হ্যাকিং কথাটা শুনতেই সবার চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে। কী না একটা মজার জিনিস এই হ্যাকিং। যতটা না মজার, তার থেকে বেশী হল দক্ষতার বিষয়।
মুলত যেসব ডিভাইসে কম্পিউটার চিপ থাকে সেসকল ডিভাইসই হ্যাক করা সম্ভব। আজকের এই দিনে মিলিয়ন মিলিয়ন কম্পিউটার অনলাইনের সাথে যুক্ত এবং তাদের ভেতর অধিকাংশ্ই টো্রজান বা ম্যালওয়্যার এ আক্রান্ত।
হ্যাকিং এর আসলে কোন নির্দিষ্ট মেথড নেই। আর কোন ডিভাইসই সম্পূর্ণ নিরাপদ না। বিভিন্ন উপায়ে যেকোন সিস্টেম হ্যাক করা যেতে পারে। যেকোন সিস্টেম তৈরী করা হয় সর্ব্বোচ্চ সিকিউরিটির কথা মাথায় রেখে এবং অতীতের বিভিন্ন কলাকৌশল থেকে এটাকে প্রোটেক্ট করে। আর হ্যাকারদের কাজ হল নতুন নতুন সব দূর্বলতা খুঁজে বের করা এবং সিস্টেম হ্যাক করা।
নীচে রিসেন্টলি কিছু বছরের ভেতর যেসব হ্যাকিং সবার নজর কেড়েছে সেই হ্যাকিং গুলো নিয়ে আরোচনা করা হয়েছে। আশা করি এগুলো থেকে অনেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে প্রোটেক্ট করতে পারবে।
এক্সট্রীম হ্যাক ১: এটিএম হ্যাকিং
সবথেকে ভয়াবহ হ্যাকিং হল ATM মেশিন বা কার্ড হ্যাকিং। এই ATM মেশিনগুলো মূলত প্রচলিত অপারেটিং সিস্টেমগুলো উপরই রান করানো থাকে। তাই, এটা হ্যাক করা খুব একটা কঠিন কোন কাজ না। আর ATM মেশিনে জাভা এর কিছু ইমপ্লিমেন্টেশন থাকে যেটা হল বিশ্বের সবথেকে বেশী হ্যাক হয়ে থাকা সফটওয়্যার। কিন্তু ATM কখনওই প্যাচ করা সম্ভব না।
ATM যে অপারেটিং সিস্টেমমে রান করানো থাকে সেগুলো খুব সহজেই হ্যাক করা যায়, যেমন মাইক্রোসফট উইন্ডোজ। আর ব্যাংক থেকে ডিফল্ট পাসওয়ার্ড ও অন্যান্য ইনফরমেশন দিলেও তারা এই ইনফরমেশনগুলো ইউজারদেরকে চেঞ্জ করার জন্য বলে থাকে। কিন্তু খুব সল্প সংখ্যকই এই কাজটা করে থাকেন। এইসব কারণে ATM খুবই ফ্রিকোয়েন্টলি হ্যাক কয়ে থাকে।
অসাধারণ একজন ATM হ্যাকার ছিলেন যার নাম Barnaby Jack, তিনি ২০১৩ মালে মারা যান। তিনি একটা সিকিউরিটি কনফারেন্সে ২ টা এটিএম এ কয়েক মিনিটের ভেতর প্রচুর ফেক ক্যাশ ইন করে সবাইকে অবাক করে দেন। তিনি এজন্য অনেক ট্রিকস ইউজ করেছিলেন, কিন্তু তার মেইন পদ্ধতি ছিল এটিএম এর ইউএসবি পোর্টে একটা ম্যালওয়ার আক্রান্ত ডিভাইস ইনপুট করে হ্যাক করা। আর এটিএম এর ইউএসবি পোর্টে তেমন কোন সিকিউরিটি থাকে না। জ্যাক এর সফটওয়্যারটা ATM কে একটা নেটওয়ার্কের সাথে কানেক্ট করে দিত এবং তারপর সেই ATM এ পুরো একসেস নিয়ে নেওয়া যেত। তারপর তিনি কিছু কমান্ড এর সাহায্যে এটাতে ফেক ক্যাশ ইন করতেন।
এক্সট্রীম হ্যাক ২: মেডিক্যাল ডিভাইস হ্যাকিং
