আপনারা যারা ভাবেন যে শুধু অ্যাডসেন্স থেকেই ব্লগিং করৈ আয় হয় তাহলে ভুল ভাবছেন। অ্যাডসেন্স হলো ব্লগিং এর সেরা ইনকাম এর উপায় কিন্তু আপনি কি এটা জানেন অ্যাডসেন্স ছাড়াও অ্যাডসেন্স এর থেকে বেশি আর্নিং সম্ভব। শুধু আপনার সাইটে যদি ভিজিটর বেশি থাকে তাহলে আপনার আর্নিং এর কথা ভাবতে হবে না। আপনি স্পন্সর এর মাধ্যমে বিশাল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।
১. গুগল অ্যাডসেন্স
ব্লগ থেকে আয় করার অন্যতম উপায় হল অ্যাডসেন্স। অনেক ব্লগারের একমাত্র আয়ের উৎস হচ্ছে অ্যাডসেন্স। পৃথিবীর অসংখ্য ওয়েবসাইট গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে সফলতার দেখা পেয়েছে। বিশেষ করে বলতে গেলে ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত উইকি হাউয়ের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক হারিকের কথা বলতে হয়। তার এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন ৪০ মিলিয়ন ভিউ হয় এবং অ্যাডসেন্স থেকে মাসিক আয় হয় ২ মিলিয়ন ডলার।
এছাড়াও, আরেকজন ব্যক্তি রয়েছেন অ্যাডসেন্স থেকে যার প্রতি মাসের আয় ৪ কোটি টাকার উপরে। তিনি পিটি ক্যাশমোর আর তার ব্লগের নাম Mashable। এবার আপনি চিন্তা করুন আপনার ব্লগে অ্যাডসেন্স অপটিমাউজ করবেন কি, করবেন না।
২. বিজ্ঞাপণ
অ্যাডসেন্স যেহেতু বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপণ সরাসরি নিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে তারা পাবলিশ করে। আপনিও চাইলে অন্যান্য কোম্পানির বিজ্ঞাপণ নিয়ে কোন মাধ্যম ছাড়া সরাসরি আপনার ওয়েবসাইটে পাবলিশ করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে অবশ্য আপনার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানির সাথে যোগাযোগ থাকতে হবে। তবে আপনার ওয়েবসাইটের ভিউ ও ট্রাফিক যদি বেশি হয়, সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন কোম্পানি আপনার সাথে যোগাযোগ করবে বিজ্ঞাপণ দেয়ার জন্য।
৩. স্পনসরড টিউন
স্পনসরড টিউন বলতে মূলত বোঝায় আপনি টাকার বিনিময় যখন কোন টিউন আপনার ব্লগে শেয়ার করবেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান তাদের বা প্রোডাক্টের প্রচার এবং প্রসারের জন্য পেইড ব্লগ পাবলিশ করে থাকে। আপনি যদি ব্লগার হয়ে থাকেন, তবে এসব স্পনসরড টিউন আপনার আয়ের অন্যতম একটি উৎস হতে পারে। Bkash
৪. অ্যাফিলিয়েট প্রডাক্ট
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদেরকে নতুন করে কিছু বলতে হবে না। আপনি বিভিন্ন কোম্পানির প্রোডাক্টের বৈশিষ্ট্য এবং উপকারিতা নিয়ে আপনার ব্লগে লেখা শেয়ার করবেন। তাদের প্রোডাক্ট ক্লিক এবং বিক্রয়ের উপর ভিত্তি করে আপনাকে নির্দিষ্ট হারে কমিশন দেয়া হবে। এটাও আপনার ওয়েবসাইটের আয়ের অন্যতম উৎস।
৫. পেইড মেম্বারশীপ
আপনার ওয়েবসাইট যখন খুব বেশি জনপ্রিয় হয়ে যাবে এবং আপনার প্রতিটি কনটেন্ট যখন অনেক বেশি মূল্যবান হবে, সে ক্ষেত্রে আপনি পেইড মেম্বারশীপ সিস্টেম চালু করতে পারেন। এর মাধ্যমে কেউ যদি আপনার ওয়েবসাইটের কোনও নির্দিষ্ট আর্টিকেল পড়তে চায়, সে ক্ষেত্রে টাকা দিয়ে মেম্বারশীপ কিনলে আর্টিকেল পড়তে পারবে।
