আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন টেকটিউনস কমিউনিটি? আশা করছি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি। আজকে আবার হাজির হলাম আপনাদের জন্য নতুন টিউন নিয়ে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
বিভিন্ন কারণে আপনি ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও বানাতে পারেন। ছাত্রদের, কলিগদের এবং বিভিন্ন ব্যক্তিকে আপনি কোন কিছু শিখাতে ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও বানাতে পারেন৷ তাছাড়া আপনি যদি কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হয়ে থাকেন তাহলে অডিয়েন্সকে ভাল ভাবে বুঝাতে আপনাকে সুন্দর করে ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও বানাতে পারেন। টিউটোরিয়াল ভিডিও সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বর্তমানে মানুষ কোন কিছু জানতে এবং শিখতে ভিডিও কন্টেন্ট প্রেফার করে। নতুন স্কিল শিখতেও মানুষ ভিডিও কন্টেন্ট পেতে ভালবাসে। গবেষণা বলে মানুষ কোন কিছুর উত্তর খুঁজতে কনসাল্ট ভিডিও দেখতে পছন্দ করে৷ তাছাড়া,
আজকের এই টিউনে আমরা জানব কেন ভিডিও এত গুরুত্বপূর্ণ, কীভাবে ভাল মানের ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও বানানো যায়, এবং কীভাবে অডিয়েন্সের কাছে এসব ভিডিও পৌঁছানো যায়। এই টিউন থেকে আমরা জানব,
ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও কী, সেটা হয়তো নতুন করে বলার কিছু নাই। কোন কিছু জানতে শিখতে যে ভিডিও গুলো আমাদের সাহায্য করে সেগুলোই ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও৷ ভিডিও গুলো হতে পারে How to কন্টেন্ট, এক্সপ্লেইনার ভিডিও, প্রসেস অথবা কোন কিছুর কনসেপ্ট।
সেরা ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও এর কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যেমন, এগুলো দেখতে ভাল লাগবে, আবেদন তৈরি করবে, ভিডিওতে ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট, টেক্সট, অডিও থাকবে৷ সেই ভিডিওতে এনিমেশন থাকবে, গ্রাফিক্স থাকবে, অন স্ক্রিন Annotation থাকবে যা কী পয়েন্ট গুলো হাইলাইট করতে সাহায্য করবে। ভিডিওটি ওভারঅল ইনফরমেশনে পূর্ণ থাকবে এবং ইউজারকে দেখতে পছন্দ করবে।
ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও থেকে যে শুধুমাত্র আপনার অডিয়েন্সরাই উপকৃত হবে এমনটি নয়, আপনি নিজেও এটা থেকে উপকার পাবেন। আপনি যখন ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও বানানো শুরু করবেন তখন দেখবেন এটা আপনার কনসেপ্টকে সহজ করে দিয়েছে, নিজে আরও ভাল ভাবে বিষয়টি বুঝতে এবং বুঝাতে পারবেন।
বিভিন্ন ধরনের ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও হতে পারে। এখানে টপিকের কোন লিমিটেশন নেই। ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও হতে পারে প্রোডাক্ট ডেমনস্ট্রেশন নিয়ে, How to কন্টেন্ট নিয়ে, সফটওয়্যার টিউটোরিয়াল নিয়ে, কোন কিছু শেখা নিয়ে, স্কিল ডেভেলপমেন্ট নিয়ে ইত্যাদি। এর পরেও কমন কিছু ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও টাইপ আমরা জানব,
