ক্লাউড স্টোরেজের এমন ৭টি অসাধারণ ব্যবহার যা কখনই আপনি চিন্তা করেন নি!

টিউন বিভাগ নেটওয়ার্কিং
প্রকাশিত
জোসস করেছেন

আমাদের প্রতিদিনের জীবনের সাথে আতপ্রত ভাবে জড়িয়ে আছে বা জড়িয়ে যাচ্ছে ক্লাউড স্টোরেজ। প্রতিদিন আমরা হাজারো ছবি, রেকর্ড, ভিডিও ইত্যাদি ব্যবহার করি কিন্তু এর সাথে একটি ঝুঁকি থাকে আমাদের স্টোরেজ নিয়ে। যেমন আপনি আপনার স্মার্ট ফোন দিয়ে ট্রাভেল এর ছবি শুট করলেন বা ভয়েস রেকর্ড করলেন কিন্তু কোন কারণ বশত যদি আপনার মেমোরি বা এক্সর্টানাল হার্ডড্রাইভ স্টোরেজ ক্রেশ করে তবে আপনার এত পরিশ্রম এবং শখের জিনিষ সবেই ভেস্তে যাবে।

এই কারণে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ক্লাউড স্টোরেজ সিস্টেম, আমরা সবাই এই সর্ম্পকে জানি তাও ইন্ট্রো হিসেবে বলছি।

একটি অ্যাপস আপনি ইনস্ট্রল করবেন বা ক্লাউড স্টোরেজ সাইটে সাইন আপ করবেন তারা আপনাকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণের জায়গা দিবে যেখানে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যদি রাখতে পারে।

ক্লাউড স্টোরেজ থেকে ক্রেশ এর কোন ঝুঁকি নেই আপনার এক্সটা সেইফটি হিসাবে আছে ব্যাকআপ সিস্টেম এবং মজবুত সিকিউরিটি ব্যবস্থা।

ক্লাউড স্টোরেজ এর সুবিধার কারণে অফিসিয়াল ফাইল শেয়ার করা এবং ব্যাকআপ নেওয়া এতই সহজ হয়ে গেছে যার কারণে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এর সহজাত বিষয়টি চলে আসে। যেমন: ক্লাউড স্টোরেজ এর রাখা ফাইল পিসিতে, ট্যাবে, মো্বাইলে এমন কি ঘুরতে গেলেও আপনার সাথী হয়ে যায়। যখন যেভাবে ইচ্ছা শেয়ার এবং ব্যবহার করা যায়।

তাহলে চলুন আজকে দেখে নিই আপনি আপনার ক্লাউড স্টোরেজটি কে কিভাবে ১০০% ব্যবহারে আনতে পারেন এবং ক্লাউড স্টোরেজের এমন  অসাধারণ ব্যবহার যা কখনই আপনি চিন্তা করেননি। চলুন শুরু করা যাক।

➡ ১. আপনার নিয়মিত ভয়েস মেমো তৈরি করুন ক্লাউড স্টোরে

VoiceDrop ভয়েস ড্রপ ছোট এই অ্যাপসটি দিয়ে আপনি ভয়েস রেকর্ড করে সরাসরি ড্রপ বক্সে আপলোড করতে পারেন। শুধু তাই নয় বিভিন্ন ক্যালেন্ডার টেক্স, বিশেষ সময়ের টোন করেও রাখতে পারেন, আর হিডেন রেকর্ড  তো আছেই। আপনি আপনার স্মার্ট  ফোনে অ্যাপসটি ইনস্টল করুন, রেকর্ডে ক্লিক করুন আর দেখুন অটোমেটিকেলি আপনার ড্রপ বক্স অ্যাপস এ VoiceDrop folder এ আপনার ফাইলটি আপলোড হয়ে যাবে। এই অ্যাপস এ কোন লিমিটেড রেকডিং এর ইরোর নাই তাই ঝামেলা বিহীন এবং ইউজার ফ্রেন্ডলি।

➡ ২. আপনার পরিবারের ইতিহাস সংরক্ষক হিসেবে ব্যবহার করুন ক্লাউড স্টোরেজকে

আপনি আপনার পরিবারের সকলের ছবি, ভিডিও, অডিও সব কিছু সংরক্ষণ করুন ক্লাউড স্টোরেজ এ। হয়ত আগামী পাঁচ বছর পর বা আপনার আগামী প্রজন্ম দেখতে পাবে আপনার তৈরি করা আর্কাইভ।

এই যেমন ক্লাউড স্টোরেজ হিসেবে জনপ্রিয় ড্রপবক্স এর একটি সাব সাইট 100 Million Thanks https://dropbox100m.com/ এই পেইজে ইউজারা post করে তিনি কিভাবে ড্রপবক্সকে ব্যবহার করছে।

