বস্তুত আমাদের দেশে প্রায় সকলেরই একটু আধটু হ্যাকিং শেখার আগ্রহ কিংবা কদাচিৎ নেশা আছে; তার মূল কারন হলো হ্যাকিং জিনিসটাতে একটা গ্ল্যামার গ্ল্যামার ভাব আছে আর হ্যাকারের আছে হ্যাডামিক(হ্যাডাম+ইক) শোঅফ তাই হ্যাকিং এর বিস্তার ইমোশন হতে হরমোন অবধি!
আমাদের বাবা-মা আমারা ছোট থাকতেই আমাদের ভেতর ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ইনজেকশনের মতোন পুশ করে ভরে দেন(তাদের ধারনা এটাই একমাত্র ভদ্র সামাজিক সুপ্রতিষ্ঠ একটা লাইফ স্ট্যাইল) তবে কয়জন ভবিষ্যতে সত্যিই ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ক্যারিয়ার গড়তে পারে সেটা হাতে গোনা নগণ্য সংখ্যা মাত্র; সেখানে "আমি বড় হয়ে একজন হ্যাকার হবো" কথাটা যতোটা না হাস্যকর তারচেয়েও বেশী রকমের দুঃশ্চিন্তার কারন বটে!
তারপরো ফেসবুকের কল্যানেই হউক আর ইন্টারনেটের ইগোতেই হউক আমাদের ভেতর জাগ্রত এই হ্যাকিং শেখার ইচ্ছাতেই কেউ কেউ কোডিং শিখতে গিয়ে ইরোর স্টেপে ক্লান্ত হয়ে ক্ষ্যান্ত দেন আর কেউবা ফিশিং আর কিলগিং জেনেই লীট সেজে ল্যাজ নাড়ায়(কথাটা শুনতে বিব্রতকর লাগলেও খুউব একটা মিথ্যা তো নয়)। একজন প্রকৃত হ্যাকার আর একজন ফেইক হ্যাকার এর মাঝের পার্থক্য হলো একজন প্রকৃত হ্যাকার কখনোই "আমি একজন হ্যাকার" কথাটা মুখে স্বীকার করেন না(অন্তত নিজের ঢোল নিজে অন্তত পেটায় না)।
আসুন এবার ব্যক্তিগত এমন মানসিকতা আর হীনতা রেখে দেশের দিকে তাকাই.
আমাদের দেশটা ডিজিটাল হওয়ার সাথে সাথে সাইবার ক্রাইম আর সাইবার ক্রিমিনালের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে যেটা খুউবই ভালো লক্ষন; কেননা এটা তো অন্তত স্বীকার করবেন যে একজন সাইবার ক্রিমিনালের আর যাই হউক অন্তত মাথাতে মেরিট আছে তবে প্রবলেমটা হলো সেই মেরিট তারা ক্রাইম করার কাজে লাগাচ্ছে। আমাদের দেশে একজন হ্যাকার এর ক্রাইম করার পিছেও আরো একটা সোস্যাল ক্রাইম আছে আর তা হলো "অভাব" কেননা "অভাবে স্বভাব নষ্ট' কথাটা বইয়ের পাতাতে নয় বরং বাস্তব জীবনেও আমরা দেখতে পায়(তাইবলে আমি এমন ক্রিমিনালদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে বলছি না ; আমি শুধু সমস্যার আসল রূপটা তুলে ধরছি মাত্র)।
আমাদের দেশে একজন হ্যাকার এর ইনকামের জন্য ৩টি রাস্তা খোলা আছে; (১) সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট হিসেবে জব করা (২) অন্যকে হ্যাকিং শিখিয়ে টাকা ইনকাম করা (৩) সাইবার ক্রাইম করা। যদিও সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট হওয়াটাই সবচেয়ে সম্মান আর অপেক্ষাকৃত স্বাধীন একটা জব তবুও চাকুরীর বাজারে "জ্বী স্যার-ইয়েস স্যার" কথাতে ইন্টারভিউতে কয়জনের কপাল খুলে সেটা কপালে চিন্তার ভাজ ফেলায়।
আবার হ্যাকিং শিখিয়ে টাকা ইনকাম করাটা "পাপ" না হলেও তাতে যে স্বদিগ্ধ ফ্রডিং হয় সেটাও সহজেই অনুমেয় (এটার মূল কারন হলো ভার্নাবিলিটি কেননা হ্যাকিং মানেই ভার্নাবিলিটি বা দূর্বলতা খোঁজা তার হ্যাকার মাস্টার মশাই আপনা হ্যাকিং আগ্রহ টাকে দূর্বলতা ভেবে উল্টো আপনার পকেট হ্যাক করেন)।
তাহলে শেষ পথ রইলো "ক্রাইম" করা; তাই প্রফোশবালি হ্যাকিং শিখতে চাইলে সেটা সত্যিই চিন্তার কারন কেননা বাংলাদেশে হ্যাকিং এর জন্য না তো সরকারী তেমন পৃষ্ঠপোষণ পাবেন আবার না তো প্রাইভেটলি কেউ আপনার পিছে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে স্পন্সরশীপ করবেন(তবে শখের বশে শিখতে চাওয়া ভিন্ন কথা আর এটাও মাথায় রাখা উচিত যে শখের খাদ্যে মন ভরে কিন্তু পেট নয়)।
সোজাসাপ্টা ভাষায় আমাদের দেশটাকে সত্যিকার অর্থেই ডিজিটালাইজেশন করতে হলে আইসিটি সেক্টরে "হ্যাকার পোষা" এর মতোন মনোভব আর যোগ্যতা তৈরী করতে হবে; কেননা আপনি যখন একজন হ্যাকারকে পরিপূর্ণ যোগ্যতার বিচারে একটি কর্মক্ষেত্র দিতে পারবেন তখনই ক্রাইম আর ক্রিমিনাল দুটোই কমে আসবে। এখন আপনি যদি ভাবেন "হ্যাকার স্পন্সর" করে দেশের কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করার দায় কেন তাহলে এই দেশটা "ডিজিটাল" নয় বরং "ক্রিটিকাল" হয়ে যাবে যার প্রমান বাংলাদেশে ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা হ্যাকিং এর কলঙ্ক!
