আসুন সর্বকালের সেরা ১০ জন হ্যাকারের সম্পর্কে জেনে নিই

হ্যাকিং বা হ্যাকারদের সম্পর্কে আমাদের সবারই কৌতুহল আছে। তাই আজ বিশ্বের সর্বকালের সর্বসেরা ১০ জন হ্যাকারের সম্পর্কে জেনে নিই।

হ্যাকার মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে; ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার যারা কম্পিউটার সিস্টেমকে নষ্ট করার উদ্দেশে হ্যাকিং করে। বিভিন্ন সাইবার ক্রাইমের সাথে লিপ্ত এসব হ্যাকার তাদের অস্তিত্ব গোপন করে হ্যাকিং করে থাকে। কিছু হ্যাকার মজা বা কৌতুহলরের জন্য হ্যাকিং করে আবার কিছু বাক্তিগত প্রয়োজন বা অর্থের জন্য করে।

অপরদিকে হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারদের এথিক্যাল হ্যাকারও বলা হয়। এরা কোন কম্পানির হয়ে কাজ করে এবং কম্পানির সিকুরিটির উপর নজর রাখে।

কথা না বাড়িয়ে চলুন ৫ জন নামকরা ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারের সম্পর্কে জানিঃ

১. জনাথন জোসেফ জেমসঃ

জন্মঃ ১২ ডিসেম্বর ১৯৮৩

মৃত্যুঃ ১৮ মে ২০০৮

তিনি একজন আমেরিকান হ্যাকার এবং সবচেয়ে কমবয়সী কিশোর যেকি না ১৬ বছর বয়সেই সাইবার ক্রাইমের সাথে লিপ্ত হয়ে জেলে গিয়েছিলেন।

জেমস আমেরিকার গভরমেন্টের হাই প্রোফাইল সিস্টেম হ্যাক করেন। এছারাও নাসার কম্পিউটার সিস্টেম হ্যাক করে প্রায় ১.৭ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি সফটওয়্যার চুরি করেন। নাসার মতে জেমস যে সফটওয়্যারগুলো চুরি করেছিল সেগুলো দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন নিয়ন্ত্রন করা হয়। তার জন্য নাসার কম্পিউটার সিস্টেম বন্ধ করতে হয়েছিল।

২. আদ্রিয়ান লামোঃ

জন্মঃ ২৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৮১
নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং মাইক্রোসফট এর মত বড় কোম্পানি হ্যাক করেছিলেন আদ্রিয়ান লামো। তাঁকে বলা হয় হোমলেস হ্যাকার যিনি কফি সপ বা লাইব্রেরির কানেকশন ব্যবহার করে হ্যাক করেন।
সিকুরিটি ব্রেক করার ওস্তাদ আদ্রিয়ান লামো বড় বড় কোম্পানির যেমন ইয়াহু, ব্যাংক অফ আমেরিকা, সিটি গ্রুপ, সিঙ্গুলার এর সিকুরিটি ব্রেক করেন।

৩. কেভিন মিটনিকঃ

জন্মঃ ৬ অগাস্ট, ১৯৬৩
কেভিন মিটনিককে বলা হয় দ্যা মোস্ট ওয়ান্টেড কম্পিউটার ক্রিমিনাল অফ আমেরিকান হিস্ট্রি। দুটি মুভি Freedom Downtime এবং Takedown এ তার জীবন সম্পর্কে তৈরি করা হয়েছে।
তার হ্যাকিং জীবন শুরু হয় লস এঞ্জেলসের বাস পাঞ্চ কার্ড হ্যাকিং এর মাধ্যমে। যাতে অনায়েসে ফ্রী রাইড করা যায়। এছাড়া বিভিন্ন সফটওয়্যার চুরিসহ বিভিন্ন হ্যাকিং এ জড়িয়ে পরে কেভিন মিটনিক।
তার সাইবার ক্রাইম দিনে দিনে বাড়তে থাকে। কর্পোরেট সিক্রেট হ্যাকিং, ফোন নেটওয়ার্ক হ্যাকিং, আমেরিকার ডিফেন্স হ্যাক করা ছিল তার কাজ।

৪. কেভিন পলসেনঃ

জন্মঃ ১৯৬৫
লস এঞ্জেলস রেডিও ফোন কলস হ্যাকার নামে পরিচিত এই ব্লাক হ্যাট হ্যাকার বর্তমানে Wired.com এ নিউজ এডিটর হিসেবে কর্মরত আছেন।

