মোবাইল অপারেটর ও বায়োমেট্রিক পদ্ধতির পাচকাহন
আচ্ছা বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটর গুলোর প্রশ্নের দিকে প্রথমে আসি, বাংলাদেশে মূলত আছে গ্রামীনফোন, বাংলালিংক, এয়ারটেল, রবি, সিটিসেল ও সরকারী মালিকানাধীন টেলিটক। টেলিটক বাদে বাকি অপারেটর গুলো কে একটু আণুবীক্ষণিক যন্ত্রের নিচে এসে পরীক্ষা করি
সবথেকে বেশি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে গ্রামীনফোন ও এয়ারটেল। গ্রামীনফোন দাবি করে তারা দেশের সব থেকে জনপ্রিয় অপারেটর ও তাদের গ্রাহক সংখ্যা ১০ কোটি। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মাদ ইউনুস ও ইকবাল কাদির। বর্তমানে তাদের বার্ষিক লাভের পরিমান ২০১৪ সালে ছিল ১০২ বিলিয়ন (টাকা) ২০১৩ তে ছিল প্রায় ৯৭ বিলিয়ন। ২০১৫ সালে থ্রিজি সার্ভিস জনপ্রিয় হবার পরে প্রায় ১২০ বিলিয়ন (টাকা)। অর্থাৎ থ্রিজি চালু হবার পরে নেট লাভ ২০১৪ থেকে প্রায় ১৫ বিলিয়ন টাকা বৃদ্ধি পায়। গ্রামীনফোন এর CEO হলে রাজিব সেঠি। আর এর অভিভাবক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে Telenor যা হচ্ছে একটি নরওয়ে এর কোম্পানি ।
যাদের ২০১৫ এর হিসেবে সম্পদ এর পরিমান ২০৫ বিলিয়ন ডলার। এই টেলিনর গ্রুপ পাকিস্তানেও মোবাইল অপারেটর সেবা প্রদান করে। গ্রামীনফোন প্রথম থেকেই টেলিনর এর সাথে ছিলনা। ২০০১ সালে চুক্তি বদ্ধ হবার পরে ২০০৬ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মপ্রকাশ করে ও তাদের পুরনো লোগো পরিবর্তন করে।
গ্রামীনফোন এর পরে বেশ অনেকগুলো হিসেবেই এগিয়ে আছে এয়ারটেল বাংলাদেশ। এয়ারটেল মূলত পূর্বের ওয়ারিদ টেলিকম এর মালিকানা নেয়, ওয়ারিদ টেল পাকিস্তানে বাবশা করে, আর ওয়ারিদ টেল এর মুল মালিকানা কাতারে। যেখানে মালিকানা ভাগাভাগি হয়েছে পেট্রো ডলার এর ঝলকানিতে। এয়ারটেল এরর সি এই ও প্রশান্ত দাস শর্মা। চলমান আয় প্রায় ২২ বিলিয়ন রুপি। মোত সম্পদ ৮৫৭ বিলিয়ন রুপি (১৩ বিলিয়ন ডলার)এয়ারটেল এর সকল অর্থনৈতিক হিসাব রুপিতে। তারা মূলত দক্ষিন এশিয়াতে বাণিজ্য করে, আছাড়া আফ্রিকা ও কিছু দ্বীপ রাষ্ট্রে তাদের বাণিজ্য। ভারত, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা তে, তারা নেপাল ও ভুটানে বাণিজ্য বিস্তার করার চেষ্টা করছে ,
এছাড়া আফ্রিকাল দেশ কঙ্গো, ঘানা, উগান্ডা, কেনিয়া, সিয়েরালিওন বা জাম্বিয়ার মত দেশ গুলোতে এয়ারটেল মুনাফা লাভ করে। আর বাণিজ্য এর প্রসার করে এই এশিয়ার দেশগুলোতে,সহজভাবে দেখাই যায়, এয়ারটেল ভারতীয় প্রতিষ্ঠান তারা তাদের বাণিজ্য করার মাধ্যম হল থ্রিজি ও ফোরজি ইন্টারনেট, একে কেন্দ্র করে তরুন প্রজন্মের প্রতি একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে তারা বাণিজ্য পরিচালনা করে। এয়ারটেল ব্যবহার কারির শতকরা ৭২ শতাংশ এর বয়স ১৬-৩০।