মাইক্রো ভিডিওকে বলা যায় ছোট আকারের ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও। নির্দিষ্ট টপিক নিয়ে সংক্ষিপ্ত উপস্থাপন এখানে থাকবে। টপিকের খুব বেশি গভীরে যাওয়া হবে না৷
মাইক্রো ভিডিও এক মিনিটেরও কম শর্ট ভিডিও হতে পারে৷ ভিডিও এর উদ্দেশ্য এবং অডিয়েন্স অনুযায়ী এই ধরনের ভিডিও সাধারণত ইনফরমাল হয়। এখানে অনেক তথ্য না দিয়ে নির্দিষ্ট টার্গেট জিনিস নিয়ে কথা বলা হয়। মাইক্রো ভিডিও ভিউয়ারদের কম সময়ে কোন কিছু জানতে, শিখতে এবং বুঝতে সহযোগিতা করতে পারে।
কয়েকটা ধাপের মাধ্যমে আপনি যখন কোন সিম্পল কনসেপ্ট এক্সপ্লেইনকরতে চাইবেন তখন আপনাকে মাইক্রো ভিডিও বেছে নিতে হবে। কোন নতুন সফটওয়্যার কীভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটা শেখাতে মাইক্রো ভিডিও উপযুক্ত। আবার কোন জটিল বিষয় ভেঙে ভেঙে বুঝাতে সিরিজ আকারে মাইক্রো ভিডিও তৈরি করা যেতে পারে।
অনেকে বলে মাইক্রো ভিডিও অডিয়েন্স এনগেজমেন্ট ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। মাইক্রো ভিডিও স্কিল শেখাতে ব্যবহৃত হলেও, ইনফরমেশন শেয়ার এবং সফট স্কিল শেখাতেও সময় উপযুক্ত।
টিউটোরিয়াল ভিডিও সাধারণত দুই থেকে দশ মিনিটের হতে পারে৷ ধাপে ধাপে কোন কিছু শেখাতে যে ভিডিও গুলো করা হয় সেগুলোকে বলা হয় টিউটোরিয়াল ভিডিও। How to ভিডিও গুলোই মূলত টিউটোরিয়াল ভিডিও এর অন্তর্ভুক্ত।
এই ভিডিও গুলোতে জটিল বিষয় গুলোও তুলে ধরতে হয়, মাইক্রো ভিডিও এর মত মুল বিষয় নিয়ে কেবল আলোচনা করলে হয় না৷ টিউটোরিয়াল ভিডিওতে ইন্টারেক্টিভ এলিমেন্ট যুক্ত করা যায় এতে অডিয়েন্সদের এটেনশন ধরে রাখা সম্ভব হয়। যেমন ভিডিওতে একটি কুইজ এড করে দেয়া৷ তাছাড়া ভিডিও কারা দেখবে, কী কারণে দেখবে সেটার উপর ভিত্তি করেও ভিডিওতে বিভিন্ন কিছু এড করা যেতে পারে।
যেমন আপনি যখন আপনার কর্মীদের জন্য কোন ভিডিও বানাবেন তখন চাইলে সেটা, ফর্মাল, ইনফর্মাল দুই ভাবেই বানাতে পারেন তবে যখন বাইরের কারো জন্য বানাবেন তখন সেটা অবশ্যই ফর্মাল ওয়েতে বানাতে হবে৷
টিউটোরিয়াল ভিডিও মূলত তৈরি করা হয় কাউকে কোন কিছু ধাপে ধাপে দেখিয়ে দেখিয়ে শেখাতে। এখানে শুধু ইনফরমেশন দিলেই হবে না, অডিয়েন্সরা এসব ভিডিও দেখবেই কোন কিছু জানতে বা শিখতে। কোন কিছু শিখতে বা নতুন স্কিল অর্জন করতে টিউটোরিয়াল ভিডিও সব সময়ই হেল্পফুল।
ট্রেনিং ভিডিও হচ্ছে স্পেসিফিক ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও। নির্দিষ্ট বিষয় শেখাতে এবং দক্ষ করে তুলতে ব্যবহৃত হয় ট্রেনিং ভিডিও। প্রতিষ্ঠানে ভাল কর্ম পরিবেশ তৈরি করতে এবং কর্মীদের নির্দিষ্ট বিষয় শেখাতে ট্রেনিং ভিডিও তৈরি করা হয়। কর্মীদের শেখাতে এটিকে বলা হয় পাওয়ারফুল টুল।
টিউটোরিয়াল ভিডিও আর ট্রেনিং ভিডিও প্রায় এক হলেও ট্রেনিং ভিডিও গুলো জব স্পেসিফিক স্কিলের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়৷ ওয়ার্ক প্লেস কেন্দ্রিক স্কিল গুলো এখানে ফোকাস করা হয়, হতে পারে, হেলদ বা সেফটি ট্রেনিং।
ট্রেনিং ভিডিও গুলোতে রিয়েল লাইফ মানুষের ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করা হয়। এখানে উদাহরণ গুলো দেয়া হয় সব বাস্তব জীবন কেন্দ্রিক।
