বি.দ্রঃ এই টিউনটি শিক্ষামূলক উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা। এই লেখা দ্বারা কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হলে আমি বা টেকটিউনস দায়ী থাকব না।
কেমন আছেন সবাই? ওয়াইফাই হ্যাকিং সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে আমি আবারো হাজির হলাম। এর আগের টিউনে আমি বলেছিলাম ওয়াইফাই হ্যাক করতে কি কি লাগবে? অর্থাৎ কি কি হার্ডওয়্যার দরকার হবে। এবং সফটওয়্যার সম্পর্কেও কিছু কথা বলেছিলাম। যারা আগের টিউনটি পড়েননি তারা এখান থেকে পরে আসুন।
আজকের টিউন আমি আমি বলব ওয়াইফাই হ্যাকিং এর পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে। অর্থাৎ কিভাবে আপনি ওয়াইফাই হ্যাক করবেন। এবং কোন ধরনের ওয়াইফাই এর সিকিউরিটি ভাঙ্গার জন্য কি করতে হবে তাও জানতে পারবেন এই টিউনে।
টেকটিউনসএ অনেক ভাল ভাল ওয়াইফাই হ্যাকিং নিয়ে টিউন আছে। কিন্তু সেইগুলোতে ওয়াইফাই হ্যাকিং এর পদ্ধতি দেখানো হলেই কিভাবে কি কাজ করে তা বলা হয়নি। তাই অই নির্দিষ্ট পদ্ধতি দিয়ে আপনি সব ধরনের ওয়াইফাই এর সিকিউরিটি ভাঙ্গতে তে পারবেন না। এর জন্য বিস্তর গবেষণা দরকার। এছাড়াও ওয়াইফাই হ্যাকিং নিয়ে বিভিন্ন জন বিভিন্ন জায়গায় হেল্প চেয়ে থাকেন। তাদের জন্যই আজকের এই টিউন।
এই টিউনে আমি কোন টিউটোরিয়াল দেখাব না। কারণ এরকম অসংখ্য টিউটোরিয়াল টেকটিউনসএ আছে। এবং সেগুলো যথেষ্ট ভাল। তারপরেও যদি ওয়াইফাই হ্যাক করতে সফল না হন তাহলে গুগলে ঘাঁটাঘাঁটি করুন। নিজের ওয়াইফাই এর উপর পরীক্ষা করতে থাকুন। এই টিউনে আমি আপনাদের ওয়াইফাই হ্যাকিং এর ধাপগুলো বলব। অর্থাৎ ওয়াইফাই হ্যাক করতে কি কি কৌশল অবলম্বন করতে হয় তা।
যারা ওয়াইফাই হ্যাক করতে চায় তাদের সবার প্রথম কথা হল কোন অপারেটিং সিস্টেম দিয়ে হ্যাক করা সহজ? আসলে সব অপারেটিং সিস্টেম দিয়েই ওয়াইফাই হ্যাক করা সম্ভব। কিন্তু উইন্ডোজ বা আন্ড্রয়েডের জন্য সেরকম ভাল টুল নেই। তবে লিনাক্স এর জন্য অনেক ভাল ভাল এবং শক্তিশালী ওয়াইফাই ক্র্যাকিং টুল আছে। তাই আপনাদের লিনাক্স ব্যবহার করতে হবে। অনেকেই লিনাক্স মানেই কালি লিনাক্স মনে করেন। আসলে তা না। আপনি যেকোনো লিনাক্স ডিস্ট্রো দিয়েই ওয়াইফাই হ্যাক করতে পারবেন।
ওয়াইফাই হ্যাকিং এর জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যাবহৃত হয় “Aircrack-ng”, এটি একটি প্যাকেজ। অর্থাৎ এর ভিতরে অনেক ধরনের টুল আছে। সেগুলো সম্পর্কে আপনাদের জানতে হবে। এই টুলটির নাম লিখে সার্চ দিলেই এই টুল এর কাজগুলো পেয়ে যাবেন। তবে আমি এই নিয়ে আরেকটি টিউন লিখব। কারণ এখানে এই টুলটি সম্পর্কে লিখতে গেলে টিউনটি অনেক বেশি বড় হয়ে যাবে। তবে “Aircrack-ng” ব্যবহার করার জন্য এই টুলগুলো সাপোর্ট করে এরকম একটি ওয়ারলেস কার্ড কিনতে হবে। কোন ধরনের কার্ড কিনবেন তা জানতে এই লিঙ্ক থেকে টিউনটি পরে আসুন।
Wep এর ফুল ফর্ম Wireless Equivalent Privacy, এটা ছিল ওয়াইফাই এর জন্য ব্যাবহৃত সর্ব প্রথম সিকিউরিটি ব্যাবস্থা। তবে এখন এই Wep এর সিকিউরিটি খুব সহজেই ভাঙ্গা সম্ভব। তবে এই ধরনের সিকিউরিটি ব্যাবস্থা এখন খুব ওয়াইফাই তেই ব্যবহার করা হয়। যদিও প্রায় সব ওয়াইফাইতে এই অপশনটি থাকে। তবে সিকিউরিটি ততোটা শক্তিশালী নয় বলে এটা এখন আর কেউ তেমন একটা ব্যবহার করে না।