হ্যাকিং শিখতে চান?
আমাদের সকলের একটা কমন আবদার হলো "হ্যাকিং শেখান" তাই এই বিষয়টা নিয়ে স্রেফ এক বাক্যে বলি "হ্যাকিং কাউকে শেখানো সম্ভব নয় কেননা তা নিজে শিখে নিতে হয়" আর শিক্ষার স্কুল পুরো এই জগতটাই। আপনি যদি বাজারে আলু কিনতে গিয়ে দোকানীকে কনভিন্স করে দশ টাকার জিনিস আট টাকাতে কিনতে পারেন তবে সেটাই হলো রিয়েল হ্যাকিং(ভার্চুয়াল হ্যাকিং আর ভাবটাকে বাড়িয়ে দাম্ভিক বানায় আর রিয়েল হ্যাকিং আপনাকে নম্র এবং বিনয়ী বানায়)।
হ্যাকিং শিখতে কি কি লাগে?
মূলত "হ্যাকিং শিখতে একটা ফ্রেশ মন লাগে" যদিও কথাটা শুনতে হয়তো ননসেন্স কবি সাহিত্যিকের মতোন শোনায় তবে আশাকরি.
হ্যাকিং জগতে ব্রুটফোর্স-ডিকশোনারী এট্যাক খুবই জনপ্রিয় একটা হ্যাকিং সিস্টেম যেখানে কোন সার্ভার কিংবা সিস্টেমে প্রবেশ করার জন্য সম্ভাব্য সর্বোচ্চ উপায় অবলম্বন করা হয়(যেমনি পাসওয়ার্ড কিংবা সিক্রেট কোড) যাতে প্রথম সারিতে সেইসব ওয়ার্ড থাকে যা ভিক্টিমের ন্যাচারাল লাইফে ইউজিয়াল(যেমনি নাম/বার্থে ডে/ মোবাইল নাম্বার কিংবা প্রিয়জনের নাম বা নামের অংশ ইত্যাদি) তাই এই ওয়ার্ড সিলেকশন কোন কম্পিউটার নয় বরং আপনার মাথা হতেই বের করতে হয় সুতরাং মাথাতে মেরিট আর মনে ইচ্ছা থাকলে হ্যাকিং শেখা সম্ভব।
বাংলাদেশের হ্যাকার এর অবস্থান:
যদিও বাংলাদেশে হ্যাকিং এর এমন চরম অবনতি তবুও বিশ্বে বাংলাদেশী হ্যাকারদের অবস্থান ঈর্ষনীয় যা জোন -এইচ'তে বাংলাদেশী হ্যাকারদের হুংকার কাপিয়ে দেয়!
তবে এখানে আরেকটা বড় প্রবলেম (যদিও ক্রাইম বলা চলে না) তবুও তা নৈতিক হীনতা হলো "হিংসা" কেননা বাংলাদেশী নামী কিংবা বেনামী হ্যাকার গ্রুপের মাঝে চলে এক নীরব যুদ্ধ(এটাকে প্রতিযোগীতা বলা চলে না) যার মূল কারন হলো "অন্যের ভালো দেখতে না পারার নিয়ত মানসিকতা"।
উপায়: যেহেতু আমি আমার আর্টিকেলে ক্রাইম এবং এর পিছের কাহিনীটা যতোটুকু জানি তা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি তাই সলুউশান দেবার দায় কিংবা দায়িত্ব "এজ এ রাইটার" হিসেবে আমার ওপরই বর্তায়(তবে সেই সমাধানটা প্রয়োগ করার দায়িত্ব স্বয়ং প্রশাসনের)। আমরা যদি প্রযুক্তি এবং টেকনোলজিতে এগিয়ে যেতে চাই আর তাতে কম্পিউটার যদি একটা অবশ্যই প্রয়োজনীয় ডিভাইস হয় তবে হ্যাকার পোষা বা প্রতিপালন করা সরকারের জন্য একটা সমাজিক দায়িত্ব। তবে শুধু সরকার নয় বরং আমাদের সুন্দর একটা মন আর সুশোভন মানসিকতায় হ্যাকিং শিখতে সহায়ক এবং সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। এছাড়াও হ্যাকারদের মাঝে পারস্পরিক সৌজন্যতা এবং উদারতায় পারে পরিচ্ছন্ন একটা সাইবার জগত সৃষ্টি করতে।
এমনটা আশা করা ভুল যে একদিনেরই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে তবে আশা রইলো একদিন ঠিকই সমাজ সংস্কারের মতোন সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে সরকার-প্রসাশন সর্বোপরি আমরা প্রত্যকেই সচেতন হতে পারবো, শুভকামনা রইলো।
ফেসবুকে আমার একাউন্ট→Srabon Ahmed Soykot
আমি শ্রাবণ আহমেদ সৈকত ফিলিপস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
হ্যাকিং শিকতে চাই । হেল্প প্লিজ
I want to Learn Hacking
My email: [email protected]