বিভিন্ন এনিমেশন এবং গ্রাফিক্স ট্রেনিং ভিডিও গুলোকে অডিয়েন্সদের কাছে মজাদার করে তুলতে পারে। ট্রেনিং ভিডিও কর্মীদের জ্ঞান এবং পারফরম্যান্স বৃদ্ধি করে বিজনেস ইম্প্রুভ করতে পারে।
নিয়োগকর্তা, ট্রেইনার, HR টিম সাধারণ ভাবে ট্রেনিং ভিডিও ব্যবহার করে যখন প্রতিষ্ঠানে নতুন কর্মী নিয়োগ দেয়া হয়। কর্মীদের কাজ শেখাতে বিজনেস গুলো ট্রেনিং ভিডিও তৈরি করতে পারে।
এক্সপ্লেইনার ভিডিও গুলো সাধারণত ছোট হয়। ডিউরেশন হতে পারে ৩০ সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত। সহজে অডিয়েন্সদের এটেনশন পেতে এবং কোন প্রোডাক্ট, সার্ভিস নিয়ে সিম্পলি আইডিয়া দিতে এই ধরনের ভিডিও ব্যবহৃত হয়।
বিজনেস গুলো এই ধরনের ভিডিও ব্যবহার করে কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে এবং জটিল কোন কিছু সহজে বুঝাতে। এই ভিডিও গুলো ভিজ্যুয়ালি চমৎকার করে বানানো হয় যাতে অডিয়েন্সরা সহজে শিখতে পারে। এনিমেশন, গ্রাফিক্স, ভয়েস ওভার ইত্যাদি ভিডিও গুলোকে চমৎকার করে তুলতে পারে।
এক্সপ্লেইনার ভিডিও এর সুবিধা হচ্ছে, সংক্ষিপ্ত ভাবে, এনগেজড রেখে দারুণ ভাবে অডিয়েন্সদের কোন কিছু শেখানো যায়। স্টোরি টেলিং, এনিমেশন, ভিজ্যুয়াল ভিডিওকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে এবং মেসেজটি অডিয়েন্সদের মনে দীর্ঘ সময় থাকতে হবে।
বিশাল অডিয়েন্সদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এক্সপ্লেইনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা যেতে পারে।
এক্সপ্লেইনার ভিডিও এর মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে নতুন কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সম্পর্কে অডিয়েন্সকে জানানো। কীভাবে প্রোডাক্ট কাজ করে, প্রোডাক্ট কীভাবে ইউজারদের সাহায্য করে এগুলো জানাতে এক্সপ্্লেইনার ভিডিও তৈরি করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন উদ্দেশ্যে এক্সপ্্লেইনার ভিডিও বানানো যেতে পারে।
চমৎকার এক্সপ্লেইনার ভিডিও বিজনেসের বিভিন্ন সার্ভিস বা প্রোডাক্টও প্রোমোট করতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা ভিডিও দেখে অন্যরাও আকৃষ্ট হতে পারে।
আপনার লেকচার বা প্রেজেন্টেশন সুন্দর করে ভিডিওতে উপস্থাপন করে কন্টেন্টের রিচ এবং অডিয়েন্স বাড়াতে পারেন। ভিডিও তৈরি করে দিলে অডিয়েন্সরা ইচ্ছে মত সময় ভিডিও দেখে শিখতে পারবে এবং বুঝতে পারবে। এক বার দেখে কোন কিছু না বুঝলেও পরবর্তীতে দেখার ব্যবস্থা থাকবে।
যারা শিখছে তারা ইচ্ছেমতো Pause করে, টেনে তাদের কনফিউশন দূর করতে পারবে। এই ধরনের ভিডিও আপনি পাওয়ার পয়েন্ট স্লাইড এবং ভয়েসওভার দিয়ে তৈরি করতে পারেন। চাইলে নিজের ফেসও ব্যবহার করতে পারেন।
বিভিন্ন কারণে আপনি প্রেজেন্টেশন ভিডিও বানাতে পারেন। প্রথমত যারা লাইভ ইভেন্টে অংশ নিতে পারে নি তাদের জন্য এবং বিশাল একটি অডিয়েন্সের জন্য প্রেজেন্টেশন ভিডিও তৈরি করে রাখতে পারেন। আপনি কীভাবে কোন কিছু প্রেজেন্ট করছেন ভবিষ্যতে সেটা দেখতেও প্রেজেন্টেশন ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