যদি আপনি ভাগ্যের জোরে কোন wep ওয়ারলেস নেটওয়ার্ক পেয়ে জান তবে আপনাকে এটা থেকে অনেকগুলো প্যাকেট ক্যাপচার করতে হবে। এবং যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ প্যাকেট ক্যাপচার করতে পারেন তাহলে আপনি মাত্র ১০ মিনিট এর মধ্যেই এই ওয়াইফাই হ্যাক করে ফেলতে পারবেন। আর আপনার কম্পিউটার শক্তিশালী হলে আরো কম সময়ে এই ওয়াইফাই হ্যাক করা সম্ভব। এই হ্যাকিং টি Aircrack-ng দিয়ে করা হয়।
আপনি যদি দেখতে চান জে ওয়াইফাই নেটওয়ার্কটির সিকিউরিটি wep কিনা। তাহলে কম্পিউটার দিয়ে ওয়াইফাই অপশনটিতে গিয়ে ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক এর উপর মাউস কার্সরটি রাখুন। যদি ওয়াইফাই ওয়াইফাই wep হয় তাহলে নিচে wep লেখা দেখবেন।
প্রায় সব ওয়াইফাই তেই wps সিকিউরিটি সিস্টেম অন করা থাকে। এটি হল শুধু মাত্র ৮ সংখ্যার একটি কোড। তাই পাসওয়ার্ডটি অবশ্যই ০০০০০০০০ থেকে ৯৯৯৯৯৯৯৯ এর মধ্যে হবে। এবং আপনার কম্পিউটার যদি মোটামুটি শক্তিশালী হয় তাহলে আপনার কম্পিউটার ২-৩ দিন এর মধ্যেই এই পাসওয়ার্ড জেনারেট করে ওয়াইফাই তে ব্রুট ফোর্স অ্যাটাক করতে পারবে। এই ধরনের অ্যাটাক করার জন্য অনেক ভাল ভাল টুল আছে লিনাক্স এর জন্য। যেমন “Reaver”
নতুন সব ওয়ারলেস রাউটার এখন WPA2 সিকিউরিটি ব্যবহার করে। এবং যদি আপনি এই সিকিউরিটি বিশিষ্ট কোণ ওয়াইফাই হ্যাক করতে চান তাহলে আপনাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। কারণ যখন কোন রাউটার WPA 2 ব্যবহার করে তখন যদি কোন ইউজার ওয়াইফাই এর সাথে কানেক্ট হতে চায় তবে ওয়াইফাই ঐ ইউজার এর ডিভাইস এর সাথে হ্যান্ডশেক করে এবং আগে থেকেই শেয়ার করা এনক্রিপটেড হ্যাঁস পাঠায়। এবং আপনি যদি কোন ভাবে এই হ্যান্ডশেক ক্যাপচার করতে পারেন তাহলে হয়ত পাসওয়ার্ড হ্যাক করতে পারবেন। কিন্তু পাসওয়ার্ড যদি অনেক কঠিন হয়। অর্থাৎ পাসওয়ার্ড এর ভিতরে মিক্স করা অক্ষর, সংখ্যা এবং চিহ্ন থাকে, তাহলে পাসওয়ার্ড ভাঙ্গার চিন্তা না করাই ভাল।
তারপরেও যদি পাসওয়ার্ড দুর্বল হয় তাহলে ঐ হ্যান্ডশেক এর কারণে যে হ্যাঁস তা আপনি ক্যাপচার করেছিলেন তাতে ব্রুট ফোর্স করে হয়ত পাসওয়ার্ড হ্যাক করতে পারবেন।
যেকোনো ওয়াইফাই হ্যাক করার জন্য এই পদ্ধতি সবচেয়ে কার্যকর। এবং অনেকক্ষেত্রেই এই অ্যাটাক দিয়ে কাজ হয়। এই পদ্ধতিতে আমরা প্রথমে যেই ওয়াইফাই হ্যাক করতে চাই সেই ওয়াইফাই এর সব ইউজার কে জোড় করে ডিসকানেক্ট করে দিব। এবং সাথে সাথে ঐ একি নাম দিয়ে আরেকটি ওপেন ওয়াইফাই বা হটস্পট বানাব। এবং আসল রাউটার এর ইউজাররা নিজের রাউটার মনে করে কানেক্ট হবে। এবং কানেক্ট হবার সাথে সাথেই ইউজার কে একটি পেজ এ নিজে যাওয়া হবে এবং বলা হবে সিকিউরিটির সমস্যা কারণে তাদের ওয়াইফাই এর পাসওয়ার্ড দিতে। এবং যদি ইউজার পাসওয়ার্ড দিয়ে দেয় তাহলে খেলা শেষ।
আপনি পাসওয়ার্ড পেয়ে যাবেন। এই পদ্ধতিতে প্রায় সময় হ্যাক করার চেষ্টা করা হয়। এবং এই কাজটি অটোমেটিক ভাবে করার জন্য একটি স্ক্রিপ্ট আছে তার নাম “Airsnarf” এটি দিয়ে কাজটি করতে পারবেন। এ সম্পর্কে অনেক টিউটোরিয়াল আছে ইন্টারনেটে। নিজ দায়িত্বে দেখে নিবেন।
আবার বলছি এই টিউনের সব কিছুর শুধু জানার জন্য। এই তথ্য ব্যবহার করে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো দায়-দায়িত্ব আপনার।
আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন। এবং টিউনটি কেমন লাগল তা জানাবেন।
আমি আশরাফুল ফিরোজ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 77 টি টিউন ও 35 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।