যেখানে মেজরিটি ইউজাররা শুধু মাত্র ফাইল আর্কাইভ করার জন্য ড্রপবক্স ব্যবহার করে সেখানে এই সাইটে দারুন একটি postlflfv  আমি দেখলাম যে একজন ইউজার তার দাদার দাদার সকল ইন্টারভিউ রের্কড ড্রপবক্সে সেভ করে রেখেছে।

উনি সেখানে বলেছে যে এই ইন্টারভিউতে তার দাদার সাথে তার পিতার জীবনের অনেক ঘটনা শেয়ার করেছে যা রেকর্ড করা ছিলো এখন তা এই ড্রপবক্স সেইফ হোমে রাখা আছে।

তার ভাষ্য মতে তিনি তারপরিবারের Jewels গুলো ড্রপবক্সে রেখেছে। 😀

আপনি রাখাতে পারেন আপনার পরিবারের সকল ইতিহাস ক্লাউড স্টোরে।

➡ ৩. গুগল ড্রাইভ দিয়ে আপনার ভিডিও এমবেড করুন

ক্লাউড স্টোরেজ আরেকটি খুবই জনপ্রিয় প্লাটফর্ম গুগল ড্রাইভ। এখানে ড্রপবক্স এর মতোই সকল ফাইল রাখতে পারেন তারা আপনাকে প্রথমে ১৫জিবি স্টোরেজ সুবিধা দিয়ে এবং পরে আপনি বাড়াতে পারবেন। এখন কিভাবে গুগল ড্রাইভের ভিডিও এমবেড করবেন?

  • প্রথমে লগিন করুন গুগল একাউন্টে, তারপর ভিডিও আপলোড করুন।
  • তারপর আপনার আপলোড কৃত ভিডিওটির প্রাইভেসি প্রাইভেট থাকলে তা পাবলিক করুন।
  • তারপর রাইট ক্লিক করে আপনার অপের উইথ > গুগল ড্রাইভ ভিওয়ার

  • গুগল ড্রাইভ ভিওয়ার পেইজ আসলে আপনি > এমবেড দিস ভিডিও তে ক্লিক করুন এবং এমবেড কোড কপি করে আপনার নির্দিষ্ট যায়গায় দিয়ে দিন। (ছবি গুলোর অনুসরণ করুন)

এভাবে যদি না আসে তবে আপলোডকৃত ভিডিওর উপর রাইট বাটন ক্লিক করে Get Shareable Link এর ক্লিক করুন। (নিচের ছবিটি দেখুন)

➡ ৪. ড্রপবক্সে আপনার ওয়ালপেপারের কালেকশন গড়ে তুলুন

ড্রপবক্স এর শুরু থেকেই অনেক ফিচার, যেমনঃ পার্সোনাল কিছু পাবলিক করা বা হিডেন রাখা, সবার সাথে ফ্রেন্ডলি কিছু শেয়ার করা, ‍বিভিন্ন ফোল্ডার করে সাজিয়ে রাখা এবং অ্যাপস ইনস্টল করা। এগুলো প্রায় সবগুলোর সাথেই আমার পরিচিত নতুন করে বলার কিছু নাই। ঠিক এমন একটি ড্রপবক্স অ্যাপস হচ্ছে Desktoppr সেই ড্রপবক্সে প্রথম থেকে কাজ শুরু করা একটি অ্যাপস যার মূল কাজ হচ্ছে আপনার ওয়ালপেপার সংগ্রহের মাত্রা বৃদ্ধি করা। মানে আপনি তাদের একটি অ্যাপস এর মাধ্যমে তাদের সাইটে দেওয়া বিভিন্ন সুন্দর- অসাধারণ এইচডি ছবি গুলো এক ক্লিকে আপনার ড্রপবক্সে রাখতে পারবেন। আপনাকে যা করতে হবেঃ

  • প্রথমেই আপনি desktoppr তাদের অফিসিয়াল সাইটে যান।
  • আপনার ইমেল দিয়ে রেজিস্টেশন করুন
  • আপনার ড্রপবক্সটি সাইটের সাথে কানেক্ট করুন

  • দেখবে আপনার ড্রপবক্সে Apps নামে একটা ফোল্ডার হয়েছে এবং তারপর  desktoppr নামে আরেকটা ফোল্ডার পাবেন।

  • এবার সাইটে যান উপরের ছবির মতো ওয়ালপেপারে Sync to dropbox এ ক্লিক করুন দেখবেন ছবিটি আপনার ড্রপবক্সে desktoppr নামের ফোল্ডারে চলে যাবে।