কাউকে কোন কিছু কমপ্লিট ভাবে বুঝাতে সরাসরি স্ক্রিন রেকর্ড করে ভিডিও তৈরি করাকে বলা হয় স্ক্রিনকেস্ট। যদিও এই টিউনে অন্যান্য ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও টাইপেও স্ক্রিন রেকর্ড করা যেতে পারে। তবে ছোট অডিয়েন্সকে নির্দিষ্ট কিছু শেখাতে আপনি স্ক্রিনকেস্টকে আলাদা করতেই পারেন।
শর্ট টাইমে ছোট কিছু শিখে নিতে এই ধরনের ভিডিও বেশ কাজের। এগুলোকে ডিসপোজাল ভিডিও বলা যেতে পারে। তবে দীর্ঘ সময়ের জন্যও স্ক্রিনকেস্ট কাজে লাগতে পারে, যেমন কোন সফটওয়্যারে ভিডিও বানিয়ে রাখলে কয়েক মাস সেটা দেখে কেউ কিছু শিখতে পারবে।
ইনফর্মাল ফরমেটে কুইক ইন্সট্রাকশনের জন্য স্ক্রিনকেস্ট বেশ কাজের এক ভিডিও টাইপ। অডিয়েন্স বা কর্মীরা ছোট কোন সমস্যায় পড়লে সেটার সমাধান পেতে সাহায্য করতে পারে স্ক্রিনকেস্ট ভিডিও।
ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও ভাল ভাবে তৈরি করতে আপনার অবশ্যই ভাল মানের কিছু সফটওয়্যার এর প্রয়োজন হবে৷ স্ক্রিনরের্কড করতে এবং ভিডিও এডিট করতে দরকার ভাল মানের সফটওয়্যার যা দিয়ে এই কঠিন কাজ গুলো সহজেই করে ফেলা যাবে।
আপনি ভিডিও এডিট করতে Camtasia সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন।
ভাল মানের ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও তৈরি করতে আপনাকে আগে সুন্দর মত পরিকল্পনা করে নিতে হবে। ভিডিও কোন সমস্যা সমাধান করবে এবং কাদের জন্য তৈরি করা হবে এটা আগে থেকে নির্ধারণ করে নিতে হবে৷ সুতরাং ফুটেজ ক্যাপচার করার আগে আপনাকে কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে,
আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে ভিডিও ক্যাপচার করার মত ক্যামেরা আপনার আছে কিনা। চাহিদা অনুযায়ী হাই রেজুলেশন ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে কিনা৷ এবং ক্যাপচার করার পর সেটা এডিট করার উপযুক্ত টুল আপনার রয়েছে কিনা।
অডিয়েন্স এবং ভিডিও এর ধরন অনুযায়ী এখানে ভিন্নতা থাকতে পারে৷ যেমন আপনি যদি স্ক্রিনকেস্ট করতে চান তাহলে ল্যাপটপ এবং মাইক্রোফোন দিয়েই সেটা করতে পারবেন আর যদি এমন হয় যে কয়েকশো মানুষের ভিডিও করবেন সেক্ষেত্রে আপনার ভাল মানের ক্যামেরার প্রয়োজন হবে।
শর্ট ভিডিও করতে কখনো কখনো মোবাইলের অ্যাপই যথেষ্ট হতে পারে আবার পেইড অ্যাপও লাগতে পারে।
এখানে আপনার টার্গেট অডিয়েন্স কেমন সেটা নির্ধারণ করতে হবে৷ আপনি যত ভাল মত কাস্টমার বা অডিয়েন্স সম্পর্কে জানবেন তাদের জন্য তত ভাল এবং এনগেজিং ভিডিও আপনি বানাতে পারবেন।
আপনাকে অডিয়েন্সদের বয়স, ইন্টারেস্ট, ল্যাংগুয়েজ এমনকি ভৌগোলিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে হবে৷ যেমন আপনি যদি ডাইনোসর নিয়ে এডুকেশনাল ভিডিও বানাতে চান তাহলে অবশ্যই দশ বছরের বাচ্চাদের যে ভিডিওটি হবে, বয়স্কদের জন্য সেই ভিডিও হবে না। কোন বয়সের মানুষ কোন ইনফরমেশন গুলো গ্রহণ করতে পারবে এবং মজা পাবে সেটা বিবেচনা করতে হবে।
এই ধাপে আপনার কাজ হবে স্টোরি বোর্ড বা স্ক্রিপ্ট তৈরি করা বা লিখা। যখন আপনার কাছে টপিক থাকবে এবং অডিয়েন্স সম্পর্কে জানবেন তখন আপনার কাজ হবে, আউটলাইন তৈরি করা এবং স্ক্রিপ্ট তৈরি করা। কখন কোন ভিজ্যুয়াল দেখাবেন সেটা আগে থেকে নির্ধারণ করতে হবে।