জ্যাক এর ATM হ্যাকিং মেথড জানাজানি হবার পর অথরিটি থেকে এর বিরুদ্ধে যথেষ্ঠ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। জ্যাক তন ATM হ্যাকিং ছেড়ে মেডিকেল ডিভাইস হ্যাকের দিকে ঝুকে পড়েন। তার কাজ ছিল রিমোটলি পেসমেকার রোগীদের আনঅথরাইসড ও মারাত্মক শক দেওয়া ও ডায়াবেটিকস রোগীদেরকে রিমোটলি ইনসুলিন পুশ করা।
সব মেডিক্যেল ডিভাইসই ১০ বা তারও বেশী বছর টেষ্টিং এর পর ইউজ করা হয়। এর মানে দাড়ায় যে এই দীর্ঘ সময়ের ভেতর এই ডিভাইস প্যাচ করাটাও হ্যাকারদের পক্ষে খুবই সহজ।
আর রিসেন্টলি Wired একটা আর্টিকেল প্রকাশ করে যেটার হেডলাইন ছিল এরকম “how easy it is to hack hospital equipment”। এই ডিভাইসগুলোর পাসওয়ার্ড খুবই হার্ড কোডেড হয়ে থাকে এবং চেঞ্জ করা যায় না।
মেডিকেল ডিভাইসগুলো ইউজ করা খুবই সহজ এবং এই কারণেই এই ডিভাইসগুলো যেকোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মেডিকেল ডিভাইসগুলো এমনভাবে তৈরী করা যাতে করে সিকিউরিটি সিস্টেম এ বন্ধ হলেও এগুলো চলতে থাকবে। আর এটাই হল সবথেকে বড় ফল্ট। অনেক বড়. জটিল এবং কাষ্টম পাসওয়ার্ডগুলোর কারণে এগুলোর ইউজ অনেক সময়ই কষ্টকর হয়ে পড়ে। আর সেই সাথে এই ডিভাইসগুলোতে যেসব সিগন্যাল আদানপ্রদান করা হয় সেগুলোও এনক্রিপ্টেড ও অথেনটিক থাকে না।
আর এই কারণেই যেসব হ্যাকাররা সঠিক পোর্ট খুঁজে বের করতে পারে তারা মেশিনের ডাটাগুলো রিড ও চেঞ্জ করতে পারে। এবং এটার ফলে ডিভাইসের কার্যক্রমের কোনই ব্যাঘাত ঘটে না। আর সেই কারণেই এটা বোঝা যায় না।
মেডিকেল ডিভাইস হ্যাকিং বিগত কয়েক বছরেই সবার নজরে এসেছে। হোয়াইট হ্যাট হ্যাকাররা একটা পপুলার হ্যাকিং কনফারেন্সে মেডিক্যে ডিভাইস কীভাবে হ্যাক করতে হয় সেটা দেখিয়েছেন এবং FDA এই দূর্বলতা নিয়ে বেশ হইচই শুরু করেছে।
বর্তমানে একজন দক্ষ হ্যাকারের কাছে মেডিকেল ডিভাইস হ্যাক করে একজন মানুষকে মেরে ফেলা কোন ব্যাপারই না, তাই আমাদের সবারই এই সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
এক্সট্রীম হ্যাক ৩: কার্ড স্কিমিং
সবথেকে ভয়ানক হল কার্ড স্কিমার রা। এটা আপনার সব টাকা পয়সার বারোটা যেকোন সময়ে বাজিয়ে দিতে পারে। কার্ড হ্যাক করা খুবই সহজ। যেকোন কার্ড রিডার মেশিনে যেমন ATM এ, বা গ্যাস পাম্পে, শপিং মলের পেমেন্ট টার্মিনালে এরা একটা ইউএসবি ডিভাইস ইনপুট করে দেয়। আর এই ডিভাইসটি আপনার কার্ডের যেসব তথ্য আপনি টাইপ করেন সেগুলো খুব সহজেই ক্যাপচার করে নেয়।
কার্ড স্কিমিং অনেক আগে থেকেই চলে আসছে এবং সবথেকে সহজ মনে হয় কারও ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড হ্যাক করা। এই স্কিমার ডিভাইসটা তারা এমন স্থানে প্লেস করে যেখানে আপনি খুব সহজে দেখতে পাবেন না। অনেকে এই কাজের জন্য ব্লুটুথ কানেকশনও ইউজ করে থাকে।