৫. রবার্ট টেপান মরিসঃ

জন্মঃ ৪ নভেম্বর, ১৯৬৫
ন্যাশনাল সিকুরিটি এজেন্সির সাবেক সায়েন্টিস্ট রবার্ট মরিসের পুত্র রবার্ট টেপান মরিস বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার ওয়ার্মের জনক। Morris Worm নামে এই ওয়ার্মটি মরিস ছাত্র অবস্থায় লিখেছিল। এই ওয়ার্মটি কম্পিউটারে প্রবেশ করে স্লো করে ফেলে এবং একপর্যায়ে বাবহারের অযোগ্য করে তলে।
মরিস বর্তমানে MIT তে কম্পিউটার সায়েন্স এর প্রোফেসর।

৫ জন নামকরা হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারের সম্পর্কে জানিঃ

১. স্টিফেন ওজনিয়াকঃ

জন্মঃ ১১ অগাস্ট, ১৯৫০
স্টিফেন ওজনিয়াক একজন আমেরিকান কম্পিউটার প্রকৌশলী ও প্রোগ্রামার এবং অ্যাপল কম্পিউটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।
ওজনিয়াক কলেজ পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে কম্পিউটারের দিকে ঝুঁকে পরেন এবং স্টিভ জবসের সাথে মিলে Fully Assembled PC Board তৈরি করেন। এ থেকেই বর্তমান অ্যাপলের সুত্রপাত।

২. টিম বার্নার্স-লিঃ

জন্মঃ ৮ জুন, ১৯৫৫
পেশায় একজন ব্রিটীশ পদার্থবিদ, কম্পিউটার বিজ্ঞানী, MIT অধ্যাপক, এবং (ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব অর্থাৎ www) ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের জনক এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়ামের পরিচালক। তিনি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা।

৩. লিনুস তোরভাল্দ্‌সঃ

জন্মঃ  ডিসেম্বর ২৮, ১৯৬৯
বিশ্বখ্যাত সুয়েডীয়-ফিনীয়প্রোগ্রামার, লিনাক্স কার্নেলের আদি রচয়িতা ও নিয়ন্ত্রণকারী এবং মুক্ত সোর্স আন্দোলনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি। তিনি বর্তমানে প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
লিনুসের কম্পিউটারে উৎসাহ শুরু হয় একটি কমোডর VIC-20 এর মাধ্যমে। VIC-20 এর পর তিনি একটি Sinclair QL কেনেন যেটিতে তিনি ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করেন- বিশেষত এর অপারেটিং সিস্টেম। তিনি এই QL এর জন্য একটি অ্যাসেম্বলার এবং একটি টেক্সট এডিটর প্রোগ্রাম করেন এবং সেই সাথে কিছু গেমও। তিনি প্যাক ম্যান এর একটি ক্লোন কুল ম্যান এর প্রোগ্রাম করার জন্য পরিচিত। তিনি ১৯৯০ সালে ইন্টেল ৮০৩৮৬ প্রসেসর সম্বলিত আইবিএম পিসি কেনেন এবং তার মিনিক্স কপি পাওয়ার আগে কয়েক সপ্তাহ প্রিন্স অব পারসিয়া খেলে কাটান যেটি তাকে পরবর্তীতে লিনাক্স নিয়ে কাজ শুরু করতে সাহায্য করেছিল। ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ৮৬ ওপেন আর্কিটেকচারের লিনাক্স এবং ইউনিক্সের জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড বাইনারী ফরম্যাট নির্ধারনের কাজে জড়িত ছিলেন।

৪. রিচার্ড স্টলম্যানঃ

 জন্মঃ মার্চ ১৬, ১৯৫৩

একজন বিশ্বখ্যাত মার্কিন কম্পিউটার প্রোগ্রামার, হ্যাকার ও সমাজকর্মী। তিনি মুক্ত সফটওয়্যার আন্দোলনের প্রবর্তক। ১৯৮৩ সালে তিনি গনু প্রকল্প শুরু করেন যার লক্ষ্য একটি ইউনিক্স-সদৃশ অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করা যা হবে মুক্ত সফটওয়্যার। ১৯৮৫ সালের অক্টোবরে তিনি ফ্রি সফটওয়্যার ফাউন্ডেশন স্থাপন করেন।