ইন্সট্রাকশনাল ভিডিওতে স্টোরি বোর্ড আপনার ভিডিওকে অডিয়েন্সদের কাছে আরও পরিষ্কার, এবং মজাদার করে তুলতে পারে৷
অনেকে অনেক ভাবে স্টোরিবোর্ড তৈরি করতে পারে আপনাকে এত কিছু করার দরকার নাই, নিচের ফরমেটে আপনি স্টোরিবোর্ড তৈরি করতে পারেন৷
তেমন কিছু না আপনি বুঝলেই হবে৷ আপনি যদি স্ক্রিনরেকর্ড করে ভিডিও করতে চান তাহলে, আগে থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে সিরিয়াল করে রাখুন, কোনটার পর কোনটা দেখাবেন।
এবার স্ক্রিপ্ট তৈরি করুন। স্ক্রিপ্ট তৈরির সময় অবশ্যই আপনার এবং অডিয়েন্সদের সময়ের দিকে খেয়াল রাখবেন। অযথা কথা বলে সময় নষ্ট করা যাবে না। কখন কি বলবেন কি করবেন সেটা নিচের মত সাজিয়ে নিতে পারেন। প্রতিবার স্ক্রিপ্ট তৈরি করতে একই টেম্পলেট ব্যবহার করতে পারেন।
এই ধাপে আপনি ভয়েস রেকর্ড করবেন। বিভিন্ন সফটওয়্যার দিয়ে আপনি ভয়েস রেকর্ড করতে পারেন। নীরব কোন জায়গা বেছে নিন ভয়েস রেকর্ড করার জন্য। যদিও পরবর্তীতে নয়েজ রিমুভ করা যায় তবে কোলাহল পূর্ণ রেকর্ডের নয়েজ রিমুভ করার পর কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যায়। ভয়েস রেকর্ডের পর বিভিন্ন অপ্রত্যাশিত কথা কেটে দিন।
এখন আপনাকে ভিডিও রেকর্ড করতে হবে৷ ধরে নিলাম আপনি স্ক্রিন রেকর্ড করবেন। স্ক্রিন রেকর্ডের আগে আপনাকে আগে থেকে পিসিকে রেডি করতে হবে৷ ডেক্সটপে অপ্রয়োজনীয় আইকন, শর্টকাট রাখা যাবে না। এমন কিছু রাখা যাবে না যেটা অডিয়েন্স দেখলে, নেতিবাচক কিছু ভাববে। নোটিফিকেশন অফ রাখতে হবে, কারণ যেকোনো সময় নোটিফিকেশন এসে ভিডিও এর মান নষ্ট করে দিতে পারে। খেয়াল রাখবে মাউস কার্সন স্মুথ ভাবে কাজ করছে কিনা, কীবোর্ড কাজ করছে কিনা। কয়েকবার প্র্যাকটিস করে নিন৷
স্ক্রিনরেকর্ড করতে এমন টুল আপনি ব্যবহার করতে পারেন যেখানে, বিল্ড ইন রেকর্ডিং, এডিটিং এবং শেয়ারিং ফিচার থাকবে। এতে করে আপনার অনেক সময় বেচে যাবে।
যদি ক্যামেরা দিয়ে ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও ক্যাপচার করতে হয় তাহলে আপনাকে আরেকটু গুছিয়ে নিতে হবে।
আপনার এত কিছু প্রয়োজন নেই পাঁচটি টুল দিয়েই আপনি ভিডিও ক্যাপচারের কাজটি করতে পারেন যেমন, একটি ট্রাইপড, স্মার্টফোন, ফোন ক্লিপ, পরিষ্কার ব্যাকড্রপ এবং লাইট৷
নিশ্চিত করুন যেখানে ভিডিও শট করছেন সেখানে প্রচুর ন্যাচারাল আলো আছে কিনা। তবে আপনি ভিডিও লাইটও ব্যবহার করতে পারেন।
ট্রাইপডে ক্যামেরা সেট করুন৷ সাবজেক্ট এর কাছাকাছি রাখার চেষ্টা করুন ক্যামেরাটি। যদি স্মার্টফোন ক্যামেরা হয় তাহলে সাবজেক্ট কাছে থাকলে, ভাল অডিও পাওয়া যাবে।
এবার আপনার ভিডিও এডিটিং করার পালা। অনেকের একটি ভুল ধারনা আছে, ভিডিও এডিট করার সময় সব সময় হয়তো প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর প্রয়োজন৷ অনেক ক্ষেত্রে লাগতে পারে তবে আপনি শুরুতে এত ভারী সফটওয়্যার ব্যবহার না করেও ভাল আউটপুট পেতে পারেন। ফোনের জন্য Viva video, পিসির জন্য Wonder share ভাল হতে পারে৷
ভিডিও এডিটিং এর কিছু টিপস