স্কিমাররা মূলত একটা এরিয়াতে অনেকগুলো ডিভাইস সেটাপ করে। আর তারা এর আশেপাশেই ইনফরমেশন ক্যাপচার করার জন্য থাকে। এই ইনফরমেশনগুলো দিয়ে তারা নতুন একধরণের ফেক কার্ড তৈরী করে। তারপর অনেক পাবলিকের কাছে তারা এটা বিক্রি করে দেয়। পুরো ঘটনাটি প্রায় ঘন্টাখানেক এর ভেতরই ঘটে থাকে।
Brian Krebs নামের একজন ব্যক্তি লেটেস্ট সব স্কিমিং নিউজ ও ডিভাইসের উপর গবেষণা করে একটা পবেষণাপত্র প্রকাশ করেন যেটার নাম “a victory of sorts against card-skimming technology”। এই পদ্ধতিতে পুলিশ স্কিমিং ডিভাইসের সাথে একটা জিপিএস ডিভাইস এড করে দেয়, এবং কোন স্কিমার ডিভাইস হাতে নিতেই তাদেরকে লোকেট করা সম্ভব হয়।
অবশ্য, স্কিমাররা এখন সরাসরি কাজে না গিয়ে ব্লুটুথ ডিভাইসের মাধ্যমেই বেশী স্কিমিং করে থাকেন।
এক্সট্রীম হ্যাক ৪: ওয়্যারলেস কার্ড হ্যাকিং
আপনার ক্রেডিট অথবা ডেবিট কার্ড যদি RFID হয় বা কন্ট্যাক্টলেস মেক্যানিজম এর হয় যেমন, মাষ্টারকার্ড, পেপল, পেপাস, এক্সপ্রেস পে প্রভৃতি টাইপের তাহলে একজন হ্যাকার সহজেই আপনার ইনফরমেশন চুরি করে নিতে পারে।
RFID ট্রান্সমিশন ডিভাইসগুলোর মূলত কোন সিকিউরিটি ই নেই। লো-ভোল্টেজ রেডিও ওয়েভ ইউজ করে আপনার RFID ট্রান্সমিটারকে সহজেই হ্যাক করে এর ইনফরমেশন বের করে নেওয়া যায়। ক্রেডিট কার্ডের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপগুলো এতই ইনসিকিউর যে যেকোন ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ রিডার দিয়ে এর ইনফরমেশন বের করে নেওয়া যায়। এই ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ রিডারগুলো খুব সহজমূল্যেই অনলাইনে কিনতে পাওয়া যায়।
আপনি যদি কোন RFID রিডারের আশপাশশ দিয়ে যান তাহলেই আপনার একাউন্ট হ্যাক হয়ে যেতে পারে। বর্তমানে এই ডিভাইসগুলোর রেঞ্জ অনেক বাড়ানো হয়েছে। এগুলো এখন ১ কিলোমিটার পর্যন্ত কাজ করতে পারে। তাই, একজন হ্যাকারের পক্ষে এক স্থানের ১০০০ মানুষের ক্রেডিট কার্ডের ইনফরমেশন চুরি করা কোন ব্যাপারই না।
এটা থেকে বাচার জন্য আপনি একটা RFID-hack-defeating "shields" কিনতে পারেন যেটা খুব বেশী আপনাকে খরচ করাবে না। সিকিউরিটি এক্সপার্টরা ধারণা করেছেন যে চিপ এনাবেলড কার্ড এই হ্যাকিং প্রতিরোধ করতে পারে এবং তাই সারা বিশ্বে চিপ এনাবেলড কার্ড ইউজ বাড়ানো হচ্ছে।
এক্সট্রীম হ্যাক ৫: ব্যাড USB
এমন এক ধরনের ইউ এসবি রয়েছে যেটা আপনার কম্পিউটারের ইউএসবি পোর্টে ঢুকালেই এটা অটোমেটিকলি আপনার সিস্টেমে বিভিন্ন কমান্ড ও কোড এক্সিকিউট করতে থাকে। এটা আপনার পিসির কন্ট্রোল ও নিয়ে নিতে পারে।