তবে, কোন সাধারণ ব্লগে আবার পেইড মেম্বারশিপ চালু করতে যাবেন না। কেননা, এ ধরনের মেম্বারশীপ সাধারণত কোর্স, স্বাস্থ্য, টিউটোরিয়াল, পরামর্শ ভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোতে বেশি কার্যকরী।
৬. রিভিউ
যখন নতুন কোন মোবাইল ফোন বা নতুন কোন প্রোডাক্ট বাজারে বের হয়, তখন তার বৈশিষ্ট্য এবং গুনাগুণ নিয়ে রিভিউ দেওয়ার মাধ্যমে অর্থ আয় করা সম্ভব। যদিও ইতিমধ্যে অধিকাংশ ব্লগারের আয়ের উৎস এটি। ইলেকট্রনিক গ্যাজেট এবং ই-কমার্স ওয়েবসাইট বৃদ্ধির কারণে দিন দিন রিভিউর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আপনিও চাইলে ই-কমার্স কিংবা কোন সেলারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে প্রোডাক্ট রিভিউ করে আয় করতে পারেন।
৭. ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি
ইন্টারনেট এবং স্মার্টফোনের যুগে ডিজিটাল প্রোডাক্ট শব্দটা সকলের নিকট মোটামুটি পরিচিত। এদের মধ্যে উল্লেখ উল্লেখযোগ্য কিছু ডিজিটাল প্রোডাক্ট হল যথাক্রমে:
ই-বুক
টিউটোরিয়াল বা অনলাইন কোর্স
সফটওয়্যার ও গেমস সৌজন্য
থিম, প্লাগিন ও ডিজাইন
মিউজিক বা ভিডিও ইত্যাদি
এসব প্রোডাক্ট অনলাইনে বিক্রি করা যায়। তবে সবগুলো প্রোডাক্ট যে আপনারই তৈরি করতে হবে, বিষয়টা এরকম নয়। আপনি চাইলে অন্যের এসব ডিজিটাল প্রোডাক্ট আপনার ব্লগেও বিক্রি করতে পারেন।
৮. সেবা বিক্রি
সেবা বিক্রি করা বলতে বুঝায়, আপনি যদি একজন ভালো ওয়েব এবং গ্রাফিক্স ডিজাইনার হন, সেক্ষেত্রে আপনি অনলাইনে ব্লগ লিখে আপনার প্রতিভা মানুষের মাঝে পাবলিসিটি করতে পারেন। ফলে ভবিষতে মানুষের প্রয়োজনে আপনাকে ডাকবে যার মধ্যমে আপনার আয়ের বিকল্প পথ তৈরি হবে। এছাড়া আরও কিছু সেবা আছে যেমন:
রান্নার রেসিপি তৈরি
আর্টিকেল রাইটিং
গ্রাফিক্স বা ওয়েব ডিজাইন
প্রোগ্রামিং
আইডিয়া বা পরামর্শ প্রদান
অনালাইনে কোর্স করানো
আপনি উপরে উল্লেখিত সার্ভিস বা সেবা সূমহ মানুষকে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে অফার করতে পারেন। এসব বিষয়েও মানুষের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে।
৯. ব্যবসায় অংশীদারি
ব্যবসা অংশীদার মূলত কোন ব্যবসায়ীর সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়া। অর্থাৎ আপনি আপনার ব্লগে তাদের প্রডাক্ট বা সেবা সম্পর্কে লেখা কিংবা বিজ্ঞাপণ দিয়ে তাদের প্রচার এবং প্রসার করবেন, তার বিনিময়ে তারা আপনাকে অর্থ দিবে। এ ধরনের চুক্তি যে কোনো ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে হতে পারে। এমনকি এটা যে কোন ব্লগের সাথেও হতে পারে। অনলাইন আয়
১০. ডোনেশন
বাংলাদেশে অবশ্য ডোনেশনের পদ্ধতি খুব একটা জনপ্রিয় এবং প্রচলিত নয়। তবে বিদেশের অনেক ওয়েবসাইট এবং ব্লগের আয়ের উৎস ডোনেশন। এটা সবচেয়ে ভাল মাধ্যম হতে পারে যারা ইসলামিক ব্লগ তৈরি করেছেন কিন্তু কোন বিজ্ঞাপণ প্রচার করে না। এছাড়া অন্যান্য ব্লগারও তাদের ব্লগে ডোনেশন পদ্ধতি রাখতে পারেন। এতে করে ভিজিটর যে যার ইচ্ছে মতো আপনার ওয়েবসাইটে অর্থ প্রদান করতে পারবে।
ব্লগিং করে নিজের ব্যান্ড তৈরি সম্ভব। আপনি এর বাইরে অনেক উপায় পাবেন যার মাধ্যমে আপনি আপনার সাইট থেকে আর্নিং করতে পারবেন। আর দেরি কেন শুরু করে দিন ব্লগিং।
আমি আলেক্স মাহমুদ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।