চোখের সামনে দেখতে পেলেন কেউ একজন হঠাৎ করে মূর্ছা গেছে বা অজ্ঞান হয়ে গেছে। কিংবা আপনার পাশের লোকটি হঠাৎ খিঁচুনি দিয়ে পড়ে গেছে। এমন অবস্থায় বুঝতে হবে লোকটির হয়তো মৃগী রোগ (Epilepsy) রয়েছে।
মৃগী রোগকে অনেকে মিরকি ব্যারামও বলে থাকে। মস্তিষ্কের অতি সংবেদনশীলতার জন্য এটা হতে পারে। তবে সকল ধরণের খিঁচুনি মানেই মৃগী রোগ নয়। কারো মধ্যে বারবার খিচুনির লক্ষণ দেখা দিলে তার মৃগি রোগ রয়েছে বলে ধরা যায়। আমরা অনেক সময় মহিলাদের হিস্টিরিয়া রোগের খিচুনিকে মৃগী রোগের খিঁচুনি বলে ভুল করি। তাই এ বিষয়েও সঠিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
বংশের মধ্যে কারো মৃগী রোগ থাকলে উক্ত ব্যক্তির মৃগী হওয়ার আশংকা অনেক বেড়ে যায়। এছাড়াও ব্রেইন টিউমার, মাথায় আঘাত, মানসিক প্রতিবন্ধিতা, নেশাজাতীয় ওষুধ সেবনসহ আরও নানা কারণে খিঁচুনি হতে পারে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের রক্তে সুগার বা শর্করার পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে গেলে বা কমে গেলেও খিচুনী সমস্যা হতে পারে।
মৃগী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির হঠাৎ করে মারাত্মক কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যেমন- শরীর শক্ত হয়ে অজ্ঞান হওয়া, শিথিল হয়ে ঢলে পড়া, খিঁচুনি শুরু হয়ে সারা দেহে ছড়িয়ে পড়া ইত্যাদি।
মৃগী রোগীর আশে পাশে যারা থাকে, তাদের জানা থাকা দরকার যে রোগীর হঠাৎ খিঁচুনি উঠলে কী করতে হবে। এছাড়া রোগীকেও জানতে হবে যে তার কী কী করণীয় রয়েছে। মৃগী রোগী তার অসুখ হওয়ার সাথে সাথে সে নিজে কী করে- তা ঠিকমত বলতে পারেনা। তাই এ সময় রোগীর পাশে বা ধারে-কাছে যে থাকবে, তারই উচিৎ রোগীকে সহায়তা করা।
মৃগী রোগী যখন-তখন জ্ঞান হারাতে পারে। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর কিছু সময়ের জন্য তার মানসিক বিভ্রম হতে পারে। তাই এ সময়টুকু রোগীর পাশে থেকে তাকে আশ্বস্ত করা উচিৎ। পুরোপুরি স্বাভাবিক ও সক্ষম অবস্থায় আসার আগ পর্যন্ত রোগীকে ছেড়ে যাওয়া ঠিক নয়। রোগীর আশে-পাশের লোকদের জন্য এটা নৈতিক দায়িত্ব ও মানবিক কর্তব্য।
মৃগী রোগী দূরে কোথাও গেলে তার উচিৎ সাথে পরিচয়পত্র ও পরিচিতদের ফোন নম্বর সংরক্ষণ করা। কারণ রাস্তা-ঘাটে যে কোন সময় বিপদে পড়লে তার আত্মীয়-স্বজনকে যেন জানানো যায়।
মৃগী রোগীদেরকে অনেক সাবধানে চলতে হয়। মৃগী রোগীদের কিছু কাজ কোন অবস্থাতেই করা ঠিক নয়, যেমন-গোসল করতে পুকুরে বা নদীতে নামা, আগুনের পাশে যাওয়া, গাছে বা ছাদে উঠা ইত্যাদি। একজন উপযুক্ত সাহায্যকারী সাথে থাকলেও তার সদা সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
খিঁচুনি আক্রান্ত অবস্থায় রোগীকে সরানোর চেষ্টা করা ঠিক নয়। স্বাভাবিকভাবেই খিঁচুনি শেষ হওয়ার জন্য সময় দিতে হবে। খিচুনী বন্ধ করার জন্য রোগীকে চেপে ধরা যাবে না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। রোগীর মুখে জোর করে আঙ্গুল বা অন্য কিছু ঢুকানোর চেষ্টা করা যাবে না। রোগীর জিহবায় দাত দিয়ে কামড় লাগলেও খিঁচুনিরত অবস্থায় তা ছাড়ানোর জন্য কোন রকমের জোরাজুরি করা উচিৎ নয়।
মৃগী রোগীদেরকে অনেক নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। খিঁচুনি উঠলে তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে হবে। সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি ভেষজ ওষুধ ও চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমেও খিচুনী রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে এ ধরণের রোগীকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
মৃগী বা খিঁচুনি সমস্যায় করণীয় নিয়ে WikiReZon টীম এই অ্যাপটি ডেভেলপ করেছে।
WikiReZon চ্যানেলের লিংকঃ https://play.google.com/store/apps/developer?id=WikiReZon
এই অ্যাপের তথ্যসমূহ ডা. মো. নাজমুল হাসান- এর লেখা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক বেশ কিছু সাইট থেকে সংকলিত হয়েছে। প্রয়োজনে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
আমি কামরুল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 19 টি টিউন ও 7 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 51 টিউনারকে ফলো করি।