আর এই ধরনের হ্যাকিং এর বিরুদ্ধে কোন প্রতিরক্ষাই নেই। আপনার পিসির সব আনঅথরাইজড একসেস বন্ধ করে অবশ্য এটা থেকে কিছুটা নিরাপদ থাকতে পারেন। আবার যে ইউএসবি ডিভাইসটি আপনার পিসিতে ইনপুট করা হচ্ছে সেটা ব্যাড ইউএসবি কীনা সেটা চেক করার ও কোন উপায় নেই। এটা আপনি আপনার কোন বন্ধুর ডিভাইস থেকেও পেতে পারেন, আবার আপনিও না জেনে অন্য কোন বন্ধুর পিসিতে ইনস্টল করতে পারেন।
তাই, এটা প্রোটেক্ট করা আসলে তেমন কোন উপায় নেই।
এক্সট্রীম হ্যাক ৬: Stuxnet
Stuxnet হল এমন একটা নাম যেটা হল বিশ্বের সবথেকে ভয়ানক ও ইতিহাসের স্মরণতম একটা সাইবার এট্যাক এর কথা মনে করিয়ে দেয়। স্টাক্সনেট হল এই পর্যন্ত বিশ্বে সবথেকে এডভান্সড ও জটিল ধরনের ম্যালওয়ার প্রোগ্রাম। এটা কোন ব্যাডইউএসবি ইউজ করে না। কিন্তু এটা ইউওসবি কী এর মাধ্যমে ছড়ায় এবং এটা আগে ইউএসবি এক্সিকিউশন মেথড নামে পরিচিত ছিল।
এটা পাবলিকলি ২০১০ সালে সবার নজরে আসে। একটা সাইবার এট্যাক দিয়ে যে রিয়েল্ অ্যাটাকের থেকে বেশী ক্ষতি করা যায় সেটা স্টাক্সনেট আগে থেকেই ভালভাবে জানত ও আবারও প্রমাণ করল। স্টাক্সনেট ছিল আমেরিকা ও ইসরায়েলের তৈরী একটা ভাইরাস প্রোগ্রাম যেটাইরানের নিউক্লিয়ার ওয়াপন বিফল করার জন্য। কিন্তু ইসরায়েল বা আমেরিকার কেউই এটা পাবলিকলি জানত না।
ইরানের সিকিউরিটি সিস্টেম, বিশেষ করে হাই সিকিউরিটি এবং নিউক্লিয়ার সিকিউরিটি কেউ ভাঙতে পারবে এটা কল্পনাতেও আনতে পারেনি। কিন্তু স্টাক্সনেট যারা তৈরী করেছিল তারা খুবই সুক্ষভাবে ইরানের নিউক্লিয়ার প্রোজেক্টে কাজ করত এমন একজন ফরেন নিউক্লিয়ার কনসালটেন্ট এর ইউএসবি কী তে ইনফেক্ট করে দেন।
এটা ইউএসবি কী দিয়ে পিসিতে প্রবেশ করে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এর রিঅ্যাকটর কন্ট্রোলার এ অ্যাটাক করে এবং সেখানকার সব প্রোগ্রামেবল লজিক অটোমেটিকলি পাল্টে দেয়।
এটার সম্পর্কে একটা সোর্স কোড রিভিউতে বলা হয়েছিল যে এই স্টাক্সনেট তৈরী করতে বহু প্রোগ্রামারের অনেক টীমকে একসাথে এক বছরের ও বেশী সময় ধরে কাজ করতে হয়েছি। স্টক্সনেট এর আগেও এই ধরনের প্রোগ্রাম ছিল, কিন্তু কোটাই স্টাক্সনেট এর মত এতটা ভয়ানক ও কমপ্লেক্স কোডের ছিল না। এই বিষয়ে এক্সপার্টরা মনে করছেন যে এই ধরনের সাইবার ওয়ার এখন কেবল শুরু হচ্ছে। পরে সবটাই হবে খুব ঠান্ডা মাথার সাইবার ওয়্যার।
এক্সট্রীম হ্যাক ৭: রোড সাইন হ্যাক
রোড সাইন হ্যাকিং একটা আইনত অপরাধ এবং এটা আপনাকে অনেক বিপদে ফেলতে পারে। কিন্তু এই রোড সাইনগুলো হ্যাক করা খুব একটা কঠিন কোন কাজ না।