স্টলম্যান কপিলেফ্ট ধারণার প্রবক্তা। মুক্ত সফটওয়্যার লাইসেন্সের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত গনু জেনারেল পাবলিক লাইসেন্স বা জিপিএল (GPL)-এর মূল লেখক তিনি। বহুলভাবে ব্যবহৃত বেশ কয়েকটি সফটওয়্যারও তিনি লিখেছেন, যেমন- ইম্যাক্‌স, গনু কম্পাইলার কালেকশন এবং গনু ডিবাগার।

৫. সুতুমু সিমুমুরা (Tsutomu Shimomura) ঃ

জন্মঃ ২৩ অক্টোবর, ১৯৬৪

সিমুমুরা একজন সিকুরিটি এক্সপার্ট। তার জনপ্রিয়তার রহস্য হল, কেভিন মিটনিক তাঁকে হ্যাক করেছিল। এরপর এফবিএই এর সাথে কেভিন মিটনিকে ধরার কাজে সহায়াতা করেন তিনি।

সোর্সঃ এখানে ক্লিক করুন

এই হল কিছু জনপ্রিয় হ্যাকারদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি। মন্তব্যের দিতে চাইলে নিচে লিখুন। ধন্যবাদ।

Level 0

আমি m2z। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 3 টি টিউন ও 23 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

প্রজুক্তির সাথে থাকতে চাই সারাক্ষণ... আমার প্রযুক্তি ব্লগ সাইট, চাইলে ঘুরে আসতে পারেন, http://www.techjogot.com


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

ভালো হয়েছে। তথ্য সূত্র কি উল্লেখ করা যেতো না। ধন্যবাদ

    Level 0

    @মোঃ আসিফ- উদ-দৌলাহ্: আপনি কি ঠিকমতো পরেছেন, না শুধু কমেন্টই পরেছেন। লেখার শেষে সোর্স দেয়া আছে।

      @m2z: ভাই টিউমেন্টের ভাষাটা কি আর একটু কোমল করা যেতো না? আমি কি না পড়ে কমান্ট করার লোক বলেন? সোর্স দেখেছি। ধন্যবাদ!!!!

মজার তিউন।ধন্যবাদ

Level New

আমার নাম যে আসবে কবে 😀

    Level 0

    @SUMONSOPNO: আশা করছি খুব শীঘ্রই আপনার নামটা লিখবো… :p

Level 0

প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ। আমিও হ্যাকার হতে চাই ।

    Level 0

    @azambd: ধন্যবাদ; লেগে থাকুন একদিন হয়ে যাবেন

সুন্দর টিউন

Level 0

ধন্যবাদ 🙂 ।

    Level 0

    @RidoyRB: আপনাকেও ধন্যবাদ

Level 0

আমিও হ্যাকার হতে চাই ।

    Level 0

    @RidoyRB: সাধুবাদ জানাই

ভাইয়া আমার নাম টা দিলেও পারতেন । আমি যে কত বড় হ্যাকার তা আর বাংলাদেশ বুঝলনা। আমি কি না করতে পারি? তবে মাঝে মাঝে নিজের নামটা ভুলেজাই।

    Level 0

    @saad rahman: হা হা , অবশ্যই দেব… পরবর্তীতে বাংলাদেশী হ্যাকারদের নিয়ে লিখলে আপনার নামটা লিখে দিব 🙂

Level 0

“ধুসোর হ্যাট হ্যাকার” সম্পোরকেও maybe কিছু সুনেছিলাম…………………………

    Level 0

    @Nion007: জী ভাই, গ্রে হ্যাট বা ধুসর হ্যাট হ্যাকাররা সিস্টেম ক্র্যাক বা নষ্ট করে Owner কে সতর্ক করে দেয়। Owner কে তার সিস্টেম / সাইটের দুরবলতা ধরিয়ে দেওয়া হল এই হ্যাকারের উদ্দেশ্য…

Level 0

আমিও হ্যাকার হতে চাই

Level 0

ভাল জিনিস 😛

Level 0

আমিও হ্যাকার হতে চাই

”হ্যাকার” the word is not bad:;;:

hahaha

একটা জিনিস বুঝলাম না টিউনারতো হ্যকার না। তাহলে সবাই তার কাছে হ্যকিং শিখতে চায় ক্যনো।

ভাল লাগল। তবে বাংলাদেশেও অনেক বড় বড় হ্যাকার আছে।