আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন টেকটিউনস কমিউনিটি? আশা করছি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভালো আছি। আজকে আবার হাজির হলাম আপনাদের জন্য নতুন টিউন নিয়ে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
প্রযুক্তিগত ভাবে বিশ্ব দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলছে। একই ভাবে বাড়ছে ডাটা প্রাইভেসি রিস্ক। হ্যাকাররাও নতুন নতুন পদ্ধতিতে আমাদের তথ্য চুরি করার পায়তারা করছে।
টেক কোম্পানি গুলোও পিছিয়ে নেই, তারা না ভাবে ইউজারদের ডাটা কালেক্ট করে চলেছে। এই ডেটা ব্যবহার করছে নিজেদের কাজে। কখনো কখনো বিভিন্ন টেক কোম্পানি শিকার হচ্ছে হ্যাকিং এর ফলে প্রাইভেসি ঝুঁকিতে পড়ছে হাজার হাজার ইউজার।
ব্যক্তি বা অর্গানাইজেশন নির্ধারণ করতে পারে তারা থার্ডপার্টির কাছে কোন কোন তথ্য শেয়ার করবে। আর থার্ডপার্টি প্রতিনিয়ত সেই সমস্ত ডাটা সংগ্রহ করে এবং তদের বিজনেসে কাজ লাগায়৷
এই তথ্য হতে পারে ইউজারের বয়স, লিঙ্গ, ধর্ম, পছন্দ ইত্যাদি। এ গুলো সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে অথবা ব্রাউজিং ডাটা থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। ব্রাউজিং ডাটার মধ্যে আছে ব্রাউজিং প্যাটার্ন, হিস্ট্রি ইত্যাদি।
তো এভাবে আমাদের তথ্য গুলো অনলাইনে থেকে যায়। ইউজারের প্রাইভেসি দুই ধরনের হতে পারে যেমন, Personally-Identifying Information (PII) অথবা non-PII information যা ইউজারের ব্রাউজিং আচরণকে নির্দেশ করে। PII দিয়ে কোন ব্যক্তিকে আইডেন্টিফাই করা যায়।
বয়স ও ফিজিক্যাল এড্রেস থাকলে কেউ নাম না জেনেও চাইলে বুঝতে পারবে কে আপনি। খুব তাড়াতাড়ি অ্যাপলিকেশনে ব্যবহৃত GPS ট্র্যাকিং ডাটাও PII হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এর ফলে অনলাইনে থাকা যেকোনো বয়সী মানুষ ডাটা প্রাইভেসির ঝুঁকিতে পড়বে।
ধরুন কোন ব্যক্তি এই সব ডাটা প্রাইভেসি বিষয়ে অবগত নয়। কী হবে যদি তার ডেটা অনলাইনে ফাঁস হয়ে যায়?
ডাটা ফাঁস হলে ব্যক্তি এবং অর্গানাইজেশন উভয় ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া, ব্যাংকিং ডিটেল, অনলাইন কেনাকাটা সব তথ্য যেমন হ্যাকারের কাছে চলে যাবে তেমনি সে যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করে সেই প্রতিষ্ঠানের সেনসিটিভ তথ্যও চলে যাবে। এই ঘটনা কোম্পানির সাথে ঘটলে কোম্পানিও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
আরও যে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে তা হল,
আর্থিক ক্ষতি: ব্যাংক বা কার্ড ডিটেল হ্যাকারের কাছে চলে যাওয়াতে আপনি আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কোম্পানি আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কাস্টমারদের ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে, শেয়ার হারাতে পারে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়তি খরচ হতে পারে।
সুনাম নষ্ট: কোন কোম্পানির ডেটা ব্রিচ হলে এটা অনলাইনে মুহূর্তেই ছড়িয়ে যায় ফলে প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হয়। কাস্টমার কমে যেতে পারে।
কার্যাবলিতে ব্যাঘাত: ডাটা ব্রিচের কারণে কোম্পানির কার্যাবলিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ ডেটা চলে যেতে পারে। রিকোভারিতে অনেক সময় চলে যেতে পারে এবং অনেক খরচ হতে পারে। কখনো কখনো পুরো কার্যক্রমই বন্ধ করে দিতে হয়।
আইনি জটিলতা: ডাটা ব্রিচের কারণে কোম্পানি আইনি জটিলতায়ও পড়তে পারে। বিভিন্ন পক্ষ এমনকি কাস্টমাররা মামলা করতে পারে। ফলে বড় মাপের অর্থ জরিমানা হতে পারে।
অনেক দেশ ইতিমধ্যে অনলাইন নিরাপত্তা নিয়ে নতুন নতুন আইন এবং পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। প্রাইভেট তথ্য ব্যবহার নিয়েও হচ্ছে কঠোর ভাবে বিধিনিষেধ। কিন্তু এটি কি যথেষ্ট? না, আপনাকে নিজেকে সচেতন রাখতে হবে।
ডেটা ব্রিচ ব্যক্তি এবং অর্গানাইজেশন উভয়ের জন্যই ভয়াবহ হতে পারে। আপনার ডাটা যেন অনলাইনে নিরাপদে থাকে সেজন্য যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করুন এবং যারা জানে না তাদেরকেও জানান।
তো আজকে এই পর্যন্তই, কেমন হল আজকের টিউন তা অবশ্যই টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। পরবর্তী টিউন পর্যন্ত ভাল থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
আমি সোহানুর রহমান। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 627 টি টিউন ও 200 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 118 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
কখনো কখনো প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর মত ঘটনা পুরো পৃথিবী বদলে দিতে পারে।