➡ ৫. মাইক্রোসফট স্কাইড্রাইভ দিয়ে দ্রুত এক্সেল সার্ভে শিট করুন

মাইক্রোসফট এক্সেল আমাদের অফিসিয়াল প্রতিদিনের কাজের একটি গুরুর্ত্বপূর্ণ অফিস সফটওয়্যার। এর সাহায্য অফিসের হিসাব খুব সহজেই এবং সহজ পদ্ধতিতে রাখা যায়। তাছাড়া আরো বহু কাজ এর দ্বারা করা যায় যা আমরা সবাই জানি। মাইক্রোসফট এর ক্লাউড স্টোরেজ স্কাইড্রাইভ দিয়ে আপনি আপনার এই এক্সেল এর কাজ অনলাইনেই করতে পারেন। এর জন্য আপনি  সার্ভে অপশনও পাচ্ছেন। এইজন্য আপনাকেঃ

  • প্রথমে স্কাইড্রাইভে লগইন করতে হবে
  • এবং তারপর Create বাটনে ক্লিক করে  Excel survey তে
  • তারপর আপনার সার্ভে নাম দিন এবং প্রশ্ন এড করুন
  • এখন আপনি চাইলে লিংক ও শেয়ার করতে পারেন

➡ ৬. গুগল ড্রাইভ দিয়ে বিভিন্ন ফাইল শো করান

গুগল ড্রাইভ দিয়ে আপনি প্রায় ৩০ ফরমেটের ফাইল শো করাতে পারেন। যেমনঃ.CSS, .HTML, .PHP, .C, .CPP, .H, .HPP, .JS ইত্যাদি এবং অবশ্যই আপনি.ZIP এবং.RAR ফরমেটের ফাইল দেখতে পারবেন। তাছাড়া এডোবি ইলাস্ট্রেটার এর ফাইল এবং ভেক্টর গ্রাফিক্স এর  ফাইল ও সার্পোট করে। ২৫ এমবির নিচে হলে ফাইল সার্পোট করবে যদি বেশি হয় তবে নাও হতে পারে।

➡ ৭. নিউজপেপার কাটিং হিসাবে ক্লাউড এর ব্যবহার

আমাদের আশেপাশে এমন অনেক কিছু আছে যা অনলাইনে প্রকাশিত হয় না। নিউজ কেটে রাখা যেমন একটি বিষয় অনেকের কাজে এটি একটি হবির মত। এমন খবর আছে যা আমার অন্য কোন অনলাইন কপি খুঁজে পাওয়া যায় না। আপনি এটি কেটে অনুলিপিটি স্ক্যান করে রাখতে পারেন যার জন্য একটি ক্যামেরা ব্যবহার করতে হবে এবং এটি ক্লাউড সার্ভারে রেখে দিতে পারেন যা অনলাইনে নিরাপদ রাখার জন্য একটি গ্রাফিকাল মুডকে রূপান্তর করুন। যাতে আপনার আর কোন কপিরাইটের ভয় নেই।

যেমনঃ ধরুন প্রতিদিনেই আলাদা ক্যাটগরিতে বিভিন্ন নিউজ পাবলিশ হয় আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ক্যাটাগরি মত ক্লাউড সার্ভারে ফোল্ডার তৈরি করুন এবং পেপার কাটিং এর.JPG ফাইল গুলো রেখে দিন এবং আপনার প্রয়োজনীয় সময়ে তা প্রিন্ট করুন। এটি একটি কার্যকরী বিষয় হতে পারে পেপার কাটিং রাখার ক্ষেত্রে।

শেষ কথা

আসলে প্রতিদিন যে কত কাজে আমাদের এই ক্লাউড স্টোরেজ ব্যবহার করতে হয় এবং কত উপকার করে তা বলে বোঝানোর মত নয়। এমন একদিন খুব বেশি দূরে নয় যখন সবাই ক্লাউড স্টোরেজের উপরেই নির্ভরশীল হয়ে পড়বে, এক্সর্টানাল হার্ডড্রাইভ ইত্যাদি হয়তো বা ব্যবহারই করবে না। প্রতিদিন আমাদের জীবনে যতই কাজে লাগুক এই স্টোরেজ সিস্টেম এর তুলনায় নিরাপত্তার বিষয়টিও সবাইকে ভাবতে হবে। যেমন আপনার ব্যক্তিগত কিছু যদি অন্যের হাতে একটি পাসওর্য়াড হ্যাকিং এর মাধ্যমেই চলে যায় তবে সেটা নিশ্চই আপনার জন্য কোন স্বাভাবিক বিষয় হবে না। তাই অবশ্যই নিরাপত্তা এবং প্রাইভেসির দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

তাহলে আজকে এতটুকুই ইনশাল্লাহ আগামীতে আরো ভাল কোন বিষয়ের উপর টিউন নিয়ে উপস্থিত হব। সেই পর্যন্ত ভাল থাকবেন সবাই। এবং অবশ্যই টিউমেন্ট করবেন এবং শেয়ার করবেন সবার মাঝে। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Level 0

আমি Readul Haque। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 41 টি টিউন ও 268 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 0

Thanks. a lot

    আপনাকেও ধন্যবাদ