ফলো করি।