কিছু রোড সাইন হ্যাকার হল ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তা বা কর্মচারী যারা তাদের কাজের প্রয়োজনে এটা করে থাকেন। কিন্তু সত্যি কথা হল রোড সাইন ম্যানুয়াল ইন্টারনেটে যেকোন স্থানেই পাওয়া যায় এবং এর পাসওয়ার্ড গুলোও খুব দূর্বল হয়ে থাকে। যেমন : "password, " "Guest, " "Public, " and "DOTS."। যেকোন হ্যাকার সহজেই রোড সাইনের প্যাটার্ন বা মডেল খুঁজে বের করে এটার ম্যানুয়াল ডাউনলোড করতে পারে।
প্রায় সব রোড সাইনের জন্য একটা লক প্যানেলে ফিজিক্যাল একসেস এর দরকার পড়ে। যদিও প্যানেল গুলো বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আনলক থাকে। কোন হ্যাকার এটার ফিজিক্যাল একসেস পেলে সে কনসোল কীবোর্ডটা সহজেই ইউজ করতে পারে। হ্যাকার তখন এর সিস্টেমটাই রিবুট করে দিতে পারে। এটার সাথে সে দরকারী সব ইনফরমেশন ও পাসওয়ার্ড ও রিসেট করতে পারে। আর মজার বিষয় হল যেকেউ এভাবে এডমিন একসেস নিয়ে একটা রোড সাইন হ্যাক করে ফেলতে পারে।
এক্সট্রীম হ্যাক ৮: The NSA’s এর অর্ডার বুক
NSA এর ফুল মিনিং হল ন্যাশন্যাল সিকিউরিটি এজেন্সি, এটা আমেরিকান সরকারের একটা ইনটেলিজেন্স ইউনিট যেটা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ইনফরমেশন কালেক্ট করে এবং আমেরিকার বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে সেটা সরকারকে দেয়। NSA এরজন কর্মকর্ত সম্প্রতি জানিয়েছেন যে NSA এর অর্ডার বুক নামের একটা ব্যাপার আছে যেটা বিভিন্ন এডভান্সড হ্যাকিং ডিভাইস অর্ডার দিয়ে থাকে।
এমন একটা এডভান্সড হ্যাকিং মেথড এর মান হল Quantum Insert। এটার কাজ ছিল কোন ভিকটিম কে একটা ওয়েবসাইট থেকে রিডিরেক্ট করে অন্য একটা সাইটে নিয়ে যাওয়া। অবশ্য HTTPS, অর্থাৎ সিকিউরড প্রটোকলে এটা কাজ করত না। ন্তিু কয়টা সাইটই বা এটা ইউজ করে? তবে বর্তমানে এটার ইউজ অনেক বেড়ে গেছে।
অন্যান্য হ্যাকিং টুলস সহ একজন NSA এর অপারেটিভ নিচের জিনিসগুলো অর্ডার দিতে পারে :
নাসা যেসব ডিভাইস অর্ডার করতে পারে তার লিস্ট পড়ে নিশ্চই বুঝেছেন যে সবাইই জানতে চায় যে NSA আর কী কী টাইপের ডিভাইস নিয়ে কাজ করতে পারে। এবং এটা ক্লিয়ার যে এটা যতদিন লিগ্যাল থাকবে ততদিন এই এজেন্সি নিজের ইচ্ছামত কাজ করতে পারবে।
এক্সট্রীম হ্যাক ৯: ক্রিপ্টোগ্রাফিক অ্যাটাক
` Gary Kenworthy নামের একজন হ্যাকার যিনি ছিলেন মূলত ক্রিপ্টোগ্রাফি রিসার্চার, তিনি এমন একটা সিস্টেম তৈরী করেছেন যেটা হাইলি সিকিউর এবং সকল প্রকার কম্পিউটিং ডিভাইসের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন রিমোটলি মনিটর করে সেই সিস্টেমের সিকিউরিটি কী যতগুলো ০ এবং ১ দ্বারা গঠিত সেটা বলে দিতে পারতেন। আপনারা determine a mobile device's private key নামক এই হেডলাইনে কীভাবে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফ্লাকচুয়েশন দেখে একটা মোবাইলের সিকিউরিটি কী বলে দেওয়া যায় সেটা দেখতে পারবেন।