এবার যদি আসি রবি এর দিকে, রবি এর মালিকানা মূলত দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছে মালয়সিয়ান এক্সকিয়াটা গ্রুপ ও জাপানের এনটিটি ডোকোমো। ডকোম আবার সরাসরি সংযুক্ত হচ্ছে নিপ্পন টেকনোলজিস এর সাথে যাদের সরাসরি মালিকানা জাপান সরকারের। রবির সি ই ও হচ্ছেন সিপন ওয়েরাসিঙ্ঘে, সি টি ও হচ্ছেন এ কে এম মোরশেদ। এদের মুল লাগ ক্ষতির হিসেব হয় অভিভাবক এক্সিয়াটায়।। যদিও ২০১৩-১৪ সালে এক্সিয়াটাপ্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার এর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এক্সিয়াটা কোম্পানি ১২ টি আলাদা ব্র্যান্ড এর নামে এশিয়ার বিভিন্ন দেশ এ তাদের কাজ কর্ম পরিচালনা করে।
এখন আসি বাংলালিংক এর দিকে, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলালিংক দেশের বৃহৎ মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। ২০১০ সালের পর থেকে পদ্ধতি পরিবর্তন এর কারনে ২০১৫ পর্যন্ত তাদের সার্বিক লাভের পরিমান প্রায় ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। বর্তমান সি ই ও হচ্ছে এরিক ইয়াস। এর মালিক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে গ্লোবাল টেলিকম। গ্লোবাল টেলিকম মূলত মিশরের মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। বিলিয়ন বিলিয়ন পেট্রো ডলার এর উপর প্রতিষ্ঠিতএই কোম্পানি এর চেয়ারম্যান আহমেদ আবু দোমা। তার গত ২০ বছরের বাবশা এর হিসেব নিতে গেলে দেখা যাবে সাদা কালোর মিশ্রণে তিনি গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। হালের ডোনাল্ড ট্রাম্প সাহেবের সাথে তার সখ্যতার প্রমান পাওয়া যায়।
আর এর পরেই বলা যায় সরকারী মালিকানাধীন টেলিটক আর সিটিসেল এর কথায়।
আচ্ছা এবার একটু থামি। আসল যায়গায় আসি। বাংলাদেশে এর একটি বাদে সকল টেলিকম বিদেশী মালিকানাধীন। দেখা যায় এই মালিকানা ভারত, জাপান , মালয়সিয়া, কাতার, নরওয়ে, ডেনমার্ক, মিশর এর কাছে এদের শেয়ার আছে বিভিন্ন দেশের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে, এইসকল প্রতিষ্ঠান এর আসল উদ্দেশ্য হল মুনাফা লাভ, আপনারা তো জানেনেই টকটাইম, ফ্রি ইন্টারনেট যত অফার।।ইত্যাদি দিয়ে তারা ক্রেতাকে আকৃষ্ট করে।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তারা যে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করবে, সেটা যদি তারা বলেও কোথাও সংগ্রহ করছে না ... কিন্তু পরে আবার তা মেলানোর কথা বলছে। আচ্ছা আমি যদি কোন ইন্টিজার ডেটা মেমোরি তে জমাই না রাখি তাহলে পরবর্তীতে কুয়েরি ডেটাবেইজের জন্য ডেটা পাব কোথা থেকে ??? আকাশ থেকে কি তা আসবে ?
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে তারা যে আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করবে, সেটা যদি তারা বলেও কোথাও সংগ্রহ করছে না ... কিন্তু পরে আবার তা মেলানোর কথা বলছে। আচ্ছা আমি যদি কোন ইন্টিজার ডেটা মেমোরি তে জমাই না রাখি তাহলে পরবর্তীতে কুয়েরি ডেটাবেইজের জন্য ডেটা পাব কোথা থেকে ??? আকাশ থেকে কি তা আসবে ?