আপনার ভিডিওতে প্রয়োজন হবে একটি চমৎকার ইন্ট্রো৷ ইন্ট্রো ভিডিও টি বেশি জটিল করা যাবে না, সিম্পল রাখতে হবে৷ ইউজার এসেছে কিছু শিখতে সুতরাং বাড়তি কোন কিছু দিয়ে তাদের বিরক্ত করা যাবে না৷ আর আপনার কন্টেন্ট এর সাথে ইন্ট্রোটা অবশ্যই সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে৷ ইন্টারনেটে ভিডিও ইন্ট্রো বানানোর অনেক ওয়েবসাইট আপনি পেয়ে যাবেন।
ভিডিও বানানো হয়ে গেলে আপনাকে সেটি সঠিক ভাবে প্রোমোট করতে হবে। ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও প্রোমোট করতে আপনি, ভিডিও অনলাইনে শেয়ার করতে পারেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় Post করতে পারেন, বন্ধু আত্মীয় স্বজন, কলিগদের কাছে সেন্ড করতে পারেন।
তাছাড়া ভিডিও প্রোমোট করার আরও কিছু পদ্ধতি রয়েছে। যেমন:
কিছু ভুল রয়েছে যেগুলো করা যাবে না। প্রথম দিকে ভিডিও তৈরি করলে কিছু ভুল হতেই পারে এটা দোষের কিছু না। তবে আমাদের সবারই সেই ভুল গুলো কী, সেটা জেনে রাখা উচিৎ যাতে করে ভবিষ্যতে এমন ভুলের পুনরাবৃত্তি না ঘটে
ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও এর দৈর্ঘ্য কতটুকু হতে পারে?
গবেষণা বলছে ইউজাররা বেশিরভাগ সময় শর্ট ভিডিও পছন্দ করে, যেমন ১ থেকে ছয় মিনিটের ভিডিও। তবে টপিক এবং অডিয়েন্স অনুযায়ী আপটু ২০ মিনিটের ভিডিও ক্ষেত্র বিশেষে বেশি কার্যকর হতে পারে।
টিউটোরিয়াল ভিডিও বানাতে সেরা সফটওয়্যার কোনটি?
ইউজার ফ্রেন্ডলি অনেক সফটওয়্যার রয়েছে তবে আপনি Camtasia ব্যবহার করতে পারেন।
ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও বানাতে কী কী ইকুইপমেন্ট লাগবে?
প্রফেশনাল লুকিং ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও এর জন্য আপনার যে সব সময় প্রফেশনাল ইকুইপমেন্ট লাগবে এমনটি নয়। একটি কম্পিউটার, ক্যামেরা, এবং মাইক্রোফোন হলেও ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও তৈরি করা যাবে। যদি পিসিতে বিল্ড-ইন ওয়েবক্যাপ এবং মাইক্রোফোন থাকে তাহলে তো আরও ভাল।
ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও বানাতে খরচ কত হবে?
আপনার ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও করতে খরচ কেমন হবে এটা নির্ভর করবে আপনি কি ধরনের ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করছেন তার উপর। তবে বাজেটের মধ্যে এমনকি কখনো কখনো ফ্রীতেই প্রফেশনাল মানের ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও বানিয়ে ফেলা সম্ভব সব কিছু নির্ভর করবে আপনার স্কিলের উপর।
আপনি যদি কন্টেন্ট ক্রিয়েশন বা ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও বানানোর সাথে সম্পর্কিত কোন পেশায় যুক্ত থাকেন তাহলে আশা করা যায় এই টিউনটি আপনার বেশ উপকারে আসবে। শুধুমাত্র ইন্সট্রাকশনাল ভিডিও না এই টিউনে উল্লেখিত ধাপ গুলো ফলো করে আপনি যেকোনো ভিডিও বানাতে পারবেন
আমি সোহানুর রহমান। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 627 টি টিউন ও 200 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 118 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
কখনো কখনো প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর মত ঘটনা পুরো পৃথিবী বদলে দিতে পারে।