যদিও Gary Kenworthy এই সিস্টেম থেকে সিকিউরিটির পথ দেখিয়ে দিয়ে অনেক টাকা ইনকাম করেন, তারপরও বলতে হবে তার এই অ্যাটাক যেকোন ক্রিপ্টোগ্রাফিক ডিভাইসের সিকিউরিটি অনেক কমিয়ে দিয়েছে।
এক্সট্রীম হ্যাক ১০: কার হ্যাকিং
কার কোম্পানীগুলো তাদের তৈরী কারে যতটা সম্ভব ততটা কম্পিউটিং ফাংশনালিটি যোগ করে যাচ্ছেন। আর এই ক্ষেত্রে আরও যে একটা হ্যাকিং এর পথ সুগম হয়েছে সেটা হল ওই কারের সিস্টেম হ্যাক করা। আর এই কম্পিউটার সিস্টেমগুলো হ্যাক করা মোটেও কোন কঠিন কাজ না। এর আগে অনেক হ্যাকাররা ওয়্যারলেস ইউজ করে কীভাবে একটা কার আনলক করতে হয় সেটা করে থাকত।
Dr. Charlie Miller, যিনি তার ক্যারিয়ার শুরু করেন অ্যাপল ডিভাইস হ্যাক করে এবং বহুবার Pwn2Own হ্যাকিং কনটেস্ট জিতেছেন, তিনি এই কার হ্যাকারদের ভেতর অন্যতম। ২০১৩ সালে তিনি ও তার সহযোগী গবেষক মিলে আবিষ্কার করেন কীভাবে ২০১০ সালের টয়োটা প্রিয়াস কারের ব্রেক এবং স্টীয়ারিং কন্ট্রোল করা যায়। তারা এক্ষেত্রে কারের কন্ট্রোল ইউনিট এবং অনবোর্ড বাস সিস্টেম এ অ্যাটাক করেন। তবে, এটা রিমোমলি কাজ করে না।
তারা একটা কারের রিমোট রেডিও ফিচারগুলো দিয়ে কারের কন্ট্রোল সিস্টেমের সাথে লিংক করেছিলেন।
গত বছর Miller and Valasek নামের ২ জন হ্যাকার wireless remote hacks against 24 different cars নামের একটা গবেষণা পত্রে বিশ্বের যে ২৪ টি কারে রিমোটলি অ্যাটাক চালানো যাবে সেটা বলেছেন। এর ভেতর Cadillac Escalade, Jeep Cherokee, and Infiniti Q50, এই কারগুলো হল সবথে বের্শ হ্যাকএবল। তারা একটা কারের রিমোট রেডিও ফিচারগুলো দিয়ে কারের কন্ট্রোল সিস্টেমমের সাথে লিক করেছিলেন।
এখন কার কোম্পানী গুলো বিভিন্ন হ্যাকার ভাড়া করে এই কারের সিকিউরিটি সিস্টেম ডেভলপ করানোর চেষ্ট চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপরের হ্যাকিংগুলো বর্তমানের বা বেশ আগের। তাহলে ভাবুন, ভবিষ্যতের হ্যাকিংটা কেমন হবে? হয়ত এমন একটা সময় আসবে যখন যুদ্ধ বলতেই বোঝাবে সাইবার যুদ্ধ। আর সাইবার ইনফরমেশন হবে বিশ্বের সবথেকে মূল্যবান জিনিস।
আজ এই পর্যন্তই। আবার দেখা হবে। সবাইকে ধন্যবাদ।
আমি অরিন্দম পাল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 81 টি টিউন ও 316 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 20 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
মানসিক ভাবে দূর্বল । কোন কাজই কনফিডেন্টলি করতে পারি না , তবুও দেখি কাজ শেষ পর্যন্ত হয়ে যায় । নিজের সম্পর্কে এক এক সময় ধারণা এক এক রকম হয় । আমার কোন বেল ব্রেক নেই । সকালে যে কাজ করব ঠিক করি , বিকালে তা করতে পারি না । নিজের...
অনেক ভালো লিখেছেন।