১। ধরুন তারা সিকিউরিটি লেয়ার তৈরি করা কর্পোরেট ডেটাবেইজের আড়ালে সব লুকিয়ে রাখল, তখন যদি কোন Malware বা Rootkit এর সাহায্যে সিস্টেম ব্যাকডোর করে সকল ডেটাবেইজ ডাউনলোড করে রাখে ও পরে তার জন্য দাবি করে বিশাল অর্থমূল্য, বা তারা বিক্রি করে দিল কোন দেশের গোয়েন্দাদের কাছে। তখন তাদের কি কিছু আর বলার থাকবে ? মাঝে আশঙ্কায় পড়বে কোটি লোকের জীবন।
২। সহজ একটা উদাহরণ দেই, ধরুন আপনি আপনার জমি অমুক লোকের কাছে বিক্রি করবেন না।। হয়তো এটা হতে পারে তারা আপনার আঙুলের ছাপ নকল করে হাতিয়ে নিল আপনার জমি। বা হয়তো হাতিয়ে নিল না, আপনার মালিকানাধীন জমি নিয়ে যাবে আইন আদালতে, তা বছরের পর বছর ঝুলে থাকবে কাঠ গড়ায়।
৩। ধরুন কোন হত্যা মামলায় অমুক স্থানে আপনার আঙুলের ছাপ পাওয়া গেল অথচ যে মারা গেছে আপনি তাকে দেখেন ও নি ... তাহলে তখন কি হবে ???
৪। আঙুলের ছাপ এর প্রিন্ট এর একটি ডিজিটাল কপি এর সাথে আরেকটি ডিজিটাল কপি হুবুহু মিলে যাবে, কিন্তু আপনি যখন আঙুলের ছাপ দিবেন সেটার সাথে আরেকটা ছাপের কিছুটা হলেও অমিল থাকবে তাহলে বুঝতেই পারছেন, আপনি মারা যাবার পর ও আপনার নামে পেনশনের টাকা আপনার নামে তোলা হবে !!!
চলবে...
একটু বৃত্তের বাইরে আসিঃ
২০১৪ সালের শেষের দিকে এসে সাইবারট্রেন্ডজ একটি উদ্যোগ নিয়েছিল, ইনফরমেশন সিকিউরিটি রিসার্চ এর একটা টিম স্কোয়াড জিরো তৈরি করবে। সেখানে বিপুল সাড়া আমরা পেয়েছি, এবং আমাদের কাছে মেইলে আবেদন থেকে বেছে বেছে অনেকজন নিয়ে আমরা তৈরি করেছিলাম সেই দলটি। সেটি আসলে সেখানো হবে এরকম কোন উদ্দেশ্য থেকে করা হয়নি বরং করা হয়েছিল রিসার্চ আর এনালাইজ করার উদ্দেশে, সেটি থেকে সাইবারট্রেন্ডজ এর এ আসার কোন পদ্ধতি ছিলনা, সেটি অনেকটা কক্টেইল স্কোয়াড এর মত ছিল।
আমরা সবসময় বলেছি, আমরা বাংলাদেশে সিকিউরটি প্ল্যাটফর্ম করতে চাই, আমাদের লক্ষ্য ও তার পরিধি অক্ষ থেকে অম্বরে। তাই এবার আমরা তৈরি করব,সাইবারট্রেন্ডজ এর নিজস্ব টিম। বিভিন্ন বিভাগে কাজ করার জন্য। আমরা বলছি না আপনাকে সিকিউরিটি নিয়ে এক্সপার্ট হতে হবে, এবার আমরা অন্যরকম এক পরিপ্রেক্ষিতে কর্মী সংগ্রহ করব।
ট্রেনিং জোন যেমন থাকবে তেমনি রিসার্চ করা হবে এবং বেশ কয়েকটা জায়গায় আলাদা আলাদা ভাবে কাজ করা হবে। এবং আরেকটা জিনিশ আমরা লক্ষ্য করি বিদেশ এ বা অনেক দূর থেকে কাজ করতে চান, এবার আমরা চাই এমন কিছু মানুষকে যারা নিয়মিত দেখা করতে পারবেন, ও প্রজেক্ট ভিত্তিতে কাজ করতে আগ্রহী। তাহলেই ভাল আইডিয়া আর প্ল্যান নিয়ে কাজ করা যাবে।
যারা সাইবারট্রেন্ডজ এ যোগ দিতে আগ্রহী
http://cybertrendzinc.com/startup.html
রাশেদ হাসানঃ (http://www.facebook.com/II.45LAN.II)
তথ্য নিরাপত্তা বিশ্লেষক , CyberTrendz Incorporated
আল্লাহ হাফেয।
আমি আলব্যাট আইন্সটাইন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 18 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।